দুর্গা (সংস্কৃত: दुर्गा; অর্থাৎ "যিনি দুর্গতি বা সংকট থেকে রক্ষা করেন"; ও, "যে দেবী দুর্গম নামক অসুরকে বধ করেছিলেন")[১][২] হলেন হিন্দু দেবী পার্বতীর এক উগ্র রূপ। তিনি একজন জনপ্রিয় দেবী। হিন্দুরা তাকে মহাশক্তির একটি উগ্র রূপ মনে করেন।তিনি দেবী পার্বতীর উগ্র রূপ, তার অন্যান্য নামসমূহ হল চণ্ডিকা, যোগমায়া, অম্বিকা, বৈষ্ণবী, মহিষাসুরসংহারিণী নারায়ণী, মহামায়া, কাত্যায়নী ইত্যাদি। দেবী দুর্গার অনেকগুলি হাত। তার অষ্টাদশভুজা, ষোড়শভুজা, দশভুজা, অষ্টভুজা ও চতুর্ভূজা মূর্তি দেখা যায়। তবে দশভুজা রূপটিই বেশি জনপ্রিয়। তার বাহন সিংহ (কোনো কোনো মতে বাঘ)। মহিষাসুরমর্দিনী-মূর্তিতে তাকে মহিষাসুর নামে এক অসুরকে বধরতা অবস্থায় দেখা যায়।
দুর্গামানভূমে পাওয়া দেবী দুর্গার প্রস্তর মূর্তি, ভারতীয় জাদুঘরে (কলকাতা) রক্ষিতদেবনাগরীदुर्गाসংস্কৃত লিপ্যন্তরDurgāঅন্তর্ভুক্তিমহাশক্তি,পার্বতীআবাসবিশ্ব চরাচরমন্ত্রওঁ দুর্গে দুর্গে রক্ষণি স্বাহাঅস্ত্রত্রিশূল, খড়্গ, চক্র, বাণ, শক্তি, ঢাল, ধনুক, ঘণ্টা, পরশু, নাগপাশ ইত্যাদি।বাহনসিংহ
মা দুর্গা
হিন্দুধর্মে দেবী দুর্গা পরমা প্রকৃতি ও সৃষ্টির আদি কারণ।[৩] তিনি শিবের স্ত্রীপার্বতীর উগ্র রূপ, কার্তিক ও গণেশের জননী, এবং কালীর অন্যরূপ। বাংলা মঙ্গলকাব্যগুলিতে এবং আগমনী গানে দুর্গারূপে শিবজায়া হিমালয়দুহিতা পার্বতীর সপরিবারে পিতৃগৃহে অবস্থানের আনন্দময় দিনগুলির (দুর্গাপূজা) এবং তার বিবাহিত জীবনের অপূর্ব বর্ণনা পাওয়া যায়। দেবী পার্বতী দেবতাদের অনুরোধে দুর্গম অসুর কে বধ করেন তাই দেবী পার্বতী দুর্গা নামে অভিহিত হন
মহিষাসুরমর্দিনী-দুর্গা, কালীঘাট পটচিত্র, ১৮৮০
দুর্গার আরাধনা বাংলা, অসম, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড এবং বিহারের কোনো কোনো অঞ্চলে প্রচলিত। ভারতের অন্যত্র দুর্গাপূজা নবরাত্রি উৎসব রূপে উদযাপিত হয়। বছরে দুইবার দুর্গোৎসবের প্রথা রয়েছে – আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষে শারদীয়া এবং চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষে বাসন্তী দুর্গাপূজা। সম্ভবত খ্রিষ্টীয় দ্বাদশ-ত্রয়োদশ শতাব্দীতে বাংলায় দুর্গোৎসব প্রবর্তিত হয়। জনশ্রুতি আছে, রাজশাহীর তাহিরপুরের রাজা কংসনারায়ণ প্রথম মহাআড়ম্বরে শারদীয়া দুর্গাপূজার সূচনা করেছিলেন। কূর্ম, মৎস, বরাহ,দেবী ভাগবত পুরাণ অনুসারে ঋষি মতন্ড কুমার কার্তিক, গণেশ কে প্রশ্ন করেন যে তাদের মাতার নাম দুর্গা কন? তারা বলে হিরণাক্ষ পুত্র রুরুর বংশধর দুর্গম সমুদ্র মন্থনে অসুরদের সাথে ছলনা করার প্রতিশোধ রূপে ব্রহ্মার কাছে বর চায় যে তাকে এমন এক নারী বধ করবে যে অনাবদ্ধ কে আবদ্ধ করে। দুর্গম অসুর চতুর্বেদ কে হস্তগত করলে সৃষ্টির ভারসাম্য রক্ষায় দেবী পার্বতী এক দশভুজরূপী মঙ্গলময় দেবী রূপে আবির্ভূত হন তারপর দুর্গম কে শূলের আঘাতে বধ করেন। কিন্তু ভাবপ্রবণ বাঙালি মহিষবধিনী চণ্ডীকে ও দুর্গমনাশিনী দুর্গা কে এক মূর্তিতে প্রতিষ্ঠা করেছে।
Good