শয়তানের নছীহত
বর্ণিত আছে আগেকার যুগে শয়তান মানুষের দৃষ্টি গোছর হত। একবার এক ব্যক্তি তাকে দেখে বলল, হে শয়তান! তুমি আমাকে এমন একটি পথ বাতলিয়ে দাও, যাতে আমিও তোমার মত অভিশপ্ত হতে পারি।
শয়তান বড় আশ্চর্য হয়ে বলল, আজ পর্যন্ত আমার নিকট এরকম দরখাস্ত তো কেউ করেনি। তোমার এমন কোন প্রয়োজন দেখা দিল যে, আমার নিকট এরকম দরখাস্ত করলে? সে ব্যক্তি বলল, ইহা আমার নিছক একটি অভিলাষ মাত্র। আর কিছু নয়। তখন শয়তান বলল, আমার মত হওয়ার পথ একেবারে সহজ, আর তাহলো নামাযে অবহেলা করতে থাক এবং সত্য মিথ্যার পরোয়া না করে কসম খেতে থাক।
লোকটি তখন শপথ নিল, আমি আল্লাহর নিকট ওয়াদা করছি যে, আমি কখনো কোন নামায ত্যাগ করব না এবং এতটুকু অবহেলাও করবনা। এবং কখনো কসম খাবনা। এটা শুনে শয়তান বলল, তুমি ছাড়া আজ আমাকে কেউ ধোকা দিয়ে এভাবে কথা আদায় করতে পারে নাই। তাই আমিও ওয়াদা করছি যে, মানুষকে আর কখনো উপদেশ দিতে যাবনা। [ তামবিহুল গাফেলীন, আবুল লাইস ছমরকন্দী]
আল্লামা সফীরী রহ. বলেন, ফেরেশ্তাগণ
ফজরের নামায পরিত্যাগকারীকে “ইয়া ফাজির (হে দুষকৃতকারী)”,
জোহরের নামায পরিত্যাগকারীকে “ইয়াখাসির” (হে ক্ষতিগ্রস্ত) ,
আসরের নামায পরিত্যাগকারীকে “ইয়া আ’ছী” (হে মহাপাপী)”,
মাগরিবের নামায পরিত্যাগকারীকে “ইয়া কাফির” (হে অকৃতজ্ঞ)” এবং
ই’শার নামায তরককারীকে “ইয়া মুদ্বী’অ” (হে আল্লার হক নষ্টকারী) বলে সম্বোধন করে থাকে।
[ গায়াতুল মাওয়ায়েজ]
আল্লামা শা’রানী রহ. বলেনঃ যে সকল পাড়া বা এলাকার লোক নামায পড়ে না, সবধরনের বালা মুসীবত সেখানেই নাযিল হয়। এসব এলাকায় ভূমিকম্প, বজ্রপাত, বাড়ীঘর ধ্বসে যাওয়া, ঘুর্ণিঝড়, হ্যারিকেন, সুনামী, টর্নেডোতে আঘাত হানা কোনোটি বিচিত্র নয়। সেখানের কেউ যেন এরূপ ধারণা না করে যে, আমি তো নামাযী আছি, অন্যরা নামায পড়–ক বা না পড়–ক তাতে আমার কি? কেননা, বালা মুসীবত যখন নাযিল হয় তখন ব্যাপক ভাবেই নাযিল হয়।
হাদীস শরীফে এসেছে, একজন সাহাবী নবী করীম সা. এর নিকট আরয করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের মধ্যে নেক্কার লোক বর্তমান থাকা অবস্থায় ও আমরা ধ্বংস হতে পারি? নবী করীম সা. বললেন হ্যাঁ, যখন অন্যায় ও পাপাচার ছড়িয়ে পড়বে। কারণ, নেক্কার লোকদের কর্তব্য হচ্ছে অন্য লোকদেরকে সাধ্যানুযায়ী অন্যায় কাজ হতে বিরত রাখা ও সৎকাজের আদেশ করা।
হাদীস শরীফে আছে, বে-নামাযীর দু’হাত জিঞ্জির দ্বারা বেঁেধ ফেরেশতাগণ তার মুখমণ্ডল ও পৃষ্ঠ দেশে আঘাত হানতে থাকবে।
অন্য এক হাদীসে আছে, জাহান্নামে ‘লমলম’ নামে একটি উপত্যকা আছে। উটের গ্রীবার ন্যায় মোটা এবং একমাসের পথের ন্যায় দীর্ঘ ভয়ংকর ভয়ংকর সাপ দ্বারা উহা পরিপূর্ণ। সেখানে এরা বে-নামাযীদেরকে দংশন করে শাস্তি দিতে থাকবে।
অপর এক হাদীসে আছে, জাহান্নামে ‘জুব্বুল হুয্ন’ নামে একটি ময়দান আছে। উহা শুধু বিরাট আকারের বিচ্ছু দ্বারা পরিপূর্ণ। এক একটি বিচ্ছু খচ্চরের মত উঁচু ও মোটা। বে নামাযীদেরকে দংশন করার জন্যই এগুলিকে সৃষ্টি করা হয়েছে।