Basor

0 13

♥বাসর♥

পর্ব----১

ছি, হুজুর মানুষ এতো খারাপ আপনি হুজুর হয়ে একটি মেয়ের গায়ে হাত দিতে লজ্জা লাগেনা,,,,,,,,,,,,,,,,,,

বাসর রাতের পরে সকাল বেলা চা নিয়ে এসে টেবিলে রেখে তামান্না কে ডাকার জন্য গায়ে হাত দিলাম, ধরমর করে বিছানা থেকে উঠে চোখ বড় বড় করে বললো, ছি হুজুর মানুষ এতো খারাপ আপনি হুজুর হয়ে একটা মেয়ের গায়ে হাত দিতে লজ্জা করে না?

আমিঃ তোমার জন্য চা নিয়ে এসেছি তাই তোমাকে ডাকলাম, টেবিলে চা রাখা আছে।

তামান্নাঃ আমি আপনা কে কাল রাতে তুমি করে বলতে বাধা করিনি তবুও আপনি আমাকে তুমি করে বলতেছেন, আর হাঁ আমি চা খাবো না নিয়ে যান।

আমিঃ তোমার ,,,,,,,,,,,,, ও সরি আপনার কি শরীর খারপ লাগতেছে?

তামান্নাঃ না আপনি যানতো। আমি কথা না বাড়িয়ে চুপচাপ ঘর থেকে বড়িয়ে গেলাম।

আমি আবির হোসেন , আমার পড়া শুনার সমাপনি চলতি বৎসর কোরবানির ছুটিতে বাড়িতে এসে শুনতে পাড়ি যে আমার বিয়ে ঠিক হয়েছে, তখন আল্লাহর রাসুলের হাদিস স্বরণ হলো তুনি বিবাহের জন্য উৎসাহিত করেছেন তো আমার বিবাহ করতে ক্ষতি কি? আমি খুসি হয়ে রাসুলের হাদীস মনে করতে লাগলাম।

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহিসালাম ইরশাদ করেন। হে যুব সম্প্রদায়! তোমাদের মধ্যে যার বিবাহের সামর্থ্য আছে সে যেন বিয়ে করে নেয়। কারন বিবাহ দৃষ্টি আবনত করা ও লজ্জাস্থান। সংরক্ষণের পক্ষে আধিকতর সহায়ক এবং

যে সামথ্যেের অধিকারি নয় সে যেন রোজা রাখে। কেননা রোজা তার পক্ষে নিবির্য করন স্বরুপ।

গত কাল শুক্রবার জুমার নামাযের পর আমাদের বিবাহ হয়েছে,,,,,,,,

দ্বীর্ঘ দশ বছর যে রাতটার অপেক্ষায় ছিলাম আজ তা পুর্ণ হবে জেনে অন্তরে আনন্দের জোয়ার বইছে।

বিভিন্ন ফুলের সুবাসে মোহিত চারদিক , গোলাপের পাপড়ি ছিটানো বিছানার উপর নববধূ সাজে সজ্জিত এক যুবতি বসে অপেক্ষার প্রহর গুনছে,

বুক ভরা আনন্দ ও খুসি নিয়ে সালাম দিয়ে বাসর ঘরে ঢুকলাম , কোনো উত্তর নেই খাটের কাছে যেতেই এক মিষ্টি শুরে করকষ মিশানো কথা শুনলাম।

তামান্নাঃ খাটে বসে গল্প করতে পারবেন কিন্তু এক সাথে ঘুমানোর অনুমতি নেই।আর আমি এমনিতেই হুজুরদের পছন্দ করি না ( যদিও আমার বাবা হাজী) আমিতো হুজুর কে বিয়ে করতে জীবনেও রাজি ছিলাম না।

আমি বললাম তোমার মাথায় হাত রেখে একটা দোআ পড়বো অনুমতি দিবে?

তামান্নাঃ না আর আপনি আমাকে তুমি করে বললেন না কোন হুজুর মানুষ আমাকে তুমি করে বলুক তা আমার পছন্দ না।

আমিঃ আপনি হুজুরদের পছন্দ করেন না তো বিয়েতে রাজি হলেন কেন?

তামান্নাঃ আমার ঘুম পাচ্ছে, কোন কথার উত্তর দিতে পারবো না আপনি চলে যান, আমি ঘুমাবো।

আমিঃ কোথায় যাবো আর বাসর রাতে এক সাথে না থাকলে তো মানুষ খারাপ ভাববে।

তামান্নাঃ তা ঠিক কিন্তু খাটে ঘুমাতে পারবেন না। কারন আপনাকে আমার পছন্দ না।

দশ বছরের জমাকৃত আনন্দ নিমিশেই এক ধারালো শ্রোত এসে শেষ করে দিলো।

(আমরা নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার ঘরে সেমি বক্স খাট আছে তবে সোফার ব্যাবস্থা নেই)

তাই আমি মেঝেতে পাটি বিছিয়ে শুয়ে পরলাম।

তামান্না গোসল করে ডেসিং টেবিলের সামনে বসে কি যানি করছে , মাথায় টাওয়াল পেচানো

হঠাৎ এমন এক জিনিস দেখলাম যা দেখে আমার চোখের ভ্রু হাফ ইনছি উপরে উঠে গেল, হাত থেকে পানি ভর্তি গ্লাস পড়ে গেল, সমস্ত শরীর মুর্তির মতো থেমে গেলো।

ছি হুজুর মানুষ এতো খারাপ

আপনি হুজুর হয়েএকটি মেয়ের গায়ে হাতদিতে লজ্জা লাগেনা .....................

তামান্না শুদু একটি চাদর শরীরে পেছিয়ে ডেসিং টেবিলের সামনে বসে আছে চাদরটা তার পুরা শরীর আব্রীত করতে পারেনি বুক থেকে নিয়ে হাটুর অনেকটা উপর পযন্ত ঢাকা, তার ফর্শা উুরুর কিছু অংশ দেখা যাচ্ছে।তা দেখে আমার হাত থেকে ভর্তি পানির গ্লাস পড়ে গিয়ে আমি থ হয়ে গেলাম,

তামান্না টাওয়াল পেচানো ভারি মাথাটা না ঘুরিয়ে বললো ঘরে ঢুকেছেন কেনো?

আমি কিছু না বলেই ঘর থেকে বেরিয়ে গেলাম।

বিকালবেলা এক গাড়িতে পাশা পাশি বসে তামান্নাদের বাসা যাচ্ছি, আমি ইচ্ছা করেই ওর গায়ে গা লাগাচ্ছি, এ রকম দুবার করার সাথে সাথে তামান্না ঝাঝালো কন্ঠে বললো সরে বসুন আর এক বার এ রকম করলে কিন্তু খবর খারপ করবো,

আমি (কিছুটা ভয় পেয়ে বললাম) ওকে সরি

আমিঃ আমি আপনাকে আপনি করেই বলবো কিন্তু আপনার বাবা মা ও অন্য মানুষের সামনে তুমি করে বলবো, কারন আপনি করে বললে মানুষ অন্য কিছু ভাববে বলবে নিজের স্রীকে আপনি করে বলে এ কেমন স্বামী, তামান্না কিছু বললো না, আমি বুঝে নিলাম চুপ থাকা স্বমতির লক্ষণ।

তামান্নাঃ আপনার ফোনটা দেন তো?

আমিঃ কেন দিবো?

তামান্নাঃ যাকে বিয়ে করলেন তাকে সামান্য ফোন দিতে পরবেন না?

আমিঃ রাফির সাথে কথা বলবলেন

( রাফি ওর ex বয়ফ্রেন্ড)

তামান্নাঃ হুঁ

আমি কথা না বাড়িয়ে ফোন টা দিয়ে দিলাম।

ওর কথা শেষ................ ।

আমিঃ রাফির কাছে যাবেন? রেডি হয়ে নিন ওর কাছে দিয়ে আসি।

তামান্নাঃ রসিকতা করছেন! রসিকতা দিয়ে আমার কাছে হিমু হওয়ার চেষ্টা করিয়েন না।

আমিঃ রসিকতা না সত্যি বলছি, আর হুমায়ুন আহমেদ স্যার তো তার হিমু সমগ্রের চতুর্থ সিরিজ (পারাপার) এ র শেষের দিকে বলে দিয়েছে যে পৃথীবির সব যুবতীরা রুপা আর যুবকরা হিমু, তো আমার হিমু হতে সমস্যা কি? হাহ হাহ হাহ

বগুড়ার নাম করা চাপ ঘর (চুন্নু চাপ এন্ড কাবাব ঘর থেকে) দুপ্লেট চাপ নিয়ে রাতে ঘরে ফিরলাম, তামান্না চাপ দেখে আনন্দিত কন্ঠে বললো আমি যে চাপ পছন্দ করি আপনাকে কে বললো?

আমিঃ আইডিয়া করে নিয়ে এসেছি, তবে আমার ও অনেক পছন্দ।

তামান্নাঃ ব্যাগে এটা কি?

আমিঃ তোমার মোহর।

তামান্নাঃ আপনি তো একলক্ষ টাকা নগদ মোহর দিয়ে আমাকে বিয়ে করেছেন ।

আমিঃ কিন্তু তুমি আমার কাছে আরো পঞ্চাশ হাজার টাকা পাবে, কারন তোমার মোহর দেড লক্ষ টাকা ধার্য করা হয়েছে,তাই কিছু কিছু করে দিয়ে তোমার মোহর সোধ করবো।

তামান্নাঃ অল্প অল্প করে টাকা বা জিনিস দিলে কি মোহর আদায় হয়?

আমিঃ হাঁ

তামান্নাঃ বিবাহর জন্য কি মোহর আবশ্যক?

আমিঃ পবিত্র কোরানে এসেছে তোমরা নারীদের কে সন্তুষ্ট চিত্তে মোহর প্রদান করো।

( সূরা নিসা আয়াত নং ৪)

আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন এ সমস্ত নারী ছাড়া ( যাদেরকে বিবাহ করা জায়েয নেই)

অন্য নারী তোমাদের জন্য হালাল করা হলো তোমরা তাদের কে তোমাদের মাল দ্বারা (মোহর) গ্রহন করবে।

(সুরা নিসা ২৪ নং আয়াত)

ইমাম আবু হানিফা বা আহনাফদের নিকট দশ দের হামের কমে কোন মোহর নেই।আর ইমাম শাফেয়ী ও আহমদ রহ. এর নিকট মোহরের নিদিষ্ট কোন পরিমান নেই, কম হোক বা বেশি হোক।।

তামান্নাঃ স্বামীর উপর স্রীর মোহর মোহর তাহলে দিতেই হবে?

অনেকে তো শুধু তালাক দেয়ার সময় দেয়।

আমিঃ হাঁ স্বামীকে অবশ্যই মোহরআদায় করতে হবে আমাদের দেশে যে নিতি আছে সুধু তালাকের সময় মোহর আদায় করা, তা সঠিক নয় বরং আগেই দিয়ে দিবে।

দুজন মিলে চাপ খেয়ে তামান্না কে বললাম ব্যাগটা খোলো।

তামান্না ব্যাগ থেকে জিনিষটা বের করতেই চোখ বড় বড় করে বললো গাঢ় নীল রঙ্গের শাড়ীযে আমার পছন্দ তা তুমি কি করে জানলে?

আমিঃতুমি আমাকে তুমি করে বললে তার মানেআমার প্রতি দর্বল হয়ে পরলে না কি?

তামান্নার কোন কথা নেই, শুনশান নিরবতা চলছে

তামান্না নিরবতা ভেঙ্গে দিয়ে বললো শাড়ীটা আমি এখোনেই পরি?

আমিঃ পরো।

তামান্নাঃ তমি বাইরে যাও।

আমিঃ আমি চোখ বন্ধ করছি তুৃমি পড়ো আমি দেখবো না

তামান্নাঃ দেখার চেষ্টা করলে কিন্তু চোখ তুলে

ফেলবো ।

আমিঃ সুধু হাসলাম,

স্বামী স্রীকে দেখা জায়েয আছে কিন্তু তার অঙ্গ পতঙ্গের নিবারণ অন্যের কাছে বলা জায়েয নেই।যেমন হাদীস শরীফে এব্যাপারে নিষেধ এসেছে।

হযরত ইবনে মাছউদ রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন রাসুলল্লাহ সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন কোন নারী যেন অপর নারীর সাথে সাক্ষাত ও মেলামেশার পরে স্রী

স্বামীর সম্মুখে উক্ত নারীর এ রুপ বর্ণনা প্রদান না করে যাতে সে যেন তাকে দেখছে।

( বোখারী,মুসলিম, মেশকাত)

তামান্নাঃ চোখ খোলো।

আমি চোখ খুলে চার দিক ধোঁয়াটে অন্ধকারের মাঝখানে একজন নীল পরীর সাক্ষাৎ পেলাল । মনের অজান্তে দুহাত বাড়িয়ে তাকে কছে পাওয়ার চেষ্টা করলাম।

তামান্নাঃ আমার ঘোর ভেঙ্গে দিয়ে বললো,, আমাকে কেমন লাগছে।

আমিঃ একটু জড়িয়ে ধরতে দিবে?

তামান্নাঃ খবর দ্বার! হুজুরের আবার শক কতো( মুখ বাঁকিয়ে)

তামান্না ববললো আজ আমরা এক খাটে থাকবো তবে মাঝ খানে কোল বালিশ থাকবে ভুলেও স্পর্শ করার চেষ্টা করবে না,

মাঝ রাতে এমন

এক ঘটনা ঘটলো,

যার জন্য আমি প্রস্তুত ছিলাম না।

চলবে ইনশাআল্লাহ............।

Thank's for reading....

1
$ 0.00

Comments