দৃষ্টির_অগোচরে

Avatar for Montasin11
3 years ago

লেখক::: আসিফ আহমদ আলভি।☺️☺️

--আকাশ ভাইয়া,তুমি যদি আমায় আদর করো,তাহলে কি আমার বাবু হবে?

--অবনীর এমন কথা শুনে কপালে হাত দিয়ে ফেললাম!দশ বছরের এই টুকু মেয়ে,যে কিনা আমাকে এমন প্রশ্ন করছে!এই পাগলি মেয়ে তুই এসব কি বলিস হা?আর তোকে কেনো আমি আদর করতে যাবো?

--তাহলে,তুমি যে আমার কেয়ার করো,আমি খেয়েছি কিনা সেসব জিগ্যেস করো,মাঝে মাঝে আমার কাপলে চুমু দাও,এমন কেয়ার করলে কি বাবু হয় না?

--অবনী,তুমি আসলেই পাগল একটা মেয়ে।

তুমি ছোট,তাই তোমার কেয়ার করি।আর তোমাকে তো সত্যি কারে কপালে চুমু দেই না।চুমু তো দেই মোবাইলে।

তাহলে বাবু কেনো হবে শুনি?

--তাহলে আমি তোমার কাছে চলে আসি।তুমি আমায় আদর করবে।তারপর আমার বাবু হলে সেটা নিয়ে আমি বাড়িতে চলে আসবো।আমার না বাবু অনেক ভালো লাগে!

--এই পাগলী,কি সব যা তা বলছো?তুমি কোথায় আর আমি কোথায়,সেই খেয়াল আছে তোমার?

আর তাছাড়া তুমি তো নিজেই একটা বাবু।তোমাকে বাবু দিলে তুমি সেটা সামলাবে কি করে?

--না আমি পাড়বো।আর তুমি বললেই আমি চলে আসবো সত্যি।

--না আসা লাগবে না।আর আমি কিন্তু তোমার ভাইয়া হই।আর ভাইয়া হয়ে কি ভাবে বাবু দিব তোমায় আমি?বাবুর জন্য তো বিয়ে করতে হয়।তারপর জামাইয়ের সাথে খাতির করে বাবু নিতে হয়।

--তাহলে তুমি আমায় বিয়ে করে নাও ভাইয়া।

তারপর তুমি আমার জামাই হবে,আর আমি তোমার সাথে খাতির করে একটা বাবু নিব।তারপর না হয় বিয়েটা বাদ করে দিব।

--অবনী,এবার কিন্তু রেগে যাবো আমি!

আর একটা উল্টা-পাল্টা বললে তোমার সাথে আর কোনোদিন আমি কথা বলবো না।

--না,না,ভাইয়া প্লিজ এমন করো না।আমি আর বাবু চাইবো না।

--মনে থাকে যেনো..

--হা,আচ্ছা ভাইয়া আমি এখন যাই।আম্মু বকাবকি করছে মোবাইল টিপছি যে সেই জন্য।আবার রাতে আসবো।

--আচ্ছা যাও,দুপুরে খেয়ে নিও।

--আচ্ছা..

--অবনী,চলে গেলো।আমি অবাক হয়ে অবনীর কথা গুলো ভাবছি!এই টুকু মেয়ে,সে কিনা বাবু চায়।আমাকে বলে আদর করতে।যে কিনা এখনো সম্পর্কের মারপেঁচ বুঝে না,কার কাছে কি চাইতে হয় সেটা জানেন না।সে আমার থেকে বাবু চাইছে।মনে হয় যেনো বাবু কিনতে পাওয়া যায়।

হাসিও পাচ্ছে,আবার কান্নাও পাচ্ছে।

কি রকম রিয়াকশন করবো অবনীর কথায়,সেটাই আমি বুঝে উঠতে পারছি না।তবে মেয়েটা খুব ভালো।

তার সাথে আমার পরিচয় ফেসবুক থেকে।আমি থাকি চিটাগাং,সে থাকে ঢাকাতে।তার বাবা তাকে গেম খেলার জন্য একটা ফোন কিনে দেয়।কিন্তু সে নাকি

কিছুদিন আগে ভুল বসত ফেসবুকটা খুলে ফেলে।তারপর আমার একটা পোস্ট তার সামনে আসে।যেটা দিয়েছিলাম আমি মেয়েদেরকে ডেডিকেট করে।সেখানে সে কি সব হযবরল একটা কমেন্ট করে।

পরে আমি কমেন্ট বুঝতে না পেরে তাকে ইনবক্স করি।

দুইদিন পর সেটার রিপ্লে আসে,যে সে নাকি কিছুই জানেনা ফেসবুকের আগামাথা।উল্টা-পাল্টা চাপ লেগে নাকি কিসব লেখা চলে গেছে মানুষের কাছে।সেভাবেই তার সাথে আমার পরিচয়।

এরপর থেকে রোজ আমাদের কথা হয়।আমি তাকে ফেসবুকের অনেক কিছুই শিখিয়ে দিয়েছি।সে এখন মোটামুটি অনেক কিছুই পারে।এরপর থেকে সে আমাকে মেসেজ করে,আমিও তাকে মেসেজ করি।

তবে কেনো জানি তার বাচ্চা বাচ্চা কথাবার্তা দেখে তার কথার মায়ায় পড়ে যাই।তার কাছেও নাকি আমার কথাগুলো খুব ভালো লাগে।এভাবেই আমরা দুজন দু'জনের প্রতি স্বাভাবিক হয়ে যাই।দুজন বললে ভুল হবে।আমি স্বাভাবিক হয়ে যাই।কারন আমার মধ্যে ম্যাচিউরিটি এসেছে।তার মধ্যে আসে নাই।না হয় তো উপরে কথা গুলো শুনে আপনারা বুঝতেই পারছেন,যে সে এখনো বাচ্চা একটা মেয়ে।সবে মাত্র ক্লাস ফাইভে পড়ে।এভাবেই দিনের পর দিন আমাদের কথা হতে থাকলো।

রাতের বেলায় অবনী লাইনে এসেছে।

খুব কান্না করছিলো লাইনে এসে!

--ভাইয়া আম্মু না আজ আমার খুব বকেছে খাওয়ার জন্য।আমি খেতে চাইনি,তাও জোর করে খাইয়ে দিয়েছে।

--তা তো একদম বেশ ভালো কাজ হয়েছে।না খেলে তো আম্মু বকবেই তাই না?

--ভাইয়া,তুমিও আম্মু পক্ষে কথা বলছো?

থাকবো না আমি একদম।দূরে কোথাও চলে যাবো,বলে ঠুস করে অফলাইনে চলে যায়।

--অবনীর এভাবে অফলাইনে যাওয়া দেখে ভিতরটা মোচড় দিয়ে উঠলো।কি এমন বললাম,যে সে রাগ করে চলে গেলো।এটুকু একটা বাচ্চা মেয়ে,তার ভিতরে কত রাগ বাপরে!সেই রাতে আর আমিও লাইনে থাকলাম না বেশিক্ষণ।কারন কথা বলার মতন কেউ নেই।অবনীই আমার লাইফে প্রথম মানুষ,যার সাথে আমি এতটা কথা বলি।ধুর,সব কিছুর ভিরে পরিচয় টাই দিতে ভুলে গেছি।

(আমি আকাশ,সেটা তো সবাই জানেন।পড়া লেখা অনার্স প্রথম বর্ষ।বাবা-মা,আর একটা ছোট বোন নিয়েই পরিবার আমার।বাকিটা গল্পের সাথে থাকলেই জেনে যাবেন)

আজ তিনদিন অবনী লাইনে আসে না।

ভিতরে একটা চাপা কষ্ট অনুভব করলাম।

মেয়েটার সাথে কথা না বললে কেমন যেনো একটা খারাপ কাগা কাজ করে ভিতরে।সেই খারাপ লাগাটা যেনো কখনোই আমি কাউকে বুঝাতে পারবো না।যদিও সে বাচ্চা একটা মেয়ে।তার উপরে বাজে কোনো ফিলিংস এই কাজ করে না আমার।আর প্রেম ভিত্তিক তো কোনো কিছু না এই।তবুও কেমন যেনো খারাপ লাগে নিজের ভিতরে।তিনদিন খাওয়া দাওয়া ঘুম,কোনোটাই আমার ঠিক মত হয়নি।

সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠেই মেসেঞ্জারে গেলাম।গিয়ে দেখি অবনী মেসেজ করেছে।আত্মাটা যেনো ফিরে এসেছে আমার!সে লিখেছে...

--ভাইয়া কেমন আছো?

--খুব একটা ভালো নেই!খুব খারাপ সময় যাচ্ছে আমার।তুমিও সেদিন আমার উপরে রাগ করে চলে গেলে।এরপর পুরো একা হয়ে গেলাম আমি।

--ভাইয়া সরি,বিশ্বাস করো আমি ইচ্ছা করে এমন করিনি।রাগ করে চলে গিয়েছি ঠিক,কিন্তু পরে আসতে চেয়েছি।তবে আম্মু ফোন হাতে নিতে দেয়নি।কারন আমার না খুব পেটে ব্যথা হয়েছিলো।অনেক কান্নাও করেছি আমি।

--অবনীর কথা শুনে কষ্টের মান টা যেনো আরো দ্বিগুণ হয়ে গেলো।কিন্তু কেনো,সেটা আমি জানি না!তবে আমাকে যে কষ্ট পেলে চলবে না।কারন এটা মেয়েদের জন্মগত রোগ।এটা সব মেয়ের জীবনেই ঘটে।না হলে যে দুনিয়া ধ্বংস হয়ে যাবে।জন্ম নিবেনা আর কোনো মানুষ।

--ভাইয়া,তুমি কথা বলছো না যে?

তুমি কি আমার উপরে খুব রাগ করেছো?

--আরেহ পাগলী মেয়ে,তোমার উপরে রাগ করবো কেনো!আর রাগ করার কি আছে।এটা তো মেয়েদের জন্মগত রোগ।এটাতে রাগ দেখালে নিজেকে মানুষ বলে দাবী করতে পারবো না।

--মেয়েদের জন্মগত রোগ মানে?

--সেটা তুমি এখন বুঝবে না।আরেকটু বড় হও।তখন বুঝতে পারবে।আচ্ছা,এখন বলো তোমার শরীর কেমন?

--হা,ভাইয়া একটু ভালো।তবে খানিক্ষন পর পর পেটে ব্যথা হয়।

--আচ্ছা,যাও রেস্ট করো।

--ভাইয়া আজ তিনদিন পর তোমার সাথে কথা বলতে এলাম,আর তুমি আমায় তাড়িয়ে দিচ্ছো?

--আরেহ পাগলী কি বলছো তুমি এসব!তোমায় তাড়িয়ে দিব কেনো?যেখানে তোমার সাথে কথা বলা আমার জীবনের একটা অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে,সেখানে তোমায় আমি তাড়িয়ে দিব?

--তাহলে যেতে বলছো যে?

--যেতে বলছি কারন এখন তোমার রেস্ট দরকার।

--না,আমি রেস্ট করবো না।আমি তোমার সাথে কথা বলবো।আমার খুব খারাপ লেগেছে তিনদিন কথা বলতে না পেরে।

--অবনীর কথা শুনে ভিতরটা কেমন যেনো আনন্দে ভরে উঠলো।যা মেয়েটাও আমাকে তাহলে মিস করেছে।আচ্ছা বলো,কিন্তু তোমার যদি পেটে ব্যথা আবার হয়?

--হলে হবে,তুমি আছো না,তুমি ঠিক করে দিবে সব।

--মেয়েটার কথা শুনে বুঝতে বাকি রইলো না যে,সে যদি দুনিয়ায় কাউকে বিশ্বাস করতে শুরু করে,সেটা হয়তো আমি।আচ্ছা আচ্ছা ঠিক করে দিব।তবে তোমায় একটা কথা বলবো?

--হা বলো ভাইয়া..

--এই তিনদিন না আমি তোমায় খুব মিস করেছি।তুমি কি আমায় মিস করেছো?

--নাহ একটুও মিস করিনি।

তবে কথা বলতে ইচ্ছে করেছিলো আমার খুব।

--অবনীর কথা শুনে হাসিটা থামাতে পারলাম না।কোনো রিয়াকশন না দিয়ে "ও বলে চুপ করে রইলাম।

কারন হাসি বা কান্না করি,সে তো আর বুঝবে না।

--আচ্ছা ভাইয়া আমি এখম আসি কেমন।দুপুরে আসবো আবার লাইনে।

--আচ্ছা যাও,কিন্তু নাস্তা করে নিও।

--আচ্ছা..

--অবনী সত্যিই এখনো বাচ্চা একটা মেয়ে।

বাচ্চা মেয়েটার প্রতি আমার যতটা টান কাজ করে,আমার বেস্ট ফ্রেন্ড কারোর প্রতিও মনে হয় এতটা টান কাজ করে না।কেমন যেনো হয়ে যাচ্ছি দিনদিন আমি।

রেডি হয়ে কলেজে চলে গেলাম।তিনদিন কলেজে যাইনি।কারনটা হয়তো অবনী।আজ মন একদম ফুরফুরা!একরাশ হাসি মুখে নিয়ে কলেজে চলে গেলাম।ভালোই ভালোই ক্লাস গুলো শেষ করলাম।

ক্লাস শেষ করে বাসায় আসতে যাবো,তখনি

পিছন থেকে আমার বেস্ট ফ্রেন্ড মামুন ডাক দিলো..

--আকাশ দাঁড়া,তোর সাথে একটু কথা ছিলো।

--হা বল..

--তোকে সুমাইয়া ডাকছে ঐ দিকে,গিয়ে দেখ তো কেনো ডেকেছে সে।

--মামুনকে নিয়ে সুমাইয়ার কাছে গেলাম।সে উল্টো দিকে ঘুরে ছিলো।আমি ডাক দিতেই সে পিছন ফিরে গোলাপ ফুল দিয়ে আমায় প্রপোজ করে বসলো!

--আকাশ তোমায় আমি খুব ভালোবাসি!

--সুমাইয়ার কান্ড দেখে চরম পর্যায়ের রাগ উঠে গেলো!

সুমাইয়া আই এম সরি।আমি পারবো না তোমার সাথে এসবে জড়াতে।আমায় ক্ষমা করো তুমি।

--কিন্তু কেনো আকাশ?আমার মধ্যে কিসের কমতি আছে?

--কোনো কিছুর কমতি নেই।তবুও আমি তোমার সাথে এসবে জড়াবো না।

পাশ থেকে মামুন বলে উঠলো..

--আকাশ সুমাইয়া তোকে অনেক লাভ করে..

--মামুন,উকালতি বন্ধ কর।আমি ওর সাথে এসবে জড়াবোনা বলেছি তো জড়াবো না।

--হা,ওর সাথে এসবে জড়াবি কেনো,তোর তো কোচি শরীর চাই।সেটাতো তুই পেয়ে গেছিস।এখন আর স্লিম ফিগারের দরকার নাই তোর।

--কি বলছিস মামুন তুই এটা?মামুনকে অবনীর ব্যাপারে সবটা বলেছিলাম।কিন্তু সে এটা নিয়ে বাজে ইঙ্গিত করলো।মামুন মুখ সামলে কথা বল,না হয় কিন্তু....

--না হয় কিন্তু কি হা?যা সত্যি তাই বললাম।তোর কোচি শরীরের নেশা ধরেছে।না হয় সুমাইয়ার মতন মেয়েকে তুই রিজেক্ট করতি না।

--রাগটা মাথায় উঠে গেলো এবার!

সজোরে এক লাথি মারলাম মামুনের তলপেট বরাবর!

সে সোজা গিয়ে মাটিতে আছড়ে পড়লো।তখনি পিছন থেকে কয়েকজন ছেলে এসে আমায় মারতে শুরু করলো।মেরে আমার শারা শরীর ফাটিয়ে ফেলেছে।

আমি কিছুই বলিনি।চুপচাপ মার খেয়ে মাটিতে বসে রইলাম।চোখের সামনে শুধু অবনীর চেহারাটা ভেসে উঠছে।খালি মনে হচ্ছিলো,তার সাথে এখন কথা বলতে পারলে আমার সমস্ত ব্যথা চলে যাবে।আমার শরীর থেকে রক্ত পড়া এখনি বন্ধ হয়ে যাবে।এসব নিয়ে ভাতবে ভাবতে মাথা ঘুরে মাটির পডে গেলাম

Sponsors of Montasin11
empty
empty
empty

2
$ 0.00
Sponsors of Montasin11
empty
empty
empty
Avatar for Montasin11
3 years ago

Comments

খুবই চমৎকার লেখনি। তরুণ কবি, কথা সাহিত্যক আসিফ আহমদ আলভির প্রতিভা দেখে আমি শিহরিত, অনেক অনেক শুভ কামনা @montasin11

$ 0.00
3 years ago

আমরা করোনার চেয়ে শক্তিশালী 😀😀

$ 0.00
3 years ago

আজ 14 ই ফেব্রুয়ারী বিশ্ব ভালবাসা দিবস। আজ আমি অনেক খুশি যে আমার প্রিয় মানুষের সাথে দেখা করতে যাচ্ছি। তার সাথে আমার ফেসবুকে পরিচয়। আমি কখনো ভাবি নি, যে এরকম ভাবে আমার প্রেম হবে বা এরকমভাবে আমি কাউকে ভালোবাসবো। তার ফেসবুক আইডির নাম সিদরাতুল মুনতাহা। আমি জানতে চাইলে তোমার ডাক না কি..?? সে বলে মুনতাহা, কিন্তু এই নামে শুদু মামার বাড়ির লোকজন ডাকে। আমি একটু আশ্চর্য হয়ে জানতে চাইলাম বাড়িতে কি নামে ডাকে..?? মুনতাহা বলে দেখা হলেই জানতে পাড়বেন।

সত্যি কথা বলতে আমার প্রেম-টেম এর মধ্যে কখনোই ইন্টারেস্ট ছিল না। সিদরাতুল মোনতাহা যখন আমাকে প্রথমে ফেসবুকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট দেয়। তারপর থেকে হাই-হ্যালো দিতে থাকতো আমি কোন রিপ্লাই দিতাম না। তারপর হঠাৎ কী আপনার এত ভাব কেন..?? এরকম বলতে থাকে। তারপর তো কথা বলতেই হয়। তারপর হালকা হালকা কথা হতে হতে এক কালে দেখা যায় যে আমাদের মধ্যে ভাল একটা সম্পর্ক হয়ে যায়। তারপর ধীরে ধীরে এই সম্পর্ক একটি প্রেমে আবদ্ধ হয়ে যায়। ভালোবেসে ফেলি একে অপরকে।

হুমায়ূন আহমেদ স্যার বলেছিলেন....

কারোর চেহারার প্রেমে পড়লে তাকে ভুলে যাওয়া যায়। কিন্তু কারো কথার প্রেমে পড়লে তাকে কখনোই ভুলে যাওয়া যায় না।

আমার অবস্থা হয়ে ছিল ঠিক হুমায়ূন আহমেদ স্যারের এই কথার মতো। আমি তাকে ভুলাতো দূরের কথা আমি তার সাথে কথা না বলেও এক দিন থাকতে পাড়ি না। আমি মুনতাহাকে দেখিনি সে শুধু বলে দেখা হলে দেখে নিয়েন।আমি তার কোন ছবি, বাড়ির ঠিকানা কিছুই পাইনি, সে কিছুই দেয় না, শুধু বলে দেখা হলে সব জানতে পাড়বেন।আমি শুধু জানি সে দশম শ্রেণিতে পড়ে এবং আমাকে চিনে। আমার চাচাতো বোনও মুনতাহার সাথে পড়ে একই ইস্কুলে। আমার চাচাতো বোন মীম। মীমকে বললে হয়ত সব কিছু জানা যেত। কিন্তু মীমকে এগুলি ভুলেও বলা যাবে না। কারন মীম আমাকে খুব ভালোবাসে। অনেক বার বলারও চেষ্টা করেছিল কিন্তু আমি তাকে কোনভাবেই বলার সুযোগ দেইনি। তাই মীমকে কিছু বলা যাবে না। তার অনেক মন খারাপ হবে।

এমন করেই চলছিল আমাদের ভালোবাসা, চ্যাটের মাধ্যমে তারপড় ধীরে ধীরে ফোন কলের মাধ্যমে। আমি মুনতাহা সম্পর্কে কিছু জানতাম ন, আর মুনতাহা আমার সম্পর্কে সকল কিছুই জানত। আমি মাঝে মাঝে অবাক হই সে এত কিছু জানে কিভাবে। সে কি আমার মায়ের সাথে কথা বলে। আমি জানি মায়ের সাথে কথা বলা সম্ভব হবে না। কারন মা কখনোই বাসা থেকে বাহির হয় না, আর মোনতাহা আমার বাড়িতে আসে না। তার পড়েও মনে হয় তাদের মধ্যে কথা হ, তা নয় তো মা ছাড়া আমার কি কি খাবার বা কি রঙ পছন্দ কেউ জানে না। এগুলি সে জানে বুঝতে পাড়ে বলেই আমার তাকে এতো বেশি ভালো লাগে। আমার অনেক খেয়াল করে বলেই হয়ত মুনতাহা কে আর বেশি ভালো লাগে।

একদিন ঘটলো অন্য ঘটনা, যা ঘটবে বলে আমি কখনোই ভাবিনি। আমি রোমে গিয়ে দেখি। আমার খাটের উপর পড়ে রয়েছে একটা নেভি ব্লু রঙের পাঞ্জাবি। আমি পাঞ্জাবীটা না দেখেই মীমকে ডাকতে শুরু করলাম। --মীম মীম..... মী..ম --মীম এসে কিছু বলবে, আমি তাকে কিছু বলতে না দিয়ে রেগে....।। এটা কী..?? আর এটা আমার রোমে আসল কিভাবে। মীম বলে --আমি কি করে বলব এটাতে তো আপনার নাম লিখা। তাই ভাবেছি আপনি হয়তো কাউকে দিয়ে আনিয়েছেন, তাই আপনার রুমে রেখে দিয়েছি। ওহ আচ্ছা তুই যা।

আমি চিন্তায় পড়ে গেলাম কে হতে পাড়ে, কে আমার প্রিয় রঙ জানে। এরকম ভাবতে ভাবতে মীম চলে গেল আর মুনতাহা কল দিল। মোনতাহার কল দরতেই বলে। কি.. অবাক করে দিলাম না....? তখনি আমি বুঝতে পাড়লাম, যে কাজটা মুনতাহা করেছে। কারন মুনতাহা আমার প্রিয় রঙ জানে। আমি বললে এই কাজটা তুমি কিভাবে করলে..?? জবাবে সে বলে কিভাবে করছি, এটা বড় বিষয় না.?? করতে পাড়েছি এটাই বড় বিষয়। আমিও তোমাকে কিছু দিতে চাই, তোমার প্রিয় রঙ বল, আর বাড়ির ঠিকানা দাও। মুনতাহা বলে কিছু দিতে হবে না। দেখা হলে দিয়েন বলে কল কেটে দিল। কেটে দিয়ে সাথে সাথে SMS দিল প্রিয় রঙ নীল।

কাল 14 ই ফেব্রুয়ারি আমরা দেখা করব তাকে অনেক বুঝিয়ে সুঝিয়ে রাজি করালাম। আমি অনেক চিন্তাভাবনা করে দেখলাম, তাকে একটা নীল শাড়ি দেওয়া যায়। কিন্তু আমি কখনো শাড়ি কিনি নাই, আর মীমকে শাড়ি কিনতে নেওয়া যাবে না। মীম অহেতুক অনেক প্রশ্ন করবে, আর অনেক কষ্ট পাবে। আর আমার কোনো মেয়ে বন্ধুও নাই কিন্তু নীল শাড়ি আমাকে কিনতেই হবে। শেষমেষ মাকেই অনেক কষ্ট করে শাড়ি কিনতে নিয়ে গেলাম। মা কে বললাম মা চল তোমাকে একটি শাড়ি কিনে দেই। মা,তো অবাক মা,কে কখনো কোনো শাড়ি কিনে দেইনি, আজ হটাৎ শাড়ি কিনে দিতে চেয়েছি অবাক হওয়ারই কথা। মা কে বললাম যেকোন একটি শাড়ি তুমি পছন্দ করবে তোমার জন্য আর একই ডিজাইনের অন্য আরেকটি শাড়ি নিবে নীল, শাড়ি হবে দুইটা। মা কিছু বলে নাই, কিছু জানতেও চায় নাই। দুটি শাড়ি কিনে নেওয়া হলো। একটি মায়ের আর অন্যটি মুনতাহার। তো আমরা শাড়ি কিনে বাসায় চলে আসলাম।

কিছুক্ষণ পর মীম এসে বলে, ভাইয়া তুমি নাকি আমার জন্য শাড়ি কিনে আনছ, কই দেখি। আমি তখনি বুঝতে পাড়লাম মা কেন দুটি শাড়ি কিনাতে কিছু বলে নাই। মা মনে করেছে মীমের জন্য নীল শাড়িটা কিনেছি। মীম অনেক বিরক্ত করতে থাকে ভাই দেখাও, দেখাও প্লিজ। মীমের অনুরোধে, জোরাজুরিতে বিরক্ত হয়ে তাকে বলেই দিলাম এটা তর জন্য কিনি নাই, অন্য মেয়ের জন্য কিনেছি। মীম যানতে চাইল আন্য মেয়ে মানে, তুমি কি কাওকে ভালোবাস। আমি জুড় গলায় বলে দিলাম হ্যা ভালোবাসি। মীম এই কথা শুনে রুম থেকে কাঁদতে কাঁদতে বেরিয়ে গেল। আমারও খোব কষ্ট হচ্ছিলো তাকে কাঁদতে দেখে। কারন তাকে কখনো কাঁদতে দেখিনি আমি। মীম তার মা বাবার এক মাত্র আদরের মেয়ে, আমিও বাবা মায়ের এক মাত্র ছেলে। আমরা একসাথই মিলে মিসে থাকি, কখনো কাওকে কাঁদতে দেখিনাই। আজ তার কান্না দেখে আমারই কান্না চলে আসছিল.........তার পড়েও আমি তাকে কিছু বলতে যাইনি কারন আমি জানি, তাকে কিছু বলতে গেলে তার কান্না কমবে না বরং বাড়বে।

আজ 14 ই ফেব্রুয়ারী বিশ্ব ভালবাসা দিবস। আমি অনেক খুশি অনেক আনন্দিত যে দীর্ঘ দিন পড় আমরা একে অপরের সাথে দেখা করবো। আমি সকল ভাবে নিজেকে প্রস্তত করে শাড়িটা নিব আর চলে যাব এমন সময় দেখি শাড়িটি নেই। আমারতো রাগে মাথায় আগুন। আমি চিৎকার করে ডাকতে লাগলাম মীম মীম....মীমের কোনো সাড়া নেই। মা এসে জিজ্ঞেস করে কিরে কি হইছে চিৎকার করছিস কেন। আমি বললাম মা মীম কই আর আমার নীল শাড়ি কই। মা বলে কিছুক্ষণ আগেইতো মীম তোর দেওয়া শাড়ি পড়ে চলে গেল। আমি জানতাম মা এমনটাই বলবে কারন মা-তো জানেই না যে শাড়িটা মীমের জন্য কিনি নাই, অন্য কারুর জন্য কিনছি। আমি বিরক্তে মীমের ফোনে কল দিলে চাইলে দেখি ফোন বন্ধ। আমি কি করব কিছু মাথায় আসছে না। আর অন্য দিকে মুনতাহা কলের উপর কল দিয়েই যাচ্ছে।

মীমের উপর রাগ হচ্ছে কিন্তু কিছুই করার নেই। তাই আর কিছু না ভেবে মুনতাহার সাথে দেখা করতে চলে আসি। এসেই দেখি মোনতাহা যেখানে বসে থাকার কথা ছিলো ঠিক সেখানেই বসে আছে নীল শাড়ি পড়ে। শাড়িটা কেমন যেনো চিনা চিনা লাগছে ঠিক আমার শাড়িটার মতো। দূর আমি বুকা নাকি এক শাড়ির মতো অন্য শাড়ি হতেই পাড়ে। আমি মুনতাহা কি না সিওর হওয়ার জন্য কল দিলাম। হে মেয়েটি কল দরছে, তাই আমি শিওর এটা মুনতাহা। আমি এগিয়ে গেলাম আর তাকে বললাম পিছনে তাকাতে। সে পিছনে তাকাতেই আমি অবাক.....। আমি একা দেখব দুঃস্বপ্নও ভাবিনি। আমি এটা দেখার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। আমি পুরাই শকড.........।

চলবে.......চলবে........চলবে.........চলবে...........চলবে

প্রথম_ভাগ

ভালোবাসায়_সব_অন্যায়_গ্রহণযোগ্য।

লিখাঃ সাইফ সরকার

$ 0.00
3 years ago

😃😀😀আন্ডা যে খাও গ্যাচাং কইরা,😓 একবারো কি মায়া হয়না তোমাগো আন্ডার জন্য। দেখছো আন্ডা কিভাবে কাঁদে

$ 0.00
3 years ago

মোখলেছ চাচার নতুন চাকরি হয়েছে স্কুলের দপ্তরী হিসেবে। চাচার কাজ হলো সময় মতো ঘন্টা বাজানো। কিন্তু চাকরি পাওয়ার পরেও চাচার একটা স্বভাব যায়নি সেটা হলো লুঙ্গি পড়ে স্কুলে যাওয়া। হাটে যায় লুঙ্গি পড়ে,মাঠে যায় লুঙ্গি পড়ে মেনে নিলাম কিন্তু স্কুলে ও যায় লুঙ্গি পড়ে এটা বড় বেমানান। যতোই হোক স্কুলে তো সবাই পায়জামা অথবা প্যান্ট পড়ে যায় । সেদিন চাচাকে বললাম: চাচা, তুমি স্কুলে যাচ্ছ লুঙ্গি পড়ে ব্যাপারটা কেমন হয়ে গেল না? চাচা বললো: আরে মারুফ কি করবো বলো। প্যান্ট পড়লে আমার দম বন্ধ বন্ধ লাগে মনে হয় পা দুটো যেন কেউ বেঁধে রেখেছে। আমার মনে একটা কৌতুহল জাগলো। যদি ও চাচার বিয়েতে আমি ছিলাম না।চাচা বিয়েতে ও কি লুঙ্গি পড়েই গেছে? মোখলেছ চাচার বউ জরিনা চাচিকে প্রশ্ন টা করলাম। আমার প্রশ্ন শুনে চাচি তো হাসতে হাসতে অজ্ঞান হওয়ার মতো অবস্থা । চাচীর এমন হাসি দেখে নিজেকে বোকা বোকা মনে হলো। সাধারণ একটা প্রশ্নই তো করেছি এতো হাসার কি আছে? চাচি অনেক কষ্টে হাসি থামিয়ে বললো: শুন মারুফ, তোমার চাচা বিয়ে করতে যাওয়ার সময় ও লুঙ্গি পড়েই গিয়েছিল। আমি প্রথমে বুঝতে পারিনি বর কে? তাই প্যান্ট পড়া লোকের পাশে গিয়ে বসেছিলাম। এটা দেখে চারদিকে কি হাসাহাসি! আরে বাবা আমি কি জানতাম বিয়ের দিন বর লুঙ্গি পড়ে আসবে? চাচি বললো, পরে শুনলাম প্যান্ট পড়া ঐটা ছিল মোখলেছের দুলাভাই এখন অবশ্য আমার ও দুলাভাই। চাচির ঘটনা শুনে আমিও হাসতে শুরু করলাম। যাইহোক ঘটনার কিছুদিন পর হঠাৎ একদিন দেখলাম মোখলেছ চাচা প্যান্ট পড়ে স্কুলে যাচ্ছে। বললাম চাচা হঠাৎ লুঙ্গি রেখে প্যান্ট? চাচা বললো: স্কুলে এক অফিসার আসবে। অফিসারের সামনে লুঙ্গি বেমানান। আমি বললাম: আচ্ছা। ঘটনার তিন দিন পর রাতের বেলা মোখলেছ চাচা আমার বাসায় হাজির। বললাম, চাচা কি ব্যাপার? মোখলেছ চাচা বলল : একটা বিপদে পড়েছি । আমি বললাম,কি বিপদ? চাচা বলল স্কুলের হেডস্যার বলে প্রতিদিন নাকি ডি ও জি সাহেব স্কুলে ভিজিটে আসে। কিন্তু বাবা আমি তো এই ডি ও জি সাহেবকে কখনোই দেখতে পাইনা। অথচ হেডস্যার প্রতিদিন ই বলে । মারুফ শোন, আমার লেখাপড়া কম বলে কি আমি চোখে দেখিনা বড়ো অফিসারকে? আমি বললাম: আচ্ছা চাচা, আমি কাল হেডস্যারের সাথে আলোচনা করবো। চাচা বলল: ঠিক আছে। একটু হেডস্যারকে ভালোভাবে বুঝিয়ে বলবা। বলেই চাচা চলে গেল। চাচা যাওয়ার পর চিন্তা করলাম ডি ও জি অর্থাত DOG কুকুর? সাথে সাথে হেডস্যার কে কল দিলাম। যা ভাবছিলাম সেটাই ! হেডস্যার মোখলেছ চাচাকে অভ্যাস করানোর জন্যই এই DOG সাহেবের কথা বলেছিলেন। স্কুলের মাঠে তো অনেক কুকুর ই ছোটাছুটি করে। হাসতে হাসতে আমার অবস্থা নাজেহাল। স্যারের বুদ্ধিটা ভালোই কাজে দিয়েছে। কাল মোখলেছ চাচাকে বুঝিয়ে বললে হয়তো বুঝতে পারবে। ডি ও জি রম্য গল্প ইয়াছির আরাফাত 25-9-2020

$ 0.00
3 years ago

tomr del ke dowya hoy na.

$ 0.00
3 years ago

amr dileto doya hoi re

$ 0.00
3 years ago

tomr Ponits koto asa.

$ 0.00
3 years ago

what is points?

$ 0.00
3 years ago

no no Cent.

$ 0.00
3 years ago

13 cent matro

$ 0.00
3 years ago

ame akon 1 cent delm...

$ 0.00
3 years ago