ম্যাডাম বউ

0 16
Avatar for Foysal
Written by
4 years ago

ম্যাডাম বউ

পর্বঃ৬

#আবির হাসান নিলয়

কিডন্যাপ করার পর থেকে জান্নাত এখন নিয়মিত

কথা বলে।তবে এখনো জানেনা আমিই সেই

কিডন্যাপার।জানলে আমার কি হাল করবে আল্লাহ

ভালো জানেন।আগামীকাল ভোর হতেই কলেজ

থেকে রাঙামাটি ট্যুরে যাবো।সব কিছু প্যাক করে

জান্নাতকে কল দিলাম।কয়েকবার রিং হতেই

রিসিভ করলো।

আমিঃএতো লেট হলো কেনো?

জান্নাতঃসব কথা কি আপনাকে বলতে হবে?

আমিঃআমাকে বলতে চাও না বুঝি?

জান্নাতঃহ্যা,আমি সব কথার উত্তর আপনাকে

দিতে পারবো না।

আমিঃভাবছি এবার তোমার প্রিন্সিপাল বাবাকে

কিডন্যাপ করবো।বুড়ো বয়সে এমন আতঙ্কিত

কাজ দেখে এমনিতেই মারা যাবে।ভালোই হবে তাইনা?

জান্নাতঃপ্লিজ এমনটা করবেন না।আপনি যেটা

জিজ্ঞাস করবেন আমি সেটার উত্তর দিবো।

তবুও আমার পরিবারকে কিছু বলবেন না।

আমিঃগুড গার্ল,সব কিছু প্যাক করা হয়েছে?

জান্নাতঃমানে..কিসের প্যাক করবো?

আমিঃকাল আমার আর তোমার বিয়ে সেটার।

জান্নাতঃকিহহহ

আমিঃএতো ঢং করার কি আছে,আগামীকাল তো

ট্যুরে যাচ্ছো সেটার কথাই বললাম।

জান্নাতঃআপনি কিভাবে জানলেন?

আমিঃকারণ,আমি সব সময় তোমার পাশে থাকি

জান্নাতঃতা...তাহলে সামনে আসেন না কেনো?

আমিঃআড়াল থেকে দেখতেই ভালোই লাগে।আর

তোমার এক্স বয়ফ্রেন্ডের সাথে সব কিছু শেষ করছো?

জান্নাতঃএক্স বয়ফ্রেন্ড কে?

আমিঃযাকে তুমি ভালোবাসতে

জান্নাতঃআমি এখনো ফয়সালকেই ভালোবাসি।

আমিঃওকে ফাইন, কাকে চাও পরিবার নাকি তাকে

জান্নাতঃকেনো আমার সাথে এমন করছেন?

আমিঃহোপ,যেটা বলছি সেটার উত্তর দাও।যদি

ফয়সালকে চাও তাহলে আগামীকাল রাঙামাটিতেই

তোমার বাবা আর ছোটবোনকে মেরে দিবো।আর

যদি পরিবারকে চাও তাহলে এখনি ফয়সালের

সাথে ব্রেকআপ করবে।ডিসিশন নাও কোনটা

নিবে।আগামীকাল ভোর অবধি তোমার হাতে

ডিসিশন নেয়ার সময় আছে। গুড নাইট ডিয়ার..

জান্নাতের সাথে আর কোনো আজাইরা প্যাঁচাল

না পেড়ে সিম বন্ধ করে রাখলাম।সামনাসামনি

যতোটাই এখন চুপচাপ থাকি তার থেকেও বেশি

ফোনে হুমকি দেয়।যার সাথে এমন একটা হবু

শালি আছে তার কাছে এরকম প্ল্যান করা কোনো

ব্যাপারী না।আব্বু সেদিন আঙ্কেলকে কল দিয়ে

বলে দিয়েছে।তাই ট্যুরে যাওয়ার সব ব্যবস্থা হয়ে

গেছে।ভাবছি,আগামীকাল রাঙামাটি গিয়ে কি

করা যায়।নিজের অজান্তেই একটা শয়তানি বুদ্ধি

চেপে বসলো।প্ল্যানটা কিভাবে সাকসেসফুল করা

যায় সেটা কিছু সময় ভাব ভাবীর পর ঘুমিয়ে গেলাম।

--------------------------------------------------

পরেরদিন,,,,

আম্মুর ডাকে ঘুম থেকে উঠে বাথরুমে গেলাম।

ফ্রেস হয়ে রুমে এসে সিমটা অন করে জান্নাতকে

কল দিলাম।প্রথমবার রিসিভ করলো না।তাই

আবার দিলাম।এবার একবার রিং হতেই ধরলো...

জান্নাতঃকল করেছেন কেনো..(বিরক্তিকর ভাবে)

আমিঃজানার জন্য

জান্নাতঃআর কি জানার আছে আপনার?

আমিঃব্রেকআপ করার কথা।

জান্নাতঃরাতেই করেছি,হ্যাপী এবার(জোড়ে বলল)

আমিঃএতো চিল্লাচিল্লি করতে বলছি আমি?

জান্নাতঃদেখুন আমার ভালো লাগছে না রাখছি

আমিঃরাখতে বলছি আমি?

জান্নাতঃধুর বা**,যা বলবেন তাড়াতাড়ি বলেন

আমিঃআই লাভ ইউ

জান্নাতঃআই হেট ইউ

আমাকে কিছু বলতে দেয়ার আগেই ফোন থেকে

টুট টুট টুট শব্দ হলো।কেটে দিলো...!

রেডি হয়ে নিচে আসলাম।হালকা কিছু নাস্তা করে

বাসার বাইরে থেকে একটা রিক্সা নিলাম।

ওহ শিট,, আমি তো সিমটা বন্ধ করতেই ভুলে গেছি

দ্রুত সিমটা বন্ধ করে ফেললাম।এখন আপনাদের

সিম নিয়ে বলি।দুটো সিমের মধ্যে একটা পারসোনাল

আর একটা এমনি সচরাচর ব্যবহার করার নাম্বার।

পারসোনালটা শুধুমাত্র জান্নাতের সাথে কথা

বলার জন্য অন করে রাখি।অন্য সময় বন্ধ থাকে।

সে যাই হোক,কলেজে আসার পর দেখলাম জেরি

আসছে,হয়তো ও নিজেও আমাদের সাথে যাবে।

জেরির কাছে গেলাম।

আমিঃঐ তুই এখানে কেনো?

জেরিঃতুমি এখানে কেনো?

আমিঃট্যুরে যাবো

জেরিঃআমিও যাবো

আমিঃতাহলে একটা হেল্প কর

জেরিঃকি হেল্প

আমিঃতুই আর তোর গুণ্ডি বোন আমাদের বাসটাই

উঠবি,যেনো আমি ওকে দেখতে পাড়ি

জেরিঃআমি কি পাবো তাহলে?

আমিঃতুই আবার কি পাবি

জেরিঃহেল্প করার জন্য কি পাবো

আমিঃএই দুদিনের তোর সব খরচ আমার

জেরিঃপাক্কা?

আমিঃহুম পাক্কা

জেরিঃতোমাদের বাস নাম্বার কতো?

আমিঃ২নাম্বারটা

জেরিঃওকে এখন টাটা

আমিঃহুম

জেরির থেকে চলে এসে বন্ধুদের কাছে আসতে

যাবো তখনি রিয়ার সাথে দেখা।

রিয়াঃহাই,কেমন আছেন

আমিঃভালো,তুমি?

রিয়াঃএইতো ভালো।আপনার নাম্বার দেয়া যাবে?

আমিঃকি করবে নাম্বার দিয়ে?

রিয়াঃমাঝে মাঝে কথা বলবো আরকি

আমিঃহুম তুলো..০১৮********।পরে কথা হবে

এখন কাজ আছে বাই

রিয়াঃওকে বাই।

তারপর রিয়ার থেকে চলে এসে হারামিদের কাছে

এলাম।সব সালারা ওদের গার্লফ্রেন্ড নিয়ে ব্যস্ত।

তাই দূর থেকেই ওদের প্রেম করা দেখতে লাগলাম।

কিছুক্ষণ পর সবাই গাড়িতে উঠতে শুরু করলো....

রাফিঃকিরে এখানে দাঁড়িয়ে কি করছিস

আমিঃতোদের প্রেম দেখছিলাম

রাফিঃপ্রেম করা শেষ এখন গাড়িতে উঠ

আমিঃহ্যা চল।

রাফিঃরাহুল কথা বলা হলে আয় তাড়াতাড়ি

রাহুলঃহুম আসছি।

সবাই মিলে যখনি গাড়িতে উঠতে যাবো তখন

জান্নাত আর জেরির সাথে দেখা।আমাকে এখানে

দেখে জান্নাত রীতিমতো অবাক হয়ে তাকিয়ে

আছে।কোনো ফেল করা স্টুডেন্ট ট্যুরে যেতে

পারবে না।কিন্তু আমি ঠিকি এখানে।তাই হয়তো

হা করে তাকিয়ে আছে।জেরি মুচকি মুচকি হাসছে।

আমিঃএভাবে কি দেখছেন ম্যাম?

জান্নাতঃতুই এখানে?

আমিঃট্যুরে যাবো তাই

জান্নাতঃতুই তো ফেল করেছিস

জেরিঃকি যে বলো আপু,নিলয় ভাইয়া ফেল করলেই

কি আসে যায়।নিলয় ভাইয়া হচ্ছে আব্বুর বন্ধু

চৌধুরী আঙ্কেলের ছেলে।

জান্নাতঃমানে?

জেরিঃনীল ভাইয়ার ছোট ভাই নিলয় ভাইয়া

জান্নাতঃতুই নীল ভাইয়ার ছোট ভাই?

আমিঃহুম

জান্নাতঃএই জন্য তাহলে বেয়াদবি করে ভেড়াস?

আমিঃসেটা শুধু আপনার চোখেই

জান্নাতঃকি বলতে চাস তুই?

আমিঃআপনি ছাড়া কেউ আমাকে বেয়াদব বলে?

জান্নাতঃসেটা আমি কি করে বলবো

আমিঃআপনার বলা লাগবে না।গাড়িতে ওঠেন।

জান্নাত আর কোনো কথা না বলে গাড়িতে উঠলো।

আমার ঠিক বাম পাশের সিটটাতেই ওরা দুজন

বসেছে।জান্নাত জানালার পাশে আর জেরি ওর

ডান পাশে।ড্রাইভার আপন মনে গাড়ি চালাচ্ছেন।

সবাই সবার মতো ইনজয় করছে কিন্তু জান্নাতের

সেদিকে কোনো সাড়া নেই।বাইরের দিকে তাকিয়ে

মন খারাপ করে বসে আছে।গাড়িতে থাকার জন্য

কিছু বলতেও পারছি না।অনেকটা সময় পর

লক্ষ্য করলাম সবাই ক্লান্ত হয়ে নিজ নিজ সিটে

বসে রেস্ট নিচ্ছে।অনেকেই ঘুমিয়ে গেছে।জান্নাতের

দিকে তাকিয়ে দেখলাম দু-বোন ঘুমিয়ে গেছে।

সিট থেকে উঠে গিয়ে জান্নাতের সামনে এসে

দাঁড়ালাম। বাইরের অপরূপ দৃশ্য এবং হালকা

মৃদু বাতাসে জান্নাতের মাথাটা সিটের সাথে হেলান

দিয়ে রেখেছে।জানালা দিয়ে আসা বাতাসে কিছু

চুল এদিক ওদিক দোল খেলতে মেতে উঠেছে।

কেমন একটা হিংসা হচ্ছিলো বাতাসের প্রতি।

আমি জান্নাতকে স্পর্শ করতে পাড়ছি না।সেখানে

বাতাস হয়ে ওর মায়াবী চেহারার সাথে খেলা করছে

পকেট থেকে ফোন বের করে জান্নাতের ছবি

তুলে নিলাম।ভাবছি এখন চলে যাবো কিন্তু ওর

মায়াবিনী চেহারা আমাকে যেতেই দিচ্ছে না।মনে

হচ্ছে রশি দিয়ে বেধে রেখেছে।জান্নাতের অজান্তে

ওর কপালে ভালোবাসা একে দিয়ে নিজের

সিটে এসে বসলাম।জান্নাতের কথা ভাবতে ভাবতে

কখন যে চোখটা লেগে গেছে বুঝতেই পারিনি।

হঠাৎ জয়ের ডাকে চোখ খুললাম।

আমিঃকি হলো ডাকছিস কেনো?

জয়ঃএটা খেয়ে নে

আমিঃকেনো?

জয়ঃসালা বাস থামিয়ে রান্না করা হয়েছিলো।

তুই মরার মতো শুয়ে ছিলি তাই আর ডাকা হয়নি

আমিঃহোপ সালা,ডাকলে কি এমন হতো?

জয়ঃএমনি,এখন মুখটা ধুয়ে খেয়ে নে

আমিঃহুম।

জয়ের থেকে খিচুড়ির প্লেটটা নিলাম।জেরি আর

জান্নাত টুকটাক কথা বলছে।কিন্তু জান্নাতে

এখনো মন খারাপ করেই আছে।

আমিঃম্যাডাম খেয়েছেন?

জান্নাতঃহ্যা তুই খা

আমিঃচাইলে খেতে পারেন

জান্নাতঃতোর মতো পেটুক না আমি।

আমিঃনা খেলে আমার কি

জান্নাতঃহু

আর কিছু না বলে খেয়ে নিলাম।এভাবে আরো

কিছু সময় যাওয়ার পর গন্তব্য স্থানে পৌছালাম।

সবাই গাড়ি থেকে নেমে যার যার মতো ঘুরতে

বের হচ্ছে।হারামিদের সাথে ঘুরতে যাবো সেটাও

হলো না।সবাই যার যার বাবু সোনাদের নিয়ে

ব্যস্ত হয়ে পড়ছে।

জেরিঃভাইয়া তুমি একা কেনো?

আমিঃতো কার সাথে থাকবো

জেরিঃতোমার বন্ধুরা

আমিঃজিএফ নিয়ে ব্যস্ত আছে

জেরিঃআমাদের সাথে চলো

আমিঃকোথায়?

জেরিঃঘুরতে,আমি আর আপু যাবো

আমিঃতাহলে চল😍

ভালোবাসার মানুষটার সাথে পাশাপাশি হাটতে

পাড়বো এটাই অনেক কিছু।জেরির সাথে

জান্নাতের কাছে এলাম।

আমিঃহাই

জান্নাতঃতুই এখানে কেনো?

আমিঃকোনো সময় তো ঠিকভাবে উত্তর দিতে পারো

জান্নাতঃতো আমি কি উল্টোভাবে দিচ্ছি নাকি

আমিঃজেরি তুই জানিস তোর বড় বোন অনেক

বেশিই ভাব নেয়?

জেরিঃহু

জান্নাতঃকি হু রে,,জেরি চল

জেরিঃহুম ভাইয়া আসো

আমিঃহ্যা চল

জান্নাতঃচল মানে,তুই কই যাবি?

আমিঃতুমি যেখানে যাও সেখানে

জান্নাতঃতুই আমাদের সাথে আসবি কেনো?

আমিঃতো...(থামিয়ে দিয়ে)

জেরিঃআপু আমি ভাইয়াকে একটা হেল্প করছিলাম

তাই ভাইয়া আমার এই দুদিনের সব বহন করবে

জান্নাতঃআব্বুর কি টাকা নাই ওর থেকে নিতে হবে

জেরিঃআপু আসুক না

জান্নতঃঠিক আছে আয় তবে বাঁদরামো করলে

তোর খবর আছে বলে রাখলাম

আমিঃমিষ্টি করে বললেই পাড়তে

জান্নাতঃআইছে ঢং করতে।চল এখন।

আর কোনো কথা না বলে হাটা ধরলাম। সবাই

ঘুরাঘুরি করছে তবে নিজ নিজ ইচ্ছামতো। আমরা

অনেকটাই গ্রামের মতো স্থানে ক্যাম্প করেছি।

তিনজন হাটছি,আমি ডানপাশে,জেরি মাঝখানে

আর জান্নাত বাম পাশ থেকে জেরির কাদে

হাত দিয়ে রাখছে।কিছুটা সময় চলার পর লক্ষ্য

করলাম আকাশের অবস্থা তেমন ভালো না।

তাই জান্নাতকে বললাম,,,

আমিঃজান্নাত,আকাশের অবস্থা খুব একটা ভালো

না। যখন তখন মুষলধারায় বৃষ্টিপাত হতে পারে।

এখন হয়তো আমাদের ফিরে যাওয়া ভালো হবে

জান্নাতঃতুই আমাকে নাম ধরে বললি কেনো?

আমিঃসেটা ক্যাম্পে গিয়ে বলি?

জান্নাতঃনা তুই এখন বল

আমিঃহবু বউকে কি বলবো তাহলে?

জান্নাতঃকুত্তা,তুই এতোদিন যেসব বলেছিস সেসব

ভুলে যা।আর যদি কিছু বলিস আঙ্কেলকে বলে

তোর অবস্থা একদম খারাপ করে দিবো।

আমিঃআচ্ছা কইরো। এখন চলো তাড়াতাড়ি

জান্নাতঃআপনি করে বল

আমিঃহোপ, তুই যাবি নাকি আমি আর জেরিই

চলে যাবো?

জান্নাতঃকুত্তা তোকে আমি দেখে নিবো....

আর কাজ হলো না। মুহূর্তের মধ্যে বৃষ্টি নেমে

আসলো । আশেপাশে লক্ষ্য করে দেখলাম ছোট

একটা কুটির রয়েছে।তিনজন দৌড়ে সেখানে

গিয়ে আশ্রয় নিলাম।মেজাজটা একদম খারাপ

করে দিলো।সব সময় ত্যাড়ামো করলে কার খারাপ

লাগবে না,এখন হলো তো বৃষ্টি 💦☔💦

আমিঃতোমার কি সবসময় ত্যাড়ামো না করলে হয়না?

জান্নাতঃঐ আমি আবার কিসের ত্যাড়ামো করলাম

আমিঃতোমাকে এসব বলে কোনো লাভ নাই।

প্রায় সন্ধ্যা হয়ে আসলো কিন্তু এদিকে বৃষ্টি থামার

কোনো নাম গন্ধ নেই।মনের ভুলে ফোনটাও

ব্যাগে রেখে আসছি।

আমিঃতোমার ফোনটা দাও তো

জান্নাতঃকেনো?

আমিঃবন্ধুদের কল দিবো,যেনো আমাদের এগুতে

এখানে আসে।

জান্নাতঃতোর ফোন নেই?

আমিঃব্যাগে রেখে আসছি

জান্নাতঃযা বলার দ্রুত বলবি।ফোনে টাকা নেই।

রিচার্জ করতে হবে এখন।

আমিঃহুম

জান্নাতের থেকে ফোনটা নিয়ে রাফিকে কল দিলাম

রাফিঃকে বলছেন?

আমিঃআমি নিলয়

রাফিঃতুই এখন কোথায়?

আমিঃজানিনা,তবে ক্যাম্প থেকে পূর্বপাশে আয়

রাফিঃএটা কার নাম্বার?

আমিঃজান্নাতের থুক্কু ম্যামের

রাফিঃসালা তাহলে ভালোই আছিস আমাদের

আসতে হবে কেনো?

আমিঃকথা বলা বাদ দিয়ে কিছু নিয়ে এদিকে আয়

রাফিঃঠিক আছে আর শোন..

আমি কিছু বলার আগেই ব্যালেন্স শেষ,ফকিরনী

একটা।

--------------------------------------------

অনেক বেশিই বোরিং লাগছে।জেরির সাথে

টুকটাক কথা বলতে পারলেও গুণ্ডিটার সাথে

একদম কথা বলতে পারছি না।কিছু সময় পর

সামনে কিছু লাইটের আলোতে মনে শান্তি পেলাম।

মনে হচ্ছে,হারামিরা আসছে।

কিন্তু না,লোকজন গুলো কাছে আসতেই মন

খারাপ হয়ে গেলো।উনাদের আমরা চিনিই না।

তবে মানুষগুলো আমাদের দিকেই এগিয়ে আসছে।

কিছু বৃদ্ধ মানুষের সাথে একটা যুবক ছেলে।

বৃদ্ধঃতোমরা কারা,আর এখানে কি চাই?

আমিঃআঙ্কেল আমরা এখানে ঘুরতে এসেছি।

—ঘুরতে আসছো নাকি অন্য কিছু

জান্নাতঃঅন্য কিছু মানে,কি বলতে চান?

বৃদ্ধঃসেটাই বলতে চাই যেটা তোরা ভাবছিস

জান্নাতঃএকদম আজেবাজে কথা বলবেন না।

—রাতের বেলা দুটো মেয়ের সাথে একটা ছেলে

দাঁড়িয়ে রয়েছে।এটাকে আর কি বলবো?

জান্নাতঃশোনেন,এই ছেলে হচ্ছে আমার স্টুডেন্ট

আর মেয়েটা আমার ছোট বোন।

বৃদ্ধঃতোরা সবাই ওদের আমার বাসায় নিয়ে আয়

আমিঃকেনো?

—তোদের আজ বিয়ে দিবো সেটাও এখন

জান্নাতঃকিসব আজেবাজে কথা বলছেন,মাথার

সব বুদ্ধি লোপ পেয়েছে নাকি😡

—এই মেয়ে একদম রাগ দেখাবি না।আর এখানে

আমরা যা বলবো সেটাই হবে।

আমিঃআঙ্কেল,আপনারা ভুল ভাবছেন।একটু

সময় অপেক্ষা করুণ, আমার বন্ধুরা আসছে

যুবকঃচাচা,উনাদের সাথে একটু অপেক্ষা করি।

হয়তো উনারা সত্যি কথা বলছে।

বৃদ্ধঃতুই জানিস না,কিছুদিন আগে কি হয়েছিলো?

যুবকঃজানি,কিন্তু.... (থামিয়ে দিয়ে)

—কোনো কিন্তু না।ওদের নিয়ে চল

নিজেদের অনিচ্ছাবশত উনাদের সাথে যেতে হচ্ছে।

আমি পালাতে পারলেও জান্নাত জেরি পারবে না।

তাছাড়া জেরি অনেক ভয় পেয়ে আছে।সবাই

মিলে আমাদের জোড় করে একটা বাসায় নিয়ে

আসলো।আমাদের কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই

একটা রুমে আটকিয়ে দিলো।সালার বিপদ যখন

আসে সব দিক থেকেই আসে।জেরি ভয় পেয়ে

আছে বলে জান্নাত কিছু বলছে না।তা না হলে

আমার গালে নিশ্চিত কয়েকটা পড়তো।

হঠাৎ লক্ষ্য করলাম দরজা খুলে যুবকটি রুমের

মধ্যে আসলো।

যুবকঃভাই এই ফোন দিয়ে আপনার বন্ধুদের

কল দিয়ে চেয়ারম্যান বাড়ি আসতে বলুন।

আমিঃকেনো?

যুবকঃতারা না আসলে আপনাদের কেউ বিশ্বাস

করবে না।

আমিঃআমাদের সাথে এমন করছে কেনো?

যুবকঃকিছুদিন আগে আপনাদের মতো দুটো

ছেলে মেয়ে আসছিলো।তাড়াও একদম আপনাদের

মতোই কথা বলছিলো। আমরাও বিশ্বাস করেছিলাম

কিন্তু সকাল হতেই মেয়েটার লাশ পাওয়া যায়।

আর এখন সবাই তাদের মতো আপনাদের ভাবছে।

এখন তাড়াতাড়ি আপনার বন্ধুদের কল দেন।

আমিঃহুম।

যুবকের থেকে ফোন নিয়ে বন্ধুদের কল দিয়ে

দ্রুত এখানের চেয়ারম্যান বাড়ি আসতে বললাম।

কথা বলা শেষ হতে না হতেই কিছু লোক রুমে

এসে আমাদের সবাইকে বাইরে নিয়ে গেলো।

অনেকেই বসে আছে,মোল্লা টাইপের একটা ব্যক্তি

সামনে বসে রয়েছে।সম্ভবত কাজী হবে।

—কাজী সাহেব বিয়ে পরানো শুরু করেন

আমিঃআঙ্কেল আমাদের......

বৃদ্ধঃএকদম চুপ থাক তোরা।

যুবকঃচাচা উনারা সত্যি কথা বলছে।একটু

অপেক্ষা করেন উনার সব বন্ধুরা আসছে।

—কাজী সাহেব কোনো কথায় কান নিবেন না।

আপনি বিয়ে পরাণ।

অনিচ্ছাকৃত ভাবে জোড় করে আমাদের বিয়ে

দেয়া হলো।যুবকের সাথে আমি বসে আছি।আর

জান্নাত জেরি আলাদা বসে আছে।অনেকটা

সময় পর সালার বন্ধুদের আসার সময় হলো।

পরে উনাদের বললে বলেন,“যা হবার হয়ে গেছে।

এখন তোমরা স্বামী স্ত্রী এটাই বড় কথা”।

উনাদের এমন কথায় জান্নাত রেগে ফায়ার হয়ে

বাড়ি থেকে বের হয়ে গেলো।আমরাও আর না

থেকে জান্নাতের পিছু পিছু চলে

2
$ 0.00
Avatar for Foysal
Written by
4 years ago

Comments