একটি নিন্ম মধ্যবিত্ত ঘরের ১০ বছরের একটি বাচ্চা ছেলে, যার নাম সুজয়। রাস্তার ধারে একটি এক কামড়ার ছোট্ট বাড়িতে সে থাকত।
সুজয় এর বাড়ির ঠিক অপরদিকে একটি প্রাসাদ প্রতিম বাড়ি। সেই বাড়িতে থাকত সুজয় এর বয়েসি আরেকটি বাচ্চা ছেলে, যার নাম রক্তিম।
সুজয় রোজ সকালে তার বাবার সাথে স্কুটারে করে স্কুলে যেত। এবং রক্তিম যেত দামি দামি গাড়িতে করে। এই দুটি পরিবারকে যারাই দেখত তারাই বলত সুজয় এর থেকে রক্তিম অনেক বেশী ভাগ্যবান। কারন রক্তিম একটি সম্ভ্রান্ত পরিবারের ছেলে, এবং তার বাবার কাছে আছে প্রচুর অর্থ।
রোজ বিকালে রক্তিম তার বাড়ির দোতলার বেলকনিতে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখত সামনের রাস্তার মোরে তার বয়েসি অনেক বাচ্চারা খেলছে। সুজয়কেউ তাদের সাথে খেলতে দেখা যেত। কিন্তু রক্তিমের বাবা মা বিভিন্ন কারনে বা তাদের স্ট্যাটাস বজায় রাখার জন্য এই সব বাচ্চাগুলির সাথে রক্তিমকে মিশতে দিত না।
সুজয়ের আবার এরকম কোন বারন ছিল না। ফলে সে রোজ বিকালে সেই রাস্তার মোরে চলে আসত এবং সাবার সাথে খেলা ধুলা করত। কখন ক্রিকেট, কখন ফুটবল, কখন লুকোচুরি, কখন কানামাছি আর অনেক ধরনের খেলা তারা খেলত।
রক্তিম দোতলার বেলকনিতে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তাদের খেলা দেখত এবং মনে মনে কাঁদত। তার কাছে ঘরে ভর্তি অনেক দামি দামি খেলনা আছে। কিন্তু তার কাছে এগুলির কোন মূল্য নেই। তার বাবা ব্যবসার কাজে এত ব্যস্ত থাকে তাকে সময় দিতে পারে না। আর তার মা ক্লাব, সোসাইটি, শপিং এই নিয়েই ব্যস্ত।
এক কথায় রক্তিম ছিল সোনার খাঁচায় বন্ধি। অপরদিকে সুজয়ের কাছে ছিল সামান্য কিছু খেলনা। যার মূল্য তার কাছে ছিল অনেক অনেক বেশী। সে প্রাকৃতিক নিয়মে অনেক স্বাভাবিক ভাবেই তার জীবন উপভোগ করত।
এখন আপনার কি মনে হচ্ছে কে বেশী ভাগ্যবান, রক্তিম না সুজয়? জানি আপনি বলবেন সুজয়।
কিন্তু সুজয় খেলার ফাঁকে বিশ্রাম নিতে নিতে একদৃষ্টে রক্তিমদের প্রাসাদ প্রতিম বাড়ির দিকে তাকিয়ে থাকত। আর মনে মনে ভাবত – রক্তিম কত সুখী! কি বিশাল বাড়ি ওদের, কি সুন্দর সুন্দর গাড়ি। কত দামী দামী খেলনা রক্তিমের কাছে আছে। সত্যি রক্তিম ভীষন সুখী আর কত আনন্দে আছে! কি ভাল হত যদি এই সব আমার কাছে থাকত!
এই গল্পটা থেকে কি শিখলাম?
তো বন্ধুরা এই ছোট গল্পটা থেকে আমরা এটাই শিখলাম যে, আমরা যখন নিজেকে অন্যের সাথে তুলনা করি তখন অন্যদের বেশী ভাগ্যবান মনে হয়। মজার কথা হল উল্টদিকের মানুষটিও কিন্তু আপনাকে দেখে একই কথা ভাবে। আপনি যখনই অন্যের সাথে নিজেকে তুলনা করবেন তখন আপনি নিজেকে ছোট মনে করতে থাকবেন। আর এই মনে করাটাই আপনেকে অন্যের তুলনায় বেশী দুখীঃ মনে করাবে। আসলে সেটা একদম নয়।
তাই বলব অন্যের দৃষ্টিতে নিজেকে দেখুন, দেখবেন আপনি অনেক বেশী সুখী।
ইতিবাচক ভাবুন – ইতিবাচক বলুন – ইতিবাচক অনুভব করুন
Motivational story | অতীতের দুঃখ - কষ্ট আপনাকে ভুলতেই হবে | Life changing stories