গাজীপুরের কালীগঞ্জ সেন্ট্রাল হাসপাতালে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় শারমিন আক্তার নামে এক প্রসূতি দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেন ওই প্রসূতির বাবা লেহাজ উদ্দিন।
শারমিন আক্তার জেলার কাপাসিয়া উপজেলার কপালেশ্বর গ্রামের মোশারফ হোসেনের স্ত্রী। তার স্বামী নারায়ণগঞ্জে একটি প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে ছোট চাকরি করেন। বাবার বাড়ি কালীগঞ্জ উপজেলার জাঙ্গালীয়া গ্রামে।
রোগীর বাবা লেহাজ উদ্দিন জানান, গত ২১ সেপ্টেম্বর বিকেলে কালীগঞ্জ সেন্ট্রাল হাসপাতালে শারমিনকে ভর্তি করা হয়েছে। পরে রাত ৮টায় তাকে অপারেশন করা হয়। এরপর ওই রাতেই ৩টার দিকে সে দু’চোখে কিছু দেখতে পায় না বলে জানায়। ওই কথার পর থেকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পরের দিন আমাদের দ্রুত করে রিলিজ দিয়ে দেয়।
এর আগেও এ হাসপাতালে চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় একজন শিশু ও একজন মায়ের মৃত্যুর ঘটনার অভিযোগ রয়েছে।
এ ব্যাপারে কথা হয় কালীগঞ্জ সেন্ট্রাল হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফ উল্লাহ ও ব্যবস্থাপক মহিউদ্দিন মিরাজের সঙ্গে। তারা বলেন, ওই দিন প্রসূতি শারমিন আক্তারের অপারেশন করেন গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. আলেয়া খাতুন।
তিনি সেন্ট্রাল হাসপাতালের পার্শ্ববর্তী একটি প্রাইভেট হাসপাতালে রোগী দেখেন। ওই হাসপাতালেই অপারেশনের কথা ছিল। কিন্তু ওইখানে অপারেশন থিয়েটারের সংস্কার কাজ চলায় আমাদের এখানে অপারেশন করেন। কাজেই এর দায় আমাদের না।
তবে অপারেশনের আগে প্রসূতি শারমিন আক্তারের দৃষ্টিশক্তি স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু অপারেশনের ৬-৭ ঘণ্টা পর প্রথম অবস্থায় ঝাপসা দেখলেও পরবর্তীতে চোখে দেখতে পাচ্ছেনা বলে জানায়।
ডা. আলেয়া খাতুন বলেন, এ ধরনের ঘটনা সাধারণত ঘটে না। তবে অনেক সময় উচ্চ রক্তচাপ থেকে রক্ত ক্ষরণের ফলে এ ধরনের সমস্যা হতে পারে। তবে একটা নিদিষ্ট সময়ের পর তা স্বাভাবিক হয়ে যায়।
কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ ছাদেকুর রহমান আকন্দ বলেন, আমি ঘটনার কথা শুনে ঘটনাস্থলে গিয়েছি এবং চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলেছি। পাশাপাশি রোগীর স্বজনদের বলেছি আগে রোগীর চিকিৎসা করিয়ে নিতে। কারো দোষত্রুটি
থাকলে তা পরে দেখা যাবে।
ইউএনও মো. শিবলী সাদিক বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিলনা। যেহেতু জেনেছি, এ ব্যাপারে তদন্ত কমিটি গঠন করে দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।