বাসর রাত!তবে এটা আমার প্রথম বাসর রাত নয়।নিজের প্রথম স্ত্রীকে বাঁচাতেই এই বিয়েটা করা। অনেকক্ষণ বাহিরে দাঁড়িয়ে থাকার পর বাসর ঘরে ঢুকতেই দেখলাম সদ্য বিয়ে করা বউ ঘোমটা দিয়ে বসে আছে।আমি পাশে বসতেই,
- চিৎকার দিয়ে বললো ডোন্ট টার্চ মি!
কিছু বুঝে উঠার আগেই ধাক্কা দিয়ে বিছানায় ফেলে দিয়ে বুকের উপর চড়ে বসলো।
- এই ম্যাডাম কি করছেন?
- বালিশের নিচে থেকে ছুরিটা বের করে গলায় ধরে বললো,' আমাকে একদম ছুঁবে না। ছুঁলে খুন করে ফেলবো।
- ম্যাডাম প্লিজ ছুরিটা সরান গলা থেকে।
- এই কাগজে একটা সই করে দাও তারপর সরাচ্ছি।
- কিসের কাগজ এটা?
- ডির্ভোস পেপার।
- বাসর রাতে ডির্ভোস পেপার কেন?
-ডির্ভোস পেপার কেন বুঝো না? একটা সাইন করে দাও সব বুঝতে পারবে! ' নয়তো গলায় ছুরি চালিয়ে দিবো।
- খানিকটা ভ্যাবাচেকা খেয়ে বললাম,' বিয়ের রাতে নতুন বউ কখনো ডির্ভোস নেওয়ার জন্য এমন করে?
- তোমাদের মতো ছেলেদের বিশ্বাস নেই। বাবার মাথাটাতো খেয়েছ। আমি মনে হয় কিছু বুঝিনা। সবকিছু যেন কেন একটা অন্তঃসত্ত্বা মেয়েকে বিয়ে করেছ। সব আমার বাবার সম্পত্তির জন্য! তাই পরে যেন সম্পত্তিতে ভাগ বসাতে না পারো সেজন্য ডির্ভোস পেপারে সাইন করে নিচ্ছি। আমার বেবিটা হয়ে গেলে আমি সাইন করে দিলেই সব শেষ। তোর মতো গরীবদের আমার খুব ভালো করে চেনা আছে।
- আমি আর কিছু বললাম না মুচকি হেসে , 'কাগজটায় একটা সাইন করে দিলাম। জীবনটা অদ্ভূত লাগছে। অনেকটা নদীর মতো। নদী যেমন ক্ষণে ক্ষণে তার গতিপথ বদলায় তেমনি আমার জীবনের গতিপথও পাল্টাচ্ছে।
- দু'দিন আগেও যার বিয়ে হওয়ার কথা ছিল শহরের নামকরা ধনী আশরাফ সাহেবের ছেলের সাথে আজ তার সাথে আমার বাসর রাত ভাবতেই গা'টা শিউরে উঠছে। আর বিয়ের রাতে ডির্ভোস। কি এক অদ্ভূত সমীকরণ।
- কি হলো ওভাবে তাকিয়ে আছিস কেন?
একদম আমাকে স্পর্শ করার চেষ্টা করবি না। মনে রাখবি আমি অন্তঃসত্ত্বা। আমার হৃদয়ের সবটা জুড়ে মেঘের বসবাস। আমি শুধু বিয়েটা করেছি বাবার জন্য। পারিনি বাবার কান্নাভেজা অনুরোধ অগ্রাহ্য করতে। আর তোদের মতো ছোটলোকদের বিশ্বাস নেই। আমার বাবার টাকার জন্য শুধু আমাকে বিয়ে করছেন। আমি মন থেকে কোনদিন তোকে স্বামী বলে মেনে নিতে পারবো না।
- ম্যাডাম স্বামীত্ব ফলানোর কোন ইচ্ছাও আমার নেই । আপনি ঘুমান।
- আর তুই?
- আমি ম্যাডামকে কিছু না বলে একটা বালিশ নিয়ে, 'সোফায় গিয়ে শুয়ে পড়লাম। ''
- ঘুম আসছে না। দু'দিন আগের কথাগুলো মনে পড়ছে।
বিয়ে বাড়িটা নীল-লাল বাতিতে খুব সুন্দর করে সাজানো। একটু পরে বর আসবে। বিয়ে বাড়িতে সবাই ব্যস্ত। অদ্বিতীয়ার বান্ধবীরা তার পাশেই বসে আছে। মেয়েটাকে খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে।
- হঠাৎ একটা কাল বৈশাখী ঝড়ে সব উলট-পালট হয়ে যায়। কাজি এসে গেছে এমন সময় খবর আসলো বরযাত্রীর সবাই বর সহ কার একসিডেন্টে মারা গেছে। অদ্বিতীয়া কথাটা শুনে মাথা ঘুরিয়ে পড়ে যায়।
- হসপিটালে নেওয়ার পর ডাক্তার অদ্বিতীয়ার কিছু টেস্ট করে রির্পোটগুলো দেখে বললো,' মিঃ আশরাফ মিষ্টি খাওয়ান। অাপনার মেয়ে মা হতে চলছে।
- মিঃ আশরাফ এমন কথা শুনবে ভাবতেও পারেনি।
চলবে'''''''