তোমরা আলুর চিপস খেয়েছো কিংবা বিকেলের নাস্তায় আলু ভাজা অথবা আলু ভর্তা।কখনো ভেবে দেখেছো আলু কিভাবে তোমার খাবার টেবিল পর্যন্ত পৌছে গেলো?আলুর এতোদূর পর্যন্ত আসার পেছনে রয়েছে বিশাল একটি গল্প।আজকে তোমাদের আলুর এই দীর্ঘ পথযাত্রার গল্প শোনাবো।আলুর চাষাবাদ চলে আসছে প্রায় দশ হাজার বছর ধরে সুদূর দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের(যা বর্তমানে দক্ষিণ পেরু এবং উত্তর পশ্চিম বলিভিয়া) এবং আন্দিজ পার্বত্য অঞ্চলে।কিছু কাল পরে আলু যাত্রা করে ইউরোপ আর উত্তর আমেরিকায় এরপর থেকে সারা পৃথিবী জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে সব দেশের সব অঞ্চলের রান্না ঘরে।মূলত স্পেনিশরা ষোল শতকে এটি ইউরোপে নিয়ে আসে যা উত্তর ও পূর্ব ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ে।ইউরোপের দেশ আয়ারল্যান্ডে প্রধান খাদ্য ফসলে পরিণত হয়।ইউরোপের প্রধান খাদ্য হিসেবে আলু জায়গা করে নেয়।ইউরোপের সর্বাধিক আলু উৎপাদনকারী দেশ গুলো হচ্ছে জার্মানি,হল্যান্ড,পোল্যান্ড ও রাশিয়া।ভুট্টা,ধান আর গমের পর বর্তমানে পৃথিবী জুড়ে সবচে বেশী চাষ হয় আলুর।এতো গেলো ইউরোপের ইতিহাস।এবার চলো জেনে নেই কিভাবে আমাদের ভারত বর্ষে আলু চলে আসলো।
সতেরো শতকে পর্তুগিজ নাবিকেরা ভারত বর্ষে আলু নিয়ে আসে।ভারত বর্ষে প্রথম দিকে আলুর চাষ হতো কলকাতার পার্শ্ব ভর্তি অঞ্চলে আর সেখান থেকে চেরাপুঞ্জি বোম্বে সহ বিভিন্ন প্রদেশে ছড়িয়ে পড়ে।তোমরা কি জানো আলু একটি উচ্চ পুষ্টি গুন সমৃদ্ধ খাদ্য।এতে ভিটামিন বি ও সি সহ বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান রয়েছে।
পুরো পৃথিবী জুড়ে কয়েকশ জাতের আলু চাষ হয়।বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রায় ২৭ টি জাতের আলু চাষ করা হয়।এবার চলো বাংলাদেশে চাষ হওয়া আলুর জাত গুলো এবং কোন কোন অঞ্চলে চাষ হয় সেগুলো জেনে নেই।
শীলবিলাতি আলু,যা মূলত রংপুর অঞ্চলে চাষাবাদ করা হয়।লালশীল আলু বগুড়া অঞ্চলে চাষাবাদ করা হয়।লাল পাকরি আলু সিরাজগঞ্জ,বগুড়া ও দিনাজপুর জেলায় ব্যাপক ভাবে চাষাবাদ হয়।দোহাজারী জাতের আলু মূলত চট্টগ্রাম এলাকায় চাষ করা হয়।তবে ঝাউবিলাতী ও সূর্যমুখী জাতের আলু ও বেশ প্রচলিত।
শীতকালে বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি জেলাতে আলুর চাষাবাদ করা হয় আর ফসল তোলা হয় ফেব্রুয়ারি মার্চ মাসে।
চলো এবার জেনে নেই বাংলাদেশে আলুর প্রধান ব্যবহার সম্পর্কে।আমাদের দেশে মাছ, মাংস ও ডিমের সঙ্গে সবজি হিসেবে আলু ব্যবহার করা হয়।আলু থেকে আরো সেসব খাদ্য তৈরী হয় সিদ্ধ আলু, ভাজা আলু, চটকানো আলু, আলুর রুটি,আলুর চপ, আলু সিঙ্গারা, আলু চিপস, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই প্রভৃতি।
Bd