আমরা দু বোন ।আমার বোন বড় আর আমি ছোট ।আমি আমার বোনের ১৩ বছরের ছোট অর্থাৎ তাঁর জন্মের ১৩ বছর পর আমার এই পৃথিবীতে আগমন ।যদিও আমার বড় আপা প্রথম সন্তান তাই পরিবারে তার প্রাধান্য তো বুঝতেই পারছেন সবাই ।তারপরও আমার আগমনে কিন্তু আমার প্রাধান্য একটুও কমেনি বরং আরো বেশি ছিলো আর আমি ছিলাম সবার খুবই আদরের।
আমার বোন বাবা মায়ের প্রথম সন্তান আর মেয়ে সন্তান। তাই দ্বিতীয় সন্তান ছেলে হোক এটা চাওয়াই স্বাভাবিক। এটা তো কোন অপরাধ হতে পারে না তাই না? কিন্তু বিধাতার কি নির্মম পরিহাস ঘটল অন্যরকম পরের সন্তান মানে আমি মেয়ে হয়ে জন্ম নিলাম।
তাই বলে আমার বাবা-মা কিন্তু একটু দুঃখ পান নি। যদিও আমার মা বাবাকে নিয়ে একটু চিন্তিত ছিলেন যে আমার বাবা কি ভাববেন কিন্তু ঘটলো তার ভিন্ন বাবা এসে মাকে বললেন :মন খারাপ করেছ নাকি ?খবরদার আমার দুটো মেয়ে আমার দুটো জান্নাত, একদম কষ্ট পাবে না।আমাকে পরিবারে স্বাগতম জানালেন অনেক আনন্দে অনেক ভালোবেসে।বিশেষ করে আমার বাবা আমাকে অনেক আদর করতেন, অনেক ভালোবাসতেন। সচরাচর আমার বাবা কখনো আমাকে বকা দিতে আমার মনে নেই।
তারপরও ছোটবেলা থেকেই বাবাকে অনেক ভয় পেতাম । বাবা কখনো বকা দিত না, কোন কিছু নিয়ে কখনো আমাকে কোন মানসিক ভাবে প্রেসার দেননি, তারপরও কেন জানি না বাবাকে দেখলে কেমন ভয় লাগত। আসলে কি ভালবাসার এমনি যা কখনো মারতে হয় না,বকতে হয় না।
আমার মা-ও ছিলেন একদম সাদা মনের একজন মানুষ ।অনেক সরল সোজা । তার ভিতরে মনে হয় কোন প্যাঁচ বলতে কিছুই ছিল না ।যার যত সমস্যা হতো সবাই এসে আমার মার কাছ থেকে পরামর্শ নিতে ।আপা এটা কি হয়েছে, আপা ওটা কি করবো ?এই সমস্যা ,ওই সমস্যা নানান কিছু ।মাকে এই নিয়ে ছোটবেলা থেকে অনেক সমস্যা সম্মুখীন হতে আমি দেখেছি ।বিশেষ করে বাবা অনেক রাগ করতেন। সে মানুষের সমস্যার সমাধান করতে করতে গিয়ে নিজেই সমস্যার মধ্যে পড়ে যেত ।এমনকি টাকা পয়সা দিয়ে অনেক সময় প্যারা খেয়েছে।তারপরও কে শোনে কার কথা।
এই হলো আমার বাবা-মা। এত উদার মনের বাবা-মা পাওয়া আসলেই ভাগ্যের ব্যাপার ।এমন বাবা-মা প্রত্যেকটা সন্তানকে আল্লাহপাক দান করুক।
Your life is very happy. Everything is fine