ভরদুপুরে নিজের ছায়া দেখা যায় না। ছায়া যখন দীর্ঘতর হয় তখন তার আদল দেখে কায়াকে অনুমান করাও সহজ কাজ নয়। এই সেদিন যেসব ঘটনা ঘাটে গেল এ-দেশে তাই নিয়ে কিছু লিখতে বসার সময় হয়েছে কি না এ সংশয় থাকতেই পারে। সমসাময়িক কিছু নিয়ে লেখার মুশকিল হল আমাদের দেখাটা আন্ধের হক্তিদর্শন হয়ে যায়।তবু উত্তরাধিকার-এর পর কালবেলা লিখতে বসে আমাকে এই সময়টাকেই বাছতে হয়েছে। আমি যেভাবে দেখতে চেয়েছি তার সঙ্গে অনেকেরই মতে মিলবে না, মিলতে পারে না। ওই সময়টাকে আমি ঘনিষ্ঠভাবে জানতাম এই দাবি করি না কিন্তু আঁচ গায়ে না লাগুক মনে লেগেছিল। দেশ পত্রিকায় ধারাবাহিক লেখার সময় আমি বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে কথা বলে এই সিদ্ধান্তে এসেছি, কেউ কাউকে স্বীকার করতে চায় না। অত এব, আমার বিশ্বাসটাই আমার কাছে সত্য। কালবেলা কি রাজনৈতিক উপন্যাস । আমি জানি না। কারণ এ ধরনের সাইনবাের্ডে আমি বিশ্বাসী নই। আমরা এক দারুণ অবিশ্থাসের কালে বেঁচে আছি। কেউ যদি বিশ্বাস করে ভুল করেন। তবে তিনি কিন্তু আমাদের ঘেকে প্রাণবন্ত। অনিমেষরা যদি ভুলটা বুঝতে পেরে সঠিক পথটাকে খুঁজে পায় তা হলে কিন্তু ভুলটা মূল্যবান হয়ে যাবে। কিতু কালবেলা ভালবাসার উপন্যাস। দেশ, মানুষ এবং নিজেকে। কারণ নিজেকে যে ভালবাসতে পারে না সে কাউকে গহণ করতে পারে না। উপন্যাসটি লেখার সময় আমি অনেক গ্রন্থের সাহায্য নিয়েছি। পৃথকভাবে উল্লেখ না করলেও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। 'দেশ পত্রিকার অজস্র পাঠক-পাঠিকা যেভাবে আমাকে উৎসাহিত করেছেন উপন্যাসটি প্রকাশ করার ব্যাপারে শ্রীযুক্ত সাগরময় ঘােষ যে দৃঢ়তা দেখিয়েছেন তা একমাত্র কল্যাণ সর্বাধিকারী প্রতিনিয়ত যে উপদেশ দিয়ে গেছেন তা স্মরন থাকবে। শেষ কথা, এই উপন্যাসে সময়টাকেই ধরতে চেয়েছি, কোনও মানুষ কিংবা ঘটনার সরাসরি ছবি তুলতে চাইনি।
সমরেশ মজুমদার
আমি ডিটেকটিভ কাহিনী বেশি পড়ি। আপনি যদি পারেন তবে এসব বই এর নাম বলেন।