লেখক: Md S@iful Islam (রোমান)
.
.
রাত ২ টার সময় হঠাৎ করেই ঘুমটা ভেঙ্গে গেল, এমনটা কখনো হয়না.. তবে আজ কেন হলো...
মোবাইল টা হাতে নিলাম, এমন সময় তানিয়ার ফোন আসলো...
মোবাইল হাতে ছিল এজন্য সাথে সাথে রিসিভ করলাম....
:-কি ব্যাপার বাবু.. রাত ২টার সময় এক রিং বাজতেই ফোন রিসিভ..?(তানিয়া)
:-আমি ঘুমিয়ে ছিলাম বাবুনি, হঠাৎ করেই ঘুমটা ভেঙ্গে গেল আর তখনি তুমি কল দিছো...
:-আমার ঘুম কেড়ে নিয়ে তুমি শান্তিতে ঘুমাবে, সেটা তো হবে না...
:-ওও তাই বুঝি.. তাহলে আমাকে এখন কি করতে হবে...??
:-আমাকে আদর করে ঘুম পড়িয়ে দিতে হবে...
:-আমি এত দূর থেকে তোমায় আদর করবো কিভাবে...
:-আমি এত কিছু বুঝি না, আদর না পেলে আমি ঘুমাবো না...
:-এই বাবুনি.. পাশের রুমে আব্বু আম্মু আছে, আমি এখন ওটা দিতে পারবো না...
:-ঠিক আছে, তাহলে আমিও ঘুমাবো না.. সারারাত জেগে থাকবো...
:-ঐ না.. রাত জাগলে অসুস্থ হয়ে পড়বে তো, একটু অপেক্ষা করো....
কি আর করার.. এই পাগলী টাকে নিয়ে আর পারি না, যখন যা বলবে তাই পালন করতে হবে.. কিন্তুু পাগলী টা আমায় ভীষণ ভালোবাসে....
এজন্য যে ভাবেই হোক ওর ছোট ছোট চাওয়া পাওয়া গুলো আমি পূরণ করি...
কিন্তুু মজার ব্যাপার হলো আমরা এখনও কেউ কাওকে দেখিনি.. আমাদের পরিচয় টা হয় ফোনের মাধ্যামে....
প্রথমত আমাদের সম্পর্ক টা ছিল শুধু মাত্র বন্ধুত্ব, কিন্তুু একটা ছেলে আর মেয়ের বন্ধুত্বের সম্পর্ক হয়তো বেশি দিন থাকে না.. যোগ হয় ভালোবাসা....
তানিয়া আমাকে মাঝে মাঝে বলে,
:-তুমি আমায় না দেখে এত্ত ভালোবাসো..? আমি কিন্তুু দেখতে খুব পচা...
:-আমি সেই পচা মেয়ে টাকেই ভালোবাসি...
:-আমাকে দেখতে তোমার মন চায় না..?
:-হ্যা.. খুব মন চায়... এজন্য মনের মাঝে তোমার একটা ছবি একে রাখছি, সারাক্ষণ শুধু তোমাকেই দেখি...
:-Love You paglu...
:-Love You 2 pagli...
মুখে যাই বলি না কেনো, পাগলী টাকে দেখতে আমারো মন চায়.. কিন্তুু আমাদের বাসা থেকে ওদের বাসা অনেক দূরে, এজন্য ইচ্ছা থাকলেও দেখতে পারি না....
মেয়েটা ফেসবুক সম্পর্কেও কিছু বোঝে না, এতটায় বোকা মেয়ে...
তানিয়ার ছোট্ট চাওয়া টা পূরণ করে ঘুম পড়লাম...
সকাল ৯ টা বেজে গেছে এখনও ঘুম থেকে উঠিনি, বুঝতে পারলাম কেউ একজন আমার রুমে প্রবেশ করেছে...
এমন সময় ১ গ্লাস পানি এসে আমার মুখের উপর পড়লো...
মাথায় 1000 power এর রাগ নিয়ে বলে উঠলাম...
:-ঐ কে রে...😡😡😡
সাথে সাথে দেখি আমার মামাত বোন তিশা দাত বের করে খিলখিল করে হাসছে....😁😁
:-দাড়া আজ তোর দেখাচ্ছি মজা.....
:-ধরতে পারলে তো মজা দেখাবি...
বলেই দৌড়..🏃🏻
তিশা দৌড়ে গিয়ে আমার মায়ের পিছনে লুকালো, যাহ আমার আর প্রতিশোধ নেওয়া হলো না...
:-কি হলো বাবা.. সকাল বেলায় ঘুম থেকে উঠেই তোদের মাঝে কি শুরু করলি...
:-মা তুমি জানো না, তিশা এক গ্লাস পানি আমার মুখের উপর ঢেলে দেছে...
:-কয়টা বেজে গেছে দেখছিস, আর একটু দেরি হলে তো আমি এক বালতি পানি ঢেলে দিতাম...
:-মা তুমিও না.. সব সময় ঐ হারামি টার দলে....😡😡
:-যা হাত মুখ ধুয়ে খেতে আয়.. তোর মামা রা একটু পরেই বাসায় চলে যাবে...
:-কিি গতকাল এসে আজকেই চলে যাবে..? মামা.. মামা.. কোথায় আপনি...
:-হ্যা বাবা এইতো আমি...
:-মামা.. আপনি গতকাল এসে আজকেই কেনো চলে যাবেন...
:-আর বলিস না.. আমার এক বন্ধু আছে, ওদের ওখানে একটা মেলা বসেছে তাই যেতে হবে...
:-হ্যা বোনের চেয়ে বন্ধু বড় হয়ে গেল..
:-হাহাহা পাগল ছেলে.. কিছুদিন পরে আবার আসবো....
খাওয়া দাওয়া শেষ করে আমার রুমে বসে আছি, এমন সময় আম্মু আসলো...
:-কিরে বাবা.. তোর মামার সাথে মেলা দেখতে যাবি..(মা)
:-মা.. আমি কি এখনো কচি খোকা রয়ে গেছি, যে মামার হাত ধরে মেলা দেখতে যাবো...
:-পিতা মাতার কাছে সন্তান কখনো বড় হয় না...
:-তাছাড়া মামার তার কোন বন্ধুর বাসায় যাচ্ছে যাকে চিনিনা জানিনা.. আমার পক্ষে যাওয়া সম্ভব না...
:-ঠিক আছে তোর যা খুশি তাই কর...
এমন সময় আমার জান পাখির ফোন আসলো, মোবাইল টা নিয়ে ছাদে চলে গেলাম...
:-হ্যা বাবুনি বলো...
:-বাবু.. আমাদের এখানে মেলা বসেছে, যদি তুমি অনুমিত দাও, তাহলে ভাইয়ার সাথে একবার মেলা দেখতে যাবো...
:-এই দাড়াও দাড়াও.. তোমাদের ওখানে মেলা হচ্ছে মানে, তাহলে কি মামা মেলা দেখতে তোমাদের ওখানে যাচ্ছে...
:-কি বলছো কিছুই বুঝলাম না..
:-আমার মামা তার এক বন্ধুর বাসায় যাচ্ছে মধু মেলা দেখতে, আমাকেও যেতে বলছিল কিন্তুু আমি রাজি হয়নি...
:-সত্যি বাবু..? মধু মেলা তো আমাদের বাড়ির পাশেই হচ্ছে... বাবু যে ভাবেই হোক তুমি তোমার মামার সাথে আসো... প্লিজ বাবু....
:-সেটা আগে বলতে পারোনি, আমি তো না বলে দিয়েছি...
:-আমি কি জানতাম আমাদের এখানে তোমার মামার বন্ধুর বাড়ি আছে...
:-হ্যা তা ঠিক.. আমিও জানতাম না, দেখি কিছু একটা করতে পারি কিনা...
রুমে গিয়ে দেখি মামারা চলে যাবার জন্য তৈরি হচ্ছে..
:-ইয়ে মামা.. বলছিলাম কি (আমাকে থামিয়ে দিয়ে মামা বললো)
:-হ্যা তোর মা আমাকে সব বলেছে...
ইসরে.. মা একটু দেরি ও করতে পারলো না, একটা কথা শোনার সাথে সাথেই বলে দিতে হয়...
:-না.. মানে বলছিলাম কি মামা.. (আবারো থামিয়ে দিয়ে বললো)
:-হ্যা আমি বুঝতে পেরেছি, তোর জন্য কিছু নিয়ে আসতি বলবি তাই তো.. ঠিক আছে মেলা থেকে তোর জন্য কিছু একটা নিয়ে আসবো.....
মামা কেনো বুঝতে চাইছে না যে আমি কি বোঝাতে চাচ্ছি.. যে ভাবেই হোক আমাকে যেতেই হবে.....
এমন সময় তিশা বলে উঠলো...
:-ভাইয়া.. তুই ও আমাদের সাথে চল না, দেখিস খুব মজা হবে... প্লিজ ভাইয়া চল.....
তিশার এমন কথা শুনে আনন্দে চোখের কোনে পানি জমে গেল...
:-তুই আমার একমাত্র কলিজার টুকরা আপনের চেয়েও আপন বোন.. তোর এই রিকুয়েস্ট আমি কি ফেলতে পারি বল, ঠিক আছে আমিও তোদের সাথে যাবো...
খুশিতে এখন নাছতে ইচ্ছা করছে, খুব দ্রুত রেডি হয়ে মামা মামি তিশা আর আমি রওনা দিলাম...
সারাদিন গাড়িতে থেকে বিকাল বেলায় আমরা মামার বন্ধুর বাসায় পৌছালাম...
মামাকে পেয়ে মামার বন্ধু তো খুব খুশি, মানুষের দুরত্ব বাড়লেও সত্যিকারে বন্ধুত্ব কখনো নষ্ট হয় না...
সারাদিন গাড়িতে ছিলাম এজন্য এখন Rest নিচ্ছি, এমন সময় তিশা আসলো...
:-ভাইয়া.. তোকে তো একটা কথা বলতে ভুলেই গেছি...
:-কি কথা বল...
:-আংকেল এর খুব সুন্দরী একটা মেয়ে আছে নাম রুপা, তুই যেন আবার তাকে দেখে প্রেমে পড়ে যাসনি...
:-আরে রাখ তোর সোনা রুপা, এমনিতেই আমি হাবুডুবু খাচ্ছি.. তার উপর আবার আংকেল এর মেয়ে...
:-তুই হাবুডুবু খাচ্ছিস মানে...
:-না মানে (ধরা খেয়ে গেলাম রে) থাক তোর এত কিছু বোঝা লাগবে না...
ফেসবুকে ঢুকবো কিন্তুু রুমের ভিতর নেট পাচ্ছে না, তাই মোবাইল টা টিপতে টিপতে ছাদের দিকে যাচ্ছি...
ছাদে গিয়ে তো পুরাই নিস্তব্ধ হয়ে গেলাম...
কে যেনো মাথার চুল গুলো এলো মেলো করে দিয়ে দাড়িয়ে আছে, হালকা হালকা বাতাসে কিছু চুল উড়ে মুখের উপর পড়ছে..
উড়না টা পাশে ফেলে রাখা.. গুনগুন শুরে গান গাচ্ছে আর ফুল গাছে হাত বোলাচ্ছে....
শুনেছি ছাদে ভুত পেত্নি থাকে.. এটা কি মানুষ, নাকি জ্বীন পরী...
জানিনা কতক্ষণ এমন দৃশ্য দেখেছি, হঠাৎ করেই মোবাইলে একটা ম্যাসেজ টোন বেজে উঠলো...
ম্যাসেজ টোন এর শব্দ শুনে মেয়েটা আমার দিকে ঘুরে তাকিয়ে যেন চমকে উঠলো.. সাথে সাথে উড়না টা নিয়ে নিজেকে আড়াল করলো.. হয়তো কিছুটা ভয় ও পেয়েছে...
:-কে আপনি..? আর এ ভাবে চোরের মত ছাদে এসেছেন কেনো..?(মেয়েটি)
:-কিিি..?? আমি চোর..?? ঐ আমি আপনার কি জিনিস চুরি করেছি..?
:-আপনি কিছু না বলে ছাদে এসেছেন কেনো...
:-তাহলে বাহিরে পোস্টার লাগিয়ে দিলে তো পারেন, যে অনুমতি ছাড়া ছাদে যাওয়া নিষেধ...
এমন সময় তিশা ছাদে চলে এসেছে...
:-ভাইয়া তুই এখানে, আর আমি তোকে সারা বাড়ি খুজে বেড়াচ্ছি...
:-এই তিশা.. ছেলেটা কে রে..(মেয়েটি)
:-রুপা আপু.. এই তো আমার ভাইয়া, আর ভাইয়া এই হলো আংকেল এর মেয়ে রুপা...
:-তোর কাছে এই মেয়ে সুন্দরী মনে হয়েছে, এ তো ডাইনীর মত দেখতে...
কথাটা শুনে রুপা তো গরম লুচির মত ফুলে উঠলো...
রেগে গিয়ে রুপা ছাদ থেকে নিচে চলে গেল...
একটু পরের আমার জান পাখি ফোন দিলো...
:-বাবু তুমি এসেছো...(তানিয়া)
:-হ্যা আমি তো এখন মামার বন্ধুর বাসায় আছি...
:-তাহলে কালকে মেলার মাঠে তুমি আসবা..
:-ঠিক আছে তবে আমি তোমাকে চিনবো কি করে...
:-তোমার চেনা লাগবে না, আমি তোমাকে খুজে নিবো...
:-ঠিক আছে.. বাই..
রাতে আমরা সবাই এক সাথে খেতে বসেছি...
আমাদের সাথে ডাইনী টাও মানে রুপা ও আছে...
আমার ওপর প্রান্তের চেয়ারে রুপা...
আর আমি চেয়ারে বসলে পা দুটো সামনের দিকে লম্বা করে দিয়ে বসি...
কেমন করে যানি কার পায়ের সাথে আমার পা লেগে গেছে...
দেখি ডাইনী টা আমার দিকে রাগান্বিত চোখে তাকিয়ে আছে...
বুঝতে পারলাম তাহলে ওটা রুপার পা...
এমন সময় আমার পায়ে এমন জোরে একটা খোচা মারলো, ব্যাথায় আমি উহহ করে চিৎকার দিয়ে উঠলাম...
:-কি হলো রোমান.. চিৎকার দিয়ে উঠলে কেনো..(মামা)
:-পায়ে মনে হয় বিড়ালে কামর দিছে...
:-কোথায় বিড়াল.. এখানে তো কোনো বিড়াল দেখছি না...
:-হয়তো পালিয়ে গেছে..
:-বিড়াল টা খুব বড় ছিল তাই না ভাইয়া..(তিশা)
:-হ্যার তোর মত..
নাহ আর না.. এর প্রতিশোধ যে ভাবেই হোক আমাকে নিতেই হবে...
পরের দিন সকাল বেলায় দ্রুত রেডি হয়ে নিলাম মধু মেলায় যাবো.. কতদিন পর আজ আমার আশা টা পূরণ হবে...
পাগলী টা যেমনি হোক না কেনো, ওকে আমি সারা জীবন ভালোবেসে যাবো...
:-ভাইয়া আমিও তোর সাথে যাবো..(তিশা)
:-আমার একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ আছে, তুই মামা মামির সাথে যাস...
সত্যি মধু মেলায় এক অপরূপ দৃশ্য, হাজার হাজার মানুষের ভিড়...
এই ভিড়ের মাঝে পাগলী টা আমায় খুজে পাবে তো...
ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করে আছি, কিন্তুু এখনও কেউ এসে দেখা দিলো না...
এমন সময় তানিয়ার ফোন আসলো...
:-বাবু দেরি হবার জন্য sorry..(তানিয়া)
:-কোথায় তুমি...
:-আমি কপোতাক্ষ নদের পাশে দাড়িয়ে আছি..
:-ঠিক আছে তুমি ওখানে দাড়াও আমি আসতেছি...
নদের পাশে বেশি মানুষ না, দূর থেকে দেখি সেই ডাইনী টা মানে রুপা এখানে দাড়িয়ে আছে...
এতটায় রাগ উঠলো, রুপা যদি আমাকে তানিয়ার সাথে দেখে.. তাহলে মামার সাথে সব বলে দেবে...
এখন কি করি..
তানিয়ার কাছে কল দিলাম....
কিন্তুু এ কি..? ফোনটা তো রুপার কাছে বাজছে....
তাহলে কি আমি রুপা নামের এই মেয়েকে ভালোবাসি..
আস্তে আস্তে রুপার কাছে গিয়ে দাড়ালাম...
:-রুপা তুমি এখানে কি করছো..?
:-একটা পাগলের আসার অপেক্ষায় আছি...
এবার আমি পুরোটা বুঝতে পারলাম, এই রুপা হলো আমার তানিয়া...
:-তোমাকে এতটা কাছে পেয়েও চিনতে পারলাম না, ওরে পাগলী আমি তোমার সেই পাগল...
:-হ্যা আমি জানি। আমি তোমাকে যখন ছাদে দেখি, তোমার কন্ঠ শুনেই চিনতে পেরে ছিলাম.. কিন্তুু তোমাকে বলিনি....(তানিয়া)
:-তবে তোমার নাম দুটো কেনো...
:-আমার রিয়েল নাম তানিয়া, কিন্তুু বাসায় রুপা বলেই ডাকে...
:-সরি বাবুনি...
:-সরি কেনো.....
:-ঐ যে তখন তোমায় ডাইনী বলে ছিলাম তার জন্য....
:-ঠিক আছে.. এখানে দাড়িয়ে দাড়িয়ে গল্প করবে নাকি কোথাও যাবে...
:-চলো মেলা দেখি..
আমরা হাতে হাত রেখে পথ চলতে শুরু করেছি...
এক সাথে নাগরদোলায় উঠলাম, পাগলী টা ভয়ে আমার হাতটা শক্ত করে চেপে ধরেছিল...
তারপর মিনি ট্রেনে উঠলাম... অবশেষে একটা ঘড়ির দোকানে নিয়ে গেল....
ওর পছন্দ মত একটা ঘড়ি আমার হাতে পড়িয়ে দিয়ে বললো..
:-আমি চায় তুমি যেন সারাক্ষণ আমায় মনে রাখো, যখনি তোমার সময়ের প্রয়োজন হবে তখনি তুমি ঘড়ি দেখবে.. আর ঘড়িটা আমার কথা মনে করিয়ে দিবে... আর এটা তোমার কাছে থাকা মানে আমি তোমার সাথে থাকবো.....
:-তাহলে চলো বাসার দিকে যায়...
আমি ভাবতেও পরিনি তানিয়ার সাথে আমার এমন ভাবে দেখা হবে, আর সব চেয়ে বড় কথা সে আমার মামার বন্ধুর মেয়ে...
:-তানিয়া.. আমি তোমার জন্য কিছু কিনলাম নাতো....
:-আমার কিচ্ছু লাগবে না, আর যেটা আমার লাগবে সেটা তো আমার সাথেই আছে...
:-কি সাথে আছে..
:-তুমি...
রাতে খেয়ে শুয়ে আছি, কিন্তুু ঘুম আসছে না.. সারাটা দিন কি কি করলাম তাই ভাবছি....
ভাবলাম ছাদ থেকে ঘুরে আসি...
পূণিমা রাত.. চাঁদটা একদম মাথার উপরে...
আকাশে লক্ষ লক্ষ তারার মেলা, গাছে গাছে জোনাক পোকা.. এক অপরূপ দৃশ্য...
এমন সময় কেউ একজন আমার কাধের উপর হাত রাখলো, পিছনে তাকিয়ে দেখি তানিয়া...
:-এত রাতে এখানে কি করছো..(তানিয়া)
:-ঘুম আসছে না তাই, কিন্তুু তুমি এত রাতে ছাদে..?
:-আমার মন বললো এখন ছাদে গেলে তোমায় পাবো, তাই চলে এলাম...
:-জানো তানিয়া.. আমি ভাবতেই পারিনি যে এখানে এসে তোমায় এত কাছ থেকে পাবো...
:-সব কিছুই মহান আল্লাহর ইচ্ছায়, তিনি যার ভাগ্যে যাকে লিখে রেখেছেন.. যে ভাবেই হোক তাদের মিলন হবে....
:-তোমার চোখ দুটো বন্ধ করো...
:-কেনো..
:-আহা করো না, তারপর বলছি...
:-ঠিক আছে চোখ বন্ধ করলাম...
একটা ভালোবাসার তাজমহল দেখে খুব পছন্দ হয়ে ছিল, তানিয়াকে না বলে ওটা কিনে ছিলাম.. সারপ্রাইজ দিবো বলে....
ওটা বের করে ওর সামনে ধরলাম.. চাঁদের আলোয় তাজমহল টা ঝিকমিক করছে...
:-এবার চোখ খোলো...
:-wow..এত্ত সুন্দর তাজমহল....?
:-আমার সব ভালোবাসা এই তাজমহল এর ভিতর রেখেছি, আর সেই তাজমহল টায় তোমাকে উপহার দিলাম...
হালকা বাতাসে ওর মাথার এক গুচ্ছ চুল মুখের উপর এসে পড়েছে...
একটা হাত দিয়ে চুল গুলো সরিয়ে আঁলতো করে কপালে একটা ভালোবাসার পঁরশ এঁকে দিলাম...
পাগলী টা লজ্জা পেয়ে আমার বুকের মাঝে মুখ লুকালো...
যানিনা এভাবে কতক্ষণ ছিলাম,
:-তানিয়া.. অনেক রাত হয়ছে ঘরে যাও...
পাগলী টা খুব ভালোবাসে আমায়...
পরের দিন সকাল বেলায় তিশা আসলো আমর কাছে...
:-জানিস ভাইয়া.. গতকাল মেলার মাঠে তোর মত একটা ছেলেকে নাগরদোলায় দেখলাম...(তিশা)
:-মানুষের মত মানুষ থাকতেই পারে...
:-হ্যা তা ঠিক.. তবে ছেলেটার পাশে যে মেয়েটা ছিল, সে দেখতে ছিল রুপা আপুর মত...
এবার আমি শেষ.. তিশা তাহলে সব দেখে ফেলছে....
:-ইয়ে মানে.. তুই আমার লক্ষী বোন না.. তোর যা লাগে আইসক্রীম চকলেট সব কিনে দিবো.... কিন্তুু খবরদার এসব কথা আর কাউকে বলিস না...
:-ঠিক আছে, চকলেট কিনে দিলে আর কাউকে বলবো না...
দুপুর বেলায় তানিয়ার ছোট কাকার বাসায় আমাদের সবার দাওয়াত...
তানিয়ার ছোট মা আমার সাথে দেখি ভালো কথা বলে, ব্যাপার টা বুঝলাম না...
যাই হোক খাওয়া দাওয়া প্রায় শেষ তখন দেখি ছোট মা এক বাটি মাংস এনে আমার প্লেটে ঢেলে দিলো...
একটু খানি না.. বেশ অবাক হলাম...
:-এখন তোমার খাওয়ার বয়স, খাও বাবা.. লজ্জা না করে পেট ভরে খেয়ে নাও.....(ছোট মা)
তারপর ছোট মা আস্তে আস্তে আমাকে বললো...
:-তানিয়া আমাকে সব বলেছে, যে তোমরা একে অপর কে ভালোবাসো.. শুধু মাত্র তোমাকে খাওয়ানোর জন্য এত বড় আয়োজন করেছি....
কথাটা শুনে তানিয়ার উপর একটু রাগ ও হলো, কিন্তুু হাসি ও পাচ্ছে...
বিয়ের আগেই জামাই আদর পাচ্ছি....
পরের দিন সকাল বেলায় হঠাৎ করেই মামা বাসায় যাবার কথা বললো, মামার অফিস থেকে কল এসেছে.. এজন্য আজকেই যেতে হবে....
আমাদের বাসায় যাবার কথা বলার পর তানিয়ার সাথে একটি বার ও দেখা হয়নি...
কোথায় যে গেল পাগলী টা, বাসায় যাবার আগে যদি একটি বার ওর মুখটা দেখে যেতে পারতাম....
ছাদে গিয়ে দেখি সেখানেও নেই...
সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে যাচ্ছি, আমার মনে হচ্ছে আমার কলিজা টা এখানে রেখে যাচ্ছি....
শেষ বারের মত পাগলী টাকেও দেখতে না পাওয়ার কষ্ট....
এমন সময় ছোট মা পিছন থেকে ডাক দিলো...
:-বাবা রোমান..(ছোট মা)
:-জ্বি ছোট মা..
:-তোমার চশমা টা মনে হয় ভুল করে আমাদের বাসায় ফেলে যাচ্ছো, ওটা নিয়ে যাও...
মামাকে বললাম তোমরা যাও আমি চশমা টা নিয়ে আসি...
রুমে ঢোকার সাথে সাথে তানিয়া আমায় জড়িয়ে ধরে ফুপিয়ে ফুপিয়ে কান্না করতে লাগলো....
:-তুমি এখানে.. আর আমি তোমাকে সারা বাড়ি খুজেছি...
:-তোমার চলে যাওয়া যে আমি দেখতে পারছি না...
ইস্্ পাগলী টা কান্না করতে করতে চোখ দুটো লাল করে ফেলছে, ওর চোখের পানি মুছে দিয়ে বললাম..
:-আরে আমি আবার আসবো, তবে এবার এসে তোমায় বধু করে নিয়ে যাবো....
:-আমি তোমার অপেক্ষায় রইলাম....
:-বাহিরে মামারা আমার জন্য অপেক্ষা করছে, এখন আমি আসি...
:-এই শোনো...
তানিয়া আমার মাথাটা নিচের দিকে টেনে নিয়ে কপালে একটা ভালোবাসার ছোঁয়া দিলো...
:-সাবধানে যেও.. নিজের খেয়াল রেখো.. আর
:-আর আমার পাগলী টাকে বেশি বেশি মিস করবো তাই তো...
:-হুম...
এ কোন বাধনে জড়ালে আমায়..
পারছি না যে ফিরে যেতে আর...
ভেবো নাকো ওগো তুমি..
ভালোবাসি শুধু তোমায় আমি....
_____\\\_সমাপ্ত
Thanks for coments. Stay with me i will always support you😍😘 love you guys.