কালকেতুর উপাখ্যান নাম টা কেমন যেন শোনাচ্ছে।কিন্তু আমরা কি জানি এটা কি??এটা একটা চণ্ডীমঙ্গল কাব্য।মধ্যযুগের কবি শ্রী মুকন্দরাম চক্রবর্তী এই চণ্ডীমঙ্গল কাব্যটি রচনা করেছেন। এই কাব্যের মূলবিষয়বস্তু হচ্ছে দেবী চন্ডীর প্রতিষ্ঠা। মধ্যযুগে অনেক কবিই মঙ্গল কাব্য রচনা করেছেন।যেমনঃভারতচন্দ্র রায়গুনাকর এর 'মানসিংহ-ভবানন্দ উপাখ্যান।'এটি একটি অন্নদামঙ্গল কাব্য।মূলত চন্ডী,অন্নদা,অন্নপূর্ণা, কালি,গৌরি,পার্বতী,সতী,দূর্গা একই দেবী।স্থান ও ঘটনা ভেদে আলাদা নামকরণ করা হয়েছে। কালকেতুর উপাখ্যান তেমনই(আক্ষেটিক) চণ্ডীমঙ্গল কাব্য। আক্ষেটিক বিষয়টা হচ্ছে যে কাব্যে দেবলোক ও মর্ত্যলোকের কাহিনী থাকবে সেটাই আক্ষেটিক কাব্যের অন্তর্ভুক্ত।
এই কাব্যের রচনা কেন হয়েছে এবং কিভাবে দেবী চন্ডীর প্রতিষ্ঠা হয়েছে তার বর্ণনাই এখন বলবো।
গৌরির পিতা গৌরির স্বামী শিবের অনিষ্টকরার জন্য যজ্ঞ করেন।একথা গৌরি জানতে পারলে দেহ ত্যাগ করেন।তারপর শিব গৌরির শোকে দজ্যান এ বসে যায়। তারপর আবার গৌরি পিতা হিমালয় এর ঘরে পার্বতী নাম নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। পার্বতীর বিয়ের বয়স হলে সে আবারো শিবকেই তার স্বামী হিসেবে পেতে চায়।কিন্তু শিব ধ্যানে থাকার জন্য পার্বতীকে গ্রহন করতে চায় না।শিবের ধ্যান ভাংাতে প্রেমের দেবতা মদন কে পাঠানো হলে শিব রেগে গিয়ে মদন কে ভষ্ম করে দেন।অতপর শিব ও পার্বতীর বিয়ে হয়। বিয়ের পর তারা বাবার গৃহেই বসবাস করতে থাকে এবং গণেশ ও কারতীক জন্মগ্রহণকরে। একসময় পার্বতীর সাথে তার মা মেনুকার বনিবনা না হলে তারা কাশিতে চলে আসে এবং পার্বতী নতুন নাম গ্রহণ করে দূর্গা,চন্ডী,কালি নামে।তখন দেবীকে শুধু পশু পাখিরায় পূজা করত তাই দেবী চাইলেন মানুষের পূজা নিয়ে স্বর্গ আহরণ করবেন।কিন্তু কোনো দেবী বা দেবতা কে স্বর্গ আহরণ করতে হলে আগে স্বরগের কোনো সদস্যকে অভিশাপ দিয়ে পৃথিবীতে পাঠাতে হত এবং তার দ্বারা পৃথিবীতে উক্ত দেবীর পূজা করিয়ে পৃথিবীর মানুষকে পুজা করালে দেবী বা দেবতা স্বরগে প্রতিষ্ঠা হতে পারবে। তাই দেবী কৌশলে ইন্দ্র দেবের পুত্র নীলাম্বর এর পূজার ফুলে একটা পোকা হয়ে বসে এবং নীলাম্বর অই ফুল দিয়ে শিবের পূজা করতে গেলে দেবী শিবকে দংশন করে এবং শিব নীলাম্বর কে অভিশাপ দিয়ে পৃথিবীতে পাঠায়।দেবী কৌশল গ্রহণ করেছে কারণ শিব বিনা অপরাধে নীলাম্বরকে অভিশাপ দিতে চায় নি।
তারপর নীলাম্বর পৃথিবীতে কালকেতু নাম গ্রহণ করে জন্মগ্রহণ করে এবং নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে চণ্ডীদেবীকে প্রতিষ্ঠা করে।
বিঃদ্রঃ এসব কিছুই আমার মনগড়া কাহিনি না।তথ্যসূত্র(কালকেতু উপাখ্যান-মুকুন্দরাম চক্রবর্তী)
আমি আপনাকে সাবসক্রাইব করেছি। আমকেও সাবস্ক্রাইব করবেন।