গল্প :- বৃষ্টিতে ভেজা সেই রাত
পর্ব :- ০৯
.
.
.
-: কবু....এতটাই উচ্চারণ করতে পেরেছিলাম তার আগেই....
আদ্রিতাঃ দাড়ান এই বিয়েটা হবে না..
।
সেখান কার মানুষ জন গুলো ভুত দেখলে যততটা অবাক হয় তার থেকেও বেশি অবাক হয়েছিলো আদ্রিতার কথাটা শুনে...
।
।
কাজি সাহেবঃ কে আপনি আর এই বিয়েটা হবে কেনো....
।
।
আদ্রিতাঃ কারণ ওনি আমাকে ভালোবাসেন ওই মেয়েটাকে না আর এই মেয়েটাকে বিয়ে করলে ওনি কোন দিনও সুখে শান্তিতে সংসার করতে পারবেন না...
।
।
নীলার ভাইঃ যখন আপনাকেই ভালোবাসতো তাহলে তো আপনাকেই বিয়ে করার কথা ছিলো আমার বোনকে না কী হয়েছিলো যে এনি আপনাকে বিয়ে না করে নীলাকে বিয়ে করতে রাজি হয়ে গেছেন..
।
।
আদ্রিতাঃ সে অনেক বড় ঘন্টা সর্বশেষ কথা হলো এই বিয়েটা হবে মানে হবে না...
।
।
নীলার ভাইঃ আপনি কিন্তু অতিরিক্ত করে ফেলতেছেন.....
।
।
আদ্রিতাঃ আপনি চুপ করুন আর আপনি কেমন মানুষ হ্যা যাকে ভালোবাসেন তাকে ফেলে অন্য একটা মেয়েকে বিয়ে করতে চলে এলেন 😶
।
।
কাজি সাহেবঃ আপনি চাইলেও এ বিয়ে বন্ধ হওয়া সম্ভব না কারণ অধেক বিয়ে হয়েই গেছে আর এই কাগজে পাএীর সাক্ষর ও হয়েগেছে বাশ এনি সাইন করে দিলে বিয়েটা সম্পুর্ণ হয়ে যাবে...
।
আদ্রিতাঃ এই কাগজটাই তো বাধা হয়ে দাড়াছে তাই বইটা থেকে কাগজটা ছিড়ে কুচি কুচি ছিড়ে ফেলেদিলাম...
।
।
নীলার ভাইঃ এটা আপনি করলেন পাগল হয়ে গেছেন....
।
।
আদ্রিতাঃ হ্যা আমি পাগল হয়ে গেছি...
।
।
নীলার বাবাঃ আপনার জন্য আমার মান সম্মান সব মাটিতে মিশে গেলো কে করবে আমার মেয়েটাকে বিয়ে.....
।
।
ঠিক তখনি পিছন থেকে অচেনা কন্ঠে ভেসে এলো আমি করবো বিয়ে. ..
।
।
কে বললো কথাটা তখনি ভিড় থেকে একটা ছেলে বেড়িয়ে আসলো...
।
ছেলেটাঃ আমি করবো বিয়ে আজ এই মেয়েটা বিয়েটা না বন্ধ করলে আমিই বন্ধ করে দিতাম কেনো আমি নীলাকে ভালোবাসি .
।
।
ছেলেটাঃ অভিমান করে আর বা রাগ করে নীলা আমাকে ছেড়ে চলে এসেছে হয়তো কষ্ট গুলো মুছে ফেলতে এমন একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছে....
।
।
নীলার বাবাঃ কী নীলা তোমাকে ভালোবাসতো আর আমরা কখনো জানতেই পারি নি....
।
।
নীলার ভাইঃ নীলা এই নীলা বেড় হও ঘর থেকে 😡😡
।
।
নীলাঃ রুম থেকে বেড় হয়ে কী হয়েছে ভাইয়া ( ভয়ে ভয়ে)
।
।
নীলার ভাইঃ এই ছেলেটা যা বলছে তা কী সত্যি নাকি মিথ্যা.... সত্যি করলে বল
।
।
নীলাঃ 😥😥 হুম সত্যি আমিও ওকে ভালোবাসতাম কিন্তু যখন ওকে বিয়ের কথা বলি ও রাজি হয় নি কারণ ওর কাছে ভালো জব নেই তাই আমার খুব রাগ হয়ে আর সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি 😓
।
।
নীলার বাবাঃ পরিবারের মান সম্মান বাচাতে ওই ছেলেটার সঙ্গেই নীলার বিয়েটা দিয়ে দিলাম😔😔
।
।
।
কিছু খন পরে
।
।
সাঈদঃ গাড়িতে দুজন দুপাশে কারো মুখে একটাও কথা নেই গাড়িটা নিজের গতিতে ছুটে চলেছে...
।
।
আদ্রিতাঃ কথা বলতেছে না কেনো হুম তাই
।
এই যে মিঃ সাঈদ শুনতে পাচ্ছেন..
।
।
সাঈদঃ শুনতে পাবো না কেনো আমি কী কানে শুনতে পাইনা যতসব....
।
।
আদ্রিতাঃ এই রে ওনি তো প্রচন্ড রেগে আছেন এখন কিছু না বলটাই ভালো...
।
আমি জানি তার রাগ করার কারণটা...
।
।
হয়তো কেউ বলবে নিজের স্বাথের কারণে এমনটা করেছি..
যে যাই বলুক না কেনো যখন ওনাকে ভালোবাসতে পেরেছি তাহলে ওনাকে হারিয়ে যেতে দিবোই বা কেনো...
।
।
সাঈদঃ বিয়েটা ভেঙ্গে গেলো এটা নিয়ে আমার কোনো মাথা ব্যাথাই নেই..
।
।
তবে এটা ভেবে কষ্ট লাগছে যে এই দিনটায় যদি আব্বু আম্মু থাকতো তাহলে তারা কতটা আনন্দ করতো আফসোস আব্বু এই দিনটা দেখার জন্য বেচেই রইলো না আর আম্মু তো বেচে থেকেও আমার কাছে মৃত্য..
।
।
সাঈদঃ ড্রাইভার গাড়িটা থামাও...
।
।
ড্রাইভারঃ কেনো স্যার এই জন মানব হীন জায়গায় আপনি কী করবেন...
।
।
সাঈদঃ গাড়ি থামাতে বলছি থামাও ওত কথার উওর নেই আমার কাছে গাড়ি থেকে নেমে যাও সবাই বাড়িতে ফিরে যাও আমি সময় হলে চলে আসবো...
।
।
ড্রাইভারঃ কিন্তু স্যার আপনি আসবেন কীভাবে
।
।
সাঈদঃ গাড়িটা রেখে যাও আর হ্যা তোমরা নীলের গাড়িতে চড়ে বসো আদ্রিতাও আমার সঙ্গে থাকতে চেয়েছিলো কিন্তু না ওকেই পাঠিয়ে দিয়েছি...
।
।
আদ্রিতাঃ ওনার কী এমন হয়েছে যে আমার সাথে এমন করছে .
।
।
নীলঃ ওখান থেকে কিছু দুরে একটা কবর স্থান রয়েছে সাঈদ ওখানে যাবে কেনো না ওই জায়গায় ওর বাবার কবরটা রয়েছে...
।
।
আদ্রিতাঃ ওনার বাবার কী হয়েছিলো...
।
।
নীলঃ আজ থেকে প্রায় ১৫ বছর আগে সাঈদ ওর আম্মু আব্বু আর সাঈদের আদরের বোন অনু সবাই মিলে ঘুরতে বেড়িয়েছিলো...
।
।
কিন্তু আফসোস ওই দিনটাই ছিলো ওর আব্বু আর বোনের জীবনের শেষ দিন মাঝ রাস্তায় সাঈদের আম্মুর প্রচুর বমি হচ্ছিলো তাই ও আর ওর আম্মু গাড়ি থেকে নিচে নামতেই একটা বড় ট্রাক এসে তাদের গাড়িতে ধাক্কা মারে...
।
।
গাড়িতে তার বোন আর আব্বু ছিলো তারা সেখাই মরা যায় তার পর থেকে যখনি ওদের কথা মনে পড়ে সাঈদ একা একা সেখানে চলে যায়....
।
।
আদ্রিতাঃ ও আজ মনে হয় ওদের কথা খুব মনে পড়েছিলো...
।
।
সাঈদঃ আব্বু আর অনুর কবরটা পাশাপাশি
।
ইসস আজ যদি অনু বেচে থাকতো তাহলে কতই না আনন্দ করতো ছোটবেলায় অনু বলতো
।
।
ভাইয়া তোর বিয়েতে আমি খুব নাচবো আর খুব খুব আনন্দ করবো আমার সব বান্ধবীদের দাওয়াত দিবো...
।
।
আজ সেই বোনটা আমার আমার সাত ফিট মাটির নিচে ঘুমিয়ে রয়েছে ভাইয়া বলে ডাক দেওয়ার মতো কেউ নেই..
।
।
বাবা তুমি খুব স্বার্থ পর কেনো একা রেখে চলে গেলে আমায় মা আমাকেও সাথে নিয়ে যেতে পারতে তুমি জানো আব্বু আম্মু একটুও ভালো না আমি আম্মুকে রেখে চলে এসেছি...
।
।
।
সেখানেই কিছু খন বসে ছিলাম বসে থাকতে ভালো লাগেই বাবার কবরের পাশে...
।
।
আজ মনে খুব বৃষ্টি হবে আকাশের অবস্থা ভালো নেই...
।
।
কথাটা বলতে না বলতেই আকাশ বেয়ে বৃষ্টি পড়তে লাগলো সারা শরীরের উপর ঝড় ঝড়র করে বৃষ্টি পড়ছে....
।
।
মনে হচ্ছে বাবা আমার কষ্ট দেখে কাদতেছে আর এই বৃষ্টিটা তারি চোখের জল...
।
।
সেখান কিছু খন থাকার পর মনে হলো মেয়েটা বাসায় একা রয়েছে বৃষ্টি পড়লে খুব ভয় পায় এখানে বেশি খন থাকাটা ঠিক হবে না...
।
।
আদ্রিতাঃ আকাশটার অবস্থা এত খারাপ না জানি ওনি কোথায় আছেন আর কী অবস্থাই বা আছেন ওনার জন্য খুব চিন্তা হচ্ছিলো এমন সময় বিদ্যুৎ টাও চলে গেলো পুরো রুমটা অন্ধকার প্রচন্ড ভয় লাগতে শুরু করলো বৃষ্টি পড়লে আমরা এমনিতে ভয় লাগে..
।
বজ্রপাতের আলোয় আবছা আবছা করে দেখতে পাচ্ছি কেউ রুমে এসেছে আমি শিওর ওটা ওনিই দৌড়ে গিয়ে জরিয়ে ধরলাম ওনাকে😇
।
।
ওনার পুরো শরীরটা ভিজে একাকার হয়ে গেছে হাত গুলো প্রচন্ড ঠান্ডা হয়ে গেছে...
।
।
আদ্রিতাঃ আপনার শরীরটা তো পুরো পুরি ঠান্ডা হয়ে গেছে তারাতাড়ি কাপড় গুলো বদলে ফেলুন না হলে ঠান্ডা লেগে যাবে..
।
।
সাঈদঃ আদ্রিতাকে ছাড়িয়ে কাপড় গুলো বদলে ফেললাম...
।
।
আদ্রিতাঃ আচ্ছা একটা কথা বলবো আপনি এমন কেনো..
।
।
সাঈদঃ আমি যেমন ছিলাম তেমনটাই আছি শুধু মাএ মরে গেছে সেই আগের সাঈদ টা...
।
।
আদ্রিতাঃ আপনি যেমনি হোন না কেনো আমার এই মানুষটাকেই খুব ভালো লাগে
।
বিয়ে করবেন আমায়..
।
সাঈদঃ হঠাৎ কেনো বিয়ে করতে চাও আমায় যখন আমি বলেছিলাম তখন কী হয়েছিলো...
।
।
আদ্রিতাঃ সত্যি জানতে চান তাহলে শুনুন আমি কখনো সন্তানের মা হতে পারবো না তাই আমি আপনাকে বিয়ে করতে চাই নি কারণ আমি কখনো আপনাকে বাবা হওয়ার সুখটা দিতে পারবো না...
।
এখন বলেন এই কথাটা আপনি জানলে বিয়ে করতেন আমায় উওর দিন..
।
।
চলবে……………………
3
5
বৃষ্টি সবারই ভালো লাগে, গল্পের লেখক অনেক সুন্দর এবং মজাদার কাহিনীর সাথে গল্পটি আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে,। গল্পটি পড়ে আমি মজা পাচ্ছি।।