ভালবাসার গল্প(part-1

0 7
Avatar for Kobita
Written by
4 years ago

❤ত্রিশ মিনিট -

ভালবাসার গল্প(part-1)

_________________________________________________

আমার স্ত্রীর বিয়ের আগে অন্য একজনের সাথে সম্পর্ক ছিল। যেদিন আমি ওকে দেখতে গিয়েছিলাম সেদিন অনেকক্ষন বসে ছিলাম সোফায় কোন এক প্রতিবন্ধির মত। সবাই যখন এই কথা সেই কথা নিয়ে হাসাহাসিতে ব্যস্ত আমি তখন অপেক্ষা করছিলাম জেনিয়া কখন আসবে। ত্রিশ মিনিট পর ও সবার সামনে এসে সালাম দিয়ে ঠিক আমার সামনা সামনি বসে। যেই আমি ওর আসার জন্য অপেক্ষা করছিলাম সেই আমি মুহুর্তের মধ্যে অস্বস্থিবোধ করছিলাম। বিষয়টা অস্বস্থি না ও বলা যেতে পারে। কেমন যেন সমস্ত নার্ভাস আমাকে আচ্ছোন্ন করে তার করে নিয়েছিল। সবাই যখন ওকে টুকটাক কিছু আস্ক করতে লাগলো আমি তখন আড় চোখে ওকে বার বার দেখছিলাম। খানিক বাদে আমার মামা কৌশলে আমাদের দুজনকে কথা বলার জন্য ব্যবস্থা করে দেয়। ছাদে এসে দুজনে কিছুক্ষন নিরবতা পালন করলাম। আমি কি বলে ওর সাথে কথা বলবো বুঝতে পারছিলাম না। সে মাথায় ঘুমটা দিয়ে জড়োসড়ো চুপ করে দাঁড়িয়ে ছিল। আমি ইতস্তত হয়ে তাকে সালাম দিয়ে জিজ্ঞেস করলাম “আপনার নাম কি?” সে আমার দিকে একটু তাকায়। এই তাকানোর মাঝে একটা অর্থ বুঝা যাচ্ছিল সেট হলো “ঢং ধরেন? নাম তো ঠিকই জানেন।” সে আস্তে করে জানায় জেনিয়া।” আমি বললাম “নামটা সুন্দর, আপনার মত “সে চুপ করে তাকিয়ে থাকে। এরপর চারপাশটায় আবার নিরবতা ভর করে। কিন্তু এই নিরবতা আমাকে বেশিক্ষন পর্যন্ত গ্রাস করতে পারেনি। ফের ইতস্তত হয়ে বললাম “আমার নাম জিজ্ঞেস করবেন না?” তারপর সে ইতস্তত হয়ে বললো “আমি জানি আপনার নাম জাহেদ।” আমি একটা মৃদু হাসি দিলাম। বিকেল বেলার রোদ্দুর ছায়াটা আস্তে আস্তে করে হারিয়ে যাচ্ছিল আর আকাশের মেঘ গুলো আমাদের মাথার উপর দিয়ে বয়ে বেড়াচ্ছিল। এই ছায়া আর আকাশের মেঘের সংমিশ্রনে পড়ন্ত বিকেলের উন্মাদ করা সৌন্দর্যের প্রফুল্লতা আভা আমি দেখতে পেয়েছিলাম। আমি ভাবছিলাম ওকে আর কি বলা যায়। যেই আমি বলতে যাবো পাত্র হিসেবে আমাকে আপনার কেমন লেগেছে জানতে পারি? কিন্তু এই কথা বলার আগেই জেনিয়া গম্ভীর হয়ে আমাকে বললো “আপনাকে কিছু কথা বলতে চাই।” আমি মাথা দিয়ে হ্যাঁ সূচক সম্মতি দিয়ে বললাম “বলুন।” সে আরও একটু সময় নিল। তারপর আামার দিকে তাকিয়ে বললো “আমি বুঝতে পারছি না আপনাকে কথাটা কিভাবে বলবো বা আামার বলার উচিৎ কিনা। আসলে আমার একজনের সাথে রিলেশন আছে।” ওর মুখে এমন কথা শুনে আমি কিছুক্ষন চুপ হয়ে গিয়েছিলাম। তবে বিষয়টা আমি মারত্নক ভাবে নেইনি। কারণ এ সময়টায় এসব বিষয় হরহামেশা হয়। আমি বললাম “পরিবারকে জানাননি কেন?” সে বললো “বলার মত একটা পরিস্থিতি থাকতে হয়। সে পরিস্থিতিটা আমার জন্য আসেনি। আবিদ চাকরির জন্য চেষ্টা করছে। ভেবেছিলাম চাকরিটা পাওয়ার পরই বিষয়টা নিয়ে বাসায় কথা বলবো। কিন্তু তা আর হলো কই?” আমি কিছু না বলে ছাদে গম্ভীর হয়ে ওর দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে ছিলাম তারপর পায়চারি করছিলাম। সে আমার দিকে অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল যে এই আমি এমন ভাবে পায়চারি করছি কেন। অনেকক্ষন পর আমি পায়চারি বন্ধ করে বললাম "আপনাদের সম্পর্কটা কি খুব গভীর?" সে কি প্রত্যুত্তর দিবে বুঝতে পারছিল না। কিন্তু আমার এই কথার ধরনটা ঠিকি বুঝতে পেরেছিল। তারপর সে খুব স্বাভাবিক ভাবেই জানালো "আপনি যেমনটা ভাবছেন তেমন কোন সম্পর্কই হয়নি। সম্পর্কটা শুধু ভালোবাসার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। এই প্রান্ত থেক অপর প্রান্তের মানুষটাকে মিস করার মত শত শত অনুভূতিটাই হচ্ছে আমাদের সম্পর্ক।" আমি একটু মাথা চুলকিয়ে বললাম “ঠিকাছে আপনাকে আমি সাহয্য করতে পারি” সে আমার সাহায্যের কথা শুনে ভ্যাবাচিকা খেয়ে বললো “কি রকম?” আমি বললাম "আবিদের সাথেই যেন আপনার বিয়েটা হয় এই ব্যাপারে একটু হেল্প না হয় করলাম তবে একটা শর্ত আছে। শর্তটা পরে বলছি। প্রথমে আমি আপনার বাবা মায়ের কাছ থেকে সময় নিব এই যে আপনি আর আমি দুজন দুজনকে ভালোভাবে চেনা, জানার একটু প্রয়োজন আছে। দুজনে একটু বুঝে তারপর ডিসিশন জানাবো। আর শর্তটা হচ্ছে আবিদকে আমি চাকরি দিব তবে আবিদের চাকরি হওয়ার পরও এই বিষয়টা বাসায় জানাবেন না। এই জন্য জানাবেন না, কারণ মানুষ পরিবর্তনশীল। টাকা, পয়সা মানুষকে পরিবর্তন করে দেয়। আমার সাথে আবিদকেও বুঝার দরকার আছে। বুঝার পর তার পরিবর্তন আপনার কাছে যদি পছন্দ না হয় তাহলে আমাকে বিয়ে করতে হবে, রাজি? এটাই শর্ত।" সে আমার শর্ত শুনে ভ্রু কুচকে অবাক হয়ে বললো "আমার আবিদ কখনো এমন হবে না" তারপর জেনিয়া আমার শর্তে রাজি হয়েছিল। এই শর্তটা আমি না দিয়ে বিয়েটা ক্যান্সেল করে দিতে পারতাম। কিন্তু এই শহরের পড়ন্ত বিকেলের উন্মাদ করা সৌন্দর্যের মাঝে তার শরীরের স্নিগ্ধ গন্ধটা আমার ভিতরটাকে যখন নাড়িয়ে দিল তখন আমি আমার মাঝে ছিলাম না। যেন আমি সূর্যের উত্তাপ রোদ্দুর থেকে বাঁচার জন্য জেনিয়া নামক ছায়ার আচলে আশ্রয় নিয়েছিলাম। কথা বলার ত্রিশ মিনিট পর পবিবারের সবাইকে বিষয়টা বললাম আমাদের দুজনের একটু ভালোভাবে চেনা জানার প্রয়োজন আছে। তারা আমাদের কথায় সম্মতি জানায়।

গল্প পড়ে লাইক কমেন্টস করবেন �

তা হলে লেখক/লেখিকা দের ভালো লাগবে�

1
$ 0.00
Avatar for Kobita
Written by
4 years ago

Comments