#প্রাক্তন স্বামীর বাসার সামনে দাঁড়িয়ে লিখছি।
সম্পর্কে তিন বছর পর ফ্যামিলিকে জানাই। সোজা পরিবার থেকে নিষেধ আসে৷ আমি সিদ্ধান্ত নেই আর যাই হোক নেহালকে আমি ধোকা দিতে পারবো না। আমি নেহালের কথা মতো পরিবার ছেড়ে বসুন্ধরা চলে আসি। চারদিন পর দুই কেজি বাতাসা কিনে সব বন্ধু-বান্ধবকে মিষ্টি মুখ করিয়ে আমরা বিয়ে করি।
নেহাল একটা পোশাক কারখানায় চাকরি নেয়। কারণ পড়া-লেখা বেশি দূর করতে পারেনি। আমি ও পাশে একটি ছোটখাটো চাকরী শুরু করি।
ছোট সংসার আয় কম ছিলো তবুও বেশ হাসি- খুশি ছিলাম। ছোট ছোট স্বপ্নগুলোর মাঝে বেঁচে থাকার স্বা্দ খুজে পেয়েছিলাম। পূরণ করার চেষ্টা করেছি দুইজন মিলে। এভাবেই চলে পাঁচ বছর।পরিবার পাশে না থাকলেও বিশ্বাস রেখেছিলাম একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে।
হটাৎ একদিন জীবনের রুপ পাল্টে যায়। নেহাল বাইক এক্সিডেন্ট করে গুরুতর আহত হয়।চিকিৎসা করার মতো টাকা ছিলো না। নেহাল কে বাঁচাতে পরিবারের কাছে ফিরে যাই।বাবা- মা আমার মুখের দিকে চেয়ে দুই লাখ টাকা দেয়। আমি নেহালের কোন রকম চিকিৎসা করি।
একটা সময় স্বাভাবিক ভাবেই চলাফেরা করতে পারে নেহাল। ঠিক মতো অফিসে যাচ্ছে, ভালো ইনকাম ও করছে। যতদিন যাচ্ছে আমিও বিরক্তিকর হয়ে যাচ্ছি। কথায় কথায় বাচঁতে হলে অর্থের দরকার।নানান দিক থেকে আমাকে প্রেসার দেওয়া হয় বাবার কাছে থেকে দশ লাখ টাকা নিয়ে আসার জন্য ।আমি রাজি হয়নি। বাসায় মাঝে মাঝে রাতে ফিরে না। জিজ্ঞাসা করলে অত্যাচার করে। নানান কাহিনী নিয়ে আমার গায়ে জখম করে। তবুও কষ্ট করে আকড়ে ধরে বাঁচতে চেয়েছিলাম।
পারিনি সহ্য করতে এত অত্যাচার, আমি চলে আসার ২৮ দিন পর নেহালের নতুন বিয়ে হয় একজনের সাথে। শুনেছি মেয়েটি খুব শিক্ষিত। বড় নামি-দামি ব্যাবসায়ী বাবার একমাত্র মেয়ে। এখন নেহাল হুকুম করে না, হুকুম শুনে। সময় করে অফিসে যায়। সময় মতোই আসে।
আমিও বাবা মায়ের সাথে আছি। আমি ওদের অর্থ,মান- সম্মান নস্ট করেছি কিন্তু আমাকে ছেড়ে যায়নি।অথচ যার জন্য তাদের কস্ট দিয়ে ছিলাম সেই মানুষটা ছেড়ে চলে গেলো।
জীবনে ঘুরে দাঁড়িয়েছি, বাবা- মায়ের সাথে আর যাই হোক প্রতারনা করবো না। ঝড়ের মতো গিয়েছিলাম সুখ খুঁজতে নেহালের কাছে। চলার পথে মুখোমুখি যেন না হয় নেহালের। আমি যে অর্থের সুখ দিতে পারেনি সেজন্য আমার চক্ষু লজ্জা থেকেই যাবে। কিন্তু আমার চাওয়া পাওয়া অনুভূতিগুলো তো মিথ্যে ছিল না। আমি চাইলে পারতাম আমার বাবা মায়ের কাছে থেকে আমার অংশের বাকি টুকু দিয়ে ধরে রাখতে। কিন্ত করিনি কারণ আমি কোন লোভি মানুষের সংসারে থাকতে চাইনি। সেখানে ভালবাসা থাকে না , থাকে নিছক পুরাতন অর্থের আকুতি।এখন অনেক সুখি নেহাল। মাঝে মাঝে বউয়ের সাথে ছবি আপলোড করতে দেখি।বড় বড় নামি দামি রেস্টুরেন্ট দেখি। বেশ হাসি খুশি।
আমাকে কেউ যদি জিজ্ঞাসা করে ভালবাসা মানে কি? আমি সব সময় একটা কথায় বলি , ভালবাসার কোন মানে হয় না। ভালবাসা সময়ের সাথে সাথে বদলায় , কেউ স্মৃতি হয়ে যায়, কেউ হয় বর্তমান। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যে মানুষটি হৃদয় জয় করে পাশে থাকে, নিজের সমস্তটা দিয়ে জরিয়ে রাখে সেই প্রিয় মানুষ, যে অতীত ভুলে নতুন কাউকে নিয়ে দিব্যি হাসি খুশি থাকে সে আর যাই হোক ভালো বাসার মানুষ না।
প্রিয় ভালোবাসা বদলায় নাহ শুধু সময় এ মানুষকে পরিবর্তন করে দেয় কিছু কিছু কারণে। আসলে আমাদের মানুষ চিনতে ভুল হয় কারণ যে ভালোবাসতে পারে সে কখনো ছেড়ে যায় নাহ। তবে ভালো লাগলো গল্প ধন্যবাদ এত সুন্দর সুন্দর গল্প আমাদেরকে উপহার দেওয়ার জন্য। আপনি আসলেই খুব ভালো গল্প লিখতে পারেন আমি নিঃসন্দেহে বলতে পারি। এত চমৎকার গল্প আমাদের সামনে প্রদর্শন করার জন্য আপনাকে মনের অন্তরের অন্তরস্থল থেকে রইল গভীর ভালোবাসা। চালিয়ে যান এভাবে আশা করি আপনি সামনে একজন বড় মাপের কবি হতে পারবেন।