বখাটে_ছেলের_পর্দাশীল_বউ

0 6
Avatar for Foysal
Written by
4 years ago

#বখাটে_ছেলের_পর্দাশীল_বউ.

#পর্ব__০৩

বাসায় এসে রাহাত রুমে ঢুকে গেট লাগিয়ে দিয়ে নুরজাহান এর কাছে এসে বললো....

রাহাত: এই তুই আমার বন্ধুর সাথে হাত মেলালি না কেন?(রাগী কন্ঠে).

নুরজাহান: প্রিয় স্বামী পর-পুরুষের সাথে কথা বলা তো দুর হাত মেলানোও জায়েজ নেই ইসলামের শরীয়তে।তবে হ্যাঁ যদি কোন নারী বিপদের সমূখিন হয় তবে শুধু কথা বলাটা জায়েজ আছে এই জন্যেই আমি তাদের সাথে হাত পিলাই নি। তার জন্যে আমাকে ক্ষমা করবেন??(মৃদ স্বুরে)..

রাহাত: এক তো আমার বেষ্ট ফ্রেন্ডদের সাথে হাত মেলাসনি তার উপর আবার হাদিস বলছিস,

(ঠসসস...ঠাসস..ঠসসস..ঠসসস..যা এখান থেকে।(চারটা থাপ্পর দিয়ে বললো)

নুরজাহান এর গালে থাপ্পর দেওয়াতে ওর ঠোঁট কেটে রক্ত বের হয়ে যায়,,কোন কথা না বলেই মাথা নিচু করে চলে গেল।

দেখতে দেখতে ২মাস পার হয়ে গেল,,এখনো রাহাত নুরজাহান কে তার স্ত্রী হিসাবে মেনে নেয় নি।

রাহাত সব সময় নুরজাহান এর গায়ে হাত তুলে ও গালাগালি করে আর নুরজাহান তা মুখ বুঝে শয্য করে,,এর মধ্যে নুরজাহানের পরিবারের সবাই এসে নুরজাহান কে দেখে যায়,তাদেরকেও এই সব কথা বলে নি,এবং নুরজাহানের বাবা নুরজাহান কে কয়দিনের জন্য বেড়াতে নিয়ে যেতে চেয়েছিল কিন্তু রাহাত যাবে না বলে নুরজাহানও তাদের সাথে যায় নি,,রাহাত কে নুরজাহান অনেকটাই ভালোবেসে ফেলে,তাই ওর প্রতিটা মাইর- গালাগালি ওর কাছে ভালোবাসা মনে হয়,,একদিন রাহাতের পরিবারের সবাই রাহাতের নানি বাড়ি যায়,কারন রাহাতের নানি খুব অসুস্থ তাই মাছুম খান,রুনা বেগম,রিনা তাকে দেখতে যায়,রুনা রাহাত ও নুরজাহান কে সাথে করে নিয়ে যেতে চেয়ে ছিল কিন্তু রাহাত যাবে না বলে দিয়েছে,তাই নুরজাহান ও তাদের সাথে যায় নি,,তারা ৩জন দুপুরের খাবার খেয়ে রুপগঞ্জ যাওয়ার উদ্দ্যেশে বেড়িয়ে পড়ে,,আর রাহাত কে বলে যায় নুরজাহান বাসায় একা তাই বাসায় যেনো তাড়াতাড়ি চলে আছে,,রাহাত তাদের কথা কানে না নিয়ে ক্লাব এ চলে যায় মেইন গেট তালা দিয়ে,,আর নুরজাহান বাসাই একা থাকে।

নুরজাহান এশারের নামাজ আদায় করে অনেক ক্ষন অপেক্ষা করে রাহাতের জন্য ,কিন্তু রাহাত এর আসার কোন নাম গন্ধ নেই,,রাত ১২টা বেজে গেসে দেখে নুরজাহান খাবার বেড়ে রুমের টেবিলের উপর রেখে সোফায় গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে

ক্লাব এ..

রিফাত: কিরে রাহাত আর কত মদ খাবি?এবার বাসায় যা।তোর বউ তো বাসায় একা তাই না??

রাহাত: (চুপ করে আছে আর মদ খেয়েই যাচ্ছে).

রিমন: রাহাত শুনলাম তোর বউ নাকি অনেক সুন্দর।

তা আবার পর্দাশীল,কেউ নাকি তোর বউকে এখনো পর্যন্ত দেখেনি??(মাতাল স্বুরে).

রকি: হ্যাঁ! আসলেই অনেক সুন্দর,, সেদিন পর্কে দেখলাম,আমার কাছে তো খুব ভালই লেগেছে,,বোরখা পড়া অবস্তায় এতো ভালো দেখাচ্ছিলো না জানি বোরখা ছাড়া কতো ভালো লাগবে,, এশশ আমি যদি এই রকম একটা বউ পেতাম না তাহলে যে কি করতাম তা নিজেও জানি না,(মাতাল স্বুরে)

রিমন: তাই নাকি তাহলে তো অনেক সেক্সি মা*ল হবে। রাহাত তুই কি মা*ল টাকে টেস্ট করে দেখেছিস? আর যদি করিসও তো আমাদেরকেও একটু বেড শেয়ার করতে দিস,,আমরাও দেখি কত সেক্সি মা***লটা,, আমরা তো তোর ফ্রেন্ড তাই না?

(মাতাল স্বুরে বাঁকা হাসি দিয়ে)

রাহাত এই কথা শুনে হাতের গ্লাসটা জোরে আছাড় দিয়ে ভেঙে ফেলে রিমনের কলার ধরে বললো...

রাহাত: এই ওর বিষয়ে একটাও খারাপ কথা বলবি না,ও আমার স্ত্রী,আর একটা কথা বলেছিস তো আমি ভুলে যাবো আমার কোনো বন্ধু ছিল,,(রাগি গলায়).

রকি,রিফাত দৌড়াতে এসে রাহাত কে রিমনের কাছ থেকে শরালো,,রাগে রাহাতের চোখ-মুখ লাল হয়ে গেছে,

রিফাত: রাহাত তুই নাকি ওকে স্ত্রী হিসাবে মেনে নিস নাই, তো তোর এতো রাগ হচ্ছে কেন এই কথা শুনে,??

হঠাৎ করেই রাহাত বুঝতে পারলো ও কি বলেছে,,,,

রাহাত: হ্যাঁ তাই তো আমি তো নূর কে স্ত্রী হিসাবে মেনে নেয় নি, তাহলে ওর বিষয়ে এই কথা শুনে আমার কেন রাগ হচ্ছে,, আমি কি নূর কে অজান্তেই ভালোবেসে ফেলেছি? না না এই আমি কি বলছি,,,(মনে মনে).

রকি: কিরে বল??

রাহাত কিছু বললো না,মদের বোতল হাতে নিয়ে এক চুমুকে সব শেষ করে দিলো,তারপর বোতলটা মাটিতে অঁছাড় দিয়ে ফেলে ক্লাব থেকে বের হয়ে গাড়িতে গিয়ে বসে গাড়ি স্টার্ট দিলো,,ওরা আবাক হয়ে ওর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রয়লো,,,,

রাহাত বাসায় পৌছে গাড়ি থেকে নেমে ঢোলতে ঢোলতে গেট এর সামনে গেল,তালা খুলে গেট বন্ধ করে সোজা উপড়ে চলে গেল,,এই কয়দিয়েন তুলনায় আজ মদটা বেশিই খেয়ে ফেলেছে রাহাত,,রুমে গিয়ে দেখে নূর খাবার টেবিলে রেখে সোফায় গিয়ে সোয়ে পড়েছে,ঢোলতে ঢোলতে গেট লাগিয়ে বিছানাই গিয়ে বসলো।

নূর বোরখা খুলে নীল রং এর শাড়ি পড়ে ঘুমিয়ে ছিল।ঘুমন্তু অবস্তায় নূর কে খুব সুন্দর লাগছিল।

রাহাত বিছানায় বসে এক দৃষ্টিতে সোফায় ঘুমানো নূর এর দিকে তাকিয়ে আছে,,ওর চোকে কামোনার নেশা ফুটে ওঠেছে,,রাহাত আস্তে আস্তে হেটে নূর এর কাছে গেল,,এক ধ্যানে কিছুক্ষন নূর এর দিকে তাকিয়ে রইলো তারপর আস্তে করে নূর কে কোলে ওঠিকে বিছানায় নিয়ে সোয়ালো,রাহাত নূর এর গোলাপি ঠোঁটে ঠোঁট রেখে কিস করতে লাগলো...

হঠাৎ করেই নূর ঠোঁটে কারো স্পর্শ পেয়ে জেগে ওঠলো,,নূর তাকিয়ে দেখলো রাহাত ওর ঠোঁটে কিস করছে,,নূর কিছু না বলেই জোরে একটা ধাক্কা দিলো রাহাত নিচে গিয়ে পড়লো,,নূর সোয়া থেকে এঠে বসে গেল,,নূর এর ধাক্কায় রাহাত এর প্রচুন্ড রাগ হলো,,,,

নুরজাহান: ক্ষমা করবেন প্রিয় স্বামী,,আমি আসলে বুঝতে পারি নি,,আর দয়া করে আমাকে অই নেশা অবস্তায় স্পর্শ করবেন না,আপনে আজ অনেক নেশা করেছেন,আমি চাই না আপনে এই নেশা অবস্তায় আমাকে স্পর্শ করেন (মৃদ স্বুরে).

এমনেতেই ধাক্কাতে রাহাত এর রাগ ওঠেছে তার উপর এই কথা শুনে আরো রাগ‌ ওঠে গেল। রাহাত ওঠে কিছু না বলেই নূর এর চুল এর মুঠি ধরেই ঠোঁটে কিস করতে লাগে,,নূর মদের গন্ধে মনে হচ্ছে এখনি বমি করে দিবে,ধাক্কা দিয়েও সরাতে পারছে না রাহাত কে।

চেপে ধরে কিস করতে থাকে,,এক সময় কিস গুলা কামড়ে পরিনতো হয়,,রাহাত কি করছে সেটা ও নিজেও যানে না,,রাহাত হিংস্র পশুর মতো নূরের উপর জাপিয়ে পড়ে,,নূর কিছুতেই রাহাত কে বাঁধা দিতে পারে না,চোখ কি শুধু পানি গড়িয়ে পড়ে,,নূর এক সময় শয্য করতে না পেরে সেন্সলেস হয়ে যায়,,রাহাত ওর কাজ শেষ করে নূরের বুকের উপর শুয়ে পড়ে।

সকালে নূর এর জ্ঞান ফিরে,,পিটপিট করে চোখ খুলে তাকিয়ে দেখে রাহাত ওর বুকের উপর ঘুমিয়ে আছে। নূর এর কাল রাতের কথা মনে পড়ে যায়, নূর এর শরীরে কোন শক্তি নেয়,আস্তে করে রাহাত কে বুকের ওপড় থেকে নামিয়ে গায়ে শাড়ি জড়িয়ে বাতরুমে চলে যায়,,বাতরুমে গিয়ে গোসল সেরে বোরখা পড়ে নিচে যায়,,নিচে নেমে রান্না করতে শুরু করে কিন্তু নূর এর শরীর এতটাই দুর্বল ছিল নূর রান্না ঘরেই অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায়,,,,রাহাত এর ঘুম থেকে ওঠে দেখে ওর শরীরে কোনো কাপড় নেই,,ওঠে বসে রাতের কথা ভাবতে থাকে আর সব মনে পড়ে যায়,,,,

রাহাত: ওহ শিট এটা আমি কি করে ফেললাম,,শিট শিট,,রাগ ও নেশার মাথায় আমি নূর কে,,না নূর কে এখন আমি কি বললো,,যায় আগে ফ্রেশ হয়ে আসি,,!!

রাহাত ফ্রেশ হয়ে বের হয়ে নূর এর জন্য অপেক্ষা করছে কিন্তু নূর এর আসার কোন নাম গন্ধ ও নেই,,তাই ও নিচে নেমে নূর বলে ডাকতে থাকে কিন্তু কোথায় কোন সাড়া শব্দ পাচ্ছে না,,এক পর্যায় রান্না ঘরে যায়,সেখানে গিয়ে দেখে নূর রান্না ঘরের মেজতে অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে,দৌড়িয়ে নূর এর কাছে যায়,,,,,

রাহাত: নূর,,,নূর,,,এই নূর ,না ওঠছে না তো,ডাক্তার ডাকতে হবে,(নূর কে কোলে করে ওপরে নিয়ে যায়,বিছানায় শুয়েই দিয়ে বোরখা খুলে দেয়।

বোরখা খুলে দেখে,গলায়,পেট,ও আরো অনেক জায়গায় দাঁগ হয়ে আছে,,,,

রাহাত: ছি ছি আমি এটা কি করেছি,,আমার জন্য ওর আজ এই অবস্তা,,(করুন কন্ঠে বললো).

রাহাত আর দেরি না করে একজন মহিলা ডাক্তার কে ফোন করে বাসায় আসতে বললো,,ডাক্তার এসে নুরজাহান কে দেখে বললো...

ডাক্তার: এই গুলা কিসের দাঁগ আর ওনার শরীর অনেক দুর্বল‌ কেন,ওনি কি ঠিক মতো খাওয়া দাওয়া করে না,,??

রাহাত কিছু বলছে না চুপ করে আছে,,,

ডাক্তার : যাই হোক ওনার দিকে একটু খেয়াল রাখবেন,শারীরীক দিক দিয়ে ওনি অনেক দুর্বল,,??

রাহাত কিছু বললো না শুধু মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বললো,ডাক্তার কিছু মেডিসিন এর নাম লিখে দিয়ে যায়,দারোয়ান কে দিয়ে সেই মেডিসিন গুলা আনায়,,নুরজাহান এর জ্ঞান ফিরে দেখে ও বেডে শুয়ে আছে ,ওঠতে চাইলে ওঠতে পারে না,,,

রাহাত: থাক আর ওঠতে হবে না, এই মেডিসিন গুলা খেয়ে নেও,তারপর এই সুপটা খাও(গম্ভীর গলায়).

নুরজাহান মুখে কিছু বললো না মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বলে ঔষধ গুলা গেয়ে সুপটা খেতে শুরু করলো।

রাহাত: নূর I'm sorry আমি আসলে কাল একটু বেশিই নেশা করে ফেলেছি তাই তোমার সাথে

(নূর থামিয়ে দিল)

নুরজাহান: প্রিয় স্বামী,,, আমার উপর আপনার হক আছে, এতে স্যরি বলার দরকার নেই,(মৃদ স্বুরে).

রাহাত আর কিছু বললো না, চুপ হয়ে রইলো,,৫-৬দিন পর মাছুম খান, রুনা বেগম, রিনা রুপগঞ্জ থেকে বাসায় ফিরে আসে,,,এই ৫- ৬দিন রাহাত নুরজাহান কে রান্না-বান্না ও ঘরের কোন কাজ করতে দেয় নি,বাহিরের থেকে খাবার এনে খেয়েছে,রাহাত নেশা করেছে ঠিকই কিন্তু বেশি নেশা করে বাসায় আসে নি,,,,

রুনা বেগম: বৌমা একটু আসবো??(নুরজাহান এর ঘরের সামনে দাড়িয়ে বললো).

নুরজাহান: মা বলার দরকার নাই,আপনে ভিতরে চলে আসুন।

রুনা বেগম: কি করছো বৌমা??

নুরজাহান: মা একটু হাদিস পরছিলাম,,কিছু বলবেন মা??

রুনা বেগম: হ্যাঁ! কিছু বলতে চাই,,আচ্ছা বৌমা রাহাত তোমার সাথে এখন আর খারাপ ব্যবহার বা তোমার গায়ে হাত তুলে না তো??

নুরজাহান: না মা সে আমার গায়ে হাত ও আমর সাথে খারাপ ব্যবহার করে না।

রুনা বেগম: আজ শুনে খুশি হলাম,,আচ্ছা তুমি পড়ো আমি যায় তাহলে??

নুরজাহান: হুমম।

রাতে....

রাহাত আজ আগের মতো ড্রিংক করে বাসায় ফিরেসে।রুমে এসে বিছানায় শুয়ে পড়লো,,নুরজাহান এসে বললো,,,,

নুরজাহান: প্রিয় স্বামী আপনার খাবর বেড়ে রেখেছি।হাত মুখ দুয়ে খানা খেতে আসেন?(মৃদ স্বুরে).

রাহাত: তুই যা এখান খেকে,আমার ক্ষিদে নেই আমি খাবো না, (শোয়ে চোখ বন্ধ করে বললো).

নুরজাহান: প্রিয় স্বামী আপনে এবাবে যদি রাতে না খেয়ে ঘুমান ,তাহলে আপনার স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারে,,আপনে যদি বলেন তাহলে আমি আপনাকে খাবার খাওয়ে দেই??(মৃদ স্বুরে)..

ঠসস ঠাসস....

রাহাত শোয়া থেকে ওঠে নুরজাহান এর গালে দুইটা থাপ্পর মারলো,,,,

রাহাত: তোকে কে বলেছে আমাকে খাওয়ে দিতে,,৪-৫দিন ভালো ব্যবহার করেছি তার জন্য মাথায় ওঠে গেসিছ,এটা ভাবিস না ভালো ব্যবহার করলেই আমি তোকে মেনে নিয়েছি,,আরে ভালো ব্যবহার তো কুকুরের সাথেই করি,তাহলে কি তাকেও কোলে করে নিয়ে নাচতে হবে,,লিমিট মতো থাক,,লিমিট ক্রস করিস না,তার পরিনাম ভালো হবে না,,যা আমার সামনে থেকে,(রাগি কন্ঠে বললো)..

নুরজাহান গালে হাত দিয়ে নিচের দিক তাকিয়ে কথা গুগা শুনছিল,,রাহাত এর কথার কোন উওর দিল না,শুধু চোখ দিয়ে পানি পড়তে লাগলো,,রাহাত এটা বলে ঘুমিয়ে পড়ে,, নুরজাহান রাহাত এর সমনে থেকে চলে এসে ওজু করে তাহাজ্জুদ এর নামাজ আদায় করে,নামাজ শেষ করে মোনাজাত দরে আল্লাহ্ কাছে বলে,,,,,

হে মহান আল্লাহ্,,,,

আমার কোন রাগ নেয় আমার প্রিয় স্বামীর

উপর,তুমি আমার এই কষ্ট ও চোখের পানির

বিনিময় আমার স্বামী কে ভালো পথে ফিরিয়ে

এনে দাও,আমি চাই ও ভালো পথে ফিরে

আসুক,আমার প্রিয় স্বামী যেনো ৫ ওয়াক্ত

নামাজ আদায় করে,তার মা-বাবার কথা ঠিক

মতো শুনে,তুমি আমার স্বামীকে ভালো পথে

ফিরিয়ে এনে দেও,আমার প্রিয় স্বামী হায়াত

তুমি ভাড়িয়ে দেও আল্লাহ্,,তুমি আমার স্বামী

কে হেদায়েত দান কর আল্লাহ্,, হেদায়েত দান

কর আল্লাহ্,, আল্লাহ্ হুম্মা আমিন,,(মনে মনে).

নামাজ শেষ করে ঘুমাতে চলে গেল,,ফজরের আজান শুনে ঘুম থেকে ওঠে গেল এবং রাহাত কেও নামাজ পড়তে ডাক দিল,,রাহাত নামাজ পড়তে ওঠে নি বরং রাগ নিয়ে নুরজাহান কে গালাগালি করে ও গালে দুইটা চড় দেয়,,এবাবে নুরজাহান প্রতিটা অত্যাচার শয্য করতে থাকে রাহাত এর।

এবাবেই চলতে চলতে এক মাস কেটে যায়, হঠাৎ একদিন রাত ২টার সময় খবর আসে রাহাত রাতে ড্রিংক করে গাড়ি চালাচ্ছিল,আর একটা ট্রাক এসে রাহাত এর গাড়ির সাথে ধাক্কা লাগে,,রাহাত এর accident হয়ে যায়,,রাহাত এর দেহ গাড়ি থেকে বের করে কিছু লোক ধরা-ধরি করে হাসপাতালে নিয়ে যায়,,ওরা সবাই হাতপাতালে এসে দেখে রাহাত ICU তে আছে,,ডাক্তার ওদের কে বলে হাতে ও পায়ে বেশি ব্যাথা পেয়েছে,,আর ডান পা টা ভেঙে গেছে,,এই কথা শুনে রুনা বেগম,রিনা কান্নায় ভেঙে পড়ে,,,,

নুরজাহান: মা,রিনা দয়া করে কাঁদবেন না,আল্লাহ্ উপর ভরশা রাখুন দেখবেন সব ঠিক হয়ে যাবে,,(কান্না জড়িতো কন্ঠে).

রুনা বেগম: কি থেকে কি হয়ে গেল রে মা,,আমার ছেলেটা কেন যে আমাদের কথা শুনে না,,(কান্না কন্ঠে).

মাছুম খান: আহা কান্না থামাও রুনা,,এটা তোমার ছেলের আল্লাহ্ দেওয়া একটা শাস্তি,,সেটা তো ভোগ করতেই হবে,(করুন কন্ঠে)..

নুরজাহান: বাবা,মা আপনারা বাসায় চলে যান,আমি আর রিনা এখানে থাকি,,(কান্না জড়িত কন্ঠে).

মাছুম খান:কিন্তু মা,তোমরা দুই জন মেয়ে,,,,(রিনা থামিয়ে দেয়).

রিনা: বাবা আমি আছি তো,তুমি মম কে নিয়ে বাসায় যাও,,এখানে থাকলে মম ভাইয়ার জন্য টেনশন করতে করতে পেশার ওঠে যাবে,,??

মাছুম খান: আচ্ছা ঠিক আছে,,আমি যাবো না জালাল(ড্রাইবার) কে বলে তোর মম কে বাসায় পাঠিয়ে দিচ্ছি??

নুরজাহান:সেটাই ভালো হবে বাবা।

মাছুম খান রুনা বেগম কে বাসায় পাঠিয়ে দেয়,মাছুম খান, নুরজাহান ও‌ রিনা ICU এর পাছের সিটে বসে ছিল,ডাক্তার icu থেকে বের হয়ে বললো,,,,

ডাক্তার: রুগিকে বেড এ দেওয়া হয়েছে আপনারা চাইলে তাকে দেখতে পারেন,তবে হ্যাঁ বেশি কথা বলবেন না?

ডাক্তার এটা বলেই চলে যায়,নুরজাহান, মাছুম খান, রিনা রাহাত কে যেই রুনে রাখা হয়েছে সেখানে যায়,সেখানে গিয়ে দেখে রাহাত এর হাতে পায়ে ব্যান্ডেজ করা ও হাতে স্যালাইন লাগানো,নুরজাহান এটা দেখে কান্না ধরে রাখতে পারে না,নিরবে কেঁদেয় যাচ্ছে,,,রাতটা কোন রকম পার হয়ে সকাল হল।

রাহাত এর এখনো জ্ঞান ফিরে নি,,এটা দেখে সবাই আরো টেনশন এ পড়ে গেল,,ডাক্তার বলেছে রুগি প্রচুর নেশা করেছিল ,তাই জ্ঞান ফিরতে দেরি হবে,,নুরজাহান জায়নামাজে বসে কেঁদেয় যাচ্ছে খাওয়া দাওয়া ছেড়ে দিয়ে,,রাত ৪টার রাহাত এর জ্ঞান ফিরে,আস্তে করে পিটপিট করে চোখ খুলে তাকিয়ে দেখে চারদিকটা,রাহাত বুঝতে পেরেছে ও এখন কোথায় আছে,,হঠাৎ করেই রাহাত এর কানে কান্নার আওয়াজ শুনতে পায়,,রাহাত একটু নড়েচড়ে ওঠলো দেখার জন্য কে কান্না করছে দেখার জন্য,,,,

রাহাত: জ্ঞান ফিরে আসার পর দেখলাম আমি হাশপাতালে,,সেই রাতে আমার accident হয়ে ছিল,,কিন্তু সবাই কোথায় কাউ কেই তো দেখতে পাচ্ছি না,,হঠাৎ করেই আমার কানে কান্নার আওয়াজ আসলো,আমি নড়াচড়া করে লাগলাম কিন্তু দেখতেও পারছি না,,গারটা একটু গুরিয়ে দেখলাম,,কালো বোরখা পড়া একটা মেয়ে জায়নামাজে বসে মোনাজাত দরে কান্না করছে,,আমার বুঝতে আর বাকি থাকে না এটা কে,,কান্না করতে করতে হেচকি ওঠে গেছে তারপর ও থামছে না,,আজ আমি এইটুকু বুঝতে পেরেছি নূর আমাকে খুব ভালোবাসে,,আমার কাছে খারাপ লাগতে শুরু করলো ওর কান্না দেখে,,আমি আস্তে করে নূর কে ডাক দিলাম,,,ন,,,নূর,,(কাপা কাপা কন্ঠে).

নুরজাহান রাহাত এর ডাক শুনতে পেয়েছে তাই তাড়াতাড়ি মোনাজাত শেষ করে চোখ মুছে দৌড়িয়ে রাহাত এর কাছে আসে,,,,,

নুরজাহান: আপনার এখন কেমন লাগছে??

আপনার কোথায় ব্যাথা হচ্ছে বলেন ,ডাক্তার কে ডাক দিবো,, বাবা,রিনা তার জ্ঞান ফিরেছে,,,বলেন না প্রিয় স্বামী আপনার কোথায় ব্যাথা হচ্ছে,, (উত্তজিতো হয়ে বললো)

রাহাত: আমার কাছে এসে পাগলের মতো বলতে লাগলো,,আমর মনে হচ্ছে ব্যাথা আমি না নূর এই পেয়েছে,,নূর এর দিকে তাকিয়ে দেখলাম,কান্না করতে করতে চোখ মুখ ফুলিয়ে ফেলেছে,মূখটাও শুকনা দেখাচ্ছে মনে হয় ঠিক মতো খাওয়া-দাওয়া করে নি,,আমি ওর কাথার উওর না দিয়ে এক ধ্যানে ওর দিকে তাকিয়ে রইলাম,,!!

মাছুম খান: রাহাত এখন কেমন লাগছে তোমার??(মৃদ স্বুরে).

রাহাত: ভালো লাগসে ড্যাড, মম কোথায়?

রিনা: মম বাসায় গেছে,,তর টেনশনে এএ পেশার ভেড়ে গেছে তাই বাসায় পাঠিয়ে দিয়েছি??

রাহাত: আমি এখানে কইদিন ধরে আছি??

মাছুম খান: ২দিন ধরে আছো,আর এখন তোমার জ্ঞান ফিরেছে,,আচ্ছা আমি ডাক্তার কে ডাক দিয়ে নিয়ে আসি,,আর বৌমা তুমি এখন কিছু খেয়ে নেয়,,কাল থেকে তুমি কিছুই খাও নি,,রিনা বৌমা কে খাবার দে??

রাহাত এর এই কথা শুনে একটু অবাক হল,,

নুরজাহান: হ্যা খাবো বাবা,আপনে ডাক্তার কে ডাক দিয়ে নিয়ে আসেন।

মাছুম খান: হুমমম।

রিনা: আসো ভাবি খাবার খেয়ে নেও।

নুরজাহান: দাড়াও আসছি,আমি আগে নামাজ পড়ে নেই তারপর?

রিনা: পরে পড়ো আগে খাবার খেয়ে নেও?

নুরজাহান: না রিন আমি,,,,(রাহাত থামিয়ে দেয়).

রাহাত: নূর আগে খাবার খাও,তারপর নামাজ পড়বে যাও?(আস্তে করে গম্ভীর স্বুরে বললো).

নুরজাহান: আচ্ছা,,প্রিয় স্বামী আপনার কিছু লাগবে ??

রাহাত: না??

নুরজাহান খাবার খেয়ে নামাজ পড়ে নিল ও আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করলো,,,দেখতে দেখতে কেটে গেল আরো ২সপ্তা,রাহাত এখন মোটামোটি সুস্থ তাই ডাক্তার বাসায় নিয়ে যেতে বলেছে,তবে ঠিক মতো হাটতে পারে না,ডাক্তার বলেছে ভালো করে পায়ের যন্ত নিলে তাড়াতাড়ি ভালো হয়ে যাবে এবং হাটতেও পারবে,,বাসায় নিয়ে আসার পর নুরজাহান রাহাত এর অনেক সেবা-যত্ন করতে থাকে, খাওয়ে দেওয়া হতে শুরু করে সব কাজ করে দিতো রাহাত এর,,আর রাহাত নুরজাহান এর এই রকম কের্য়ানেস দেখে অবাক হতো,,,,

রাহাত: নূর আমি চাই তোমাকে দুরে সরাতে কিন্তু তুমি ততই আমার সেবা-যন্ত করতে আমার কাছে ছুটে আসো,,আমি অবাক হয় তোমাকে দেখে ,এতো অপমার করি গালাগালি করি তোমার গায়ে হাত ও তুলি তারপর কেন তুমি আমাকে এতোটা ভালোবাসো,আমি যে তোমার মায়াতে পড়ে যাচ্ছি নূর,,(নূর রাহাত কে সুপ খাওয়ে দিচ্ছিলো, রাহাত নূর এর দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে মনে মনে কথা গুলা বললো).

নুরজাহান: প্রিয় স্বামী আপনার খাওয়া শেষ, এখন আপনে শুয়ে পড়েন?(এটা বলে রাহাত কে শোয়িয়ে দিল, রাহাত বাচ্চা দের মতো নূর এর কথা মতো শুনে শুয়ে পড়লো)..

এবাবেই রাহাতের সেবা-যন্ত করতে থাকলো নুরজাহান,,আরো এক মাস পার ওহে গেল,,এই এক মাসে রাহাত প্রদিন সকালে নূর এর মিষ্টি কন্ঠে কোরআন তিলাওয়াত শুনে ঘুম ভাঙতো। রাহাত ও সকালে ওঠে শুয়ে শুয়ে নূর এর কোরআন তিলাওয়াত শুনতো নূর এর প্রতিটা কাজ এ রাহাত মুগ্ধ হয়,এখন নূর কে কাছ থেকে দেখছে তাই,রাহাত আস্তে আস্তে নূর এর প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ে। রাহাত এর পা বেশি ভালো না হলেও অনেকটায় ভালো হয়েছে ,লাঠি বর দিয়ে হাটে রাহাত।

একদিন নূর হঠাৎ করেই মাথা ঘুরিয়ে পড়ে যায়।

সবাই এটা দেখে খুব চিন্তিত হয়ে যায়,,মাছুম খান

1
$ 0.00
Avatar for Foysal
Written by
4 years ago

Comments