চোরা বালি গল্প -২

2 24
Avatar for Lalin21
3 years ago

মেঘা একটু ভয় ভয় নিয়েই রিক্সায় উঠে বসলো!! তারপর সে চুপচাপ ছিলো, হয়ত ভয়ে কোন কথা বলছিলোনা। কিছু রাস্তা যাওয়ার পর মেঘা বললো,,,,,, আচ্ছা আপনি কি সত্যিই ঐ মহিলা কে খুন করেছেন??

আমি বললাম..... আপনি কি এটা বিশ্বাস করেন যে, আমি কাউকে খুন করতে পারি।

,,,,,না ঠিক তা নাহ,কিন্তু পুলিশ যে আপনাকে নিয়ে গেলো আবার ছেড়েও দিলো কিছুই বুঝলামনা।

........আমি ঐ মহিলাকে রিক্সা করে নিয়ে যাওয়ায় পুলিশ আমাকে সন্দেহ করেছিলো তাই একটু জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য নিয়ে যায় আবার ছেড়ে দিলো।

,,,,,, ওহহহ আচ্ছা।

মেঘা রিক্সা থেকে নেমে ভাড়া হাতে ধরিয়ে দিলো। আমি দাঁড়িয়ে ছিলাম মেঘা যেতে যেতে কেনো যানি আবারো পেছনে আসতে লাগলো!! এসে আমার সামনেই দাঁড়াল।

,,,,, আচ্ছা আপনি তো পড়াশোনা জানেন তাহলে কোন একটা চাকরি করলেও তো পারেন,এত কষ্ট করে রিক্সা না বয়ে।

........ চাকরি করলে তো ভালোই হত কিন্তু আমার মন যে খোলা আকাশ বাতাসে ছাড়া আটকে থাকতে চাইনা মেডাম।

মেডাম বলাতে মেঘা একটু মুচকি হাঁসলো তারপর বললো,,,,,আমি আপনার জন্য একটা চাকরি খুঁজে দেখব আপনি কিন্তু না করতে পারবেননা!!

....... আআআআমি!!!চাকরি??? আমার দ্বারা মনে হয় ওসব হবেনা মেডাম।

,,,,,,, সহজ কোন চাকরিই খুঁজে দেব, ইনশাআল্লাহ পারবেন।

........ ঠিক আছে আপনি যখন এত করেই বলছেন তখন না হয় একবার চেষ্টা করেই দেখব।

মেঘা একটা খুশির হাঁসি দিয়ে,,,,,thanks এখন আসি হুমম!!

....ওকে মেডাম।

সেখান থেকে চলে আসি,,দুপুর হয়ে আসছিলো আমি বাসার দিকে রওনা দিলাম। খুব ক্লান্ত শরির সেই রাতে খেয়েছি সকালে উঠে খালি পেটেই বের হয়েছি। পথের মাঝেই এক সাহেব আমার রিক্সা দাঁড় করালেন। ওনার বাড়ির বাজার গুলো বাসার গেটে নামিয়ে দিতে হবে। অনেক বললাম,, সাহেব সারাদিন কিছু খায়নি আমি তাই মাফ করবেন প্লিজ আমার দ্বারা এটা হবেনা। সাহেব বললেন,,,,,তোমাকে ডাবল ভাড়া দেবো তবুও নিয়ে যাও, এই পথেই তো শুধু নামিয়ে দিয়ে চলে যাবে। এই নাও ভাড়া।

এই বলে আমার হাতে ৮০ টাকা ধরিয়ে দিলেন। আমিও আর না করলামনা একটু কষ্ট হলেও পয়সা আছে তো এই ভেবেই রাজি হলাম।

সাহেবের বাজার গেটে নামিয়ে দিলাম দারোয়ান সেগুলো ভেতরে নিলো। পাঁচতলা ভবন, নিশ্চয় সাহেবের অনেক টাকা পয়সা আছে যাই হোক আমি বাসায় ফিরে একটু নাস্তা করে রান্না বসালাম। আজ আর বাহিরে যাবনা। দেখি সেদিনের সেই ভদ্র মহিলার ব্যাগ খুলে কি পাওয়া যায়।

আমি ব্যাগ খুলে যা দেখলাম রীতিমতো চমকে গেলাম!! মেডামের ব্যাগে পিস্তল!!! কিন্তু কেনো??

তাহলে এই মহিলাই কি আমাদের অপারেশনের প্রথম টার্গেট ছিলো??

আমি চোখ দুটি আবার একটু বন্ধ করলাম আর অতীত ভাবতে লাগলাম।

আমার আর ফাহিমের স্পেশাল ট্রেইনিং শেষে আমাদের দুজন কে আন্ডারকাভার অপারেশনের জন্য সিলেক্ট করা হয়। আমাদের কাজ টার্গেট এলাকার চোরাকারবার ও মাদক দ্রব্য বিক্রেতাদের খুঁজে বের করে আইনের আওয়াতাই আনা যদি তা না হয় তবে তাদের সরাসরি গুলি করার আদেশ ও আমাদের আছে।

আমাদের প্রথম অপারেশন ছিলো চট্টগ্রাম বন্দরে ' অপারেশন ট্যুরবো' নামে। সে অপারেশনে দুই বছর লঞ্চের হেলপার এর কাজ করি আমরা। তারপর সব তথ্য নেওয়ার পর তিনজন গ্রেফতার ও দুজন পালানোর চেষ্টায় নিহত হয়। প্রথম অপারেশন সম্পূর্ণ ভাবে সফল হওয়ায় আমাদের ঢাকায় পঠানো হলো, ঢাকা উত্তরা 'মিশন উত্তরা' নামে অপারেশন টিম গঠন করে। আমাদের টিমে আরো দুজন কে যোগ করা হয় সবাই মিলে উত্তরা এসে যে যার মত কাজে লেগে পড়ি।

চোখ খুললাম!!! বুঝে গেলাম মহিলাটি তার হোটেলে চোরাকারবারের কাজ চালাত। ফাহিম ঐ হোটেলেই চাকরি করত আর মহিলাটি যেখানে খুন হয় সেখানে মাহিম ডেকে নিয়েছিলো!! মাহিম মহিলাটিকে পুলিশের কছে আর্তসমর্পন করতে বললে মহিলা টি মাহিমকে খুন করার হুমকি দেয়!! ব্যাগ কাছে থাকলে হয়ত তখনই কিছু একটা করে বসত! মাহিম নিজের গোপনীয়তা বজায় রাখতে অর্পণা নামের সেই মহিলাকে সেখানেই খালাস করে দিলো আর ফেঁসে গেলাম আমি।

ব্যাগটা লুকিয়ে রেখে খাবার নামিয়ে খেয়ে একটা লম্বা ঘুমের আশায় শুয়ে পড়লাম। একটু ঘুম না হতেই দড়জায় ঠক ঠক ঠক আওয়াজ শুরু হলো! প্রথমে এড়িয়ে গেলাম পরে আবার ঠক! ঠক! ঠক! শুরু হলো। চোখ না খুলেই দরজা খুললাম একটু একটু তাকিয়ে দেখি একটা মেয়ে দাড়িয়ে!! মুখের দিকে তাকিয়ে দেখি মেঘা।

.......আরে মেডাম আপনি এ সময় এখানে??

,,,,, কেনো আসা বারন নাকি??

...... না ব্যপার ঠিক তা নাহ! আগে কখনো আসেন নাই তো তাই।

,,,, আগে প্রয়োজন ছিলোনা এখন আছে, তাই এলাম।

.....প্রয়োজন?? আমার কাছে? কি প্রয়োজন বলেন।

,,,,,,, আপনার চাকরির ব্যবস্থা হয়ে গেছে।

...... কি চাকরি??

,,,,,,, কম্পিউটারে টাইপিং,, পারবেন নাহ!!??

...... পারব তো কিন্তু কোথায়??

,,,,, আমাদের হাসপাতালে।

.......আমি একটু ভেবে জানাব কেমন!!!

,,,,,,, আচ্ছা তিনদিনের ভেতর জানিয়ে দিয়েন, আসি।

....... এই যা কথায় কথায় ভেতরে বসতে বলতেই ভুলে গেছি! ভেতরে আসুন,বসে চা-কফি খেয়ে যান।

,,,,,,, না আজ আর খাবনা কপালে যদি থাকে একটা সময় প্রতিদিনই খাব বাই....

তারপর মেঘা হাঁসতে হাঁসতে চলে গেলো কিন্তু মেঘার কথার রহস্যটা বুঝলামনা একটা সময় প্রতিদিন চা-কফি কিভাবে খাবে? আমার রুমে বসেই!! কিভাবে???

ধুর ভাল্লাগেনা চোখের ঘুম নিয়েই চলে গেলো.......

3
$ 0.00
Avatar for Lalin21
3 years ago

Comments

Many many thanks this post . Exactly this gives me interesting. Well done

$ 0.00
3 years ago

Wow guys this article post touches my heart.Every lines are so important me .I read the article post more and more because I like it .thanks for sharing fantastic article post

$ 0.00
3 years ago