ছোটবেলার দিন গুলোর কথা মনে করলে আমরা এক পরম সুখ অনুভব করি ও তৃপ্তি পাই।কারণ আমাদের জীবনের একটা রঙিন অধ্যায় শৈশব।আমাদের সকলেরই খুব ইচ্ছে করে শৈশবের ফেলে আসা দিন গুলি ফিরে পেতে।
শৈশব প্রত্যেকের জীবনের মধুর একটি সময়। শৈশব জীবনের দিন গুলি ছিল দুরন্তপনা, দুষ্টুমি আর সারাদিন ছোটাছুটি করে দৌড়ে বেড়ানোর এক অন্যতম মুহূর্ত। আমার শৈশব যেন আজও আমাকে ডাকে বলে আয়-ফিরে আয়।
সত্যিই আজও বার বার ফিরে যেতে মন চায় ফেলে আসা সেই শৈশবের দিন গুলিতে। মনে পড়ে অবাধে ঘোরা ফেরা আর খেলে বেড়ানো সেই সব দিনগুলির কথা। আপনিও হয়তবা শৈশব শব্দটি পড়েই স্মৃতির পাতায় হাতড়াতে শুরু করেছেন ফেলে আসা সোনালি দিনগুলোকে।
ছোট বেলার অনেক স্মৃতি আজও আমার সামনে ভাসে। ছোট বেলায় বাচ্চাদের সাথে খেলা করা, পুকুরে লাফ দিয়ে স্নান করা, একটুখানি বন্ধুদের সাথে খুনসুটি করা এগুলোর মধ্যে দিয়েই আমার দিন কেটে যেত।
সারাদিন ছুটে বেড়ানো, সন্ধ্যা হলে বাড়ি ফেরা আর মায়ের বকুনি শোনা এগুলো খুব মনে পড়ে। ছোটবেলার স্মৃতিগুলো কখনও ভোলার নয়। সব সময় মনে হয় কতই না ভালো ছিল সেদিনের দিন গুলো। ছোটবেলার স্মৃতি মনে পড়লে মনে অন্য রকম একটা তৃপ্তি আসে।
পিয়ারা গাছের সাথে মোটা দড়ি দিয়ে বাঁধা দোলনা, বর্ষাকালে সোনা ব্যাঙের, ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক, পুকুরের স্বচ্ছ টলমল জলে তাজা কই, শিঙি ও মাগুর মাছ প্রভৃতির মত সুন্দর প্রকৃতি আজও আমাকে হাতছানি দিয়ে ডাকে।
শহরের এই ইট কাঠ পাথরের চার দেয়ালের মধ্যে থেকে যখন হতাশাটা গভীর হয়ে আসে তখন আমি চোখ বন্ধ করলেই দেখতে পাই সেই আমার ছেলেবেলার কাটানো মুহূর্তগুলো। দিগন্তজোড়া সবুজ খোলা মাঠ, নীল আকাশে মুক্ত বলাকার দল, সোনালী ধানের শীষ।
বাতাসে ভেসে আসে রাখালের বাঁশির সুর, মাঝির কণ্ঠে গাওয়া ভাটিয়ালি গান, শৈশবে চুড়ির রিনিঝিনি শব্দ সবকিছু মিলে মিশে একাকার হয়ে যায়। গ্রামের জীবনকে আমি পথের বাঁকে ফেলে এসে শহরের জীবনে যতই খাপ খাওয়াতে চেষ্টা করি ততই ফিরে আসি সেই আমার শিকড়ে। আমার শৈশব, কৈশোর তাড়িত করে আমি এখন মৌলিক জীবনের পথে। আমি আধুনিকতা আর শিকড়ের টানাটানিতে ক্ষতবিক্ষত হয়ে নিস্তেজ হয়ে যাচ্ছি ক্রমশ।
"দিনগুলি মোর সোনার খাঁচায় রইল না, রইল না সেই যে আমার নানা রঙের দিনগুলি" - সত্যিই সেই ছেলেবেলা কে যদি আবার ফিরে পাই কতইনা ভাল হয়। জীবনের এতগুলো বছর পরও মনে হয় ছোটবেলার দিনগুলোই সবথেকে ভালো ছিল।
সে সময় সবাই ভালবাসত, কাছে ডেকে আদর করত। সবাই সুন্দর করে কথা বলত। সেই সময় একটু বাড়ির বাইরে গেলেই মা যেন খুঁজে হয়রান হয়ে যেত। একটুও চোখের আড়াল হতে দিত না। কিন্তু আজ আর সেই দিন নেই। সব কিছুই আজ প্রায় হারিয়ে গেছে সময়ের সাথে সাথে।