ক্রিপ্টোকারেন্সি একধরণের ডিজিটাল সম্পদ যা বিনিময় মাধ্যম হিসেবে কাজ করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। অতিরিক্ত ইউনিট তৈরি নিয়ন্ত্রণ এবং সম্পত্তির স্থানান্তর যাচাই করতে এটি ক্রিপ্টোগ্রাফি ব্যবহার করে এবং লেনদেন সুরক্ষিত করে। ক্রিপ্টোকারেন্সি ডিজিটাল মুদ্রা, বিকল্প মুদ্রা অথবা ভার্চুয়াল মুদ্রা হিসেবেও পরিচিত। ক্রিপ্টোকারেন্সি সিস্টেম বিকেন্দ্রীভূত নিয়ন্ত্রণে চলে যা কেন্দ্রীয় ব্যাংকিং সিস্টেম এবং কেন্দ্রীভূত ইলেকট্রনিক অর্থ ব্যবস্থার বিরোধিতা করে। প্রতিটি ক্রিপ্টোকারেন্সির বিকেন্দ্রীভূত নিয়ন্ত্রণ ব্লকচেইনের (Blockchain) মাধ্যমে কাজ করে। এটি একটি প্রকাশ্য লেনদেন ডাটাবেস যা বিতরণ খাত হিসেবে কাজ করে।বর্তমানে সবচেয়ে বহুল ব্যবহৃত এবং জনপ্রিয় ক্রিপ্টোকারেন্সি হল বিটকয়েন। এছাড়াও মার্কেটে ইথেরিয়াম, লাইটকয়েন, ড্যাশ ইত্যাদি ক্রিপ্টোকারেন্সি রয়েছে যা জনপ্রিয়।
বিটকয়েন কি?
বিটকয়েন হচ্ছে বর্তমান ক্রিপ্টোকারেন্সি দুনিয়ার সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় এবং ব্যবহৃত ডিজিটাল মুদ্রা যা বিশ্বব্যাপী লেনদেনের মাধ্যম হিসেবে পরিচিত। বিকেন্দ্রীভূত ডিজিটাল মুদ্রার মধ্যে বিটকয়েন সর্বপ্রথম কারণ এটি প্রথম যা কোন কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা একক প্রশাসক ছাড়া কাজ করে। বিটকয়েন নেটওয়ার্ক একটি সার্বভৌমিক প্রক্রিয়া যা কোনো মধ্যবর্তী মাধ্যম ছাড়া ব্যবহারকারীদের মধ্যে সরাসরি সঞ্চালিত হয়। বিটকয়েন একজন অজানা ব্যক্তি বা বাক্তি গোষ্ঠী দ্বারা আবিষ্কৃত হয়। আবিষ্কারকের নাম দেওয়া হয় সাটোশি নাকামোটো। এটি খোলা বাজারে ২০০৯ সালে ছাড়া হয়। মাইনিং প্রসেসের মাধ্যমে বিটকয়েন তৈরি করা হয়। এটি বর্তমানে মুদ্রা, পণ্য এবং সেবার বিনিময়ের জন্য ব্যবহার করা হয়। ২০১৫ সালের পরিসংখ্যান মতে প্রায় ১ লাখের বেশি ব্যবসায়ী এবং বিক্রেতা বিটকয়েনকে পেমেন্টের মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করেছে। বিটকয়েন নিয়ে ২০১৭ সালে ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা করা জানতে পারে প্রায় ২,৯ মিলিয়ন থেকে ৫.৮ মিলিয়ন মানুষ ক্রিপ্টোকারেন্সি ওয়ালেট ব্যবহার করেছে, যার মধ্যে অধিকাংশ ব্যাবহারকারী বিটকয়েন ব্যবহার করেছে।
কেন বিটকয়েন এত জনপ্রিয় হচ্ছে?
২০০৯ সালে যখন এটি আবিষ্কার হয়েছিল তখন এর জনপ্রিয়তা এতোটা হবে কল্পনা করা হয়নি। একটি মজার তথ্যমতে আপনি যদি ২০০৯ সালে বিটকয়েনে শুধু ১০০ ডলার বিনিয়োগ করতেন, তাহলে বর্তমানে সেই বিনিয়গের মূল্য হত প্রায় ৩-৪ মিলিয়ন ডলার। এথেকেই বুঝা যায় বর্তমানে ক্রিপ্টোকারেন্সি জগতে বিটকয়েনের মূল্য এবং জনপ্রিয়তা অসীম। বর্তমান বাজার মূল্যে ১ বিটকয়েনের মূল্য ৭ লাখ ৬ হাজার ৫ শত টাকা প্রায়। আজকে আমরা আলোচনা করবো কি কারণে বিটকয়েন এতো জনপ্রিয়। # বিকেন্দ্রীভূতঃ বিটকয়েন নেটওয়ার্কটি কোনো কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় না। প্রতিটি মেশিন যা বিটকয়েন মাইনিং করে এবং লেনদেন প্রক্রিয়া সচল রাখে তা নেটওয়ার্কের একটি অংশ হিসেবে ধরা হয় এবং সব মাইনিং মেশিন একসাথে কাজ করে। সুতরাং তাত্ত্বিকভাবে, কোনো কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষ এই মুদ্রানীতিতে জালিয়াতি করতে পারবে না এবং এর ফলে কোনো দুর্ঘটনাও ঘটার সম্ভাবনা কম। এই সুরক্ষা ব্যবস্থার কারণে মানুষ এতো বেশি পরিমাণে বিটকয়েন ব্যবহার করে।
সহজ সেট আপঃ
সাধারণ ব্যাংক একাউন্টের তুলনায় বিটকয়েন একাউন্ট সেট আপ করা অনেক সহজ। যার নূন্যতম কম্পিউটার এবং অনলাইনে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে তিনি খুব সহজেই বিটকয়েন একাউন্ট খুলতে পারবেন। এই একাউন্ট খোলার জন্য কোনো প্রকার ফি দেওয়া লাগে না। # গোপনীয়তাঃ একজন ব্যবহারকারী একাধিক বিটকয়েন অ্যাড্রেস ধারণ করতে পারেন যেখানে তাদের কোনো নির্দিষ্ট নাম, ঠিকানা কিংবা অন্য ব্যক্তির সাথে সম্পৃক্ত হতে হয় না। সাধারণত প্রতিযোগিতামূলক বাজারে এই ধরণের গোপনীয়তা ডিজিটাল মুদ্রার সিস্টেমে দেখা যায় না। বিটকয়েন প্রথম এতো গোপনীয়তা প্রদানকারী মুদ্রা ব্যবস্থা। এজন্যই সাধারণ জনগণ এবং ব্যবসায়ী এটি ব্যবহার করতে পছন্দ করে।
#স্বচ্ছতাঃ
বিটকয়েন নেটওয়ার্কে সংঘঠিত সকল ধরণের লেনদেনের বিস্তারিত বিবরণ একটি বিশাল সাধারণ খতিয়ানের মাধ্যমে সংরক্ষিত রাখে, যার নাম ব্লকচেইন। এর মাধ্যমে ব্যবহারকারীকে তার লেনদেনের যাবতীয় তথ্য আলাদাভাবে সংরক্ষণ করতে হয় না। বিটকয়েন সিস্টেমে চাইলেই একজন ব্যবহারকারী তার লেনদেনের গতিবিধি দেখতে পারেন, সুতরাং এখানে কোনো ধরণের জালিয়াতির সম্ভাবনা নেই।
কম খরচে লেনদেনঃ
আন্তর্জাতিক মুদ্রা বিনিময়ের জন্য একধরণের ট্র্যান্সফার ফি প্রদান করতে হয় এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে এর জন্য চড়া ফি দিতে হয়। কিন্তু বিটকয়েন এর ক্ষেত্রে অনেক কম খরচে লেনদেন করা যায়। যা এটিকে জনপ্রিয় করার অন্যতম প্রধান কারণ।
দ্রুততাঃ
বিটকয়েন সিস্টেম অনেক দ্রুত কাজ করে। আপনি অর্থ স্থানান্তর করার কয়েক মিনিটের মধ্যে তা পৌছে যাবে অন্য সার্ভারে। বিটকয়েন নেটওয়ার্ক পেইমেন্ট প্রসেস খুব দ্রুতটার সাথে সম্পন্ন করে। এজন্য ব্যবসায়ীরা তাদের প্রাতিষ্ঠানিক লেনদেনের জন্য বিটক