ম্যাডাম বউ

0 30
Avatar for Koly
Written by
4 years ago

ম্যাডাম বউ

পর্বঃ১১

জেরিঃআপু, চলো এখন বাসায় যাবো

আমিঃতুই যা।জান্নাত আজ থাকবে।

জেরিঃঢং করতে হবে না।যা বলার তাড়াতাড়ি বলে

নিচে আসো।

জান্নাতঃতুই যা আমি আসছি।

জেরিঃহুম(চলে গেলো)

আমিঃআজ না গেলে হয় না?

জান্নাতঃযেতে হবে।পরশু এসে আবার দেখে যাবো

আমিঃহুম

জান্নাতঃবাই...(চলে যেতে লাগলো)

আমিঃশুনো

জান্নাতঃবলো

আমিঃআই লাভ ইউ

জান্নাতঃবাট আই হেট ইউ....হিহিহি

মন ভুলানো হাসি দিয়ে চলে গেলো।জান্নাতদের

চলে যাওয়া দেখার জন্য বেলকোনিতে গিয়ে

দাঁড়ালাম। কিছু সময় পর জান্নাত আর জেরি

বাসা থেকে বের হয়ে গাড়িতে উঠবে তখন আমার

দিকে তাকালো।মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে টাটা দিয়ে

গাড়িতে উঠে চলে গেলো।

এতোটা সময় জান্নাতের সময় অনেক ভালোভাবেই

কেটে গেলো।আর ভালো লাগবেই বা না কেনো,

ভালোবাসার মানুষের সাথে একটু সময় বসে

আড্ডা দিতে পাড়লে নিজের মনটাই সুন্দর হয়ে

যায়।মনে হয় আরো কিছু সময় মেয়েটার সামনে

বসে থেকে গল্প করি।সে যায় হোক,জান্নাত চলে

যাওয়ার পর নিচে আসলাম।

আম্মুঃতোরা দুজন কি কথা বলছিলি শুনি?

আমিঃপড়াশোনা নিয়ে আম্মু।

আম্মুঃসত্যি পড়াশোনা নিয়ে?

আমিঃহুম।জান্নাত ম্যাডাম আমাকে পড়াচ্ছিলো

ভাবিঃঢং বাদ দিয়ে মেডিসিন নে।

আমিঃসেটার আর দরকার হবে না ভাবি।

ভাবিঃকেনো?

আমিঃআমি এখন ঠিক আছে তাই

ভাবিঃকথা কম বলে যেটা করতে বললাম সেটা কর

আমিঃকরছি তো, ধমক দেয়ার কি আছে

ভাবিঃহুম দরকার পড়লে আবার দিবো।

আমিঃসেটার আর দরকার নেই। আমি মেডিসিন নিচ্ছি।

তারপর লাঞ্চ করে মেডিসিন খেয়ে রুমে গেলাম।

-------------------------------------------------

রাতের বেলা ভালো লাগছিলো না।তাই পকেটে

সিগারেট আর লাইটার নিয়ে ছাদে যাবো তখনি

ভাইয়া আসলো।

আমিঃকিছু বলবি?

ভাইয়াঃতোর নতুন ফোন

আমিঃতুই জানলি কি করে আমার ফোন নাই?

ভাইয়াঃতোর ভাবি বলছিলো।আর শোন এসব

খাওয়া বাদ দে।

আমিঃআ..আমি আবার কি খেলাম

ভাইয়াঃএগুলো কি..... (পকেট থেকে বের করে)

আমিঃএমনি টুকটাক খাই আর কি

ভাইয়াঃহুম।আমি গেলাম।

আমিঃহুম।

আর বাইরে গেলাম না।ফোনটা চার্জে দিয়ে সোজা

বাথরুমে চলে গেলাম।সেখানে কোনো রকম

সিগারেটটা খেয়ে রুমে এসে সিম দিয়ে ফোনটা

অন করলাম।ভাবছি জান্নাতকে কোন নাম্বার

দিয়ে কল দিবো।অনেক চিন্তা ভাবনার পর গোপন

নাম্বার দিয়ে দিলাম।তবে আজ অনেকটাই অবাক

হয়েছি।কল দেয়ার সাথে সাথে রিসিভ করলো।

কিছু বলতে যাবো তার আগেই জান্নাত বলল,

জান্নাতঃআমি আপনার সাথে দেখা করতে চাই

আমিঃবিয়ের পর একেবারে দেখা দিবো।

জান্নাতঃদেখুন আমি আপনাকে বিয়ে করতে

পাড়বো না।

আমিঃকেনো পারবে না

জান্নাতঃকারণ,আমার আর নিলয়ের বিয়ে হয়েছে

আমিঃ ডিভোর্স দিয়ে দাও

জান্নাতঃআমি পারবোনা

আমিঃতাহলে আমি একটা ব্যবস্থা করি?

জান্নাতঃআর কি করবেন আপনি,নিলয়কে মেরেও

আপনার স্বাদ মেটেনি?

(ওহ মাই গড..!আমি নিজেকে নিজে ক্যামনে

মারতে পারি।পাগল হয়ে গেলো নাকি?)

জান্নাতঃকি হলো কথা বলছেন না কেনো?

আমিঃআমি নিলয়কে মারছি...!

জান্নাতঃকেনো মাড়ছেন?

(জান্নাতের এমন কথা শুনে বুঝলাম আমার

এক্সিডেন্টকে মারার তালিকাপত্রে তুলেছে।সেই

জন্য হয়তো তখন কারণ জানতে চাই নি)

আমিঃইচ্ছা হয়েছে তাই।

জান্নাতঃপ্লিজ এবার অন্তত থামুন🙏

আমিঃএতো সহজে ছেড়ে দিবো?

জান্নাতঃআর কি করবেন আপনি?

আমিঃঅনেক বড় ক্ষতি করবো যা তোমার কোনো

আন্দাজি নেই।রাখছি বাই.......

জান্নাত হয়তো কিছু বলতে চেয়েছিলো।কিন্তু

সেটা বলার আর কোনো সুযোগ দেয়নি।কল কেটে

আগের মতো সিমটা বন্ধ করে দিলাম।

----------------------------------------------------

পরেরদিন হাতের ব্যান্ডেজ খুলে বিকেলবেলা

বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে গেলাম।সন্ধ্যা অবধি

আড্ডা দিয়ে একটু পড়ার পর শুয়ে পড়লাম।

ঘুমিয়ে আছি তখন কারো ডাকে ঘুম ভেঙে গেলো।

চোখ খুলে দেখলাম আম্মু।

আমিঃআম্মু কি হয়েছে?

আম্মুঃঘুম থেকে উঠ এখন

আমিঃকেনো?

আম্মুঃবাসায় লোকজন এসেছে

আমিঃকেনো আর কারা?

আম্মুঃতোর ভাবিকে নিতে এসেছে।

আমিঃভাবির আব্বু এসেছে?

আম্মুঃহুম

আমিঃতাহলে আমি যাবো না।আর তুমি আমার

রুমে নাস্তা পাঠিয়ে দিও।

আম্মুঃতোকে বাইরে আসতে বলছি বাইরে আয়।

আমিঃআম্মুউউ

আম্মুঃতারাতারি আয়

আমিঃহু

আম্মু বাইরে যাওয়ার পর ফ্রেস হতে গেলাম।

ভাবছেন আমি ভাবির আব্বুকে এতো ভয় পাই

কেনো?তাহলে শুনুন,ভাইয়া আর ভাবির বিয়ের

রাতে কিছু ছেলে মেয়েদের থেকে পারমিশন নিয়ে

সেলফি তুলছিলো আর সেটা দেখে উনি কোনো

কথা না বলে সবার সামনে ছেলেগুলোকে এমন

মাইর দিয়েছিলো যেটা এখনো আমার দুঃস্বপ্নে

চলে আসে।ফ্রেস হয়ে বাইরে এসে সবাইকে

সালাম দিয়ে আম্মুর কাছে বসলাম।বলা যায় না

হিটলার ডিসিটা কখন কি বলে।

সবার সাথে তাল মিলিয়ে টুকটাক কথা বলছি

তখনি জান্নাত, জেরি আর আঙ্কেলের আগমন।

আঙ্কেলকে দেখে সবাই সবাই অনেকটাই হাসি

দিয়ে স্বাগতম করলো।আব্বু উঠে গিয়ে জড়িয়ে

ধরে কুশল বিনিময় করলেন।

জান্নাতঃনিলয়,উপরে আসো তোমার সাথে কথা আছে

আমিঃহুম চলো।

আমার আর জান্নাতের সাথে জেরিও আসলো।

আমিঃতোর আসার কি দরকার ছিলো?

জেরিঃকেনো,তাতে কি হয়েছে?

আমিঃসবার সাথে বসে থাকলেই পারতি

জান্নাতঃআমি ওকে নিয়ে এসেছি।

এতোটা সময় জান্নাতকে খেয়ালি করিনি।কিন্তু

এখন ওর দিকে তাকাতেই মনের মধ্যে ছ্যাঁত

করে উঠলো।চোখের নিচে কালো দাগ পড়ে

গেছে।হয়তো রাতে না ঘুমিয়ে কান্না করেছে।

আমিঃজান্নাত তোমার এ হাল কেনো?

জান্নাতঃআমি ঠিক আছি।আর তোমাকে কিছু

কথা বলবো।সেগুলো যদি মানতে পারো তাহলে

এখনি বলবে না হলে আমাকে হারাবে

আমিঃকি বলছো এসব?

জান্নাতঃতুমি আমার সাথে আমেরিকা যেতে পাড়বে?

আমিঃআমেরিকা কেনো যেতে হবে?

জান্নাতঃজেরির কিডন্যাপারের হাত থেকে বাচার

জন্য দূরে কোথায় যেতে হবে।

আমিঃকেনো?

জান্নাতঃনিলয়,তোমাকে বলতে চেয়েও বলতে

পারিনি।কিডন্যাপার সব সময় আমাকে হুমকি

দিতো।তার সাথে কথা না বললে আমার পরিবার

বা তোমার ক্ষতি করবে।তাই তোমাকে সব

সময় চোখে চোখে রাখতাম।কি করছো না করছো

সব কিছু জানতে চাইতাম।তোমাকে অনেক বেশিই

কেয়ার করতাম।কিন্তু এসবের মাঝে কখন যে

তোমাকে ভালোবেসে ফেলছি আমি নিজেও

জানি না।গতকাল রাতে কিডন্যাপার কল দিয়ে

বলেছে তোমার অনেক বড় ক্ষতি করবে।তাই

প্লিজ আমার কথাটা শুনো আর এখান থেকে

অনেক দূরে কোথায় চলে যায়।যখন সব ঠিক

হয়ে যাবে তখন ফিরে আসবো।

জান্নাতের কথা শুনে রীতিমতো অবাক আর হাসি

পাচ্ছে।নিজে অনেক কষ্টে হাসি থামাতে পারলেও

জেরি অট্ট হাসিতে মেতে উঠলো।

জান্নাতঃতুই এভাবে হাসছিস কেনো?

জেরিঃতো কি করবো।কিডন্যাপার তো....

আমিঃজেরি চুপ...

জান্নাতঃজেরি চুপ করবে না।বল বলছি 😡

জেরিঃআসলে আপু,তুমি যে কিডন্যাপারের কথা

বলছিলে সে আর কেউ না।স্বয়ং নিলয় ভাইয়া নিজেই

জান্নাতঃহোয়াট..?

জেরিঃহ্যা আপু।

জান্নাতঃঠাসসসস(জেরিকে থাপ্পড় দিলো)

জেরিঃ...(হাসি মাখা মুখটা মুহূর্তের মধ্যে কান্না করে দিলো)

জান্নাতঃঅনেক অভিনয় করতে শিখে গেছিস তাই

না।নিজের যদি এতোই কিডন্যাপ হওয়ার ইচ্ছা

থাকতো তাহলে এসবের মাঝে আমাকে আনার

কি ছিলো,কি ছিলো আমাকে বার বার হুমকি দিয়ে

ভয় দেখানোর।একবারো বলতে পারলি না আপু,

আমরা মজা করছি?

আমিঃজান্নাত প্লিজ শান্ত হও,এখানে জেরির

কোনো দোষ নেই(গাল ধরে)

জান্নাতঃঠাসসস ঠাসসসস আমাকে স্পর্শ করার

সাহস পেলি কোথায় তুই।অনেক বেশিই ভালোবেসে

ফেলছি।বুঝতেই পারিনি এটা তোর ভালোবাসা

না।শুধু মাত্র সাজানো নাটক ছিলো।প্রতিটা রাতে

কতো সুন্দর করে মিথ্যা সাজিয়ে বলতি।তোদের

দুজনকে তো এওয়ার্ড দিতে হবে।হ্যা দিতেই হবে,

ঠাসসসসস ঠাসসসস এটা তোর পুরষ্কার। আর

এখন তুই পাবি(জেরিকে লক্ষ্য করে)

আমিঃজেরিকে কিছু বলবে না(হাত ধরে)

জান্নাতঃহাত ছাড়

আমিঃজেরি আমার পিছনে আয়

জেরিঃ....😥(কিছু না বলে পিছনে এসে লুকালো)

জান্নাতঃছাড় আমাকে।কি ভেবেছিস তুই ওর

পিছনে লুকিয়ে বেচে যাবি।অসম্ভব...! তোকে

শাস্তি পেতেই হবে।সামনে আয় বলছি।

আমিঃযাবে না জেরি

জান্নাতঃজেরি সামনে আয় বলছি

আমিঃঠাসসসস কেনো ভয় দেখাচ্ছো মেয়েটাকে?

জান্নাতঃএখন আমি ভয় দেখাচ্ছি আর তোরা

দুজন আমার পরিবারকে নিয়ে আমাকে ভয়

দেখিয়েছিস সেটার কি ছিলো

আমিঃসেসবের জন্য আমি সরি

জান্নাতঃসরি...!হাউ ফানি।তোদের আমি কখনো

ক্ষমা করবো না।আর কখনো আমার সাথে

যোগাযোগ করার চেষ্টা করবি না।গুড বাই।

ঝাড়ি দিয়ে হাত ছাড়িয়ে নিয়ে চলে গেলো।

আমিঃজেরি একদম চিন্তা করিস না।সব ঠিক

হয়ে যাবে।চল বাইরে যায়।

জেরিঃহুম।

বাইরে এসেই দেখলাম জান্নাত ওর বাবার সাথে

রাগারাগি করে কথা বলছে।আঙ্কেল অনেক

শান্তনা দিয়েও কোনো লাভ হচ্ছে না।কোনো

উপায় না পেয়ে আমি নিজেই বললাম,,,,,

আমিঃজান্নাত এটা একটু বেশি হয়ে যাচ্ছে না?

জান্নাতঃতুই একদম আমাদের মাঝে কথা বলতে

আসবি না।ছোট বোনকে তো নিজের আয়ত্বে

নিয়েছিস এখন আর একটাও কথা বলবি না

আঙ্কেলঃকি হয়েছে বলবি তো?

জান্নাতঃতুমি বাসায় যাবে কি না বলো?

আঙ্কেলঃঠিক আছে যাচ্ছি।জেরি আয় মা।

জেরিঃহুম।

আঙ্কেলঃবন্ধু কিছু মনে করিস না।পড়ে তোর

সাথে ফোনে কথা হবে

আব্বুঃঠিক আছে।

আর কোনো কথা না বাড়িয়ে আঙ্কেল জান্নাত

আর জেরিকে নিয়ে বের হয়ে গেলো।এমন

ঘটনা দেখে সবাই জেনো নীরবতা পালন করছিলো

কিন্তু হঠাৎ করে ঠাসসস ঠাসস দুটো শব্দ পেয়ে

সবাই চমকে উঠলো।হ্যা থাপ্পড় দুটো আমিই

খেয়েছি সেটাও আব্বুর থেকে।নিজেকে সামলাতে

না পেরে কয়েক পা পিছু হেটে যেতে হলো।

আব্বুঃকি করছিস ওদের?

আমিঃকিছুই করিনি আব্বু

আব্বুঃএকদম মিথ্যা বলবি না।জান্নাত এমন মেয়েই

না।যে বিনা কারণে এমন ব্যবহার করবে।

আমিঃতুমি জান্নাতকে কতোটা চেনো?

আব্বুঃমানে...কি বলতে চাস তুই?

আমিঃআমি যেটা বলতে চাইছি সেটা তুমি বুঝবে

না।তুমি এখন অন্য কিছু বুঝবে তাই তোমাকে

বলার কোনো মানেই হয়না।

আব্বুঃএকদম বেয়াদবদের মতো কথা বলবি না

আম্মুঃতুমি প্লিজ শান্ত হও।আমি পরে ওর থেকে

সব জেনে তোমাকে বলবো।নিলয় তুই রুমে যা।

আম্মুকেও কোনো জবাব না দিয়ে রুমে চলে

আসলাম।মাথাটা প্রচুর ব্যথা করছে।পেইন কিলার

মাথায় নিয়ে শুয়ে পড়লাম।সারাদিন সবার সাথে

তেমন কোনো কথা হয়নি।আর হবেই বা কি করে

রুম থেকেই বের হয়নি।রাতে ছাদে গিয়ে ইচ্ছা

মতো সিগারেট খেয়ে রুমে এসে মুখ ধুয়ে রাতের

খাবার না খেয়েই ঘুমিয়ে গেলাম।

সকালে ঘুম থেকে উঠে আম্মুর জোরাজুরিতে

হালকা কিছু নাস্তা করে কলেজের দিকে রওনা

দিলাম।বন্ধুরা আগে থেকেই এসে বসে ছিলো

বিধায় ওদের কাছে গেলাম।

রাফিঃকিরে মন খারাপ নাকি?

আমিঃনা

রাফিঃতাহলে এমন দেখাচ্ছে কেনো?

আমিঃএমনি ঘুম হয়নি।জান্নাত আসছে?

রাহুলঃএখনো আসেনি

আমিঃওহ

জয়ঃচল ক্লাসে যায়

আমিঃজান্নাতের সাথে কথা বলার পর যাবো

রাহুলঃকোনো সমস্যা হয়েছে নাকি?

আমিঃতেমন কিছু না।

জয়ঃঐতো ম্যাডাম আসছে।

আমিঃতোরা থাক আমি আসছি।

জান্নাতের কাছে এগিয়ে আসলাম।যদিও অনেকটা

মনের ভিতর সংশয় কাজ করছে তারপরেও

আসতে হলো।না এসেই বা কি করবো ভালো তো

ভেবেছি,তাই ছেড়ে যেতে পাড়বো না।

আমিঃকেমন আছো জান্নাত?

জান্নাতঃতোকে বলছি না আমার সামনে আসবি না

আমিঃদেখো আমি সেসবের জন্য সরি।আমি

এগুলো করেছিলাম তোমাকে পাওয়ার জন্য।

জান্নাতঃতুই আমাকে কখনো পাবি না।আর

এখন সামনে থেকে সর

আমিঃনা আমি সরবো না

জান্নাতঃসর এখান থেকে(ধাক্কা দিয়ে)

আমাকে কোনো কথা বলতে না দিয়ে জান্নাত

দ্রুত সেখান থেকে চলে গেলো।নিজের প্রতি

নিজের রাগ হচ্ছে কেনো যে এমন করতে গেলাম।

জান্নাত চলে যাওয়ার পর জয় এসে বলল,

জয়ঃকি হয়েছে তোদের?

আমিঃ......(সব বললাম)

রাফিঃএসব করার কি দরকার ছিলো?

আমিঃজান্নাতের হয়ে কথা বলছিস?

রাফিঃসেটা কখন বললাম?

আমিঃকথাটা ওনার হয়েই ইঙ্গিত করেছিস

রাহুলঃবাদ দে এসব।এখন ক্লাসে যায় চল।

আমিঃহুম।

ক্লাস করতেও ভালো লাগছে না।চুপচাপ বসে

আছি।জান্নাত ক্লাসে এসে আমাকে একটাও

প্রশ্ন বা কথা বলে বলেনি।জান্নাতের এমন ব্যবহার

দেখে যতোটা কষ্ট পাচ্ছিলাম তার থেকেও অনেক

বেশি নিজের প্রতি রাগ হচ্ছিলো।আর থাকতে

পারছি না।বেঞ্চের উপর থাপ্পড় দিয়ে দাঁড়িয়ে

গেলাম।সবাই চুপ হয়ে গেলেও জান্নাত নিজের

মতো করে ক্লাস নিচ্ছে।রাগটা যেনো অতিমাত্রায়

বেড়ে গেলো।

আমিঃবাইরে যাবো?

জান্নাতঃগো

বই নিয়ে চলে আসতে যাবো তখন রাফি হাত ধরলো...

রাফিঃকোথায় যাচ্ছিস?

আমিঃবাসায়

রাফিঃক্লাস করবি না?

আমিঃনা

জয়ঃকেনো?

আমিঃতোরাই ক্লাস কর বাই।

ওদের থেকে হাত ছাড়িয়ে নিয়ে চলে আসলাম।

----------------------------------------------------

রাতে খাবার শেষ করে রুমে এসে জান্নাতকে

কল দিলাম।কয়েকবার রিং হলো কিন্তু রিসিভ

করলো না।আরো কয়েকবার দেয়ার পর ফোন

বন্ধ পেলাম।হয়তো ফোন বন্ধ করে ফেলছে।

সেদিন রাতে আর কিছু না ভেবে ঘুমিয়ে গেলাম।

এভাবেই দুটো মাস চলে গেলো।জান্নাতের থেকে

এখন শুধুমাত্র পাচ্ছি অবহেলা আর কষ্ট।জানিনা

কখনো আমাকে বুঝবে কিনা।কলেজে বন্ধুদের

সাথে বসে আছি তখন ভাইয়ার ফোন থেকে

একটা কল আসে।

ভাইয়াঃতুই কোথায়?

আমিঃকলেজে আছি।

ভাইয়াঃতোকে একটা হাসপাতালের ঠিকানা দিচ্ছি

সেখানে চলে যা।

আমিঃকেনো?

ভাইয়াঃতোর ভাবির আজ ডেলিভারি/সন্তান জন্ম দিবে।

আমিঃআব্বু আম্মুকে বলছো?

ভাইয়াঃউনারা রওনা দিয়েছে আগেই।

আমিঃঠিক আছে আমি আসছি।

কলটা কেটে দিয়ে সবাইকে সত্য কথা না বলে

ভাইয়ার দেয়া ঠিকানাতে রওনা দিলাম।

ভাবিদের বাসার পাশেই প্রায় হাসপাতালটা।

কেবিন নাম্বারের কাছে যেতেই দেখলাম অনেকেই

বাইরে দাঁড়িয়ে আছে।আব্বু এখন আর আগের

মতো তেমন কথা বলে না।অনেকবার জিজ্ঞাস

করেছি,কেনো আমার সাথে এমন করছো?কিন্তু

প্রতিবারই আমাকে এড়িয়ে গেছে।উত্তর দেয়নি

কখনো। তাই এখন আর এসব জিজ্ঞাস করি না।

যখন ইচ্ছা হবে তখন কথা বলবে।আর যদি অনেক

বেশিই অবহেলা করে তাহলে না হয় হারিয়ে যাবো

সবার থেকে।পারি জমাবো অচেনা অজানা কোনো

এক দেশে।যেখান থেকে মানুষ চাইলেও আর

ফিরে আসতে পারে না।উনাদের কাছে যেতেই

শুনতে পেলাম ভাবির কন্যা সন্তান হয়েছে।এখনো

নাম রাখা হয়নি।ভিতরে গিয়ে দেখলাম ভাবির

পাশে বাচ্চাটাকে শুইয়ে রাখা হয়েছে।অনেক

বেশিই কিউট লাগছে,এমনিতেই বাচ্চাদের অনেক

সুন্দর দেখায়।

পরেরদিন ভাবিকে তার বাবা বাসায় নিয়ে গেলো।

আমরা গতকালই বাসায় চলে আসছিলাম ।

আরো কয়েকটা দিন পর গভীর রাতে দুঃস্বপ্ন

দেখে ঘুম ভেঙে গেলো।ঘুমানোর চেষ্টা করেও

ঘুমাতে পাড়লাম না। পকেটে এক প্যাকেট সিগারেট

নিয়ে ছাদে আসলাম।প্রায় অর্ধেক সিগারেট খাওয়া

শেষ তখন তুই ছাদে আসলি।

কথাগুলো শেষ করে লম্বা একটা নিশ্বাস ছেড়ে

ভাইয়ার দিকে তাকালাম। ভাইয়া নিজেও চুপ

করে আছে।অনেকটা সময় নিয়ে দুজনের মধ্যে

নীরবতা বিরাজ করছে।কেউ কিছু বলছি না।

ভাইয়া কিছু একটা ভাবতে মগ্ন আর আমি

সিগারেট খেতে।ভাইয়া কিছু বলবে তার আগে

আমিই ভাইয়াকে বললাম.....

আমিঃতুই নিচে যা আমি একটু পর আসছি।

চলবে.............

1
$ 0.00
Avatar for Koly
Written by
4 years ago

Comments