এক টুকরা জান্নাত

0 7
Avatar for Koly
Written by
4 years ago

#এক টুকরো জান্নাত#

পর্ব--২

রফিক সাহেবঃ এবার কাজের কথায় আসা যাক।আমি আমার ছেলেকে বিয়ে করাতে চাই।তাই আপনি একজন দ্বীনদার মেয়ে খুজে দেবেন।এটা আমার পক্ষ থেকে আপনার কাছে একটা আবদার ভাবতে পারেন।

ম্যানেজারঃ অবশ্যই আমি আপনার জন্য আপ্রান চেষ্টা করব ইনশাহআল্লাহ।

রফিক সাহেবঃ যত দ্রুত সম্ভব চেষ্টা করুন।

ম্যানেজারঃ যদি কিছু মনে না করেন একটা কথা বলি।

রফিক সাহেবঃ জ্বী অবশ্যই বলেন।এত দ্বিধাবোধ করার কি আছে।আপনি তো আমার ভাইয়ের মতই।

ম্যানেজারঃ আসলে আমাদের কম্পানির দাড়োয়ান আঃ রহমান ভাই আছে না?তার একটা মেয়ে আছে খাস পর্দা করে। তারা পরিবারের সবাই ই ধার্মিক। তার স্ত্রী ও খাস পর্দা করে।ছেলে মেয়ে মাদ্রাসায় পড়ে।আমি যতদিন তার বাসায় গিয়েছি আমাকে অনেক আপ্যায়ন করেছে।তার সাধ্য অনুযায়ী। তার বাসায় সবসময় একটা ইসলামিক পরিবেশ বিরাজ করে।যতবারই গিয়েছি একবারও তার স্ত্রী কন্যাকে দেখাতো দূরের কথা তাদের কথার একটা আওয়াজ ও পাইনি।আপনি যদি চান তবে এ মেয়েটির জন্য বিয়ের প্রস্তাব দিতে পারেন।যদিও আপনাদের স্ট্যাটাসের সাথে যায় না।কিছু মনে করবেন না প্লিজ।

রফিক সাহেবঃ আরে এতে মনে করার কি আছে।বরং আমি খুশি হয়েছি এরকম একটা মেয়ের সন্ধান দিতে পেরেছেন বলে।আপনি আঃ রহমান ভাইয়ের সাথে আজই এ নিয়ে কথা বলবেন।এবং আমাকে জানাবেন।

সকাল ১১ টা রফিক সাহেবের একমাত্র ছেলে রিয়ান মাত্র ঘুম থেকে উঠলো।উঠেই মাকে ডাকতে শুরু করল।

রিয়ানঃ মা মা তাড়াতাড়ি আমাকে নাস্তা দাও।বের হবো।

মাঃ কোথায় যাবে?

রিয়ানঃ বন্ধুদের সাথে লং ড্রাইভে যাব।

মাঃ ওহ তা সাবধানে যাস।

রিয়ান নাস্তা করে বের হল।সে লং ড্রাইভে যাবে ঠিকই। কিন্তু বন্ধুদের সাথে না গার্ল ফ্রেন্ডের সাথে।মাকে সে মিথ্যা বলল।

৩০ মিনিট হয়ে গেছে রিয়ান তার জিএফ মেঘা এর বাসার সামনে গাড়ি নিয়ে দাড়িয়ে আছে। একটু পর মেঘা আসলো।

মেঘাঃ হাই রিয়ান

রিয়ানঃ হাই

মেঘাঃ রাগ করলে নাকি?

রিয়ানঃ আরে না।রাগ করব কেন?তোমাকে আজ খুব সুন্দর লাগছে।

এবার চলো যাওয়া যাক।

মেঘাঃ হুম চলো।

রেহানা বেগম একা বাড়িতে। তার মেয়ে রিমি কলেজে গিয়েছে। কাজের মেয়েকে ডেকে কি কি রান্না হবে সেটা বলে সে বের হয়ে গেল পার্লারের উদ্দিশ্যে।সন্ধ্যায় তার এক বান্ধবীর বার্থডে পার্টি।সেখানে সন্ধ্যায় যাবে।তার জন্য গিফট কিনতে হবে।

রফিক সাহেব তার রুমে বসে কাজ করছেন।এমন সময় ম্যানেজার আঃ রহমানকে সাথে করে তার রুমে আসলেন।

ম্যানেজারঃ স্যার আসতে পারি?

রফিক সাহেবঃ হ্যাঁ আসেন।

ম্যানেজারঃ আসসালামু আলাইকুম

রফিক সাহেবঃ ওয়ালাইকুম সালাম।বসেন আপনারা বসেন।

ম্যানেজার বসলো কিন্তু আঃ রহমান দাড়িয়ে রইলো।

রফিক সাহেবঃ কি ব্যপার আঃ রহমান ভাই বসছেন না কেন?

আঃ রহমানঃ স্যার আমি আপনার সামনে বসবো? এটা কেমন দেখায় বলেন? আমি একজন সামান্য দাড়োয়ান। আমার কি এটা মানায়?

রফিক সাহেবঃ দেখুন ভাই আমরা সবাই এক আল্লাহর সৃষ্টি। সবার আগে আমরা সবাই মানুষ।কে বড় কে ছোট এটা কোন বিষয় নয়।আল্লাহ না করুক যে কোন মূহূর্তে আমিও পথের ফকির হয়ে যেতে পারি। কেননা আমার নামে যত সম্পদ আছে তার মালিক একমাত্র আল্লাহ।আমাকে দিয়েছেন শুদুমাত্র দেখাশুনা করতে।সেটা নিয়ে যদি আমি অহংকার করি তাহলে আল্লাহ যে কোন সময় সেটা কেড়ে নিতে পারে।যাই হোক আপনি বসুন।আমি আজ আপনার কাছে কিছু চাইবো।যদি মেহেরবানি করে আপনি রাজি থাকেন।

আঃ রহমানঃ অবশ্যই চাইতে পারেন।আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করব আপনাকে দেওয়ার।বাকিটা আল্লাহর ইচ্ছা।

রফিক সাহেবঃ আমি যতদূর শুনেছি আপনার এক মেয়ে আছে?

আঃ রহমানঃ জ্বী স্যার।

রফিক সাহেবঃ মেয়ে কিসে পড়ে?

আঃ রহমানঃ মাদ্রসা থেকে ফজিল পাশ করেছে।এখন কামিল ভর্তি করব।

রফিক সাহেবঃ মাশাল্লাহ।তা আপনি যদি রাজি থাকেন তাহলে আপনার মেয়েকে আমার পুত্র বধু করতে চাই।

আঃ রহমানঃ এ তো অনেক বড় সৌভাগ্য আমার।কিন্তু আপনারা কোথায় আর আমরা কোথায়? এতে আপনার সোসাইটির লোক আপনাকে নিয়ে হাসবে।

রফিক সাহেবঃ কে কি বলল তাতে আমার কিছু যায় আসে না।আর ব্যবধানের কথা বলছেন।একটু আগেই আমি আপনাকে বলেছি আমরা সবাই আল্লাহর সৃষ্টি। আপনি রাজি কিনা বলেন?

আঃ রহমানঃ আমার অমত করার মত কি কিছু আছে স্যার?

রফিক সাহেবঃ তাহলে আগামী কাল আমরা আপনার বাসায় যাব ইনশাআল্লাহ।

রফিক সাহেব তাদের বিদায় দিয়ে আবার কাজে মন দিলেন।অফিস শেষে বাসায় এসেছেন সন্ধ্যায় ।পুরো বাসা ফাকা।হাতমুখ ধুয়ে একটু বিশ্রাম নিলেন।

চলবে........

1
$ 0.00
Avatar for Koly
Written by
4 years ago

Comments