দুই বারের চ্যাম্পিয়ন কলকাতা নাইট রাইডার্স টুর্নামেন্টে অভিযান শুরু করবে আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর। প্রতিপক্ষ গতবারের চ্যাম্পিয়ন মুম্বই ইন্ডিয়ান্স।
কুন্তল চক্রবর্তী, নয়াদিল্লি: আর মাত্র কয়েকটা দিনের অপেক্ষা। সমস্ত সংশয়ের অবসান ঘটিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে শুরু হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে আকর্ষণীয় টি ২০ লিগ আইপিএলে আটটি দলের টক্কর। আট ফ্র্যাঞ্জাইজি দলই ইতিমধ্যেই সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে পৌঁছে গিয়েছে। বিদেশের মাঠে ভারত সেরার লড়াইয়ের শেষপর্বের প্রস্তুতি এখন তুঙ্গে। দুই বারের চ্যাম্পিয়ন কলকাতা নাইট রাইডার্স টুর্নামেন্টে অভিযান শুরু করবে আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর। প্রতিপক্ষ গতবারের চ্যাম্পিয়ন মুম্বই ইন্ডিয়ান্স।
কলকাতা নাইট রাইডার্সের এবারের দল কেমন
দিল্লি ক্যাপিটালস, কিংস ইলেভেন পঞ্জাব, রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর, মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের মতো দলগুলিতে রয়েছেন একাধিক ভারতীয় তারকা ক্রিকেটার। কিন্তু নাইট শিবিরে একমাত্র কুলদীপ যাদব ছাড়া সেই অর্থে তারকা ভারতীয় ক্রিকেটার নেই। দল গঠনের ক্ষেত্রে কেকেআর আস্থা রেখেছে, এমন খেলোয়াড়দের ওপর, ২০ ওভারের ক্রিকেটটা যাঁদের অন্যান্যদের তুলনায় কম জানা নেই। অর্থাত্, খেলোয়াড়দের কার্যকরী ভূমিকার ওপরই আস্থা রেখেছে নাইট শিবির।
এবার কলকাতা নাইট রাইডার্স দল কেমন হল তার বিশ্লেষণ করার আগে দেখে নেওয়া যাক ২৩ সেপ্টেম্বর প্রথম ম্যাচে সম্ভাব্য প্রথম ১১ ক্রিকেটার কারা হতে পারেন।
প্রথম একাদশে সবচেয়ে বেশি চার বিদেশী ক্রিকেটার থাকতে পারেন। নাইট শিবিরে রয়েছেন একাধিক তারকা বিদেশী ক্রিকেটার। দলের ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটাররা সংযুক্ত আরব আমিরশাহীতে ১৭ সেপ্টেম্বর রাতে পৌঁছবেন। প্রথমে জানা গিয়েছিল যে, ওই ক্রিকেটাররা ছয়দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকার পর মাঠে নামতে পারবেন। কিন্তু পরে জানা গেছে, তাঁরা দলের প্রথম ম্যাচে খেলতে পারবেন। সেই হিসেবে দলের সমস্ত খেলোয়াড়রাই ফিট ধরে নিয়ে প্রথম এগারোয় চার বিদেশী ক্রিকেটার হতে পারেন-আন্দ্রে রাসেল, সুনীল নারাইন, ওইন মর্গ্যান ও প্যাট কামিন্স। বাকি সাতজন ভারতীয় ক্রিকেটার হিসেবে দলে থাকতে পারেন অধিনায়ক দীনেশ কার্তিক, কুলদীপ, শুভমন গিল, নীতীশ রানা, প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ, রিঙ্কু সিংহ, রাহুল ত্রিপাঠী বা সিদ্ধেশ লাড। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে যাঁর ব্যাটিং গড় ৬৩-র বেশি।
এবার দেখে নেওয়া যাক ২০ ওভার বোলিং কারা করবেন। নাইট শিবিরে বোলিং আক্রমণের দায়িত্ব থাকবেন মূলত প্যাট কামিন্স, কুলদীপ, রাসেল, সুনীল নারাইন, কৃষ্ণ। কোনও বোলারের অফ ফর্ম থাকলে হাত ঘোরানোর জন্য রয়েছেন , সিদ্ধেশ লাড ও নীতীশ রানারা।
নাইড ব্রিগেটের প্রথম একাদশে রয়েছে ম্যাচ উইনারের ছড়াছড়ি। এবার বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান রাসেলকে তিন নম্বরে নামিয়ে নাইট শিবির পরীক্ষা করে দেখতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে। ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ততম ফর্ম্যাটে রাসেল যদি একা ৬০ বলও খেলতে পারেন, তাহলে ব্যাটিং-বিক্রমে প্রতিপক্ষকে ছারখার করে দিতে পারেন।
বর্তমানে বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম দ্রুত গতির বোলার কামিন্স। এবারের আইপিএলে সবচেয়ে দামী খেলোয়াড়ও তিনি। গতির আগুনে বিপক্ষের ব্যাটিং অর্ডারে আঘাত হানতে সিদ্ধহস্ত এই অসি ফাস্ট বোলার। আইপিএলে নিজেকে প্রমাণ করতে স্বাভাবিকভাবেই মুখিয়ে থাকবেন তিনি। দলে থাকছেন মর্গ্যান, কুলদীপ, নারাইনের মতো জেনুইন ম্যাচ উইনার। নিজেদের দিনে একার হাতে বিপক্ষকে টক্কর দেওয়ার ক্ষমতা তাঁরা রাখেন। কার্তিক ও তরুণ শুভমন গিলও টি ২০ তে যথেষ্ট বিপজ্জনক। আইপিএলে বিগত কয়েক বছর ধারাবাহিকভাবে দুরন্ত পারফর্ম করেছেন নীতীশ রানা। এই বিচারে ভারতীয় দলের বাইরে থাকা ক্রিকেটারদের মধ্যে আইপিএলে ধারাবাহিতকায় যাঁরা এগিয়ে রয়েছেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম রানা।
নাইট শিবিরের রিজার্ভ বেঞ্চ
প্রথম একাদশের বাইরেও নাইট দলে রয়েছেন একাধিক ম্যাচ উইনার। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ইংল্যান্ডের ওপেনার টম ব্যান্টন, কিউয়ি ফাস্ট বোলার লকি ফার্গুসনের মতো বিদেশি। এছাড়াও রয়েছেন কমলেশ নাগারকোটি, শিবম মাভির মতো তরুণ তুর্কি এবং বরুণ চক্রবর্তীর মতো মিস্ট্রি স্পিনার। সবমিলিয়ে শাহরুখ খানের নাইট রাইডার্স রীতিমতো তৈরি দল। বিশেষজ্ঞ মহলের অনুমান, খেতাবি লড়াইয়ে মুম্বই, চেন্নাই সুপার কিংস বা আরসিবি-র মতো দলগুলির চেয়ে কোনও অংশ পিছিয়ে থাকবে না নাইট রাইডার্স।
নাইট রাইডার্সের দুর্বলতা
নাইট শিবিরে দুর্বলতা বলতে অতিরিক্ত রাসেল নির্ভরতা। এর আগে রাসেল তাঁর একক ক্ষমতায় প্রায় হেরে যাওয়া ম্যাচ বারবার বের করে এনেছেন। কিন্তু তাঁর ওপর মাত্রাতিরিক্ত নির্ভরতা দলের পক্ষে ক্ষতিকারক হয়ে উঠতে পারে। বিগত সিজনে বেশ কয়েকটি ম্যাচে চাপের মুখে প্রতিশ্রুতিমান তরুণ ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতা নাইট শিবিরের মাথাব্যাথার কারণ হয়ে উঠতে পারে। এরমধ্যে এবার মরু শহরের পিচ নিয়ে সংশয় রয়েছে। পিচ স্লো হলে যদি রাসেল-ম্যাজিক না চলে, তাহলে কী হবে! তাই নাইটদের রাসেল-নির্ভরতা কাটাতে হবে।
কলকাতা নাইট রাইডারস আইপিএলের অন্যতম একটি দল।আমি কলকাতা নাইটরাইডারসের সাপোর্টা। তাদের দলের ক্রিস লিনকে অনেক ভালো লাগে