গল্প:- বাল্য_কালের_বউ
১ম পর্ব
সাদিয়ার সাথে আমার বিয়ে হইছে সেই ছোট থাকতে আমার বয়স তখন ছয়(৬) আর সাদিয়ার বয়স আমার থেকে এক বছরের ছোট পাঁচ (৫) বছর। তবে সাদিয়া কিন্তু সম্পর্কে আমার আপন চাচাত বোন যদিও বিয়েটা আমাদের দুই পরিবারে ইচ্ছার উপর ভিত্তি করে হয়ছে তবে সবার আনন্দে নয় বিয়েটা দিয়েছে আমার দাদা কারন আমার আব্বু আর চাচা দুজন দুই গ্রহের মানুষ।
আব্বু চাচাকে দেখতে পারেনা আর চাচা আব্বুকে দেখতে পারেনা তাই দাদা আমার আর সাদিয়ার ছোট থাকতে বিয়ে দিয়েছে যাতে করে ওদের সম্পর্ক খারাপ থাকলেও আমাদের দুজনের কারনে যেন টিকে থাকে ওদের ভাইদের সম্পর্ক। কিন্তু কাবিন নামাই দাদা একটা কথা একটু আলাদা করে লিখে গেছে সেই কথাটা কি লিখে গেছে তা আমি জানিনা সেইটা আব্বু আর চাচা ভালোই যানে। দাদা মারা গেছে আমাদের বিয়ের তিন (৩)বছর পরে তখন চাচা আমাদের কাছ থেকে সাদিয়াকে সাথে নিয়ে একটু দুরে চলে গেছে ওনার পরিবার সহ।
আমার দাদার দুইটা বাড়ী ঢাকায় আর ওনার দুই ছেলে যেহেতু তাই দাদা মারা যাবার পর চাচা অন্য বাড়ীতে ওঠে গেছে সাদিয়াকে সাথে নিয়ে। সাদিয়ার সাথে আমার দেখা হইনা আট (৮) বছর যাবাত কারন আমি চিনিনা আমার চাচার বাড়ী তাই যেতেও পারিনা। রুমে শুয়ে শুয়ে সাদিয়ার আর আমার ভাল্য_কালের_বউ ছবিটা দেখতেছি কত কিউট ছিলো আমার বউটা এখন মনে হয় আরো সুন্দর হয়ছে তখনি,,
আম্মু:- খালি এই ছবিটা দেখে যেতেই হবে কোন দিন আর খুঝে পাবেনা। তোর দাদা বেচে থাকলে সম্বব হত কিন্তু ওনি মারা গেছে এখন তা আর সম্বব হবেনা আর তাছারা সাদিয়ারা কোথায় আছে তুই জানিস না। এখন তোর চাচা আর তোর আব্বু এই বিয়ে কোন দিন মেনে নিবেনা তাই সময় থাকতে ভালো একটা মেয়ে দেখে প্রেম করে বিয়ে করে নে তাহলে ভালো হবে। সাদিয়ার
আমি:- এত বছর ধরে সাদিয়াকে ভালোবাসি আর এত সহঝে ভূলে যাবো তা কি করে হয়?
আম্মু:- তাহলে সাড়া জীবন এই ছবিটা নিয়ে থাকতে হবে আর সাদিয়ার দেখা কোন দিন পাবিনা।
আমি:- আম্মু তুমি বলোনা সাদিয়ারা ঢাকা কোথায় থাকে আমি গিয়ে সাদিয়াকে নিয়ে আসবো প্লিজ আম্মু তোমার পায়ে পরি তুমি একবার বলো।
আম্মু:- তোর কি মনে হয় তুই যাবি আর তোর চাচা সাদিয়াকে তোর হাতে তুলে দিবে! আর তোর আব্বু যদি জানতে পারে তাহলে আমাকে এই বাড়ী থেকে বের করে দিবে।
আমি:- তাহলে আমি আর অন্য মেয়েকে বিয়ে করছিনা তোমার নাতি নাতনির মুখ দেখা লাগবেনা।
আব্বু:- কে নাতি নাতনির মুখ দেখতে পারবেনা শুনি?
আমি:- পাশের বাড়ীর চাচার ছেলের বউয়ের নাকি কোন সন্তান হবেনা তাই আম্মুকে ওনা নাকি বলছে আমার জীবনে নাতি নাতনির মুখ দেখতে পারবোনা।
আব্বু:- কেন ওনার সাথে তো আমার বিকালে দেখা হয়ছে ওনি তো আমাকে বলছে ওনার ছেলের বউয়ের সন্তান হয়ছে।
আমি:- ওনার নয় অন্য বাড়ীর, আম্মু আমার খিদা লাগছে আমাকে খেতে দাও। আব্বুর কথা শোনলে মনে হয় আমাকে জন্ম দিয়ে একে বারে আমার জীবনটা কিনে নিয়েছে। খানা খেয়ে মনটা খারাপ করে রুমে এসে পরেছি কবে যে আমার ময়না পাঁখিকে দেখতে পারবো আল্লাহ যানে। সাদিয়ার ছবিটা বুকের উপর নিয়ে ঘুমিয়ে পরেছি। একটু ছোট করে পরিচয়টা দিয়ে নেয় আমি সিহাব হোসেন অনার্সে ২য় বর্ষে পরি আর বাবা নিজের ব্যবসা করে আম্মু বাসায় থাকে আমি তাদের এক মাত্র ছেলে। সাদিয়ার সাথে আমার বিয়ে হয়ছে এইটা সবাই বুঝতে পারছেন। এখন ঘুমায় বাকি কথা ঘুম থেকে ওঠে বলবো। সকালে ঘুম থেকে ওঠে কলেজে যাবো এমন সময়।
আব্বু:- সিহাব দেখ তো এখান থেকে কোন মেয়েটা তোর পছন্দ হয়। সিহাব হোসেন
আমি:- সামনে তো কোন মেয়ে নেয় তাহলে বলবো কি করে?
আব্বু:- গাধা সামনে নয় এই ছবি গুলা দেখে বল।
আমি:- আপনি আবার বিয়ে করবেন আম্মু দেখে যাও তোমার সতিন আনার জন্য ব্যাবস্থা করতেছে।
আব্বু:- হারামজাদা আমার জন্য নয় তোর জন্য তুই এখান থেকে একটা মেয়ে পছন্দ করে আমাকে বলবি আমি তোর বিয়ে দিব।
আমি:- আমার তো বিয়ে হয়ে আছে তাহলে বিয়ে করবো কেন আমার বউ আছে আমি সাদিয়াকে ছারা আর কাওকে বিয়ে করবোনা এক নিশ্বাষে বলে ফেলছি। আব্বু আমার কথা শোনে আমার দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে আছে।
আব্বু:- ঐ মেয়েকে আমি তোর বউ হিসাবে মানিনা এই বিয়ে কোন বিয়ে নাকি! আর তোর জন্য কি ওর মেয়েকে এখনো বসিয়ে রাখছে নাকি ঐ মেয়েকে আমি এই বাড়ীতে জীবনেও মেনে নিব না। যদি তুই রাস্তা থেকে ফকিন্নির মেয়ে বিয়ে করে নিয়ে আসিস তাহলে আমি মেনে নিব কিন্তু ঐ মেয়েকে মেনে নিব না।
আমি:- তাহলে আমি অন্য কোন মেয়েকে বিয়ে করবোনা আর ওর সাথে আমার তো ডির্ভোস হইনি তাহলে অন্য মেয়েকে বিয়ে করবো কি করে?
আব্বু:- আরে দুর এই বিয়েটা কেও মনে রাখেনি আর ডির্ভোস হওয়ার দরকার কি, এক কাজ কর এখানের মেয়ে গুলি অনেক ভালো আছে যে কোন একটা মেয়ে পছন্দ করে আমাকে জানিয়ে দিবি আজ রাতের মধ্যে।
আমি:- বিয়ে করলে আমি পরে করবো এখন আমার বিয়ে করতে ইচ্ছে করছেনা বলে ছবি গুলা না দেখে চলে আসতেছি আর আব্বু চেচা মিচি করতেছে আমি শোনেও না শোনার বান করে চলে আসছি। কলেজের সামনে গেছি তখনি দেখি অনেক গুলা লোক এক সাথে ঝরো হয়ে আছে, কাছে গেছি তাকিয়ে দেখি একজন মাঝ বয়সি মহিলা এক্সিডেন্ট করে পরে আছে। কেও ধরতেছেনা আমি গিয়ে ওনাকে ধরে মাথাটা তুলে আমি পুরাই অবাক হয়ে গেছি আরে ওনি তো আমার চাচিমা মানে আমার শ্বাশুমা। তারা তারি করে ওনাকে হাসপাতালে নিয়ে গেছি। ডাক্তারকে বলে ওনার টিটমেন ব্যাবস্থা করেছি ডাক্তার দেখে বলে,,
ডাক্তার:- ওনার তো এক্সিডিন্ট হয়নি কিছুক্ষনের মধ্যে জ্ঞান ফিরবে তখন বাসায় নিয়ে যেতে পারবেন।
আমি:- কি হয়ছে ওনার কোন সমস্যা হবেনা না তো?
ডাক্তার:- একটু পেশায় কমে গেছিলো তাই অজ্ঞান হয়ে গেছে আমি ঔষুধ দিয়েছি ঠিক হয়ে যাবে।
আমি:- ঠিক আছে ডাক্তার চলে গেছে আমি চাচির পাশে বসে আছি, কিছুক্ষন পর চাচির জ্ঞান ফিরে এসেছে চাচি আমাকে দেখে বলে,,
চাচি:- আমি কোথায় আর তুমি কে?
আমি:- (চাচিকে আমার পরিচয় দেওয়া যাবেনা কারন চাচি তাহলে আমার সাথে কথা বলবেনা) আমার নাম সিহাব হোসেন আপনি এখন হাসপাতালে আছেন।
চাচি:- বুঝতে পারছি আমি মাথা ঘুরে পরে গেছিলাম রাস্তায়। আমার একটা কাজ করবে?
আমি:- হ্যা বলেন কি কাজ?
চাচি:- আমাকে একটু বাসায় দিয়ে আসবে?
আমি:- ( আরে এতদিন ধরে আমি আপনাদের বাড়ী খুঝতে ছিলাম আর আপনি নিজেই নিতে চাচ্ছেন) হ্যা নিশ্চয় চলেন আমি আপনাকে বাসায় দিয়ে আসি। হাসপাতালের বিলটা দিয়েছে চাচি আমি দাঁড়িয়ে দেখলাম। চাচিকে সাথে করে যেতেছি।
চাচি:- আচ্ছা তুমি কি করো আর কোথায় থাকো?
আমি:- পড়াশোনা করি থাকি একটা ব্যাচেলর রুমে গ্রামে আমাদের বাড়ী আছে।
চাচি:- কোথায় তোমাদের গ্রামের বাড়ী?
আমি:- এই তো,,,,,, কুমিল্লা।
চাচি:- বাড়ীতে কে কে আছে?
আমি:- বাবা মা।
চাচি:- তুমি তাদের এক মাত্র ছেলে ভালো আচ্ছা আমার বাসা এসে গেছি চলো ভীতরে যাবে।
আমি:- ঠিক আছে চলেন, চাচির সাথে বাসার ভীতরে ঢুকতেছি আর বুকের ভীতরে ভয় ভয় কাজ করতেছে তবে সাদিয়াকে দেখার জন্য চোখ দুইটা এদিক সেদিক ঘুরতেছে। বাসার ভীতরে ঢুকে দেখি বাসাটা অনেক সুন্দর করে সাজিয়ে রাখছে।
চাচি:- তুমি এখানে বসো আমি ফ্রেস হয়ে আসতেছি।
আমি:- ঠিক আছে আমি নিচে সুফায় বসে আছি তখনি কেও আমার চোখ ধরে বলে,,
বলেন তো আমি কে?
আমি:- (কন্ট শোনে মনে হচ্ছে ছোট বাচ্ছা মেয়ে হবে তাও আপনি করে বলতেছি ইচ্ছে করে) কি করে বলবো আপনি কে চোখ গুলো তো আপনি ধরে রাখছেন।
অনুমান করে বলেন।
আমি:- (না আনতাজি নাম বলা যাবেনা কারন যদি সাদিয়ার নাম বলি তাহলে এখানে সব শেষ হয়ে যাবে।) আপনাদের বাড়ীতে এই প্রথম এসেছি আমি বলতে পারবোনা। তখনি আমার চোখ ছেরে দিয়ে নিজের চোখ গুলা বন্ধ করে বলতেছে,,
দুলাভাই আপনি আমাকে ভূলে গেছেন গতকাল রাতে আপনার সাথে আমরা বসে ডিনার করেছি। আর এখুনি আমাকে ভূলে গেছেন। আচ্ছা কেমন আছেন আর এত তারা তারি চলে আসলেন?
আমি:- আগে চোখ গুলা খুলেন তারপর আমাকে দুলাভাই বলেন। মেয়েটা চোখ খুলে তাকিয়ে কিছুটা লজ্জা পাইছে।
মেয়ে:- সরি আমি বুঝতে পারিনি আমার বড় আপুর বিয়ে ঠিক হয়ছে ২০ দিন পর আপুর বিয়ে। পেছনটা দেখতে ঠিক আপনার মত তাই দুলাভাই বলছি।
আমি:- ঠিক আছে সমস্যা নেয় বলে শিড়িতে তাকিয়ে দেখি অন্য একটা মেয়ে নামতেছে, আমার মনে হচ্ছে এইটা সাদিয়া হবে বাহা অনেক সুন্দর হয়ছে আমার ভাল্য_কালের_বউ।
মেয়ে:- আপু আমি এই ভাইয়াকে দুলাভাই মনে করে চোখ টিপে ধরেছি। আর এই যে মিষ্টার ওনি হচ্ছে আমার বড় আপু নাম সাদিয়া দেখতে কিন্তু অনেক সুন্দর তাইনা।
আমি:- হ্যা অনেক সুন্দর তোমার আপুর বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে?
মেয়ে:- হ্যা হয়ে গেছে সামনে মাসে ২০ তারিখে আপুর বিয়ে।
সাদিয়া:- এই পাকনা বুড়ি অচেনা একটা ছেলেকে বাসার সব কিছু বলতেছিস কেন? আর আপনি কে এখানে কার কাছে এসেছেন কোথায় থেকে যে এই সব আসে আল্লাহ যানে। বের হোন বলছি তানা হলে ঘার ধাক্কা দিয়ে বের করে দিব।
চাচি:- সাদিয়া কি হচ্ছে এই সব তুমি দেখি তোমার বাবার মত ব্যাবহার করতে শিখে গেছো?
সাদিয়া:- আম্মু তুমি আনছো এই লোকটাকে দেখতে কেমন লাগে ছিঃ কি দুর গন্ধ। (চাচিকে রাস্তা থেকে হাসপাতালে নিতে গিয়ে আমার সাটটা ময়লা হয়ে গেছে আর একটু ঘামের গন্ধ করছে তাই সাদিয়া এমন করতেছে।)
চাচি:- ওর জন্য আজকে আমি বাড়ী ফিরে আসতে পারছি, চাচি সব কিছু সাদিয়াকে খুলে বলছে সব কিছু শোনে সাদিয়া এমন এক কথা বলবে তা আমি কল্পনাও করতে পারতেছিনা। এতটা পরিবর্তন সাদিয়ার মাঝে হলো কি করে এই ভাবতেছি তখনি,,,
সবার সারা পেলে ২য় পর্ব দিবো
1
22
বাল্যকালের বউ কথাটা অনেকটা সিনেমার কাহিনীর মতন। ধন্যবাদ গল্পের লেখক কে এমন সুন্দর গল্প উপহার দেওয়ার জন্য।