ইসলামিক_গল্প
-
লেখকঃ_ফয়সাল_আহমেদ_শিশির
--তার বাসা তো বাংলাদেশে।সে বাংলাদেশি।
--আমি আরো ভাবছিলাম সে আমাদের দেশি (ভারতীয়)।
--না সে বাংলাদেশি।
--লোকটা কিন্তু অনেক স্মার্ট।
--হুম, ঠিক বলছো।
--আচ্ছা কাকা আজ তাহলে আসি।
--চা-পান-বিড়ি-সিগারেট কিচ্ছু খাবা না আজ?
--সিগারেট দিয়ে দেন কয়েকটা কাকা।
--আচ্ছা এই নাও।
তারেক সিগারেট গুলো নিয়ে বাড়ির দিকে রওনা হল...
রাস্তায় সিগারেট টেনে টেনে আসছে আর ওয়াজ শুনছে।....
একটুপর তারেক দেখতে পায় সিগারেট টা যেন তার কাছে আজ আর ওই রকম ভালো লাগছে না।কেমন যেন বিরক্তিকর লাগছে সিগারেট টা।
মনে মনে রাগ হলো দোকানদারের উপর,
--হয়তো ভাল সিগারেট দেয় নি আজ।কিন্তু তাকে তো খারাপ সিগারেট দেওয়ার সাহস কারো নেই।
এরপর আরেকটা সিগারেট ধরালো...
এখনো সেই আগের অবস্থা।সিগারেট যেন আজ তার কাছে মোটেও ভালো লাগছে না।রাগ করে সব সিগারেট ফেলে দিল তারেক।...
তারেক নিজেও বুঝতে পারছে না কেন আজ তার সিগারেট ভালো লাগছে না।তার কাছে তো যেকোনো সিগারেটই ভালো তবে আজ কেন ভালো লাগছে না।যাই হোক এসব ভাবতে ভাবতে তারেক বাসায় চলে আসলো।...
বাসায় এসে মোবাইল হাতে নিল...
মোবাইল হাতে নিয়ে ডুকলো Youtube এ ডুকে আজহারি ওয়াজ লিখে সার্চ করলো....
অনেক গুলো ওয়াজ পেয়ে যায় তারেক। বেশ কয়েকটা ওয়াজ ডাওনলোড দিল তারেক....
ওয়াজ গুলো যতই শুনছে তারেকের ভিতর টা কেমন জানি হয়ে যাচ্ছে।কি যেন খালি খালি লাগছে তারেকের কোনো কিছু ভালো লাগছে না।
ওয়াজ শোনতে শোনতে তারেক কখন যে ঘুমিয়ে যায় নিজেও জানে না।
মধ্যে রাতে তারেক হটাৎ এক ভয়ংকর স্বপ্ন দেখতে পায়।
স্বপ্নে,
--তারেক মারা গেছে।তারেকের মৃত্যু তে যেন এলাকায় খুশির রোল পড়ে গেছে।এলাকার সবাই একে অপরকে বলা বলি করছে,
--আজ থেকে আমরা মুক্ত আমরা স্বাধীন। আজকের পর থেকে উপর আর কেউ জুলুম করবে না,আমাদের জমি আর কেউ আত্মসাধ করতে আসবে না,আমাদেরকে আর কেউ হত্যা করতে আসবে না, আমাদের স্ত্রী-মেয়েরা আজ ইভটিজিং এর হাত থেকে মুক্ত,আজকের পর থেকে আমরা সকল প্রকার অন্যায়-অত্যাচার থেকে মুক্ত।
কুখ্যাত খুনি,সম্যাডলার,সন্ত্রাসীর মৃত্যু তে সবাই খুশি। এলাকার কেউ নেই যে তারেকের মৃত্যুতে কষ্ট পাচ্ছে...
এমনকি যারা তারেকের সহযোগী আছে তারাও খূশি কারন তারেকের পাপের দ্বারা অর্জিত সব সম্পত্তি তারা ব্যবহার করতে পারবে।তারা নিজেরাই এখন সমাজে আধিপত্য বিস্তার করতে পারবে।
কেউ কেউ বলছে... এই পাপী টাকে আগুনে পুড়িয়ে ফেল।একে মাটি দেওয়ার কোনো মানে হয় না।
তারেকের বিদেহি আত্মা চোখ বুজে সব সহ্য করে যাচ্ছে কিন্তু কাউকে কিছু বলতে পাচ্ছে না। তারেকের আত্মা শুধু বোবার মতো অঝরে কান্না করে যাচ্ছে।...
--কিছু কিছু মানুষ বলছে সে সারাজীবন উগ্রবাদী হিন্দু সম্প্রদায়ের সাথে চলছে, আজকে তাকে হিন্দু সম্প্রদায়ের মতো পুড়িয়ে ফেলা হোক।
--আবার, কেউ কেউ বলছে সে হিন্দু সম্প্রদায়ের সাথে চলুক তবুও তো সে মুসলিম ছিল।তাকে মাটি দেওয়া হোক।
অবশেষে সিন্ধান্ত আসলো,, তারেক কে মাটি দেওয়া হবে।
তারেক কে নিয়ে গেল গোসল করানোর জন্য।কিন্তু কেউ তারেকের গোসল করানোর জন্য রাজি হতে চায় না।
অবশেষে, চার পাঁচ জন রাজি হল তারেক কে গোসল করানো জন্য।
তারা গোসল খানায় গিয়ে ইচ্ছা মতো তারেকের শরীরে আঘাত করলো আর বলতে লাগলো..
--সারাজীবন আমাদেরকে জ্বালিয়েছিস।এখন মজা বুঝ। আল্লাহ যেন জীবনে কখনো তোকে জান্নাত না দেয়।
তারেকের বিদেহি আত্মা চিৎকার করছে, আর বলছে আমাকে মেরো না আমার খুব কষ্ট হচ্ছে খুব কষ্ট হচ্ছে।ভীষণ ব্যথা পাচ্ছি আমি।
কিন্তু তারেকের কান্না তো আর তারা শুনছে না।
অবশেষে টেনে হিঁচড়ে খুব কষ্ট দিয়ে তারেক কে গোসল করানো শেষ হল।
তারপর কাফন পড়ানো হল তারেক কে...
তারপর জানাজা পড়ানোর সময় কেউ তারেকের জানাজা পড়তে চাইলো না।মাত্র তিন চার জন মিলে তারেকের জানাজা শেষ করলো।...
দাফন করানোর জন্য যখন তারেক কে এলাকার সামনে দিয়ে নিয়ে আসছিল।তখন এলাকার সবাই তারেক কে ঘৃণা করতে লাগলো।....
এবার তারেক কে দাফন করার পালা...
এবারও একই অবস্থা তারেক কে দাফন করানোর জন্য কেউ নামতে চাইছে না তার কবরে।তাহলে কি আর করার আছে। দুইজন ধরে উপর থেকে তারেক কে ফেলে দিল কবরে।
তারেক প্রচুর ব্যথা অনুভব করলো। কিন্তু কি আর করার আছে সে তো এখন মৃত্যু তার আর কোনো ক্ষমতা নেই।
তারেক কে মাটি চাপা দিয়ে সবাই যার যার বাড়িতে ফিরে গেল।....
একটু পর কবরের ভিতর মুনকার নাকির ফেরেস্তা আসলো,,
এসে তারেক কে সওয়াল জওয়াব করলো...
তারেক কোনো প্রশ্নের উত্তর ওই দিতে পারলো না।
ফেরেস্তারা তারেক কে লানত দিয়ে চলে গেল...
ফেরেস্তারা চলে যাওয়ার পর তারেক দেখতে পায় ভয়ংকর বড় বড় বিষধর সাপ বিচু, আগুন তারেকের দিকে ধেয়ে আসছে আর তারেক আরো লক্ষ্য করলো যে, কবরের দু পাশ টা কেমন যেন চাপা হয়ে আসছে। চাপা হতে হতে তারেকের এক পাঁজরের হার আরেক পাঁজরের হারে ডুকে যাচ্ছে।
তারেক ব্যথা সহ্য করতে না পেরে অনেক জুড়ে চিৎকার দিল। চিৎকার দিয়ে বসে পড়লো তারেক....
তারপর তারেক নিজেকে বিছানার উপর আবিস্কার করলো। সে মারা যায় নি। এসব সে স্বপ্নে দেখছে।....
তারপর তারেক রান্না ঘরে গিয়ে পানি খেয়ে আসলো। পানি খেয়ে এসে তারেক এখন প্রচুর ভাবছে...
(কি ভাবছে সেটা পরবর্তী পর্বে জানবেন।)
Onek vlo laglo tai Subscribe kore rakhlam... Back dile khusi hotam..