🍀🍀 🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀আয়াত তনয়াকে নিজের বুকের মধ্যে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়লো।
সকাল বেলা ঘুম ভাঙতেই তনয়া নিজেকে আয়াতের বুকে আবিষ্কার করলো। কাল রাতের কথা গুলো হালকা হালকা মনে পড়ছে। ভিষন অভিমান হচ্ছে আয়াতের উপর। কিন্তু তারপরও কেন যেনো আয়াতের বুক থেকে উঠতে ইচ্ছা করছে না। ও চুপচাপ ওর বুকে শুয়ে রইলো। কিছুক্ষন পর আয়াত ওঠে আলতো করে তনয়ার মাথায় একটা চুমো দিয়ে আস্তে করে তনয়ার মাথাটাকে বুক থেকে বালিশে রাখলো। তনয়া তখনো ঘুমের ভান ধরে রইলো। তারপর আয়াত তনয়ার মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে তনয়ার নাম ধরে ডাকছে।
তনয়া চোখ মেলে বললো
তনয়াঃ কি সমস্যা?
আয়াতঃ অসুস্থ হলে কি হবে? কথার ঝাঁজ এখনো ধানীলঙ্কার মত। তা ম্যাডাম আপনার এখন কেমন লাগছে?
তনয়াঃ মোটামুটি (রাগি চোখে তাকিয়ে)
আয়াতঃ জানি শরীর দুর্বল লাগছে। বাচ্চামোটা কম করলেই হয়। খেয়ে রেস্ট নিলেই ঠিক হয়ে যাবে। আজ আমাদের বৌ ভাত মনে আছেতো?
তনয়াঃ নিজের সর্বনাশের দিনের কথা কেউ কি ভোলে?
আয়াতঃ কি বললা?
তনয়াঃ দ্যাট'স নন অফ ইউর বিজনেস?
আয়াতঃ আগে পুরোপুরি সুস্থ হও তারপর বুঝাবো?
তনয়াঃ আমিও দেখে নিবো।
একটু পর বৌভাতের আয়োজন শুরু হয়ে গেলো। সবাই ভিষন ব্যাস্ত। তনয়ার ননদ ওকে সাজাচ্ছে। আর ওর সাথে মজা করছে।
দুপুর বেলা তনয়াদের বাড়ি থেকে লোক আসলো। ওদের নিতে। বিকেল বেলা সব অনুষ্ঠান শেষে আয়াত আর তনয়া , তনয়াদের বাড়ি গেলো। আয়াত তনয়াদের বাড়ির সবার সাথে বেশ অল্পতেই মিশে গেছে। বেশ জমিয়ে আড্ডা দিচ্ছে। তনয়া ভাবেছে কি লোকরে বাবা! আমার সাথে বাদরের মত করে আর সবার সাথে কত আদর করে কথা বলে। আচ্ছা ওনার কি স্প্রিট পারসোনালিটিস রোগ আছে ? এক জনের ভিতর অনেক চরিত্র। দেখলেই তো ভয় করে। তনয়া একবার ভাবলো ওর বাবা মাকে আয়াতের বিষয়ে সব খুলে বলবে তারপর ভাবলো তাতে তারা খুব কষ্ট পাবে। আগে কিছুদিন দেখি তারপর বলবো ?
রাতের বেলা তনয়া আয়াতেকে নিজের রুমে নিয়ে গিয়ে বললো আপনি এ রুমে ঘুমান আমি অন্য রুমে যাচ্ছি।
আয়াতঃ কেন? এ ঘরে কি জায়গার অভাব আছে? আর তাছাড়া বাড়ির সবাই কি মনে করবে?
তনয়াঃ তাহলে আমি নিচে শুয়ে পড়িছি?
আয়াতঃ দেখো একদম ঢঙ করবা না? এটা মুভি না? আর তাছাড়া তোমার জ্বর এখনো ভালো হয়নি। নিচে শুয়ে কি আবার অসুখ বাঁধাবে? আমি তোমার কেনা সেবক নই যে বার বার তোমায় সেবা করে সুস্থ করবো। তাই চুপচাপ খাটের ঐ পাশে শুয়ে পড়ো।
আর শোন তুমি আমার পাশে শুলে আমি তোমাকে স্পর্শও করবো না। কাউকে টাচ করার জন্য তার প্রতি একটা আকর্ষন অনুভব করতে হয়। আর তোমার মধ্যে এমন কোন আকর্ষনীয় ভাব নেই যাতে আমি তোমার প্রতি আকর্ষীত হবো। সো চুপচাপ টেনশন ফ্রি হয়ে শুয়ে পড়ো।
কথাগুলো তনয়ার গায়ে খুব লাগলো তাই রাগের চোটে তনয় বললো
তনয়াঃ কি? আমার মাঝে আকর্ষনীয় ভাব নেই? দাড়ান দেখাচ্ছি আপনাকে? এই বলে তনয়া আয়াতের একদম কাছে গিয়ে আয়াতকে ধাক্কা মেরে বিছানায় ফেলে দেয়। আর নিজে আয়াতের বুকের ধপ করে শুয়ে আয়াতের শার্টের কলার ধরে চোখে চোখ রেখে বলে
মিঃ আয়াত আমি চাইলে আমার পিছনে ছেলেদের লাইন পড়ে যাবে। কিন্তু আমি তা চাই না। আর আপনি? হুমম? আপনার মত ফিলিংলেস গিট্টিুকে আকর্ষন করার কোন ইচ্ছা আমার নাই। তারপর আয়াতকে একটা চোখ মেরে উঠে বিছানার অপর পাশে শুয়ে পড়ে। আয়াত হতবাগ হয়ে গেলো। আয়াত মনে মনে বলছে
আয়াতঃ কি মেয়েরে বাবা! মনে হলো আমার উপর ৮৮০ ভোল্টের বিদ্যুতের খাম্বা পরেছে। পুরো শরীরে বিদ্যুত দৌড়াচ্ছে। তাড়াতাড়ি ঠান্ডা পানি খেয়ে নিজেকে ঠান্ডা করতে হবে। পানি খেয়ে রুমে এসে দেখে তনয়া ঘুমিয়ে পড়েছে।
আয়াত গিয়ে তনয়ার পাশে বসে ওর মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে নিজের অজান্তেই মুচকি হেসে বললো। সত্যিই তুমি চাইলে তোমার পিছনে ছেলেদের লাইন পড়ে যাবে। কিন্তু আমি তা হতে দেবো না। তুমি আমার শুধুই আমার।
পৃথিবীতে তোমাকে ভালোবাসার, ঘৃনা করার, প্রতিশোধ নেয়ার অধিকার শুধু মাত্র আমার একার। তোমার চারপাশটা জুড়ে শুধু আমি থাকবো। তোমায় অনেক ভালোবাসবো তার সাথে অনেক কষ্ট দিবো। কারন যে কষ্ট তুমি আমায় দিয়েছো তোমাকে তার তীব্রতা গভীরতা তোমাকেও অনুভব করতে হবে।
তারপর তনয়াকে আবার আস্তে করে আয়াত নিজের বুকের মধ্যে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। সকাল বেলা আবার তনয়া নিজেকে আয়াতের বুকে পেলো। তাই ভাবলো আজ বেটাকে হাতেনাতে ধরবো। নয়তো বলবে আমি ওর বুকে এসে শুয়েছি। কিছুক্ষন পর আয়াত আবার তনয়ার মাথায় চুমো খেলো। তখন তনয়া বলে ওঠলো।
তনয়াঃ ঐ মিয়া আমার মধ্যে নাকি আকর্ষনীয় কিছু নাই। তাহলে রোজ রোজ আমার মাথায় চোরের মত ইয়ে দেন কেন? লজ্জা করে না?
আয়াতঃ (তনয়ার হাতে ধরা খেয়ে আয়াত অনেক লজ্জা পেলো তবুও নিজেকে সামলে বললো) ইয়ে মানে কি? আর তুমি আমার বুকের উপর কেন?
তনয়াঃ একেতো চুরি। তার উপর আবার বাটপারি। আপনি আমায় ইয়ে কেন দিলেন?
আয়াতঃ তোমাকে ইয়ে দিতে আমার বয়েই গেছে। আমিতো কোল বালিশ ভেবেছিলাম। তোমার থেকে কোল বালিশটাকে আমার বেশি আকর্ষনীয় লাগে।
তনয়াঃ (রাগ করে) ঠিক আছে আমিও দেখে নিবো?
আয়াতঃ ওকে তোমার দেখার অপেক্ষায় থাকবো।পরের দিন বিকালে আয়াত আর তনয়া আয়াতদের বাড়ি চলে আসে। তার প্রায় কিছুদিন পর আয়াত তনয়াকে নিয়ে সিলেট চলে যায়। সেখানে আয়াতের অফিস। আয়াতদের নিজেস্ব বড় একটি ফ্ল্যাট আছে। ওরা গিয়ে সেখানেই উঠলো।
তনয়া আয়াতের ফ্ল্যাটের মধ্যে ডুকে হতবাগ হয়ে গেলো। তাই দৌড়ে বারান্দায় চলে গেলো। সেখানে গিয়ে আরো তিনগুন বেশি শকট হলো।
তনয়া চিৎকার করে বললো কে আপনি? কি সম্পর্ক আমার সাথে আপনার? তাকে কি আপনি চেনেন? আপনি এগুলো কিভাবে জানলেন? এগুলোতো আপনার জানার কথা না? কে আপনি?
আয়াতঃ এই একটা প্রশ্ন তোমাকে কষ্ট দেওয়ার জন্য যথেষ্ট । যে, কে আমি? কিন্তু তোমার এ প্রশ্নের উত্তর আমি এত তাড়াতাড়ি দিবো না। তুমি সারাক্ষন এটা ভেবে কষ্ট পাবে
কে আমি?
চলবে,,,,