মেয়েটা আমার দিকে সিগারেট টা বাড়িয়ে দিয়ে বলল,"ধর আর এটা খা।
তাকিয়ে দেখলাম মেয়েটার হাতে বেনসন সিগারেট।।আমার ফেভারিট ব্রান্ডের।ইচ্ছে হচ্ছে এখনি আগুন ধরিয়ে টান দেই।কিন্তু মেয়েগুলোর সামনে একটু ভালো সেজে বললাম,"আজব তো আমি কেন সিগারেট খাবো?আর আমার আম্মু টের পেলে আমাকে আস্ত রাখবে না।"
আমার মুখে না শুনে মেয়েটা আর ওর বান্ধবী রা আমার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকালো।এরপর লেডি গ্যাঙএর লিডার মেয়েটা বলল,"সিগারেট না খেলে আমরা যে তোকে আস্ত রাখবো ন।এখন বল সিগারেট খাবি নাকি মার খাবি?"
---দেখুন আপনারা আমার সিনিয়র বলে যা খুশি তা করতে পারেন না।আমি প্রিন্সিপাল স্যারের কাছে বিচার দিবো।
---আমার আঙ্কেলের কাছে আমার নামে বিচার দিবি।তোর এতো বড় সাহস?(সেই লিডার মেয়েটা বলল)
--আরে মায়া তুই একবার বল এই মূহুর্তে ফাজিল পোলার হাত পা ভেঙ্গে দিচ্ছি। (আরেকটা মেয়ে বলল)
---আরে তোরা থাম।আমি যখন বলছি ওর সিগারেট খেতে হবে, তো ও খাবেই।এটাই ফাইনাল। এখন তোরা এক কাজ কর।ওর হাত পা শক্ত করে ধর।আমি ওকে দেখাবো এই মায়া যা বলে তাই করে।
এতোগুলা মেয়ে যদি আমাকে ধরে তাহলে তো মরেই যাবো।কি কাজ আছে এরচেয়ে সিগারেট খাওয়াই বেটার।তাই বললাম,"আমাকে ধরতে হবে না।আমি সিগারেট খাচ্ছি।
মায়ার থেকে সিগারেট টা নিয়ে ঠোঁটে নিলাম।এরপর আগুন লাগিয়ে একটা টান দিয়ে কাশতে শুরু করলাম।মেয়েগুলো আমার কাশি দেখে হাসিতে গড়াগড়ি খাচ্ছে।আরে মাইয়ারা এটা তো তোমাদের জন্য একটু একটিং করলাম।
একটু পর বললাম,"আমি আর এসব খেতে পারবো না।খুব কাশি আসছে।"
---সিগারেট শেষ করে যাবি।
---প্লিজ আপু আজকের মতো যেতে দেন।আমার প্রথম ক্লাস মিস হয়ে যাবে।
---আচ্ছা যা।
আমি ওখান থেকে হেঁটে চলে আসতে লাগলাম।হাতে তখনও সিগারেটটা আছে।জ্বলে প্রায় অর্ধেক শেষ হয়ে গেছে।আমি ওটা মুখে নিয়ে এবার টান দিলাম।আহ!কি মজা।একটু পরই সিগারেট টা ফুরিয়ে গেল।পেছনে ঘুরে দেখি মায়া আমার দিকে তাকিয়ে আছে।মনে হয় আমার সিগারেট খাওয়া দেখে ফেলেছে। এখানে আর থাকা যাবে না।তাই দিলাম এক দৌড়।
ওহ আপনাদের তো আমার পরিচয় দেওয়া হয়নি।আমি অনিক হাসান।এবার অনার্স প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়েছি।আজকে প্রথম ক্লাস।এজন্য একটু ক্ষ্যাত সেজে ভার্সিটি আসি।আর ভার্সিটি ঢুকেই র্যাগিং এর শিকার হই।বাকি ঘটনা তো জানেন ই।
দৌড়াতে দৌড়াতে কিছুর সাথে ধাক্কা খেয়ে পড়ে গেলাম। মনে হয় কোনো লোহার সাথে ধাক্কা খাইছি।উরিম্মা আমার কোমড়টা মনে হয় গেল।উহ!ব্যাথা।
কোনোরকমে উঠে দেখি আমার পাশে একটা মেয়ে বসে আছে।দেখতে তো মাশাআল্লাহ পরীর মতো।
---ওই ছ্যামরা তোর চোখ কি বাসায় রেখে আসছিস?(মেয়েটা রেগে বলল)
আমি মেয়েটার কথা শুনে আমার চোখে হাত দিয়ে বললাম,আমার চোখ তো ঠিকই আছে।"
---তাহলে আমাকে ধাক্কা মারলি কেন?
---ওহ স্যরি।ভুলে ধাক্কা লেগেছে।আর এমন হবে না।
---কিসের হবে না হা।আগে ১০ বার কান ধরে উঠবস কর।তারপর তোর রেহাই।
---কিহ!কখনও সম্ভব না।
---তাহলে আমার হাতের থাপ্পড় খা বলে ঠাস করে দুটা থাপ্পড় মেরে দিলো।
এমন ভাবে থাপ্পড় খাবো কখনও আশা করি নি।ভার্সিটির প্রথমদিন ই মার খেয়ে শুরু হলো।
---ওই শোন নেক্সট টাইম আমার সামনে দেখলে আরও থাপ্পড় খাবি বুঝলি?
এভাবে ছাড় দিলে চলা যাবে না।তাই মেয়েটাকে বললাম,"ম্যাডাম শুনুন।"
---কি শুনবো?বেশি কথা বললে আব্বু কে বলে তোর টিসি দিয়ে দিবো বুঝলি?
---আপনার আব্বু কে?
---এই ভার্সিটির প্রিন্সিপাল।
আমি আর কোনো কথা বললাম না।জানি কিছু বললে হিতে বিপরীত হবে।এজন্য ওখান থেকে ক্লাস রুমের সামনে চলে এলাম।
ক্লাসে দেখি অনেক স্টুডেন্ট। আর লেকচার দিচ্ছে একটা কিউট ম্যাডাম।দেখেই ক্রাশ খেয়ে গেলাম।
আমাকে তাকিয়ে থাকতে দেখে ম্যাডাম বলল,"ওই ছেলে ক্লাস রুমের সামনে দাঁড়িয়ে আছো ক্যান?"
---ম্যাডাম আসতে পারি?
---আসো।
আমি রুমে ঢুকে পেছনের সারি তে বসলাম।আমার পাশে একটা ছেলে বসে আছে।ওর সাথে পরিচিত হলাম।ওর নাম সিয়াম।অনেক মিশুক। প্রথম ক্লাস জন্য শুধু পরিচয় পর্ব হলো।ক্লাস শেষে সিয়ামের সাথে বের হয়ে এলাম।আম গাছের নিচে এসে বসলাম।একটু পর দুজন ছেলে এলো।সিয়াম ওদের সাথে আমাকে পরিচয় করিয়ে দিলো।একজনের নাম ফয়সাল আরেকজন ইমন।আমাদের সাথেই পড়ে।ওদের সাথে কিছুক্ষণ আড্ডা দিয়ে বাসায় চলে এলাম।
ছোটবোন এসে বলল ভাইয়া প্রথম ক্লাস কেমন হলো?
---জীবনেও ভাবি নি এমন ভাবে ক্লাস হবে। জীবনেও ভুলবো না।
---কোনো মেয়েকে পছন্দ হইছে নাকি?
---হুমম হয়েছে।
আমার কথা শুনে কৌতুহল হয়ে বলল,কে সে মেয়ে?কেমন দেখতে?
---আমাদের একাউন্টটিং লেকচারার ম্যাডাম।
---ফাজলামি করার জায়গা পাস না।ম্যাডামের উপর কোউ ক্রাশ খায় নাকি?
---আরে সত্যি বলছি সেই সুন্দরী।
---খুজে দেখ তোর ম্যাডামের বর আছে কিনা?
---আচ্ছা।
বিকেলে বন্ধু দের সাথে ঘুরে রাতে বাসায় আসলাম।রুমে ঢুকেই দেখি আব্বু দাঁড়িয়ে আছে।
---আজকাল জমিদার সাহেবের দর্শন পাওয়া যায় না।তা কোথায় থাকে শুনি?
---আব্বু ভুল হয়ে গেছে।আর বাহিরে দেরী করবো না।
---এই কথা তো প্রতিদিন ই বলিস।তাও তো মানিস না।কাল থেকে এমন করলে তোর এই বাড়ির ভাত বন্ধ।
আব্বু চলে গেল।ধুর আজকের দিনটাই মাটি গেল।খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম।
সকলে উঠে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে ক্ষ্যাত সেজে ভার্সিটি তে এলাম।
ভার্সিটিতে ঢুকে মনে মনে দোয়া করতে লাগলাম দুই ডাইনির সাথে যেন দেখা নাহয়।
কথায় আছে যেখানে বাঘের ভয় সেখানে রাত হয়।আমারও তাই হলো।তাকিয়ে দেখি সামনে দুই বাঘিনী দাঁড়িয়ে আছে।আর ওদের পিছনে আরও গোটা দশটা মেয়ে।এখন আমি কোনদিকে যাবো?হ্যাঁ,বুদ্ধি পেয়েছি।পাশ কাটিয়ে গেলে ভালোই হবে।তাই ওদের পাশ কাটিয়ে যেতে লাগলাম। তখন মায়া বলল,"ওই ক্ষ্যাত এদিকে আয়।"
হুর,আজকে ধরে ফেলল।এখন আবার কি যে বলবে আল্লাহ ভালো জানে?আমি ওদের সামনে এলাম।
মায়াঃগতকাল তুই আমাকে ধোঁকা দিছিস।
---আমি কখন আপনাকে ধোঁকা দিলাম?
---তুই তো সিগারেট খেতে পারিস।তাহলে অমন নাটক করলি ক্যান?
---আমি কখন নাটক করলাম?আমি তো গতকাল ই প্রথম সিগারেট খাইছি।তার জন্য আমাকে কাশির ওষুধ খেতে হয়েছে।
---তাহলে তোর মতো দেখতে কে সিগারেট খেলো?
---হয়তো অন্য কেউ হবে।ম্যাডাম একটু পর আমার ক্লাস আছে।এখন যাই তাহলে?
---তোরে না বলছি আমার সামনে না আসতে।তারপর ও কেন আসলি?(ধাক্কা খাওয়া মেয়েটা)
---আমি তো ইচ্ছে করে আসি নি।উনি তো আমাকে ডেকেছে।না আসলে গ্যাং দিয়ে ধরে আনতো।
মায়াঃরিমি কি হয়েছে রে?
রিমিঃতোরে গতকাল বলেছিলাম না ধাক্কা খওয়া র কথা?
--হ্যাঁ বলেছিস।
---এই ক্ষ্যাত বলদের সাথে ধাক্কা লগছিল।
মায়াঃওই তোর এতো বড় সাহস আমার কাজিনকে ধাক্কা দেওয়া।
আমিঃম্যাডাম বিশ্বাস করুন আমি ইচ্ছে করে ধাক্কা দেই নি।মিস্টেক হয়েছে।আর কখন ও এমন হবে না।
---তোর মিস্টেক এবারের মতো মাফ করলাম।নেক্সট টাইম ওর সামনে আসবি না।
---আচ্ছা তাই হবে। এখন তাহলে আমি আসি।বলে ওখান থেকে কেটে পড়লাম।
..
---তোর মিস্টেক এবারের মতো মাফ করলাম।নেক্সট টাইম ওর সামনে আসবি না।
---আচ্ছা তাই হবে। এখন তাহলে আমি আসি।বলে ওখান থেকে কেটে পড়লাম।
ক্লাসরুমের সামনে এসে দেখি ম্যাডাম ক্লাস নিচ্ছে।আমি ম্যাডামকে বললাম,"ম্যাডাম আসতে পারি?"
ম্যাডাম আমার দিকে চোখ তুলে তাকালো।এরপর বলল,"প্রতিদিনই তোমার লেট হয় কেন?"
---আসলে ম্যাডাম রাস্তায় জ্যাম ছিল।এজন্য লেট হয়েছে।
---আর সব স্টুডেন্ট তো ঠিক সময়ে আসছে।ওদের তো জ্যামে পড়তে হলো না।জ্যাম মনে হয় খালি তুমি পড়ো।
লেডি গ্যাংএর জ্যামে পড়ছিলাম। এসব কথা বললে ইজ্জত থাকবে না।
---এই ছেলে আস্তে আস্তে কি বলছো?
---কিছু না ম্যাডাম।
---ভেতরে আসো।আর চুপচাপ ফাঁকা ছিটে বসে লেকচার শোনো।
আমি আর কোনো কথা না বলে সিয়ামের পাশে বসলাম।
সিয়ামঃদোস্ত আমাদের ম্যাডাম কিন্তু সেই দেখতে।
---বলদ ম্যাডাম কমে তোর চেয়ে পাঁচ-ছয় বছরের বড়।ম্যাডাম কে দেখে তোর লাভ নাই।এরচেয়ে ক্লাসের কোনো মেয়ের উপর লাইন মার।এতে মেয়েটা পটতেও পারে।
---যা শালা।আমি বললাম কি আর তুই বললি কি?
---ঠিকই বলছি।আচ্ছা চুপ থাক আর ম্যাডামের লেকচার শোন।
ক্লাস শেষে বের হয়ে আসলাম।আজকে ইমন আর ফয়সাল আসে নাই।এজন্য দুজন ই ঘুরতে লাগলাম।
---দোস্ত দেখ মেয়েটা কত্ত কিউট তাইনা?(সিয়াম)
---কোন মেয়েটা?
সিয়াম আঙ্গুল দিয়ে রিমিকে দেখিয়ে দিলো।শালা আর মেয়ে পেলো না।এটা একেবারে বদ মেজাজের মেয়ে।যদি রিমি জানতে পারে তাহলে আমাকে আর সিয়ামকে আস্ত রাখবে না।তাই সিয়ামকে বললাম,"শালা হাত নামা আর ওই মেয়েকে ভুলে যা।"
---ক্যান?
---আরে এই মাইয়া হেব্বি রাগি।
---তুই কেম্নে জানলি?
আমি ওকে গতকাল আর আজকের ঘটনা খুলে বললাম।সিয়াম শুনে বলল,"থাক ভাই আমার লাইন মারার শখ মিটে গেছে।"
---এখন তাইলে এখান থেকে চল।
দুজনে হাঁটতে লাগলাম।তখন পেছন থেকে কোন মাইয়া বলল,"ওই ক্ষ্যাত এদিকে আয়।"
আমি আর সিয়াম পিছনে তাকিয়ে দেখি রিমি আর কয়েকটা মেয়ে আমাদের কিছু দূরে দাঁড়িয়ে আছে।
---ওই তোরা দুজন এদিকে আয়।(রিমি)
---আমরা কেন আসবো?(আমি)
---আসতে বলছি আসবি।আর যদি না আসিস তাহলে বুঝতে পারছিস কি হবে?
সিয়ামঃআরে এতো ভয় পাচ্ছিস কেন?চল দেখি কি বলে।
বলে সিয়াম আমার হাত ধরে রিমির সামনে নিয়ে গেল।
রিমিঃআমার দিকে আঙুল তুলেছিলি কেন?
আমি সিয়ামের দিকে তাকালাম। বেচারা ভয় পেয়ে গেছে।এজন্য কোনো কথা বলছে না।এখন যদি কিছু না বলি তাহলে নিশ্চিত মার খেতে হবে।এজন্য বললাম,"আসলে ম্যাডাম ও আপনার দিকে আঙ্গুল তোলে নি।"
---তাহলে কার দিকে আঙ্গুল তুলছে?
এখন কি বলবো?হ্যাঁ পেয়েছি।আমি রিমির পাশে দাঁড়িয়ে থাকা আরেকটা সুন্দরী মেয়েকে দেখিয়ে বললাম আসলে আমার বন্ধু উনার দিকে আঙ্গুল তুলে বলল মেয়েটা অনেক কিউট।
রিমি তখন বলল,"ওই তোরা পড়িস ফার্স্ট ইয়ারে।আর আমরা থার্ড ইয়ারে।আমার বান্ধবী কিউট হলে তোদের লাভ কি?"
আমিঃসুন্দরকে কি সুন্দর বলা যাবে না নাকি?
---যাবে তো।
---তাহলে আপনার সমস্যা কোথায়?
---আমার বান্ধবী কি আমার চেয়ে বেশি সুন্দরী?
---অবশ্যই বেশি সুন্দরী। (আসলে রিমি অনেক সুন্দরী।কিন্তু ওকে রাগানোর জন্য বললাম)
আমার কথা শুনে দেখি সত্যি সত্যি রেগে গেছে।একজন মেয়ের সামনে ওকে বাদ দিয়ে আরেকজনের প্রসংশা করলে এমনিতেই রেগে যায়।কথা দেখি সত্যি।
এখানে বেশিক্ষণ থাকলে হিতে বিপরীত হতে পারে।তাই বললাম ম্যাডাম আমার কিছু কাজ আছে।এখন আমাকে যেতে হবে।চল সিয়াম আমরা যাই।বলে সিয়ামের হাত ধরে নিয়ে তারাতাড়ি চলে এলাম।
সিয়ামঃতোরে দেখে মনে হয় না মেয়েদের সাথে কথা বলতে পারিস।এখন দেখছি তুই আমার গুরু।
---আরে এসব বলিছিস কেন?আমার এসব বিষয়ে কোনো অভিজ্ঞতা নাই।কিন্তু চুপ থাকলে শিওর দুজনের গাল লাল হয়ে যেত।এজন্য কথাগুলো বলছি।
---আচ্ছা এখন কি করবি?
---বাসায় যাবো।
---আমিও যাবো।
এরপর রিকসা করে বাসায় চলে আসলাম।
রুমে আসতেই আব্বুর সাথে দেখা।
আব্বুঃতা আব্বাজান কেমন ক্লাস হচ্ছে?
---জ্বি আব্বু ভালো।
---কোনো ফাঁকিবাজি হচ্ছে নাতো?
---না।
---তোর প্রিন্সিপাল স্যার আমার ছোটকালের বন্ধু। ওর কাছ থেকে তোর নামে কোনো অভিযোগ এলে কিন্তু কপালে দুঃখ আছে।পড়াশোনা বাদ দিয়ে আমার অফিসে বসতে হবে।
---আব্বু এটা কেমন বিচার?
---এর আগে কলেজে কতবার মারামারি করছিস মনে আছে?নাকি ওসব ভুলে গেছিস?এখন তোর জন্য আমার বন্ধুর সামনে ছোট যেন না হতে হয়।
---জ্বি আব্বু আর কোনো মারামারি করবো না।আমি এখন রুমে যাবো কি?
---আচ্ছা যা।
কোনো দুঃখে যে এই ভার্সিটি তে ভর্তি হলাম?এই খবর আগে জানলে কখনওই ভর্তি হতাম না।ভাবছিলাম রিমি আর মায়াকে একটু টাইট দিবো।কিন্তু এখন দেখছি তাও হলো না।যদি ওদের কিছু বলি তাহলে সেটা যাবে প্রিন্সিপাল স্যারের কাছে।আর প্রিন্সিপাল স্যারের কাছ থেকে বাবার কাছে।এটা কেমন বিপদ?
বিকেলে বাইক নিয়ে ঘুরতে বের হলাম।তখন কে যেন ফোন করলো।বাইক থামিয়ে ফোন হাতে নিয়ে দেখি ছোটবোন কল করছে।
---হ্যালো রিয়া বল।
---ভাইয়া আমার একটু শপিংয়ে যেতে হবে।
---আব্বু কে বল।
---আব্বু তোমার সাথে যেতে বলেছে।
---আমি এখন ঘুরতে যাচ্ছি। এখন শপিংয়ে যেতে পারবো না।
---তাহলে আমি আবার আব্বু কে কল করে বলে দিচ্ছি।
---এমন করিস কেন?তুই একা যা।
---শপিংমলে অনেক বাজে ছেলেরা থাকে।ওরা মেয়েদের কে টিজ করে।তুমি কি চাও ওরা আমাকে টিজ করুক?
রিয়া তো ঠিক কথা বলছে।ঘোরার সময় অনেক পাওয়া যাবে।আগে ওকে শপিং করিয়ে নিয়ে আসি।তাই রিয়াকে বললাম,"তুই রেডি হয়ে নে।আমি আসছি।"
বাইক নিয়ে বাসায় চলে এলাম।রিয়া ড্রইং রুমে বসে আছে।
রিয়াকে বললাম,এখন চল।
---ভাইয়া আমি বাইকে যাবো না।
---তাহলে কিভাবে যাবি?
---কার নিয়ে যাবো।
---আব্বু তো আমাকে কার চালাতে নিষেধ করছে।
---আমি আব্বু কে বলে রাখছি কিছু বলবে না।
---আচ্ছা তাহলে চল।
রিয়াকে নিয়ে শপিংমলে চলে এলাম।এরপর গাড়ি পার্কিং করে রিয়ার সাথে শপিং করতে লাগলাম।
দের ঘন্টার ভেতর ওর শপিং শেষ হয়ে গেল।
শপিংমল থেকে বের হওয়ার সময় মায়ার সাথে দেখা হয়ে গেল।আমাকে দেখে মায়া বলল,"কি রে বলদের দেখছি গার্লফ্রেন্ড ও আছে।তা কেম্নে পটালি এই মাইয়াকে?"
এমন কথা শুনে রিয়া রেগে গেল।কোনো কথা না বলেই ঠাস করে মায়ার গালে থাপ্পড় মেরে দিলো।
---ওই তোর এতো বড় সাহস আমাকে মারছিস।আজকে তোর কপালে অনেক দুঃখ আছে।(মায়া)
---তোর মতো মেয়েকে এরচেয়ে ভালোভাবে বোঝানো যাবে না।আর তোর যা ইচ্ছে কর।দেখি তোর কত ক্ষমতা।(রিয়া)
---একটু দেরী কর।দেখ তোর কি করি।
তুই কি করবি হ্যাঁ বলেই রিয়া মায়াকে আরেকটা থাপ্পড় মেরে দিলো।
রিয়ার কান্ড দেখে হাসাবো না কাঁদবো বুঝতেছি না।এখন ওকে না থামালে আরও বড় ঝামেলা হয়ে যাবে।তাই রিয়াকে বললাম,রিয়া থাম।আর আমার সাথে বাসায় চল।"
---ভাইয়া আরেকটু দেরী করো।এই বদমাইস মাইয়াকে আরও কয়েকটা থাপ্পড় দিয়ে নেই।বলেই আবার মারতে যেতে লাগল।আমি রিয়াকে হাত ধরে থামালাম।এরপর মায়াকে বললাম,"কিছু মনে করবেন না।আমার ছোটবোন একটু এমনি।আমাকে কেউ কিছু বললে সহ্য করতে পারে না।আর মন খারাপ করবেন না।এসব ভুলে যান কেমন।আমরা চলি তাহলে।" বলে রিয়াকে নিয়ে ওখান থেকে চলে আসতে লাগলাম।
পেছন থেকে মায়া বলতে লাগল এর প্রতিশোধ আমি নিবোই।তা না হলে আমার নাম মায়া না।
চলবে.....