সুন্দরবনে চার দিনে তিন ব্যক্তিকে বাঘে লইয়াছে। আমপানের পর হইতে এ যাবৎ বাঘের আক্রমণে যত মৃত্যু ঘটিয়াছে, তাহা গত বৎসরে বাঘের আক্রমণে মোট মৃত্যুর সংখ্যাকে ছাড়াইয়াছে। বাঘেরা হিংস্রতর হইয়া উঠে নাই, মানুষই জীবিকার খোঁজে বাঘের মুখে পড়িতেছেন। বন দফতরের সতর্কবার্তা অগ্রাহ্য করিয়া অনেকে কাঁকড়ার খোঁজে গভীর জঙ্গলে ঢুকিতেছেন। সুন্দরবনের মৎস্যজীবীরা জানাইয়াছেন, আমপানের পর নদীর জল অত্যন্ত লবণাক্ত হইয়াছে, মাছ মিলিতেছে না— কাঁকড়াই ভরসা। জীবিকার এমন সঙ্কট যে দেখা দিবে, তাহা অজানা ছিল না। আমপানের পূর্বাভাস মিলিবার সময় হইতেই বার বার আলোচিত হইয়াছে। কিন্তু ঝড়ের তিন মাস পরেও সরকারের ঝুলিতে দিবার মতো আছে কেবল একশত দিনের কাজ এবং রেশনের চাল। চাষের জমিতে বিকল্প ফসল, পুকুরগুলিকে লবণমুক্ত করিয়া ফের মৎস্যচাষ, প্রাণিপালন, মহিলাদের বৃত্তিমুখী প্রশিক্ষণ ও নিযুক্তি, এ সকলই গালভরা পরিকল্পনা হইয়া রহিয়া গিয়াছে। অগত্যা দলে দলে মানুষ সুন্দরবন হইতে পাড়ি দিতেছেন ভিন্রাজ্যে। সংবাদে প্রকাশ, অন্তত দশ হাজার মৎস্যজীবী সুন্দরবন হইতে ওড়িশা, অন্ধ্রপ্রদেশ ও তামিলনাড়ুতে চলিয়া গিয়াছেন। অন্যান্য জীবিকায় নিযুক্ত আরও কত ব্যক্তি অন্য রাজ্যে গিয়াছেন, কত জন কলিকাতার উড়ালপুলের নীচে সংসার পাতিয়াছেন, গ্রামবাসী হইতে পথবাসী বা বস্তিবাসীতে পরিণত হইয়াছেন, তাহার হিসাব নাই। পরিযায়ী শ্রমিকদের নথিভুক্তির কথা পঞ্চায়েতের। কিন্তু পঞ্চায়েত যদি গ্রামবাসীর খোঁজ রাখিত, তবে তাঁহাদের গ্রাম ছাড়িতে হইত কি?
10
36
Thank you sharing your important article