কালো মেয়ের প্রতি অবহেলা
পার্ট-০১
{দেহের সৌন্দর্য তো একদিন হারিয়ে যাবে,কিন্তু মনের সৌন্দর্য অাজীবন থাকবে}
বাস থেকে নামতেই শিমুর উড়না উড়ে গিয়ে একটা গাড়ির সামনের কাচে গিয়ে পরলো।উড়নার পিছন পিছন একটা গাড়ির সামনে এসে দাঁড়ালো শিমু।উড়না টা ধরতে গিয়েই গাড়ি থেকে একজন নামলো.শিমু তারদিকে তাকালো।
শুভ্র-এই মেয়ে তোমার চোখ কোথায় থাকে হ্যা।অার নিজের উড়না ঠিক ভাবে গুছিয়ে রাখতে পারো না.দেখতে যেমন কালো তুমি,তেমন কী তোমার চোখের সামনে কালো পর্দা দিয়ে রাখছো নাকি.যত্তসব পেত্নির মত দেখতে মেয়ে একটা,দূর অাজকের দিনটাই মাটি করে দিলো।
(বলেই উড়না টা কাচ থেকে তুলে শিমুর মুখে ছুঁড়ে মারলো।এতক্ষনের বকাঝকাতে শিমু প্রচুর ভয় পেলো তাই ভয়ে কিছু বলতে গিয়েও বলতে পারছিলো না।চোখে পানি চলে অাসলো শিমুর।অাশেপাশেও অনেক লোক জমা হয়ে গেলো)
শিমুর বাবা-মা রে ভয় পাইছ না।
শুভ্র-এরকম একটা মেয়েকে নিয়ে রাস্তায় কী করেন.
শিমুর বাবা-অামি তোমার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।
শিমু-অামি মামানে অাঅামি......
শুভ্র-চুপ(ধমক দেওয়ার সাথে সাথে শিমু ভয়ে চমকে উঠলো)
হঠাৎ করেই একজন বলে উঠলো----
এই যে অনেক্ষন ধরে অাপনার অন্যায় দেখতাছি।মেয়েটা অার মেয়েটার বাবা তো ক্ষমা চাইলো।তারপরেও এত রাগ কিসের.যান নিজের কাজে যান।
বাকি সবাই একসাথে সমর্থন দেওয়াতে শুভ্র রেগে গাড়িতে উঠে চলে গেলো।
শুভ্র(পুরো নাম হৃদয় চৌধুরী শুভ্র)বাবা মায়ের অাদরে বাঁদর হয়ে যাওয়া অহঙ্কারি, বদমেজাজি,রাগী,জেদি ছেলে.
অন্যদিকে শিমু(পুরো নাম জান্নাতুল ফেরদাউস শিমু) অাজকেই গ্রাম থেকে শহরে অাসছে কলেজে ভর্তি হতে।কিন্তু এসেই এই বিপত্তি ঘটলো.
কিছুক্ষন পর শিমু চলে গেলো কলেজে.অাজকেই কলেজ হোস্টেলে উঠবে সে.
কলেজে যেতেই দেখলো কিছু স্টুডেন্ট তাকে দেখে নিজেদের মধ্যে বলাবলি করছে অার হাসছে.সত্যিই শিমু দেখতে খুব কালো ছিলো.
শিমুর অাব্বু-মা রে তুই এখানে থাকতে পারবি তো.
শিমু-অাব্বু থাকতে তো হবেই অামাকে।অার অামাকে সব পারতে হবে।
শিমুর অাব্বু-ঠিক অাছে মা।কিন্তু যা দেখতেছি অামার খুব চিন্তা হচ্ছে তোর জন্য।
শিমু-এত চিন্তা করো না,কিছু হবে না।
শিমুর অাব্বু-ঠিক অাছে চল।
_______________________________________________
কিছুক্ষন পরেই প্রিন্সিপ্যালের রুম থেকে বের হয়ে অাসলো শিমু।রেজাল্ট দেখে শিমুকে কলেজে এডমিশন দিলেও সবাই শিমুকে নিছু চোখে দেখে।
(প্রিন্সিপ্যাল রুমের বাইরে যেতেই সামনের চেয়ারে একজন বসে অাছে)
শিমু-বড় অাব্বু.
বড়অাব্বু-মা তুই অাসবি বললি না কেনো?
শিমুর অাব্বু-অারে ভাইজান তুমি এখানে?অার জানলে কী ভাবে অামরা এখানে অাসবো।
বড় অাব্বু-জেনেছি কোনো ভাবে.চল বাসায় চল।
শিমুর অাব্বু-না ভাইজান শিমুকে হোস্টেলে রেখে অামাকপ বাড়ি যেতে হবে।
বড়অাব্বু-এটা তুই কীভাবে ভাবলি যে অামার এত বড় বাড়ি থাকতে শিমু হোস্টেলে থাকবে।
শিমুর অাব্বু-ভাইজান অামার ছেলে পরশকে তো তোমার বাসায় থেকে পড়ালেখা করতে দিয়েছিলাম,কিন্তু অতিরিক্ত ভোগ বিলাসিতায় ছেলেটা এখন অামাদেরকেই ভুলে গেলো।অামি জানি অামার মেয়েটা এরকম কিছু করবে না।কিন্তু অামি অার তোমার উপর নির্ভর করে চলতে পারবো না।
বড়অাব্বু-শিমু অামার মেয়ে,ওকে অামি কোনোদিন রিত্ত থেকে অালাদা করে দেখিনি।তাই অামার মেয়ে অামার সাথেই যাবে।অার পরশ(পুরো নাম নাঈমুল রহমান পরশ) এর কথা বাদ দে,ওর কারো ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্যতা নেই.
(শিমুর অাব্বু উনাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিলে)
শিমুর অাব্বু-ভাইজান কেনো পরশ এটা করলো।
বড়অাব্বু-বাদ দে এসব।চল বাসায় চল।এখানের সব কাজ তো শেষ??
শিমুর অাব্বু-হুম শেষ।
বড়অাব্বু-ঠিক অাছে শিমু চল।অামি কোনো কথা শুনবো মা চল।
(একপ্রকার জোর করেই শিমু অার শিমুর অাব্বুকে বাসায় নিয়ে গেলো বড় অাব্বু)
বড় অাব্বু-অায় মা ভিতরে অায়।
শিমুর অাব্বু-ভাইজান ওর লেখাপড়া করার খুব ইচ্ছা.অার ওর মা নিশেধ করতেছে কী করা যায়।
বড় অাব্বু-অামি বলি কী ওর যখন এত ইচ্ছে ও লেখােড়া করনে।
শিমুর অাব্বু-ভাইজান অামি জানি অাপন না হয়েও তুমি অামাকে ভাইয়ের জায়গা দিয়েছো।অামার বড় ছেলেটাকে মানুষ করেছো এখন অাবার মেয়েটাকে।কি করে যে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবো তোমার কাছে।
বড় অাব্বু-অাপন ভাই না হলেও তোকে তো অামি নিজের ভাই মনে করি.অার কিসের কৃতজ্ঞতা,তুই অামার নিজের ভাই। রহিমা,কই গেলি নাস্তা নিয়ে অায়.
রহিমা নাস্তা নিয়ে অাসতেই শিমুর দিকে তাকিয়ে ভূত দেখার মত চমকে নাস্তার ট্রে পেলে দিলো হাত থেকে।
বড় অাব্বু-এটা কী করলি?ঠিক ভাবে কাজ করবি তো.যা অাবার নাস্তা বানিয়ে অান।
রহিমা চলে গেলো,এতক্ষনে শিমুও বুজে গেলো ওকে দেখেই রহিমার এই অবস্থা হয়েছে.মাথা নিছু করে দাঁড়িয়ে অাছে শিমু.
বড় অাব্বু-এখানে অায় তো মা.
শিমু-বড় অাব্বু অামি এখানেই ঠিক অাছি।
বড় অাব্বু-অাসতে বলছি অায়.
শিমু অাস্তে অাস্তে এগিয়ে গেলো।
বড় অাব্বু-মা রে অাজ থেকে তুই অামার অারেকটা মেয়ে।এই বাবাটাকে কিন্তু দেখতে হবে,,
#চলবে
#
0
2
Written by
Foysal
Foysal
4 years ago
Written by
Foysal
Foysal
4 years ago