পিচ্চি বউ
পর্ব ০৭
SA Shahinul Akash
গত পর্বের পর থেকে
রাইসা ঘুম থেকে উঠেই আমাকে খুজতে লাগলো,,রুম থেকে বেরিয়ে দেখে আমি ভাবিদের সাথে কথা বলছি,,,আর ভাবি তখন জিজ্ঞেস করলো,,রাতে কি কি হইছে
রাইসাঃ ভাবি রাতে অনেক কিছু হইছে
আয়েসা ভাবিঃ কি কি হইছেগো?? 😁😁😁
রাইসাঃ ভাবি জানো রাতে আকাশ আমাকে অনেক সুন্দর করে শাড়ি পরিয়ে দিছে,,আমাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমাইছে
ভাবিঃ ওমা তাই? তা আর কি কি করছে?
আমিঃ ভাবি কি বলছো এইসব? তোমরা যা ভাবছো আসলে তা না
ভাবিঃ তাহলে কেমন কি করছো?
রাইসাঃ আরো অনেক কিছু হইছে ভাবি,,
আমিঃ অই চুপপপ,,,,
কি আর করার ওর মুখ চেপে ধরে রুমে নিয়ে আসলাম। আর ওইদিকে ভাবিরাতো সেকি হাসি।
ভাবিঃ যাও যাও,,পরে সব সুনে নিবো
রাইসাকে রুমে নিয়ে এসে,,
আমিঃ এই মাথামোটা কি বলছিস এইসব সবার সামনে? কোথায় কি বলতে হয় এখনো বুঝিস না??
রাইসাঃ কেন আকাশ আমি আবার কি বললাম??
আমিঃ তুই আবার কি বললি মানে?? তুই যানিস না কি করছিস তুই??
রাইসাঃ নাতো,,
আমিঃ ওহ আল্লাহ,,এ আমি কার পাল্লায় পড়লাম?
আর তখনি দাদি রুমে,,
দাদিঃ কি হয়েছেরে নাত জামাই?😁
আমিঃ এই বুড়ি একদম দাত বের করে হাসবা না বলে দিলাম
দাদিঃ কেনরে আকাশ,,কি হইছে?
আমিঃ কি হয়েছে তাইনা? এই তোমার মাথা মোটা নাতনির মাথায় একফোটাও বুদ্ধি নেই। এতো বড় হয়েছে কোথায় কি বলতে হয় এখনো জানে না।
দাদিঃ কিরে রাইসা কাকে আবার কি বলেছিস?
রাইসাঃ আসলে দাদি ভাবিরা তখন,,,,
আমিঃ ওই চুপপ
আমি রুম থেকে বেরিয়ে গেলাম। আর রাইসা দাদিকে সব খুলে বলতেছে,,আর দাদিতো সেকি হাসি
দাদিঃ আচ্ছা তোর কি একটুও বুদ্ধি নেই? সবার সামনে এইসব ঘরের কথা বলে দিতেছিলি? দেখেছিস আকাশ কতটা লজ্জা পেয়েছে??
রাইসাঃ আরে দাদি ভাবিরাইতো সব কিছু জানতে চাইতেছিলো।
দাদিঃ তাই বলে সব বলে দিবি? শোন,,,তোর আর আকাশের মাঝে যা হবে,,আকাশ তোকে যাই বলুক না কেন তুই কাউকে বলবি না। আর নিজেদের পারসোনাল কথাতো বলবিই না। বুঝেছিস?
রাইসাঃ আচ্ছা
দাদিঃ হুম,,,এখন যা ফ্রেশ হয়ে খেতে যা
রাইসাঃ আচ্ছা দাদি।
আর এইদিকেতো আমি বাড়ি ছাড়া। চলে গেলাম বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে,,দুপুরের দিকে বাসায় ফিরলাম। বাসায় এসেইতো পুরাই অবাক। মনে হচ্ছে কিছু একটা হয়েছে। আমি ভিতরে যেতেই
আম্মুঃ আকাশ এইদিকে আয়
আমিঃ হ্যা বলো
আম্মুঃ আচ্ছা তোর কি কোনো কান্ডোজ্ঞান নেই?
আমিঃ কেন আম্মু কি হইছে??
আম্মুঃ নতুন বিয়ে করেছিস,,কোথায় এখন বউ এর সাথে থাকবি। তা না তুই এখন আসলি বাহির থেকে
আমিঃ আরে তাতে হয়েছে কি,,আর বিয়ে করেছি বলেকি সব সময় আমাকে বাসায় থাকতে হবে নাকি?
আম্মুঃ কে তোকে সারাদিন বাসায় থাকতে বল্লো? তুই জানিস তোর জন্যে মেয়েটা এখনো না খেয়ে বসে আছে,,,বলছে তোকে ছাড়া খাবে না। যা খাবার গুলো রুমে নিয়ে যা
আমিঃ আচ্ছা আম্মু
খাবার রুমে এনে দেখি গাধিটা খাটে বসে আমার ফোন চাপছে
আমিঃ এই কি করছিস তুই??
আমার কথা শুনে ভয়ে একটু কেপে উঠলো।
রাইসাঃ ওহ তুমি? এইতো কিছুনা
আমিঃ আমার ফোন তোর হাতে কেন?
রাইসাঃ একটু কার্টুন দেখবো ভাবছি। কিন্তু কোথাও পেলাম না
আমিঃ কিহ? তুই এখনো কার্টুন দেখিশ?
রাইসাঃ হ্যা
আমিঃ আল্লাহ আমার পিচ্চিটাকে কবে বড় করবে?
রাইসাঃ তোমার পিচ্চিটা আবার কে?
আমিঃ আমি আপনার কথাই বলছি
রাইসাঃ আমি পিচ্চি না।
আমিঃ হ্যা জানি,,, এখন খেয়ে আমাকে উদ্ধার করেন
রাইসাঃ কই দাও দাও। অনেক খুদা লাগছ
আমিঃ তা এতোই যখন খুদা লাগছিলো তাহলে এখনো না খেয়ে আছিস কেন??
রাইসাঃ তোমার জন্য
আমিঃ আমার জন্য? তা আমার জন্য না খেয়ে থাকতে কে বলেছে তোকে?
রাইসাঃ দাদি বলছিলো
আমিঃ কিহ,,,দাদি তোকে না খেয়ে থাকতে বলছে?
রাইসাঃ হ্যা। দাদি বলছিলো তোমাকে রেখে আমি যেনো আগে আগে না খাই। তাইতো না খেয়ে আছি
আমিঃ আল্লাহগো।
রাইসাঃ আল্লাহ রে ডাকতেছো কেন?
আমিঃ সেইটা তোর জানার দরকার নেই। আর তোকে যেইটা বলছি সেইটা শোন
রাইসাঃ হ্যা বলো
আমিঃ এখন থেকে আমার জন্য তোকে না খেয়ে থাকতে হবে না। তোর যখনি খুদা লাগবে তখনি খেয়ে নিবি।
রাইসাঃ কিন্তু দাদিতো বল্লো,,,
আমিঃ অই আমি তোকে যেইটা বললাম সেইটা করবি। বুঝেছিস??
রাইসাঃ আচ্ছা। এখন আমাকে খাইয়ে দাও
আমিঃ কেন তোর হাত নেই? তুই নিজের হাতে খেতে পারিস না?
রাইসাঃ দাদি বলছিলো স্বামী স্ত্রী একে অপরকে খাইয়ে দিলে ভালোবাসা বাড়ে
আমিঃ হায়রে ভালোবাসা। ওই তুই ভালোবাসার মানে বুঝিস??
রাইসাঃ নাতো
আমিঃ তোর জানতেও হবে না
রাইসাঃ কেন
আমিঃ আমি বলছি তা। তুই খাবার খা
রাইসাঃ বললাম না তুমি খাইয়ে দাও।
আমিঃ আচ্ছা আয়। (কি আর করার বউ পিচ্চি হলে যা হয় আরকি😁
তখনি রুমে দাদির এন্ট্রি।
আমিঃ আসেন আসেন আমিতো আপনার কথাই ভাবতেছিলাম
দাদিঃ কেনগো নাত জামাই
আমিঃ বুড়ি তোমারে যে আমি কি করবো। যতসব আবল তাবল বুদ্ধি দেওয়া তাইনা?
দাদিঃ আমি আবার কি করলাম?
আমিঃ তুমি যানোনা রাইসা খাবারের জন্য কতটা পাগলি? সারাদিনে অনতত ৫-৬ বার খায়। আর তুমি ওকে কি বলছো,, দেখছো এখন পর্যন্ত না খেয়েই আছে।
দাদিঃ আরে একটু না খেয়ে থাকলে কিছুই হবে না। এখন ও বড় হয়েছে,,সব কিছুতে ওকে মানিয়ে চলতে হবে,,সব কিছু বুঝতে হবে। আর কতদিন এইভাবে ছোট থাকবে?
আমিঃ থাকতে দাও ওকে ওর মতো,,ওর বড় হতে হবে না। আর যেনো ও এইভাবে না খেয়ে না থাকে।
দাদিঃ ইস বউ এর জন্য কতো দরদ।😁😁 এই দরদ টুকু জেনো সারাজীবন থাকে
আমিঃ হুম থাকবে
তারপরে খাওয়া দাওয়া করে একটু রেস্ট নিচ্ছিলাম,,,তখনি মায়ের আগমন
আম্মুঃ কি করছিস তুই?
আমিঃ কিছু না। কেন?
আম্মুঃ সব কিছু রেডি করে নে
আমিঃ কেন কি হইছে?
আম্মুঃ তোর শশুর বাড়ির লোক আসছে,,তোকে আর রাইসাকে নিতে
আমিঃ কেন?
আম্মুঃ এইটাই নিয়ম। বিয়ের পরে শশুর বাড়ি যেতে হয়। যা এখন রেডি হয়ে নে। একটু পরেই চলে আসবে
রাইসাঃ খালামনি আমি যাবো না।😢😢
আম্মুঃ কেন মামনি? যাবানা কেন?
রাইসাঃ কালকেইতো আসলাম। আবার আজকেই যেতে হবে,,আমি আজকে যাবো না। আমি কালকে যাবো
আম্মুঃ কিন্তু আজকেতো যেতেই হবে
রাইসাঃ না আমি আজকে যাবো না।
কি আর করার ওর জিদের কাছে সবাই হার মানলো। সবাইকে বুঝিয়ে বল্লো। অবশেষে একদিন পরে গেলাম মামার বাসায়,,মানে শশুর বাড়ি। আগে শুনেছি শশুর বাড়ি মধুর হাড়ি,,,কিন্তু আমিতো ছোট বেলা থেকেই শশুর বাড়িতে প্রতিদিন একবার করে যেতাম। কই মধুর হাড়িতো দেখলাম না😁😁
যাইহোক পরেরদিন শশুর বাড়ির উদ্দেশ্য বের হলাম। ৩০ মিনিটের মধ্যেই চলে আসলাম। বাড়ির সামনে মামি মানে আমার শাশুড়ী আম্মা আমাদের অপেক্ষায় আছেন। গিয়ে সালাম করলাম। অবশ্য আগে কখনো সালাম করিনি,,,আসার আগে আম্মু বলে দিয়েছিলো সালাম করার জন্য,,কি আর করার আম্মুর কথা রাখতেতো হবেই।
বাড়ির ভিতরে গেলাম,,আমাকে রাইসার রুমে যেতে বল্লো। আমার পেছন পেছন রাইসাও আসলো।
রাইসা ফ্রেশ হয়ে মামির কাছে চলে গেছে,,আর বলে গেছে
রাইসাঃ আকাশ তুমি একটু থাকো আমি এক্ষুনি আসছি।
আমিও ফ্রেশ হয়ে খাটে আধশোয়া হয়ে গল্প লিখছিলাম 😍সিনিয়র বউ😍 অনেকদিন হলো এই গল্পটা লিখা হয় না। অনেকেই এই গল্পটা দেওয়ার কথা বলতেছিলো,,,তাই ভাবলাম এই গল্পটা এখন লিখি। কিন্তু লিখা আর হলো কোথায়,,,কাজিনরা সব এসে হাজির। অবশ্য আমার কাজিন যারা রাইসার কাজিনও তারাই। তো খালাতো বোন পিংকি বলতেছে,,
পিংকিঃ কি জামাই বাবু কি খবর আপনার?
আমিঃ আমার আবার কিসের খবর? আমিতো ভালোই আছি
পিংকিঃ হ্যা তাতো জানিই। আপনিতো এখন ভালো থাকিবেনি,,নতুন বিয়ে করেছেন নতুন বউ এর আদর,,সব মিলিয়েতো ভালোই থাকার কথা।
আমিঃ হ্যা বউ। পিচ্চি বউ
পিংকিঃ 😁😁😁
আমিঃ 😇😇
পিংকিঃ তা ভাইয়া কি কি হলো তোমাদের মাঝে?
আমিঃ ওই তোর এইসব জিজ্ঞেস করতে লজ্জা করে না??
পিংকিঃ লজ্জার কি আছে? তুমি বলো
আমিঃ তুই চুপ করবি?
পিংকিঃ কেন কেন?
আমিঃ এমনি
পিংকিঃ ভাই একটা কথা বলি?
আমিঃ হুম বল
পিংকিঃ ভাইয়া তুমি যদি তোমার পিচ্চি বউকে বিয়ে না করতে তাহলে আমি একটা ট্রাই মেরে দেখতাম।
ওর কথা শুনে আমি আসেপাসে তাকালাম,, রাইসা আসলো কিনা। কিন্তু যেইখানে বাঘের ভয় সেইখানেই সন্ধ্যা হয়। দরজার দিকে তাকিয়ে দেখি রাইসা সব শুন্তেছে
রাইসাঃ 😡😡😡😠😠😠😈😈😈
,,,,,,,চলবে
waiting for next part.
0
8