Golpo wizard

0 10
Avatar for Koly
Written by
4 years ago

গল্প এ উইজার্ড

পর্ব ১

লেখক ঃ হাসিবুল ইসলাম ফাহাদ

নিজের হাতে নিজেকেই খুন করার জন্য অফার আসলো শহরের নামকরা ভাড়াটে খুনির কাছে। তার নিজেরই একটা ছবি এসেছে আজ।ছবির লোকটাকে খুন করার পারিশ্রমিক ১৫ লক্ষ পাউন্ড"

লোকটা ৫ লক্ষ পাউন্ড এডভান্স টেবিলের উপর রেখে চলে গিয়েছে।এটাও বলেছে, কাজ শেষ হলে বাকি ১০ লক্ষ পাউন্ড কড়ায় গন্ডায় বুঝিয়ে দিবে।

এতদিনে প্রায় ৫০ টারও বেশি খুন খুব দক্ষতার সাথে করলেও হাতে নিজের ছবিটি নিয়ে প্রচুর ঘামাচ্ছিল " রিভার্স ডক্টর "। এ শহরের সবচেয়ে নামকরা প্রফেশনাল কিলার সে। তবে শহরটার আনাচে কানাচে আরো অনেক প্রফেশনাল কিলার বা ভাড়াটে খুনীরা রয়েছে। যারা সর্বনিম্ন ১ লক্ষ পাউন্ডের বিনিময়েও খুব নিষ্ঠুরভাবে মানুষকে খুন করতে দ্বিধাবোধ করে না। " রিভার্স ডক্টর" নিজে এ অফারটা রিজেক্ট করে দিলেও , তাকে মারার জন্য যদি অন্য সিরিয়াল কিলারদের টাকা দেয়া হয়, তবে তার মাথাটা স্নাইপার দিয়ে কদবেলের মত ব্লাস্ট করে দেয়া লোকের অভাব পরবে না। নিজের আসল পরিচয় গোপন রেখে মাস্ক পরে এই অন্ধকার জগতে প্রফেশনাল ভাবে খুনের কাজ চালিয়ে গেলেও মুখোশের আড়ালে সে খুব ভদ্র একজন ভুলোভালা টাইপ মানুষ। তাকে খুন করার জন্য এত টাকা কে খরচ করবে!! ভেবে পায়না সে। আদতে শহরে তার কোন আত্মীয় স্বজন ও নেই। বলতে গেলে একদম শূন্য হাতেই, অল্প বয়সে এ শহরে প্রবেশ হয়েছিল তার ।

.

.

.

উমর খান, বাংলাদেশের বরিশাল জেলায় জন্মগ্রহণ করলেও চাকরীসূত্রে সে চট্টগ্রামে বসবাস করা শুরু করেন। সেখানে তিং মাং নামের এক লুসাই উপজাতি মেয়ের সাথে তার পরিচয়। মেয়েটি কোন একটা কারণে তার লুসাই গোত্রটিকে পছন্দ করত না।

উমর খানের অফিসের খুব নিম্নপদস্থ একজন কর্মচারী ছিল তিং মাং। সবার ছুটি হওয়ার পর অফিস পরিষ্কার করে তাকে বাড়ি যেতে হত। চট্টগ্রামের একাকিত্ব জীবনে উমর খানের কোন এক অজানা কারণে তিং মাং কে ভালো লাগতে শুরু করে।

তিং মাং পরিষ্কার বাংলা ভাষা জানত। উমর উপরের পদের চাকুরীজীবী বলে খুব সহজেই তিং মাং এর সাথে কথা বলতে ও ভাব জমাতে পারলেন।

কথায় কথায় একদিন সে তিং মাং কে জিজ্ঞেস করে বসলেন, " তোমার লুসাই গোত্রকে তুমি নিজেই কেন এত ঘৃণা কর?"

তিং মাং জানালো; সে তার গোত্রকে খুবই অপছন্দ করে। এবং গোত্র থেকে সম্পূর্ন রূপে বের হয়ে আসার জন্যই এ চাকরী নিয়েছে। তিং মাং আরো জানালো

তার গোত্রে অমরত্ব লাভের জন্য শয়তানের পূজা করা হয়। এবং বাস্তবে এ অমরত্ব লাভ ও করা যায় । তাদের গ্রাম প্রধানের বয়স ১৭৫ বছর। শয়তানের পূজো করে সে এই অমরত্ব লাভ করেছে। কিন্তু পূজোর নিয়ম টা খুব ভয়াবহ। তিনবছর পর পর পূজোর লগ্ন আসে। সে সময়ে ঐ গোত্রের সবচেয়ে সুন্দর যুবতী মেয়ের প্রথম সন্তান কে পুজোতে বলি দিতে হয়। তারপর সে রক্ত দিয়ে গোসল করানো হয় শয়তান মূর্তী কে। এটা খুবই নিষ্ঠুর। এ কারনেই তার লুসাই উপজাতি পছন্দ না।

উমর : এটা তো একটা অপরাধ। পুলিশ কোন পদক্ষেপ নেয় নি?

তিং মাং : লুসাই গোত্রের সংস্কৃতি এবং জীবনধারা সাধারণ মানুষের জানা শোনার অনেক বাইরে। কেউ আমাদের নিয়ে তেমন ভাবে না। আমাদের বসবাস ও দুর্গম পাহাড়ের গহীনে, যা লোকচক্ষুর অনেকটাই অন্তরালে।

উমর তিং মাং এর কথা শুনে খুবই দু:খ প্রকাশ করেন।

তিং মাং এর চেহারায় একটু উপজাতি ছাপ থাকলেও সে ছিল অপরূপ সুন্দরী। হয়ত তার গ্রামের সবচেয়ে বেশি সুন্দরী মেয়েটাই তিং মাং। এজন্য সে ধরেই নিয়েছে, তার বাচ্চা হলে শয়তানের পূজোয় তাকে বলি দেয়া হবে। তাই নিজেকে এমন আলাদা করে রেখেছে সবার থেকে। উমর আস্তে আস্তে তিং মাং এর গভীর প্রেমে পরে।

সুন্দরী তিং মাং ও চেয়েছিল সাধারণ কোন মানুষকে বিয়ে করে সুখের সংসার বাঁধবে।

আস্তে আস্তে তাদের মনের ভাব একে অপরের কাছে প্রকাশ হয়ে যায়।

মাস ছয়েক যেতে না যেতেই তাদের বিয়ে হয়। শুরু হয় একটা সাজানো গোছানো জীবন।

.

.

দুবছরের দাম্পত্য জীবন কাটানোর পর উমরের এবং তিং মাং এর কোল আলো করে একটা ছেলে সন্তান আসে।

ছেলেটার নাম রাখা হয় ফাহাদ। গায়ের রঙ উমরের মত শ্যমলা হলেও তিং মাং এর মত হয় তার চোখ দুটো। ছেলেকে নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে যায় তারা দুজনেই। বিয়ের পরপর ই তিং মাং অফিসের কাজ টা ছেড়ে দিয়েছিল। ঘরের কাজ সামলাতো সে। উমর যা বেতন পেত তা দিয়ে চলে যেত তাদের খুব ভালো ভাবেই।

তিং মাং এদিকে ঘুনাক্ষরেও টের পায় নি তার উপর তার গোত্রের লোকেরা গোপনে লক্ষ্য রাখছে।

অমরত্ব লাভের জন্য প্রত্যেকে মরিয়া। তিং মাং ছিল ওদের গ্রামের সবথেকে সুন্দরী মেয়ে। এমনকি গ্রাম প্রধানও বলেছিলো তিং মাং এর মত সুন্দরী মেয়ে তারা আর কখনোই দেখে নি। তিং মাং এর মাও ছিল বেশ সুন্দরী। ওর মা সুন্দরী হওয়ার অপরাধে তিং মাং এর বড় ভাইকে বলি দেয়া হয়েছিল শয়তানের পূজোর জন্য।

এক দুপুরে ফাহাদকে খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিয়ে নিজেও একটু চোখ বুজেছিল তিং মাং, উমর তখন অফিসে কাজ করছিলেন।

চোখ বুজে তিং মাং কখন ঘুমিয়ে পরেছিল তার খেয়াল ছিল না। ঘুম ভাংতেই সে দেখতে পায় তার পাশে নেই ফাহাদ। সাথে সাথে উমরকে খবর পাঠায় সে। উমর সহ বেশ কিছু লোকজন খোঁজাখুঁজি চালিয়েও ফাহাদকে আর পায় না। হঠাৎ উমরের খেয়াল হয়, তাদের বাসার ফ্লোরে একটা মানুষের খালি পায়ের ছাপ। পায়ে বেশ ধুলোবালি ছিল। তাই ছাপ স্পষ্ট। তিং মাং দেখেই চিনতে পারে, এটা তার গোত্রের লোকের পায়ের ছাপ। তিং মাং ও উমর, একে অপরের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে কয়েক সেকেন্ড।

কান্নায় ভেংগে পরলেও মনোবল হারায় না তারা। ঠিক করে ফাহাদকে ফিরিয়ে আনবে। দরকার হলে পুলিশের সহায়তা নিবে।

প্রায় আধা ঘন্টা পর উমর ও তার সাথের কিছু লোক গিয়ে পুলিশ স্টেশন পৌঁছে।

সেখান থেকে ১২ জন পুলিশ তাদের সাহায্য করার উদ্দেশ্যে সাথে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে গোত্রের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। তিং মাং এর হিসেব মতে পুজো শুরু হতে আরো ১২ ঘন্টা বাকি। পুলিশ নিয়ে পৌঁছাতে একনাগাড়ে হাঁটলেও কমছে কম ৬ ঘন্টা লাগবে।

.

.

.

ওদিকে ফাহাদকে ঘিরে লুসাই উপজাতিদের লোকেরা নাচ গান শুরু করেছে।

" বিভি হুং হাং, তাইদগি বা আড়ৈ চাল..

নাভে নাভে শাইতালা হিনি আনা হুমাই দাল"

একসাথে সবাই গাইছে আর একই তালে তালে নাচছে,

ওদের কির্তী দেখে ফাহাদ আনন্দ পাচ্ছে। মায়ের জন্য কান্না ভুলে গিয়েছে একদম ই।

ফাহাদকে দেয়া হয়েছে বন থেকে শিকার করে আনা সজারু এবং শুকরের মাংস। খেতে অনীহা প্রকাশ করলেও একরকম জোড় জবরদস্তি করে পেট পুরে খাওয়ানো হয় ফাহাদকে। খাওয়া পর্ব শেষে বিশ্রামের পালা। ফাহাদের জায়গা হয় ১৭৫ বছর বয়সী গ্রামপ্রধাণের পাশে। গ্রাম প্রধাণ চাটাইয়ে শুয়ে ছিলেন। ফাহাদকে তার পাশেই বসতে দেয়া হয়। লোভাতুর দৃষ্টিতে ফাহাদের দিকে তাকিয়ে থাকে বুড়ো লোকটি। ফাহাদ হামাগুড়ি দিতে দিতে তার দিকে এগিয়ে যায়। কেউ কেউ এসে ফাহাদকে বাঁধা দিতে চাইলেও, গ্রাম প্রধাণের হাতের ইশারায় থেমে যায় তারা। গ্রামপ্রধাণের কোলের কাছে গিয়ে খেলতে থাকে ফাহাদ।

হঠাৎ শিশু ফাহাদের চোখ পরে বুড়ো লোকটির গলায় প্রজ্বলিত ছোট্ট একটি লকেটের উপর। দ্যোতি ছড়ানো লকেট টি ফাহাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। সে হাতের মুঠোয় লকেটটি ধরে একটা হ্যাঁচকা টান দেয়। লকেট খুলে ফাহাদের হাতে চলে আসে। এতেই ঘটে অঘটন। বুড়ো লোকটির মুহূর্তের ভিতরেই একটা কোৎ করে শব্দ করে উঠে নিস্তেজ হয়ে যায়। হইচই পরে যায় চারপাশে। একটু পর একজন নিশ্চিত করে গ্রামপ্রধাণ আর বেঁচে নেই।নতুন গ্রামপ্রধাণ কে হবে তা নিয়ে একটা ছোটখাটো একটা ঝামেলা বেঁধে যায় সেখানে।

.

.

.

এর মধ্যেই পুলিশ সহ উপস্থিত হন উমর এবং তিং মাং। পুলিশরা সবাই মিলে কয়েকরাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ার পর উপজাতিরা প্রায় অনেকেই ভয়ে দৌড়ে পালিয়ে বনের ভিতরে অদৃশ্য হয়ে যায়। শুধুমাত্র মহিলা মানুষরা বাচ্চাদের নিয়ে ঘরে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দেয়। গ্রামপ্রধাণের ঘরে পরে থাকে একটা লাশ ও শিশু ফাহাদ।

লাশ উদ্ধার করতে গিয়ে তিং মাং ছাড়া অবাক হয় সবাই।মৃতদেহ এতটাই বৃদ্ধ ছিল যে মনে হচ্ছিল যে লাশ উঠাতে গেলে হাত পা ছিড়ে যাবে এমন। এত বছর কোন মানুষ বাঁচতে পারে!! তা ধারণার বাইরে ছিল সবার। উমর গ্রামপ্রধাণের ঘরটা ভালোভাবে ঘুরে ফিরে দেখে এবং কিছু পুরোনো চামড়ার উপরে লেখা নথিপত্র পায়। সেগুলোকে সাথে সাথে করে নিয়ে আসে।

এদিকে তিং মাং চোখের জল মুছতে মুছতে ফাহাদকে কোলে নেয়। মায়ের সান্নিধ্য পেয়ে ফাহাদও একটু হাসিখুশি ও প্রফুল্ল হয়ে ওঠে।দ্যোতি ছড়ানো নীল লকেটটা সবার চোখের অগোচরে ফাহাদের হাতেই থেকে যায়।

বাসায় যাওয়ার পর উমর ফাহাদের হাতে লকেটটা লক্ষ্য করে। লকেট টা যে গ্রামপ্রধাণের ছিল তিং মাং তা দেখেই চিনতে পারে। সে তার গলা থেকে সোনার চেইন খুলে লকেট টি লাগিয়ে ফাহাদের গলায় পরিয়ে দেয়।

এরকম একটা ঘটনার পর উমর চাকরী ছেড়ে বাড়ি চলে আসে। কিন্তু উপজাতি মেয়ে বিয়ে করার জন্য উমরের বাবা মা কিছুতেই উমরকে তিং মাং সহ মেনে নেয় না। আশেপাশের মানুষজন ও অগোচরে বিভিন্ন কথা বলতে থাকে।

বাধ্য হয়েই উমর জায়গাজমি বিক্রি করে মিশরে উড়াল দেয়। মিশরে উমরের এক স্থায়ী নাগরিক বন্ধু ছিল তার সাথে সাথে যোগাযোগ করেই উমর মিশরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।

আসওয়ান শহরে সপরিবারে বন্ধুর কাছে উঠেন উমর ও তিং মাং। পরের মাসেই বন্ধুর বাসার কাছেই একটা বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন উমর।বন্ধুর জোগাড় করে দেওয়া একটা চাকরীও করা শুরু করে সে।

সেখানেই ফাহাদের কৈশর কাটে। ফাহাদের বয়স যখন ১৬ বছর তখন হঠাৎ করেই হার্ট এট্যাক এ মারা যান তিং মাং। তিং মাং এর মারা যাওয়ার পর উমর দ্বিতীয় বিয়ে করেন। উমরের বন্ধুর বৌয়ের বোন কে বিয়ে করে নতুন সংসার পাতেন। নতুন মা কে মেনে নিতে পারে নি ফাহাদ। বাবার সাথে রাগ করেই বাড়ি ছাড়ে সে। ভাগ্যের টানে ফাহাদ কোন ভাবে পৌঁছে যায় মিশরের রাজধানী কায়রোতে।

.

.

.

১৬ বছর বয়স থেকেই ফাহাদের একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল টাকা কামিয়ে নিজের জন্য একটা ভালো প্লাটফর্ম তৈরী করা। খুব বিচক্ষণ এবং মেধাসম্পন্ন হওয়ায় অনেক আগে থেকেই সব কিছু পরিকল্পনা করে রেখেছিল সে। অপরাধ জগতে পা দেয়া শুরু নিকোলাস এর হাত ধরে। নাইজেরিয়ান প্রবাসী হলেও এদেশে এসে কালোবাজারীর কালো টাকার লোভে সে ড্রাগসের ব্যাবসা শুরু করে। কায়রো শহরে যদি এক প্যাকেট ড্রাগ ও ঢুকে তবে তার অনুমতি নিতে হয় । নিকোলাস প্রবাসী হয়েও নিজের অবস্থান এতটাই পাকাপোক্ত করে ফেলেছিল মিশরের রাজধানীতে। তবে তার শত্রুও কম ছিল না। স্থানীয় ইবনী ছিল ড্রাগসের একজন নামকরা ডিলার। নিকোলাসের জ্বালায় সে ছিলো অতিষ্ঠ। অপরদিকে নিজের বুদ্ধিমত্তা এবং কর্মনিষ্ঠতা দিয়ে ফাহাদ নিকোলাসের বিশ্বস্ত একজন অনুচর হয়ে উঠে। সর্বপ্রথম খুনটা এই নিকোলাস কে দিয়েই শুরু করে সে।

ইবনী এজন্য ফাহাদকে ১ লাখ পাউন্ড দেওয়ার লোভ দেখায়।

ইবনীর চাল বুঝতে না পেরেই নিকোলাস কে ইবনীর কথামত রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয় ফাহাদ।এটাই ফাহাদের অপরাধ জগতের প্রথম খুন। তারপর একের পর এক মার্ডারে জড়িয়ে পরে সে।

" রিভার্স ডাক্তার " ফাহাদের উপাধি, আন্ডারওয়ার্ল্ড এ রিভার্স ডাক্তার একটা আতংকের নাম।এই নাম টা শোনা মাত্রই বুকের ভিতর ধুকপুকানি বেড়ে যায় সবার। যদিও এই রিভার্স ডাক্তার কে!? সেটা কেউ জানেও না, কেউ কোনোদিন দেখেও নি

(চলবে)

1
$ 0.00
Avatar for Koly
Written by
4 years ago

Comments