আল-ইমদাদ কিতাবে রয়েছে, ফতোয়ায়ে শামী’তে কবরের উপর হতে ঘাস কাটা মাকরুহ বলা হয়েছে। তার কারণ হল যতক্ষণ কবরের ঘাস, ফুল ইত্যাদি তাজা থাকবে ততক্ষণ আল্লাহর তাসবীহ পড়তে থাকে এবং সে তাসবীহ’র কারণে ঐ কবরবাসীর উপর আল্লাহর রহমত বর্ষিত হতে থাকবে। এর দলীল হলো ওই হাদীস যাতে বর্ণিত হয়েছে, হুযূর পাক (ﷺ) খেজুরের শাখাকে দু’টুকরো করে দু’কবরে গেড়ে দিয়েছিলেন এবং নবী করিম (ﷺ) স্পষ্টভাবে একথা বলে দিয়েছিলেন যে, যতক্ষণ গাছের শাখা দু’টি তাজা (কাঁচা) থাকবে ততক্ষণ কবরের আযাব হালকা করা হবে।
উপরিউক্ত বর্ণনা হতে একটা বিষয় বুঝে নিতে পারি, কবরের উপর ঘাস লাগানো, ফুল ছিটানো মুস্তাহাব। ইমাম বুখারী (রহঃ) বর্ণনা করেছেন, হযরত বুরাইদা আসলামী (রহঃ) স্বীয় কবরের উপর দু’টি গাছের শাখা গেঁড়ে দেওয়ার ওসীয়ত করে গিয়েছিলেন।
মোল্লা আলী ক্বারী (রাঃ) লিখেছেন-
ﻭﻗﺪ ﺍﻓﺘﻰ ﺍﻻﺋﻤﺔ ﻣﻦ ﻣﺘﺄﺧﺮﻯ ﺍﺻﺤﺎﺑﻨﺎ ﻣﻦ ﺍﻥ ﻣﺎ ﺍﻋﺘﻘﺪ ﻣﻦ ﻭﺿﻊ ﺍﻟﺮﻳﺤﺎﻥ ﻭﺍﻟﺠﺮﻳﺪﺓ ﺳﻨﺔ ﻟﻬﺬﺍ ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ ﻭﺍﺫﺍ ﻛﺎﻥ ﻳﺮﺟﻰ ﺍﻟﺘﺨﻔﻴﻒ ﺑﺘﺴﺒﺒﺢ ﺍﻟﺠﺮﻳﺪﺓ ﻓﺒﺘﻼﻭﺓ ﺍﻟﻘﺮﺍﻥ ﺍﻋﻈﻢ ﺑﺮﻛﺔ .
অনুবাদঃ “আমাদের হানাফী মাযহাবের মুতাআখ্খিরীন (পরবর্তী) ইমামগণ ফত্ওয়া পেশ করেন যে, কবরের উপর ফুল ছিটানো এবং গাছের ডাল-পালা লাগানোর যে প্রচলন আমরা দেখতে পাই, তা উল্লিখিত হাদীস শরীফের ভিত্তিতে সুন্নাত। সুতরাং বলা যায় গাছের ডাল-পালার তাসবীহ পাঠের বরকতে যদি কবরের আযাব হালকা হওয়ার আশা করা যায়, তাহলে পবিত্র কুরআন তিলাওয়াতের বরকত কত বেশি হবে, তা সহজে অনুমেয়।
ইমাম নওয়াবী (রাঃ)বলেন-
“উল্লেখিত হাদীসের আলোকে ওলামায়ে কেরাম কবরের পাশে কুরআন তিলাওয়াত কে মুস্তাহাব বলেছেন। কেননা খেজুরের শাখার তাসবীহ দ্বারা যদি কবরের আযাব হালকা হতে পারে, তাহলে (শ্রেষ্ঠতম যিকর) আল- কুরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে কবরের আযাব হালকা হওয়ার আশা করা আরো অধিক যুক্তিযুক্ত।”
ইমাম নওয়াবী আরো বলেনঃ
“এ হাদীস শরীফটির আবেদন ব্যাপক। অর্থাৎ- এটি কেবল খেজুর ডালার জন্যই খাস নয়।”
দলিলঃ শরহে মুসলিম, ১ম খন্ড, ১৪১ পৃ.
ফতোয়া- এ আলমগীরী’তে রয়েছে-
ﻭﺿﻊ ﺍﻟﻮﺭﺩ ﻭﺍﻟﺮﻳﺎﺣﻴﻦ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻘﺒﻮﺭ ﺣﺴﻦ ﻭﺍﻥ ﺍﻟﺘﺼﺪﻕ ﺑﻘﻴﻤﺔ ﺍﻟﻮﺭﺩ ﺍﺣﺴﻦ.
অনুবাদঃ “গোলাপ কিংবা অন্য কোন ফুল কবরের উপর ছিটানো ভালকাজ এবং ওই ফুলের দাম সাদক্বা করে দেয়া আরো উত্তম।”
দলিলঃ আলমগীরী, ৫ম খন্ড, ৩৫১ পৃ.
উপরিউক্ত আলোচনা হতে স্পষ্ট প্রতিয়মান হলো, মুসলমানদের কবরের উপর ফুল ছিটানো, ঘাঁস লাগানো ইত্যাদি সুন্নাত; এমনকি নবীজীর আমল। যেহেতু এর বিপরীত কোন হাদীস বর্ণিত হয় নি কিংবা পূর্ববর্ণিত হাদিসকে রহিত করা হয় নি। সেহেতু কোন কালেমা পড়ুয়া মুসলমান এ কাজকে অস্বীকার করতে পারবে না।
0
15
Written by
Imran16
Imran16
4 years ago
Written by
Imran16
Imran16
4 years ago