মালদ্বীপ

0 23
Avatar for MasudRanaPro
4 years ago

মালদ্বীপ ভারত মহাসাগরে অবস্থিত দক্ষিণ এশিয়ার ভারতের দক্ষিণ-পশ্চিমে একটি দ্বীপরাষ্ট্র।১৯৬৫ সালের ২৬ জুলাই দেশটি ব্রিটিশদের কাছ থেকে পূর্ণ স্বাধীনতা লাভ করে।এর আয়তন ২৯৮ বর্গকিলোমিটার। এটি এশিয়ার সবচেয়ে ছোট দেশ।১২০০ এর বেশি ছোট ছোট দ্বীপ নিয়ে দেশটি গঠিত।এর মধ্যে মাত্র ২০০ টি দ্বীপ বাসযোগ্য। এর রাজধানীর নাম মালে।এই দেশটি দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক জোট সার্ক এর সদস্য।এটি বিশ্বের সবচেয়ে নিচু দেশ।সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর সর্বোচ্চ উচ্চতা মাত্র ২.৩ মিটার এবং গড় উচ্চতা ১.৫ মিটার।

নামকরণঃ মালদ্বীপের নামকরণ নিয়ে যথেষ্ট মতভেদ লক্ষ করা যায়।শ্রীলঙ্কার প্রাচীন সাহিত্যে মালদ্বীপকে বলা হয়েছে 'মহিলা দ্বীপ' বা নারীদের দ্বীপ। আবার আরব পর্যটক ইবনে বতুতা এ দ্বীপকে বলেছেন 'মহল দ্বীপ' বা রাজপ্রাসাদের দ্বীপ। মূলত 'দ্বীপ' একটি সংস্কৃত শব্দ আর 'মাল' শব্দটি দেশটির রাজধানীর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ তাই এই দ্বীপপুঞ্জের নাম মালদ্বীপ বলে উল্লেখ করা হয়।

জনসংখ্যা ও ভাষাঃ মালদ্বীপের জনসংখ্যা ৫১৫,৬৯৬।শতকরা ১০০ ভাগ মুসলমান। ধীবেহী এই দেশের সরকারি ভাষা।এছাড়াও এখানে সিংহলি,আরবি এবং বিভিন্ন ভারতীয় ভাষার প্রচলন আছে।আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও পর্যটন শিল্পে ইংরেজি ভাষা ব্যবহার করা হয়।

প্রশাসনিক অঞ্চলঃ মালদ্বীপের প্রশাসনিক অঞ্চল বলতে বুঝানো হয় সরকারের বিভিন্ন স্তরকে যাদের নিয়ে মালদ্বীপের স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা।বিকেন্দ্রীকরণ প্রবিধান ২০১০ অনুসারে মালদ্বীপের প্রশাসনিক অঞ্চল অ্যাটোল(লেগুন ঘেরা প্রবালদ্বীপ), দ্বীপ এবং নগরে বিভক্ত; প্রতিটি প্রশাসনিক স্তর নিজস্ব পরিচালনা পরিষদ দ্বারা পরিচালিত হয়,যা স্বায়ত্ত্বশাসন পদ্ধতির অধীনস্থ। প্রশাসনিকভাবে মালদ্বীপে বর্তমানে ১৮৯ টি দ্বীপ, ১৯ টি অ্যাটোল এবং ২ টি নগর রয়েছে।

রাজনীতিঃ দেশটিতে বর্তমানে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ব্যাবস্থা বিদ্যমান।প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন সরকারপ্রধাণ।প্রেসিডেন্টই ক্যাবিনেট মন্ত্রীদের নিয়োগ দেন এবং তিনি হচ্ছেন তাদের প্রধাণ।প্রেসিডেন্ট পাঁচ বছরের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত হন।তবে দেশটিতে অমুসলিমদের কোন ভোটাধিকার নেই।

প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাঃ ক্ষুদ্র হলেও দেশটিতে আছে নিজস্ব প্রতিরক্ষাব্যবস্থা।দ্য মালদ্বীপ ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোর্স নামে তাদের একটি যৌথ প্রতিরক্ষা বাহিনী আছে।এই বাহিনীর মূল কাজ দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা।

অর্থনীতিঃ প্রাচীনকাল থেকেই সামুদ্রিক মাছ হচ্ছে দেশটির অর্থনীতির মূলভিত্তি। তবে বর্তমানে দেশটি পর্যটন শিল্পেও যথেষ্ট উন্নতি করেছে। দেশটির সবচেয়ে বড় শিল্প এখন পর্যটন।মোট আয়ের ২৮ শতাংশ এবং মোট বৈদেশিক আয়ের ৬০ শতাংশই আসে পর্যটন শিল্প থেকে।গত এক দশক যাবত দেশটির জিডিপি'র প্রবৃদ্ধি গড়ে ৭.৮ শতাংশের বেশি।

মালদ্বীপের সৌন্দর্যঃ নৈসর্গিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি,স্বর্গের দ্বীপ,প্রকৃতির কন্যা,সৌন্দর্যের রানি,পৃথিবীর অন্যতম নয়নাভিরাম ও অপরূপ রূপের দেশ মালদ্বীপ।বিধাতা যেন এখানে দুই হাত ভরে প্রকৃতির রূপে কল্পনাতীত ভাবে সাজিয়েছেন। যা দুনিয়াজোড়া মানুষকে মুগ্ধ করে ও টানে।মালদ্বীপের মূল আকর্ষণ হলো এর সরল,শান্ত ও মনোরম পরিবেশ,আদিম সমুদ্র সৈকত ও ক্রান্তীয় প্রবাল প্রাচীর।এখানকার সমুদ্রের রং অতি পরিষ্কার,পানির রং নীল,বালির রং সাদা।ছোট ছোট দ্বীপগুলো যেন নানান রঙের মাছের অ্যাকুরিয়াম।জলরাশির দিগন্তজোড়া সমুদ্রবক্ষ,সমুদ্র গর্জন,বায়ু প্রবাহ যেন তাদের নিজস্ব কণ্ঠস্বর ক্ষণে ক্ষণে পরিবর্তন করে পর্যটকদের অশান্ত মনকে শান্ত করে।এখানে রয়েছে সাবমেরিনে করে সমুদ্রের তলদেশে ভ্রমণের সুযোগ।

অপার সৌন্দর্যে সমৃদ্ধ দেশ হওয়া সত্ত্বেও সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা কম হওয়ার কারণে এই দ্বীপরাষ্ট্রটির সমুদ্রগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে।তাই নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার্থে জলবায়ু পরিবর্তনের ব্যাপারে বিশ্ববাসীর নজর কাড়তে পানির নিচে মন্ত্রীসভার বৈঠক করেছে তারা।

1
$ 0.01
$ 0.01 from @TheRandomRewarder
Avatar for MasudRanaPro
4 years ago

Comments