বিশ্বগ্রামের ধারণা (Concept of Global Village)

0 20
Avatar for Jewel
Written by
3 years ago

বিশ্বগ্রামের ধারণা (Concept of Global Village)

কানাডার টরেন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ও বিখ্যাত দার্শনিক মারশেল ম্যাকুলুহান" (Marshall McLuhan) সর্বপ্রথম গ্লোবাল ভিলেজ কথাটি ব্যবহার করেন। ম্যাকলুহান ১৯১১ সালের ২১ জুলাই কানাডাতে জন্ম গ্রহণ করেন এবং ১৯৮০ সালের ৩১ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। তিনি "দি মিডিয়াম ইজ দি মেসেজ (the medium is the message) এবং "গ্লোবাল ভিলেজ" (global village) এর উদ্ভাবক হিসাবে পরিচিতি পেয়েছিলেন।

তিনি ওয়ারল্ড ওয়াইড ওয়েব (world wide web) বা ইন্টারনেট আবিষ্কারের প্রায় ৩০ (ত্রিশ) বছর পূর্বেই এ সম্পর্কে ধারণা দিয়েছিলেন। ম্যাকলুহান ১৯৬২ এবং ১৯৬৪ সালে তার প্রকাশিত দুইটি গ্রন্থ "The Ghutenberg: The Making of Typographic Man" এবং "Understanding Media" তে গ্লোবাল ভিলেজ বা বিশ্বগ্রাম এর ধারণা দেন।

তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান উন্নতির ফলে সমস্ত পৃথিবী ক্রমশই ছােট হয়ে একটি গ্রামের দিকে ধাবিত হচ্ছে। গ্লোবাল ভিলেজ এমন একটি শব্দ যেখানে গােটা পৃথিবীকে একটি গ্রাম হিসাবে কল্পনা করা হয়। পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই গ্রাম রয়েছে। একটি গ্রামের সকল মানুষ যেমন খুব সহজেই তাদের বিভিন্ন দৈনন্দিন প্রয়ােজনে একে অপরের সাথে যােগাযােগ করতে পারে তেমনি এখন পৃথিবীর সকল মানুষ খুব সহজেই প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে একে অপরের সাথে যােগাযােগ করতে পারছে।

তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তির মূল লক্ষ্যই হচ্ছে এমন একটি বিশ্ব গঠন করা যেখানে যেকোন ব্যক্তি বিশ্বের যেকোন স্থান হতে যেকোন সময় উপযুক্ত প্রযুক্তি ব্যবহার করে তথ্য আদান প্রদান করতে পারে। প্রযুক্তির অগ্রগতির ফলে গ্লোবাল ভিলেজ কথাটিকে যোগাযােগ প্রযুক্তি তথা ইন্টারনেট বা ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব এর বর্ণনায় ব্যবহার করা হচ্ছে।

ইন্টারনেটের মাধ্যমে আজ নতুন এক পৃথিবী গড়ে উঠেছে যেখানে সারা পৃথিবীর মানুষের মধ্যে যােগাযােগ কার্যক্রম অনেক সহজ হয়েছে। পৃথিবীর এক প্রান্ত হতে অপর প্রান্তে যােগাযোগের জন্য বাস্তবে অনেক দূরত্ব থাকলেও ইন্টারনেট সেই দূরত্বকে একেবারেই কমিয়ে দিয়েছে। আজকাল মানুষ অন-লাইনের মাধ্যমে একে অপরের সাথে যােগাযােগ বা তথ্য আদান প্রদানের জন্য অন-লাইন সমাজ ব্যবস্থা বা ইনফরমেশন সােসাইটি গড়ে তুলেছে। এই দ্রুতগতির প্রযুক্তি নির্ভর যোগাযােগ ব্যবস্থার ফলেই মানুষ বিশ্বের যেকোন প্রান্তের খবর মুহূর্তের মধ্যেই জানতে পারছে এবং তাদের মতামত বা প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে পারছে। এতে করে মানুষের মধ্যে সামাজিক দ্বায়িত্ববােধও বাড়ছে। গ্লোবাল ভিলেজকে নিম্নোক্তভাবে সংজ্ঞায়িত করা যায়-

গ্রোবাল ভিলেজ হচ্ছে এমন একটি পরিবেশ যেখানে পৃথিবীর সকল মানুষই একটি একক সমাজে বসবাস করে এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে একে অপরকে সেবা প্রদান করে থাকে।

বিশ্বগ্রামের ধারণা এবং সংশ্লিষ্ট প্রধান উপাদানসমূহঃ

বর্তমান বিশ্ব তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তির কল্যাণে গ্লোবাল ভিলেজ বা বিশ্বগ্রামে পরিবর্তিত হচ্ছে। গ্লোবাল ভিলেজ বা বিশ্বগ্রাম ধারণার সাথে অনেক উপাদান ওতােপ্রােতভাবে জড়িত। প্রধান প্রধান উপাদানগুলাে নিচে উল্লেখ করা হলো। যথা-

১। যোগাযোগ (Communication)

২। কর্মসংস্থান (Employment)

৩। শিক্ষা (Education)

৪। স্বাস্থ্যসেবা ও চিকিৎসা (Health care and Treatment)

৫। গবেষণা (Research)

৬। অফিস (Office)

৭। বাসস্থান (Residence)

৮। ব্যবসা-বাণিজ্য (Business)

৯। সংবাদ (News)

১০। বিনোদন ও সামাজিক যোগাযোগ (Entertainment and social communication)

১১। সাংস্কৃতিক বিনিময় (Cultural exchange)

ভিডিও কনফারেন্সিং (Video Conferencing):

টেলিকমিউনিকেশন প্রযুক্তি ব্যবহার করে দুই বা ততােধিক ভৌগলিক অবস্থানে অডিও এবং ভিডিও এর যুগপৎ উভমুখী স্থানান্তর করার প্রক্রিয়াকে ভিডিও কনফারেন্সিং বলে।

টেলিকনফারেন্সিং এর মতােই ভিডিও কনফারেন্সিং ব্যবস্থায় অংশগ্রহণকারীরা কথােপকথন করতে পারে। অধিকন্তু ভিডিও কনফারেন্সিং ব্যবস্থায় মনিটর বা পর্দায় অংশগ্রহণকারীরা পরষ্পরের সম্মুখীন হয়ে একে অন্যকে দেখে কথােপকথনে অংশগ্রহণ করে। এটি একটি ক্ৰমবর্ধমান আন্তর্জাতিক যােগাযােগ ব্যবস্থা।

এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় বা এক দেশ হতে অন্য দেশে যে কোন ব্যক্তি ইন্টারনেট সংযােগের মাধ্যমে ভিডিও কনফারেন্সিং করতে পারে। আমাদের দেশের লােকজন এখন স্কাইপি (Skype) বা ইয়াহু মেসেঞ্জার ব্যবহার করে খুব সহজেই ভিডিও কনফারেন্সিং করে থাকেন।

ধন্যবাদ পড়ার জন্য।

Sponsors of Jewel
empty
empty
empty

2
$ 0.00
Sponsors of Jewel
empty
empty
empty
Avatar for Jewel
Written by
3 years ago

Comments