শীতের রাত । ঘড়ির কাটায় ঠিক ১ টা বাজে। আবীর শুধুমাত্র একটা টিশার্ট পরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েছে। ঢাকার রাস্তায়। হাঁটতে হাঁটতে তার খেয়াল নেই শীতের দিকে। ঢাকার রাস্তায় সােডিয়াম এর হলুদ আলাের নিচ দিয়ে হেঁটেই চলেছে সে। কুয়াশার জন্য আলােটাও যেন আবছা হতে চাচ্ছে । আবীর যেন চাচ্ছে পিছ থেকে। একটা ডাক শুনতে... একটা পরিচিত কন্ঠ বলতে যা বােঝায় । কিন্তু না কোনাে শব্দই নেই... কেউ ডাকছেও না। আবীরের কোনাে দিকে কোনাে খেয়াল নাই। সে হেঁটেই চলেছে... হঠাৎ সে শুনতে পেল যেন কেউ তাকে ডাকছে। কণ্ঠটা চেনা আবার অচেনা... যেন নিজের কণ্ঠটাই সে শুনছে। সে থমকে দাঁড়ালাে। একটু এদিক সেদিক দেখে আবার হাঁটা শুরু করবে এমন সময় আবার সে শব্দটা শুনতে পেল। -হ্যাঁ, তােমায় ডাকছি আবীর; আমি তােমার ছায়া...চিনতে পারছাে না আমায়??? -মানে কি??? তু-তুমি আমার ছায়া। কথা বলছাে আমার সাথে! -হুম তাই তাে বলছি। কেন কথা বলবে না আমার সাথে? তাইলে কি আমি যাব? -হু, না বলাে কি বলবে? আচ্ছা তুমি আমার ছায়া... কথা বলছাে আমার সাথে.. -হুম। আমি তােমার ছায়া; তােমার সাথে সর্বদা থাকি। তােমার সব কিছুই জানি, বুঝি। তা বলতাে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসলা কেন? -কই না তাে। আমি ঠিক আছি। -রাগ করে চলে আসলা? আর বলছাে কিছুই না? -না আমি ঠিক আছি। আমি রাগি নাই. আমি একটু ঘুড়তে বেরিয়েছি। আমার মনটা বড় অশান্ত। তুমি তাে বললেই যে জানাে সবকিছুই। -হুম। মনে পড়ছে ওর কথা? নাকি? -না... মানে না কিছু না। -আহা, মনে পড়ছে। আহা কি চলছে মনে তােমার? বলে দিতে ইচ্ছে করছে তাে বলে দাও না ওকে..-না পারব না বলতে। আমি.. আমি পারব না। -আহা পারবে তাে... তুমি পারবে, পারবে.. হঠাৎ একটা চেনা কণ্ঠ শুনতে পারল আবীর... যেই কন্ঠটা শুনতে চাচ্ছিল ও কিছুক্ষন আগেও। তাকালাে সামনে মুখ তুলে... সামনে থেকে অনন্যা হেঁটে ওর সামনে এসে দাঁড়ালাে। -কিরে এখানে বসে কি করছিস, এই ফুটপাতে:তাও আবার এত রাতে..রাত বাজে কয়টা খেয়াল আছে? গরু... (রাগের সাথে) -না মানে তুই এখানে??? আসলে এমনি হাটছিলাম একটু.. এখানে একটু বসেছি...কখন যে বসেছি তা তাে খেয়াল আসছে না... মনে মনে বলল আবীর)। -আমি এখানে মানে? সামনের বাড়িটা দেখ তাে... চিনিস নাকি.. আরে এটা তাে অনন্যার বাড়ি...মনে মনে বলে উঠল আবীর... -না মানে খেয়াল করি নাই কোনদিক দিয়ে যে হাটছিলাম... তা কি করছিলি??? -উফফফ...এতাে রাতে মানুষ কি করে??? ঘুমােতে যাব তাে দেখি তুই বসে... -না মানে ... -থাক আর মানে মানে করতে হবে না। এই নে মিস্টি খা...। -আরে তুই মিস্টি নিয়ে আসলি??? কিভাবে জানলি যে আমার খিদে পেয়েছে...(একটা বাচ্চা বাচ্চা হাসি দিয়ে) -থাক আর কেলাতে হবে না দাঁত বের করে... আনলাম কারন জানতাম তুই খালি খাই খাই করিস সবসময়...নে খা এখন।। এই বলে অনন্যা আবীরের মাথায় একটা চড় মারল। হঠাৎ আবীর সম্বিত ফিরে পেল। তাকিয়ে দেখে ক্লাসে বসেই ঘুমিয়ে পড়েছিল ও... সামনে অনন্যা দাঁড়িয়ে... চোখে প্রচুর রাগ...ওইভাবেই আবীরের দিকে তাকিয়ে অনন্যা জিজ্ঞেস করল— -এই আমার নােট খাতাটা আজও আনিস নাই তাই না??? আর ক্লাসে পড়ে পড়ে ঘুমাচ্ছিলি...রাতে কি ঘােড়ার জন্য ঘাস কার্টিস নাকি?ঘুম ভেঙে যায় আবীরের... চোখ চুলকে আবীর অনন্যা এর দিকে তাকায়...আর বলে -না না এনেছি তাে নােট খাতা... এতাে জোরে মারে কেউ! ওই একটু আরকি ঘুমিয়ে পড়ছিলাম আরকি... -গুড..গুডবয়. এই নে তাের জন্য মিস্টি এনেছি...চল ক্যান্টিনে খাবি... -বাহ তুই এনেছিস মিস্টি!!! -হুম থাক আর কেলাতে হবে না... তাের তাে খিদে লেগেই থাকে... চল ক্যান্টিনে, খাবি।(মুচকি হেসে) অনন্যা জানে আবীর ওকে কতােটা ভালবাসে... অনন্যাও আবীরকে অনেক ভালবাসে কিন্তু কেউ কাউকে বলে না... বলতে পারে না। হয়তাে ভালবাসা এর কথা না বলাতেই বেশি ভালবাসা প্রকাশ পায়...আর এভাবেই চলতে থাকে ওদের না বলা
nice dear