পেয়াজের মধ্যে রয়েছে বিশেষ কিছু ডাক্তারি গুণ? আয়ুর্বেদ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ার দ্বারা প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে সম্প্রতি জানানো হয়েছে, পেঁয়াজে যে উপকারিতা রয়েছে তা জানলে আপনি অবাক হতে বাধ্য।
কাটার সময়ে চোখে যতই জল আসুক না কেন, খাবার-দাবারের স্বাদ বাড়াতে পেঁয়াজ একেবারে অপরিহার্য উপাদান। কিন্তু জানেন কি, পেঁয়াজের মধ্যে রয়েছে বিশেষ কিছু ডাক্তারি গুণ? আয়ুর্বেদ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ার দ্বারা প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে সম্প্রতি জানানো হয়েছে, পেঁয়াজে যে উপকারিতা রয়েছে তা জানলে আপনি অবাক হতে বাধ্য। প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণের সঙ্গে এতে ফাইটোকেমিক্যাল রয়েছে, যা আমাদের শরীরে নানা উপকারে আসে। স্যালাদ থেকে স্যান্ডউইচ, কিংবা শুধু মুড়িতে মেখে যেমন নানা ভাবে পেঁয়াজ খাওয়া যায়, তেমনই এর রয়েছে নানাবিধ গুণ। অবিশ্বাস্য সব উপকারগুলো দেখে নিন -
সংক্রমণ সারায়
এর মধ্যে কার্মিনেটিভ, অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল, অ্যান্টিসেপ্টিক এবং অ্যান্টিবায়োটিক জাতীয় পদার্থ মজুত রয়েছে। তাই শরীরে কোথাও সংক্রমণ ঘটে থাকলে কাঁচা পেঁয়াজ একটু বেশি খান, চটজলদি উপকার পাবেন। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী প্রতিদিন পরিমাণমতো পেঁয়াজের রসের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেলে সর্দি–কাশির সমস্যা থাকে না। ঠান্ডা লাগার ফলে গলা ব্যথা, সর্দি-কাশি, জ্বর, অ্যালার্জি বা সামান্য গা ব্যথায় দারুণ কাজ করে। সামান্য পেঁয়াজের রসের সঙ্গে একটু মধু মিশিয়ে খান। জলদি সেরে উঠবেন। জ্বরে দেহের তাপমাত্রা বেশি থাকলে পাতলা করে কাটা পেঁয়াজ কপালে রাখলে কিছু ক্ষণের মধ্যে তাপমাত্রা কমিয়ে দেবে।
পুষ্টিগুণে ভরপুর
প্রচুর পরিমাণে বিভিন্ন ভিটামিন, মিনারেল, ফাইবার, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, সালফার, ভিটামিন B এবং C থাকে। নিয়মিত পেঁয়াজ খেলে রক্ত চলাচল ঠিকঠাক থাকে। যার ফলে হার্টের অসুখের সম্ভাবনা অনেক কমে যায়।
ত্বকের সমস্যা মেটায়
পোকামাকড়ের কামড় হোক, বা রোদে পোড়া ট্যান, কিংবা ব্রণ-ফুস্কুরি, এ সবের সমস্যা থাকলে সে সমস্ত জায়গায় একটু পেঁয়াজের রস লাগান। একটু কুটকুট করতে পারে, তবে দ্রুত কাজ করবে।
হজমশক্তি বাড়ায়
যাদের হজমে সমস্যা রয়েছে তাঁরা রোজ একটু কাঁচা পেঁয়াজ খান। পেঁয়াজ খাবার হজমের জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন এনজাইম বাড়াতে সাহায্য করে। যার ফলে দ্রুত খাবার হজম হয়।
হৃদয় এবং হাড় ভালো রাখে
হাড়ের কঠিন ব্যারাম অ্যাথেরসক্লেরোসিস এবং অস্টিওপোরোসিসের মতো রোগের সঙ্গে লড়ে। তার সঙ্গে দেহে খারাপ কোলেস্ট্রল কমায়। যার ফলে আপনার হার্ট সুস্থ থাকে। দাঁতের সংক্রমণ রোধ করতেও পেঁয়াজের জুরি মেলা ভার। ২–৩ মিনিট পেঁয়াজ চিবিয়ে খান। ফলে দাঁতে লুকিয়ে থাকা জীবাণুগুলো মরে যাবে। সংক্রমণের সম্ভাবনাও কমবে।
ডায়াবেটিকদের জন্য খুব ভালো
দেহে ইনসুলিনের মাত্রা বাড়াতে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা ঠিক রাখতে পেঁয়াজ অত্যন্ত ভালো। যারা ডায়াবেটিক তারা চিকিত্স কের পরামর্শ নিয়ে রোজ পেঁয়াজ খান উপকার পাবেন। পেঁয়াজে ক্রোমিয়াম থাকে। যা ব্ল্যাড সুগার নিয়ন্ত্রণ করে। শরীরকে ঠান্ডা রাখে।
অনিদ্রার সমস্যা
রাতে যাদের অনিদ্রার সমস্যা রয়েছে তাঁরা শুতে যাওয়ার আগে একটি পেঁয়াজ কেটে গভীরভাবে পাঁচ থেকে দশ বার পেঁয়াজটির ঘ্রাণ গ্রহণ করুন। দেখবেন ঘুম চলে আসবে। ছাড়াও বিষণ্নতা এবং সাহায্য ঘুম এবং ক্ষুধা বাড়াতে সাহায্য করে।
চুল পড়া প্রতিরোধ
চুল পড়া নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করেও কূল পাচ্ছেন না! শীতের শেষে পাতাঝরা গাছের মতো প্রতিদিনই পড়ছে চুল। কপালে চিন্তার ভাঁজ। রাতে হচ্ছে না ঘুম। চুল পড়া নিয়ে দুশ্চিন্তা করতে গিয়ে চুল পড়ছে আরও বেশি! চিন্তা করবেন না। চুলের বৃদ্ধিতে পেঁয়াজ দারুণ কাজ করে। কারণ এর মধ্যে প্রচুর সালফার রয়েছে, যা চুল পড়া রোধ করে। বিশেষ করে পেঁয়াজ চুলের ভেঙে যাওয়া রোধ করে প্রাকৃতিকভাবে চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
শরীরকে বিষ মুক্ত করে
পেঁয়াজে প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক সালফার যৌগ আছে যা শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। সালফারে এমিনো এসিড আছে যা রসুন ও ডিমে পাওয়া যায়। এই এমিনো এসিড গুলোকে মিথিওনাইন ও সিস্টাইন বলা হয়। এই উপাদান গুলো শরীরকে বিভিন্ন ক্ষতিকর ধাতুর থেকে মুক্তি দেয়। এমন কি এগুলো শরীর থেকে সীসা, আর্সেনিক ও ক্যাডমিয়াম বের করে দেয়।
ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান সময়ের জন্য।