মিলনের পর স্ত্রী মাকড়সা পুরুষ মাকড়সার মাথা খেয়ে ফেলে। গরমকালে এক ধরনের পোকা ঝিঁঝিঁ পোকার মত ডাকতে থাকে। ওটার নাম সিডল। মূলত পুরুষ পোকা স্ত্রী পোকাকে আকর্ষণ করার জন্য ডাকে এবং মিলনের পর পুরুষ পোকা স্ত্রী পোকাকে ছেড়ে চলে যায়। এটা তো গেল সামান্য পোকা প্রজাতির কথা।
..
মনুষ্য প্রজাতির মধ্যেও এই স্বভাবের নারী -পুরুষের অভাব নেই যারা তার সঙ্গীকে নিছকই সেক্স ম্যাটেরিয়াল ছাড়া আর কিছুই মনে করে না। সামাজিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় সে হয়ত সংসার ভেঙে দিতে পারে না তবে তার স্ত্রীকে সেই সংসারের শুধুমাত্র "সেক্স ডল" বানিয়ে রাখে। ঠিক এই প্রজাতির পুরুষগণ হাজারো রূপবতী, গুণবতী নারী বিয়ে করলেও তাদের ভালো লাগে পাশের বাসার ভাবীকে।
....
পুরুষের এই ধরনের স্বভাবের জন্য মূলত বংশ পরম্পরা দায়ী হতে পারে,দায়ী হতে পারে পারিপার্শ্বিক অবস্থাও। যেমন ধরুন তার পরিবারের পুরুষ সদস্য একাধিক বিয়ে করে অথবা পরকীয়ায় লিপ্ত এবং সেটাকে পরিবারের অনেকেই হয়ত স্বাভাবিক দৃষ্টিতেই দেখেছে কিংবা তার পরিবারের নারী সদস্য হয়ত পুরুষ সদস্য দ্বারা নির্যাতিতা কিন্তু কোনো নারীই কখনও টু শব্দও করেনি ঠিক এইভাবে বংশ পরম্পরায় কিছু পুরুষ এমন উদ্ধত স্বভাবের হতে পারে
..
অথবা বন্ধু বান্ধবের দ্বারা প্রভাবিত হতে পারে এক্ষেত্রে হয়ত সে খুব বিধিনিষেধের মধ্যে বড় হয়েছে কিন্তু একটুখানি অবাধ্য পরিবেশ পেয়েই উশৃঙ্খল জীবন যাপনে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে সেক্ষেত্রেও নারীকে শুধুই তার কাছে যৌনবস্তু মনে হতে পারে ।
..
তাদের কাছে স্ত্রী মানেই শুধুমাত্র সেক্স পার্টনার। এমন স্বভাবের পুরুষ হাজারো লোকের সামনে কুকুরের মত দূর দুর করে স্ত্রীকে অপমান করে , প্রতিনিয়ত ভুল ধরতে থাকে, পাশের বাসার ভাবীর সাথে তুলনা দিতে থাকে অথচ রাত এলে তাদের ভালোবাসা তুঙ্গে উঠে যায়। পারস্পরিক সম্মানহীন ভালোবাসা ওটা অাদৌ কোনো ভালোবাসাই নয় ওটা নিছকই বাধ্য হয়ে থাকা।
....
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই একজন নারীর কাছে সেই পুরুষই সবচেয়ে বেশি আকর্ষণীয় যে তাকে মানসিকভাবে তৃপ্ত রেখেছে। এজন্য খেয়াল করে দেখবেন বেশিরভাগ মেয়ে প্রেমে পড়ে বেস্ট ফ্রেন্ডের যে কিনা তাকে মানসিকভাবে সাপোর্ট দিচ্ছে, তার কষ্টের সময় পাশে থাকছে, যার কাছে সে মন খুলে চাওয়া পাওয়ার কথা বলতে পারছে।
...
ঠিক এই কারণেই অনেক মেয়েই প্রেমে পড়ে কবি / সাহিত্যিক, গায়কদের কারণ তাদের লেখা পড়ে ভাবতে থাকে নারীর মানসিক কষ্টের জায়গাটা তারা ভালো বোঝেন। এজন্য একজন নারীর কাছে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পুরুষের চেহারা, গায়ের রং কোনো ফ্যাক্ট হয় না৷ তবে নারীদের পছন্দের তালিকায় মেধাবীরাও বাদ যায় না।
..
বেশিরভাগ পুরুষের ক্ষেত্রেই নারীর বাহ্যিক অবয়ব অধিক গুরুত্ব বহন করে। তাদের কাছে হুট করে প্রথমবার ভালো লাগা কিংবা কোনো নারীকে নিয়ে রাত জেগে গল্প / কবিতা লেখা নারীরা স্বভাবতই রূপবতী গোত্রেরই হয়। আমি এ ব্যাপারে বিরুদ্ধাচরণ করছি না বরং বলছি তার মানসিক দিকটাও বুঝুন। তার ভালো লাগা, মন্দ লাগাকে গুরুত্ব না দিয়ে আপনি যতই তার শরীরী অবয়বে মুগ্ধ হয়ে থাকুন না কেন এর স্থায়ীত্ব খুবই স্বল্প।
...
মসৃণ পেটে সেলাইয়ের কাঁটা দাগ পড়লেই সেই প্রেম উধাও হয়ে যায়, রূপবতী নারীর মুখমন্ডলে মেছতার ছোপ ছোপ দাগ পড়লে সেই প্রেম উবে যায়, স্লিম ফিগার থলথলে চর্বিতে পরিণত হলে এই প্রেম দরজার ফুটো দিয়ে পালায়।
..
অথচ সেক্সুয়ালি ফ্রাস্টেটেড কিছু পুরুষ ভাবে নারী শরীর আজীবন চির যৌবনা থাকুক এবং এইসব পুরুষদের জন্য নারীরা না খেয়ে ডায়েট করে,ক্রিম মেখে ফর্সা হয়, চুল সোজা করে, মরে যাবে তবু পেটে কাচি লাগাতে দেবে না। নিজ ইচ্ছায় করলে সেখানে কিছু বলার নেই। তাদের বোঝা উচিত যে পুরুষ তাকে নিছকই সেক্স ডল মনে করে এবং যে তার মতামতকে একবিন্দুও প্রাধান্য দেয় না তাদের জন্য এমন স্লিম ফিগারের মসৃণ দেবী হয়ে লাভ নেই কারণ অন্য দেবীর মোহে তিনি অতি সহজে আকৃষ্ট হবেন এবং দিনশেষে পুরনো দেবীকে মূল্যায়ন করবে ছেঁড়া টিস্যুর মত।
..
এই ধরনের পুরুষ চেনার সহজ উপায় এরা সবকিছুতেই নারীর দোষ খুঁজবে। পরকীয়া, ধর্ষণ, তালাক যাই হোক না কেন কোনো বাছ বিছার না করে বলে দেয় দোষী মেয়েটাই। এই স্বভাবের পুরুষগণ কখনই সংসারে নারী সদস্যের মতামতকে মূল্যায়ন করে না ।
...
সংসারের কোনো কাজে সামান্য সাহায্য করাকেও তাদের পুরুষত্বে লাগে। আমি একজন অতি শিক্ষিত ভাইকে চিনতাম তিনি বলতেন তার ভাবী অনেক ভালো কারণ ভাবী নাকি তার ভাইয়ের পায়ে জুতা পরিয়ে দেয়। জুতা পরিয়ে দেয়াটা আমি অসম্মানজনক মনে করছি না। আমি যদি আমার বাবার জুতা পলিশ করতে পারি স্বামীর জুতো পলিশ করা অসম্মানের নয়। তবে অবাক করা বিষয় হল তার অন্য ভাবী নাকি তরকারী খারাপ রান্না করেছিল বিধায় সেটা ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছিল এক্ষেত্রে নাকি অসম্মানের কিছুই হয়নি, মেয়ে হয়ে জন্মেছে ভালো রান্না পারবে না কেন? এই রকম ভন্ড পুরুষগণ একজন নারীর জীবন ধ্বংস করতে যথেষ্ট।
..
আমি আরও একজন ভাইকে চিনি যার মা প্রতিনিয়ত তার বাবার দ্বারা নির্যাতিতা তিনি শুধু আফসোস করে বলেন " আমার বাবা একজন অমানুষ। আমি এই রকম কষ্ট কোনো মেয়েকে পেতে দেব না " ট্রাস্ট মি ঠিক এই ধরনের পুরুষগণ যারা নারীর কষ্টের জায়গাটা বোঝে তাদের কাছে সামান্য আর্থিক কষ্টে থাকলেও সম্মানহীনতায় ভুগবেন না কিন্তু আমরা মেয়েরা ছ্যাছড়ার মত ক্যারিয়ার গড়া কোনো পুরুষের পেছেনে পড়ে থাকি কিংবা যে আমাকে পাত্তা দিচ্ছে না তাকে পাওয়ার জন্য ব্যাকুল হয়ে যাই ।
..
'অমুক পেশার না হলে আমি কুমারী হয়ে থাকব' এই শপথ করে বসে থাকি। আপনার পছন্দের পেশা থাকতেই পারে কিন্তু সেটাই যখন যাচাই করার একমাত্র মাধ্যম হয় তখন দিনশেষে আফসোস করে আমরাই মরি এবং সমস্ত পুরুষের ক্ষেত্রে একইভাবে আঙুল তুলতে থাকি অথচ ভুলে যাই টেনে টেনে আর যাই হোক বৃদ্ধাঙ্গুলকে কখনও তর্জনীর সমান করা সম্ভব নয়।
ধন্যবাদ।
ekdom sotto kotha ..pase thakbo jodi amar post o dekhe asen