প্রায় ৬ কোটি বছর আগে এক ভয়াবহ ভূমিকম্পের ফলে আন্দিজ পর্বতমালায় ফাটল ধরে।তখন হিমবাহ গলা পানি জমে সৃষ্টি হয় একটি হ্রদ। এটিই টিটিকাকা হ্রদ।
দক্ষিণ আমেরিকার দেশ বলিভিয়া ও পেরুর মধ্যে অবস্থিত টিটিকাকা হ্রদ।সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় সাড়ে ১২ ফুট উচ্চতায় এটি অবস্থিত।এই হ্রদের আয়তন ৮ হাজার ৮৮ বর্গ কি.মি.।আয়তনের বিচারে ১৯ তম এবং দক্ষিণ আমেরিকার সবচেয়ে বড় হ্রদ এটি। এই হ্রদ আন্দিজ পবর্তমালার আলতিপ্লানো উচ্চভূমিতে অবস্থিত।এই হ্রদের সর্বোচ্চ গভীরতা ৯৩১ ফুট।
টিটিকাকা হ্রদ মূলত দুটি আলাদা অংশে বিভক্ত।
হ্রদের পশ্চিম অংশ পেরুর মধ্যে এবং পূর্ব অংশ বলিভিয়ার মধ্যে রয়েছে।হ্রদের বৃহত্তম অংশটির বলিভিয়ায় "চুকুইতো"এবং পেরুতে "গ্রান্দে" নামে ডাকা হয়। "তিকুয়িনা প্রণালীর" মাধ্যমে হ্রদের দুটি অংশ সংযুক্ত হয়েছে।
বর্তমানে ২৫ টি নদীর পানি এই হ্রদে পতিত হলেও টিটিকাকা থেকে মাত্র একটি নদী উৎপন্ন হয়েছে।বলিভিয়ার মধ্যে দিয়ে বয়ে চলা এই নদীর নাম "রিও দেসা খুয়াদেহো"।
টিটিকাকা হ্রদ পৃথিবীর সবচেয়ে উচুঁ নৌকা চলাচলের উপযোগী হ্রদ।এই হ্রদে বানিজ্যিকভাবে নিয়মিত নৌপরিবহন চালু আছে এবং রীতিমত বড় বড় জাহাজ চলে।
এই হ্রদে প্রায় ৪১ টি দ্বীপ আছে।কিছু দ্বীপে "ইনকা" সভ্যতার নিদর্শন পাওয়া যায়।প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন থেকে জানা যায় প্রায় ৩ হাজার বছর আগে এখানে মানববসতি ছিল।মূলত এই দ্বীপের নাম অনুসারে সমগ্র হ্রদের নামকরণ করা হয়।আর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল কোপাকাবানা উপদ্বীপ।
এই হ্রদের সবচেয়ে অসাধারণ বিষয় হল মানুষের তৈরী "ভাসমান দ্বীপ"।উরু জনগোষ্ঠীর প্রায় ৪ হাজার লোক এই ভাসমান দ্বীপে বাস করে।পৃথিবীর অন্য কোথাও এমন বসতি নেই। অবাক ব্যাপার হলো, ভেলার মতো এই দ্বীপ গড়ে তোলা হয়েছে "তোতোরা" নামক একধরণের নলখাগড়া দিয়ে। তারা নিজেদেরকে এই দ্বীপের মালিক মনে করে।
Nice post