গল্প ঃ অবহেলায় পাল্টানো জীবন
পর্ব ঃ ষষ্ঠ পর্ব
(পঞ্চম পর্বের পর থেকে শুরু করা হয়েছে)
,,
,,
,,
তারপর আমরা গোসল করে নামাজ আদায় করে
আল্লাহর দরবারে মোনাজাত করলাম,মোনাজাত করে দু'জনে একসাথে বসেই দুপুরের খাবার খেয়ে রুম গুলো আমি একটু গুছিয়ে নিলাম আর আঙ্কেল রেডি হলো ওনার মেয়ে রিয়াকে স্টেশন থেকে আনার জন্য। আঙ্কেল এর জোরাজুরিতে আমিও রেডি হয়ে দুটো রিকশা নিয়ে গেলাম স্টেশনে। বুঝলেন নাতো রিক্সায় করে কেনো আনতে যাচ্ছি, আসলে ওনার মেয়ের নাকি রিক্সায় করে আসতে খুব ভালো লাগে আর তাই দুটো রিক্সা নিয়ে গেলাম আবার এ দু'টো দিয়েই চলে আসবো বাসায়।
আমরা ট্রেন আসার ১০ মিনিট আগেই চলে আসলাম স্টেশনে। ১০ মিনিট অপেক্ষা করার পর ট্রেন থেকে নামলো রিয়া। আমি ওকে দেখে বলতে গেলে একটু হা হয়েই তাকিয়ে আছি, আর সেও আমার দিকে তাকিয়ে আমাদের কাছে চলে আসলো। কাছে এসে বললো,,,
রিয়াঃ বাবা কেমন আছো তুমি???
আঙ্কেলঃ হুমমম! ভালো আছি রে মা। তুই কেমন আছিস???
রিয়াঃ হু আমিও ভালো আছি।
আঙ্কেলঃ আসতে কোনো অসুবিধা হয় নি তো মা!
রিয়াঃ না বাবা আসতে কোনো অসুবিধা হয় নি।
আচ্ছা বাবা এ ছেলেটি কে ???
আঙ্কেলঃ এ হচ্ছে নিলয়,আর নিলয় এ হচ্ছে আমার মেয়ে রিয়া তোমাকে যার কথা বলেছিলাম।
আমিঃ হাই আমি,,,
রিয়াঃ হুমমম জানি আপনি নিলয়, তা কেমন আছেন?
আমিঃ জ্বী ভালো! আপনি কেমন আছেন???
রিয়াঃ জ্বী ভালো আছি।
আমিঃ আচ্ছা আমরা এখানে দাঁড়িয়ে না থেকে বাসায় গিয়ে কথা বলি ওনি হয়তো টায়ার্ড অনেকটা পথ
জার্নি করে এসেছে।
আঙ্কেলঃ হ্যা চলো বাসায় চলো।
এমন সময় আঙ্কেল এর মোবাইলে একটা কল আসে
আর ওনাকে নাকি একটু অফিসে যেতে হবে কি একটা জরুরি কাজে, তাই তিনি চলে গেলেন আর আমি ব্যাগ গুলো একটা রিক্সাতে উঠিয়ে আমি উঠতে যাবো আর
এমন সময় রিয়া বলে উঠলো,,,,
রিয়াঃ এ রিকশাতেই চলুন যেতে যেতে আপনার পরিচয় টা জেনে নেওয়া যাবে,,
আমিঃ না মানে,,, আপনার সাথে এক রিকশাতে যাওয়াটা কি ঠিক হবে? ( কী বলবো ভেবে পাচ্ছিলাম না তাই বললাম এ কথা)
রিয়াঃ আরে চলুন তো আমার সমস্যা নেই।
আমিঃ না মানে,,,
রিয়াঃ কী মানে মানে করছেন চলুনতো,,, (বলে আমার হাতটা ধরে টান দিলো আর তাই উঠে পড়ি রিয়ার সাথে)
রিকশা চলছে তার আপন গতিতে কিছুটা পথ যাওয়ার পর রিয়া আমায় বললো,,,
রিয়াঃ আচ্ছা বলুন আপনার বাসা কোথায় আর আপনি কি করেন???
আমি একে একে সব বললাম আর বলতে বলতে ওদের বাসায় চলে আসলাম আর এটাও বললাম আমি ওদের বাড়িতে কি করে আসি। আমার সব কথা শুনে ও একটু দুঃখ প্রকাশ করলো তারপর ওর রুমে চলে যায় । আমিও আমার রুমে চলে আসি। একটা জিনিস খেয়াল করলাম আমি যখন কথা বলছিলাম তখন রিয়া আমার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলো,হয়তো আমি দেখতে খারাপ বলে। যাই হোক কিছু সময় পর আঙ্কেল বাসায় চলে আসলো, রিয়াও নিজের রুমে গিয়ে ফ্রেস হয়ে নিচে এসে আঙ্কেল এর সাথে আড্ডায় বসে গেলো। দেখলাম ওরা বাবা- মেয়ে হলেও বন্ধুর মতোই কথা বলছে মানে ওদের কথাটা ছিলো এরকম,,,
আঙ্কেলঃ কিরে রিয়া এবার কয়টা ছেলে প্রপোস করলো?
রিয়াঃ বেশি না মাত্র তিনটা।
আঙ্কেলঃ তিনটা! কেনো আমার মামুনি টা কি দেখতে খারাপ হয়ে গেলো নাকি।
বলেই দুজনেই হাসতে লাগলো, এভাবেই কেটে গেলো বিকেল ও সন্ধ্যা। রাতে তিন জনে মিলে একসাথে খাবার খেয়ে যার যার রুমে চলে আসলাম। আর এসে ভাবতে লাগলাম এখন যদি আন্টি থাকতো তাহলে আরোও খুশি থাকতো ওদের পরিবারটা। কিন্তু আল্লাহ হয়তো ওটা চায়নি আর তাই হয়তো আন্টি চলে গেলেন না ফেরার দেশে। যাই হোক আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যই করেন। এসব ভাবতে ভাবতে কখন ঘুমিয়ে গেলাম মনে নেই। সকালে ঘুম ভাঙলো রিয়ার ডাকে আর তখন আমি রিয়াকে দেখে একদম হা হয়ে তাকিয়ে আছি। বলতে গেলে এক প্রকার ঘুরের মধ্যে চলে গেছি মনে হলো কোন এক অজানা নেশায় ডুবে গেছি আমি আর সেই জগৎ থেকে বাস্তবে ফিরে এলাম রিয়ার তুরি বাজানোর শব্দে। রিয়া আমার এমন অবস্থা দেখে একটু হাসলো আর বললো,,,,,
রিয়াঃ এভাবে তাকিয়ে কি দেখছিলে প্রেমে পড়ে গেলা নাকি, প্রেমে পড়লে নির্ভয়ে বলবা।
আমিঃ আরে দূর কি যে বলেননা। আসলে,, আপনাকে খুব সুন্দর লাগছিলো তো তাই আরকি একটু তাকিয়ে দেখছিলাম। আর প্রেম আপনার স্ট্যাটাস এর সাথে আমার মতো ছেলের স্ট্যাটাস মিলবে না। আপনি কোথায় আর আমি কোথায়।
রিয়াঃ ঐ আপনি কিসের তুমি করে বলবা আর আমিও তুমি করে বলবো। তুমি আমার থেকে বড় তাই আমাকে তুমি করে বলবা আর আমি তোমাকে আপনি করে বলতে পারবো না তাই তুমি করে বলবো। ওকে!
আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে। তো তুমি এ ঘরে যে ভিতরে আসলে কি করে।
রিয়াঃ আমিতো জিন তাই চলে আসছি দরজা খুলে আর এ রুমে আসা নিষেধ নাকি?
আমিঃ আসলে সেটা নয় তবে দয়া করে আজকে যে ভাবে এসেছো মানে গোসল করেই চলে আসছো এভাবে আর এসো না। আর যদি আসো তাহলে আমি,,,
রিয়াঃ তাহলে কি বলো,,,
আমিঃ তাহলে আমি সত্যি তোমার প্রেমে পড়ে যাবো। (বলেই মুখটা নিচের দিকে নামিয়ে নিলাম)
কথা গুলো শুনে রিয়া মনে মনে ভাবছে,, এটাই তো আমি চাই জানু তোমাকে প্রথম দেখেই যে তোমার প্রেমে পড়ে গেছি আমি আর তোমাকে তো আমার প্রেমে পরতে হবেই। বিয়ে আমি তোমাকেই করবো হয় জোর করে আর যদি রাজি হয়ে যাও তাহলে তো হলোই।
এসব ভাবতে আর আমি তাকে বললাম,,,
আমিঃ কি হলো কি এতো ভাবতেছো সেই তখন থেকে?
রিয়াঃ না তেমন কিছু না। আর এটা তোমার এখন না জানলেও চলবে বুঝতে পারছো?
আমিঃ জ্বী ম্যাম বুঝতে পারছি।
রিয়াঃ হুমমম। আচ্ছা এখন যাও ফ্রেশ হয়ে নিচে আসো নাস্তা করবা। আর হে,, কাল থেকে ভোরে ঘুম থেকে উঠে নামাজ আদায় করবা ওকে।
আমিঃ তুমি নামাজ পড়ো??? ( কিছু টা অবাক হয়ে)
রিয়াঃ হ্যা পড়ি। মুসলমান আমি তো নামাজ পড়বো না এতে অবাক হওয়ার কি হলো,,,
আমিঃ আসলে এ যুগে তো মেয়েরা নামাজ পড়ে তাই অবাক হলাম আরকি।
রিয়াঃ সবাই এক না বুঝলা। আর এখন যাও গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসো আর কথা বাড়িও না।
আমিঃ যথাজ্ঞা ম্যাম সাহেবা।
রিয়াঃ হুমমম যাও আর আমাকে ম্যাম বলবা না বুঝলে,,
আমিঃ তাহলে কি বলে ডাকবো তোমায়???
রিয়াঃ আগে ফ্রেশ হয়ে নিচে খেতে আসো তারপর বলবো, আর একটা কথাও না বলে ফ্রেশ হতে যাও।
( বউ বলে না হয় জান বলে ডাকবি আমায়, মনে মনে বললো)
আমিঃ হুমম যাচ্ছি।
এবলে আমি ফ্রেশ হতে চলে গেলাম আর রিয়া নিচে চলে গেলো না আমার রুমেই বসে রইলো কি যেনো
মনে করে। আমি তখন হা হয়ে তাকিয়ে ছিলাম
তার কারণ হলো,,,,
কারণ টা জানতে চাইলে পরবর্তী পর্বটার জন্য একটু অপেক্ষা করুন, আর আমার পাশে থাকুন কমেন্ট করে এবং লাইক দিয়ে।
( ভুলগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন, আশা করি সবাই ভালো থাকবেন আর সকলে আমার পাশে থাকবেন।)
## ধন্যবাদ ##
0
11