🌳🌳🌳🌳🌳🌳🌳🌳🌳🌳🌳🌳🌳🌳🌳ফোনের ব্ল্যাক লিস্টে থাকা নীলয়ের নাম্বারটাকে আনব্লক করে নীলয়কে ফোন দেয়।
তনয়াঃ হ্যালো নীলয়।
নীলয়ঃ হাই সুইট হার্ট। ম্যারেড লাইফ কেমন কাটছে?
তনয়াঃ জাস্ট সেটাপ। আমার তোমার কাছে থেকে কিছু কথা জানার ছিলো?
নীলয়ঃ ও রিয়েলি? বলেন ম্যাডাম?
তনয়াঃ তুমি ঠিক কত দিন সিলেট থেকেছো?
নীলয়ঃ কেন? ছয় না না একবছর।
তনয়াঃ এমনিতেই।
তনয়াঃ তুমি আমার হ্যাজবেন্ড মানে আয়াতকে চেনো?
নীলয়ঃ সোনা তোমার প্রশ্নের উত্তর দিতে আমি বাধ্য নই ?
তনয়াঃ প্লিজ নীলয়। আমার জানাটা খুব প্রয়োজন।
নীলয়ঃ স্যরি ডিয়ার তোমার অনুরোধ রাখতে পারবো না। তবে হ্যা কিছু পেতে হলে কিছু দিতে হয়।
তনয়াঃ জাস্ট সেটাপ। তনয়া রাগ করে ফোন কেটে দিলো।
ভিষন রাগ হচ্ছে নীলয়ের উপর তার থেকেও বেশি নিজের উপর। কারন ও নীলয়ের মত একটা লম্পটকে ভালোবেসেছিলো। সেদিন তনয়া আয়াতের রুমটা ভালো করে চেক করলো কিন্তু কিছুই পেলো না। কিন্তু আয়াতের আলমিরাটা লক ছিলো যেটা দেখতে পারেনি। কারন চাবি আয়াতের কাছে।
আজ আয়াতের দুটো বন্ধু আয়াতের বাসায় আসবে তনয়াকে দেখতে। তারা বিয়েতে যেতে পারেনি। তাই এখানে আসবে। দুপুরে খাবে।
দুজন লোক আসলো তার মধ্যে একজনকে দেখে তনয়া হতবাগ হয়ে গেলো।
আয়াতঃ তনয়া এরা আমার খুব কাছের বন্ধু আসিফ আর রাহাত।
রাহাত আর কেউ নয় নীলয়। তনয়া ভাবছে তারমানে নীলয়ের আসল নাম রাহাত? আর আয়াত আর নীলয় একে অপরকে চেনে? তনয়ার মাথা যেনো কাজ করা বন্ধ করে দিছে। দপ করে মাটিতে পড়ে গেলো।সবাই অনেকটা হতভম্ব হলো।
কিন্তু একজন ঠোটের কোনায় নোংড়া একটা হাসি দিলো আর সে হলো রাহাত। আয়াত তাড়াতাড়ি তনয়াকে কোলে তুলে রুমে নিয়ে বিছানায় শুইয়ে দিলো। ওর বন্ধুরা সামনের রুমে চলে গেলো। আয়াত কিছুটা পানি তনয়ার মুখে ছিটা দিলো। তনয়ার জ্ঞান ফিরতেই ধরপর করে উঠে বসলো।
আয়াতঃ রিলাক্স তনয়া! কি হয়েছে তোমার? এমন পড়ে গেলে কেন?
তনয়া আয়াতের কথার কোন উত্তর না দিয়ে আয়াতকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো। আয়াত কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে গেলো। কারন এই প্রথম বার তনয়া নিজে থেকে ওকে জড়িয়ে ধরলো। আয়াত তনয়ার মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে কি হয়েছে তনয়া? ভয় পাচ্ছো কেন? বলো? তনয়া ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদছে। আর ভাবছে রাহাতই যে নীলয় সেটা কি আয়াত জানে? আয়াতকে বলবো যে রাহাতই নীলয়? নাকি আয়াত আর নীলয় একে অপরের সাথে জড়িত? কাকে বিশ্বাস করবো আর কাকে অবিশ্বাস করবো কিছু মাথায় আসছে নাহ? নাহ আগে সব প্রশ্নের উত্তর খুজে বের করবো তারপর আয়াতকে বলবো।
আয়াতঃ তনয়া ! তনয়া! কি ভাবছো? কি হলো?
তনয়াঃ কিছু না। সকাল থেকে কিছু খাই নাইতো তাই মনে হয় মাথাটা ঘুরে গেছিলো।
আয়াতঃ তনয়া তোমাকে কতবার বলেছি যে নিজের খেয়াল রাখবা? সবসময় বাচ্চামি ভালো না।
তনয়াঃ চলো তোমাদের খাবার দেই?
আয়াতঃ তোমার যেতে হবে না। তুমি রেস্ট করো। আমি আর আন্টি সব সামলে নিবো।
তনয়াঃ কিন্তু আয়াত?
আয়াতঃ তনয়ার ঠোঁটে হাত দিয়ে হুসস। আর কোন কথা না। চুপচাপ বিশ্রাম নেও। আমি দেখছি ওদিকে কি হচ্ছে?
আয়াত চলে গেলো। তনয়া গভীর চিন্তায় পড়ে গেলো। আয়াত আমার বিষয়ে এত কিছু জানে কিভাবে? তাহলে কি নীলয় মানে রাহাত বলেছে? নাহ যদি রাহাত আয়াতকে আমার বিষয়ে বলে তাহলে আয়াত জেনেশুনে নিজের বন্ধুর গার্ল ফ্রেন্ডকে কেন বিয়ে করবে? আর আয়াতের সাথে আমার শত্রুতাই বা কি? যে ও বার বার প্রতিশোধের কথা তুলে? নাহ এর ভিতরে হয় কোন চক্রান্ত আছে না হয় কোন ধোকা! কিন্তু কে কাকে ধোকা দিচ্ছে? আয়াত আমাকে আর নীলয়কে ধোকা দিচ্ছি ? নাকি নীলয় আমাকে আর আয়াতকে? নাকি নিয়তি আমাদের তিন জনকে নিয়ে খেলছে? সব জানতে হবে আমায় সব।
কিছুক্ষন পর আয়াত খাবার নিয়ে রুমে ডুকলো।
আয়াতঃ নাও খেয়ে নাও!
তনয়াঃ আপনি খেয়েছেন?
আয়াতঃ আগে তুমি খাও। বলে আয়াত তনয়াকে খাইয়ে দিচ্ছে।
তনয়া আয়াতের দিকে তাকিয়ে ভাবছে নাহ আয়াত কখনো কাউকে ধোকা দিতে পারে না? ওর চোখ দুটো পবিত্রতায় ভরা। ও আমাকে বলে প্রতিশোধ নিতে বিয়ে করেছে। অথচ এখন পর্যন্ত আমার উপর কোন অধিকার খাটায়নি।
ওর যদি নীলয়কে ধোকা দিতো তাহলে ওর চোখে অনুশোচনা থাকতো। আর ও নীলয়কে ধুরর মানে রাহাতকে এভাবে বাসায় ডেকে আনতে পারতো না। তাহলে কি নীলয়? হতে পারে কারন ওর চোখে সবসময় নোংড়ামি ভরা থাকে। কিন্তু ও কেন জেনে শুনে আয়াতের সাথে আমার বিয়ে হতে দিলো?
কিন্তু আয়াত? আয়াত আমার বিষয়ে যেসব কথা জানে তা কেবল নীলয়ের জানার কথা? কারন নীলয় ছাড়া এ কথা গুলো আমি কাউকে বলি নি। এ ঘর এ বারান্দা। সব কিছু সাজানোর স্টাইল আমি নীলয়কে বলেছিলাম। কিন্তু নীলয় জেনেশুনে নিজের ভালোবাসা বন্ধুর হাতে কেন তুলে দিবে?
আয়াতঃ তনয়া! কোথায় হারিয়ে গেলে? কি হলো খাও।
(তনয়া কিছুটা খাবার আয়াতের মুখে তুলে দেয়। )
আয়াতঃ আমার প্রতি যতই ভালোবাসা দেখাও তাতে আমি আমার প্রতিশোধের কথা ভুলবো না।
তনয়াঃ জানি। যান খেয়ে নিন।
সেদিন মত ওর বন্ধুরা খেয়ে কিছুক্ষন টুকি টাকি কথা বলে চলে গেলো। কথা বলার মাঝে রাহাত বার বার তনয়ার দিকে তাকাচ্ছিলো। তনয়ার ভিষন অসস্থি লাগতে ছিলো।
কয়েকদিন পর।
আয়াত আর তনয়ার সম্পর্কটা এক রকমই। তনয়া অনেক কিছু জানার চেষ্টা করেও জানতে পারে নি। শেষে নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে অনেক কান্না করলো। তারপর একদিন আয়াত অফিস থেকে ফোন করে তনয়াকে বলে যে ওর একটা ফাইল ভুলে রেখে এসেছে। আয়াতের আলমিরাতে। সেটা যেনো পিওনের কাছে দিয়ে দেয়।
তনয়া ফাইল খুজতে গিয়ে মাঝারি সাইজের একটা বক্স আয়াতের কাপড়ের মধ্যে লুকানো পায়। তনয়া ফাইলটা পিয়নকে দিয়ে। বাক্সটা খোলার চেষ্টা করে। কিন্তু লক করা। তনয়ার মাথায় একটা দুষ্ট বুদ্ধি আসলো। ও ওর মাথার ক্লিপ দিয়ে অনেক কষ্টে বক্সটাকে খোলে। কিন্তু বক্সের ভিতর যা দেখলো তাতে ওর জ্ঞান হারাবার মত অবস্থা।
তনয়া বাক্সের ভিতর কিছু জিনিস আর যত্ন করে রাখা কিছু চিঠি পেলো। তনয়া ভাবছে কিন্তু এগুলো আয়াত কোথা থেকে পেলো? এ গুলো তো আমি নীলয়কে দিয়েছিলাম। নীলয় এ বিষয়ে সব জানে?
তাহলে নীলয় এগুলো আয়াতকে কেন দিলো? আর আয়াতই বা এগুলো এত যত্ন করে কেন রেখেছে? জিনিস গুলো দেখে তনয়া হারিয়ে গেলো তার দেড় বছর আগের ঘটনায়।
চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,