পরাজিত জিবনের গল্প

25 48
Avatar for Fatemabegum71
4 years ago

আজ পাঁচদিন যাবত অঝোর ধারায় বৃষ্টি পড়ছে।আবহাওয়াও বেশ ঠান্ডা।সব জিনিসেরই ভালো দিক খারাপ দিক রয়েছে।স্পর্শার ইয়ানদের বাসায় থাকার যেমন খারাপ দিক রয়েছে তেমন ভালো দিকও রয়েছে।আজ তিন দিন ধরে স্পর্শা পানির ধারে কাছে যায় না।গায়ে কাঁথা মুড়ি দিয়ে পড়ে।টিভি দেখে।মিসেস ইরা মাঝে মাঝে খাইয়ে দেন স্পর্শা আর ইয়ানকে।তবে এখন স্পর্শা নিজের বাসায় থাকলে সেই কান্ড ঘটতো।তিনদিন গোসল করা তো দূরে থাক একদিন গোসল না করলেই মিসেস নীলা আর সুমন সাহেবের বকা খেতে হতো স্পর্শাকে।

রাতে খেয়ে যে যার মতো ঘুমিয়ে পড়েছে।প্রতিবারের মতো এই বারও ইয়ান খাটে আর স্পর্শা মেঝেতে শোয়।মেঝে ঠান্ডা থাকায় একটা চাদর বিছিয়ে স্পর্শা শুয়ে পড়ে।ইয়ান ফোন মুভি দেখছিলো।রাত তখন প্রায় দুইটা।ইয়ারফোনের সাউন্ডের সাথে কারও গোঙানির শব্দ কানে আসে ইয়ানের।ফোনের ফ্ল্যাশ লাইটের আলো জ্বালিয়ে ইয়ান দেখে স্পর্শা ঘুমের ঘোরে গোঙাচ্ছে।জ্বরই আসলো নাকি মেয়েটার!ইয়ান স্পর্শার কপালে হাত দেয়।দেখে জ্বরে গা পুড়ে যাচ্ছে।এখন আর মেয়েটার ঘুম ভাঙানোর দরকার নেই।কিন্তু মেঝেতে থাকলে তো।আরো ঠান্ডা লাগবে।কি করা যায়!ইয়ান কি স্পর্শাকে কোলে তুলে নেবে?কিন্তু পরে যদি স্পর্শা এই বিষয়টা নিয়ে রাগারাগি করে!করলে করুক।আগে জীবন।স্পর্শার কিছু হলে ইয়ানই তো দ্বায়ী থাকবে।খাটের মাঝখানে কোল বালিশ দিয়ে ভারত বাংলাদেশের বর্ডার বানায় ইয়ান।তারপর স্পর্শাকে কোলে তুলে খাটে শুইয়ে দেয় ইয়ান।রুমাল পানিতে ভিজিয়ে এনে জলপট্টি দেয় স্পর্শার কপালে।

জানালার কাঁচ আর পর্দা ভেদ করে সকালের সুর্যের আলো স্পর্শার মুখে পড়ে।স্পর্শার ঘুম ভেঙে যায়।ঘুম ভাঙাতেই ইয়ানের বুকের ওপর নিজেকে আবিষ্কার করে।স্পর্শা নিজেকে সামলে নেয়।ঘুম ঘুম ভাবটা ছাড়াতে চোখ কোচলায় সে।ঘুম ঘুম ভাবটা গেলে সে খেয়াল করে সে বিছানায়।কিন্তু সে তো কাল রাতে বিছানায় শোয় নি।তাহলে সে বিছানায় এলো কিভাবে?সে সব নিয়ে পরে ভাবা যাবে।আগে ফ্রেশ হয়ে নেই।স্পর্শা বাথরুমের দিকে পা বাড়ায়।বাথরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে বেড়িয়ে দেখে ইয়ানের ঘুম ভেঙেছে।বিছানায় থ মেরে বসে আছে সে।বাচ্চারা ঘুম থেকে উঠলে যেমন মুখ করে থাকে ইয়ানও তার মুখটা সেই রকম করে রেখেছে।স্পর্শা ইয়ানের সামনে তুড়ি বাজায়।ইয়ানের ধ্যান ভাঙে।স্পর্শা আচমকা এমন করায় ইয়ান কিছুটা চমকে যায়।তোতলাতে তোতলাতে বলে,,,,

-তু,,,তু,,তুমি?

-হ্যাঁ।আমি বিছানায় গেলাম কিভাবে?

-ঐযে রাত্রে তোমার জ্বর আসছিলো তাই আমিই আর কি,,,

-আপনি?হায় আল্লাহ আপনি আমায় বিছানায়...ছি ছি আস্তাগফিরুল্লাহ। আল্লাহ মাফ করো।আমায় এখন পর্যন্ত আব্বু ছাড়া অন্যকোনো ছেলে টাচ করে নাই।

-শুনো ভাব নিবা না।আমি যথেষ্ট ভদ্র ছেলে আছি।শুধু পরিস্থিতির চাপে পড়ে ঐকাজ করেছি।

ইয়ানের কথার মাঝখানে স্পর্শা কথা ঢুকিয়ে দেয়।ইয়ানও কম যায় না।ইয়ানও স্পর্শাকে কথা শুনিয়ে দেয়।এরই মধ্যে মিসেস ইরার ডাক আসে।দুইজনই ড্রয়িংরুমে যায়।গিয়ে দেখে ইয়ানের চাচাতো ভাই আরশ এসেছে।দুই ভাই দুইজনকে দেখেই জড়িয়ে ধরে।আচমকা স্পর্শার দিকে চোখ পড়ে আরশের।

-এই মেয়েটা কে?

পাশ থেকে ইয়ানের দাদি পান চিবুতে চিবুতে বলে,,,

-ইয়ানের বউ।

দাদির কথা শুনে স্পর্শা বিরবির করে বলে,,,

-ব্যস হয়ে গেলো!এই দাদি এমন কেন?বিয়ে হইছে দেখেই কি তার বউ হয়ে গেলাম?আর জামাইকে কি কেউ ভাইয়া ডাকে?নাম ধরে ডাকে না হলে বাচ্চা কাচ্চার বাবা বলে ডাকে।যেমন আব্বুকে আম্মু ডাকে।স্পর্শের বাবা।কিন্তু আমি তো উনাকে ইয়ান ভাইয়াই ডাকি।যদি জামাই হিসাবে মানতাম তাহলে তো ময়নার বাপ বলে ডাকতাম।যেহেতু আমার মেয়ের নাম হবে ময়না!ফ্রেন্ডরা তো আমাকে ময়নার মা বলেই ডাকে।

মিসেস ইরা আরশকে খেতে দেন।সেই ফাঁকে ইয়ান ফ্রেশ হয়ে নেয়।আরশের খাওয়া শেষ হলে দুই ভাই একান্ত আড্ডা দিতে বেলকনিতে যায়।আরশ ইয়ানের কাঁধে হাত দিয়ে বলে,,

-তোর কপাল আছে ইয়ান!গার্লফ্রেন্ডরে বউ বানায় ফেললি।তাও কোনো ঝামেলা ছাড়া।আর আমার কপাল দেখ আট বছর ধরে রিলেশনই চালায় যাইতেছি।জানি না আদৌও বউ বানাতে পারবো কিনা!

-আমায় দেখে কি তোর রিলেশন করার মতো ছেলে মনে হয়?

-তোর ভিতরে এক বাইরে আরেক মিয়া!তলে তলে গার্লফ্রেন্ড পালতা কে জানতো!

-আরেহ শালা স্পর্শা আমার কিছুই না।না ছিলো গার্লফ্রেন্ড না আছে বউ। পরিস্থিতির চাপে সব হইছে।ফ্রেন্ডলি কথা বলছি দুইজন আর মানুষ জন ভাবছে আমাদের রিলেশন আছে।আর জোর করায় বিয়ে দিয়ে দিছে।তুই পুরোটা না জেনে শুধু শুধু লাফাইলি ভাইয়া।আমাদের বাসায় যে আছে তাও দাদির চাপে।ও লুকায় নিজের বাসায় গেছিলো।কিন্তু দাদির জিদের কারণে ও নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে এই বাসায় আছে।তুই তাড়াতাড়ি দাদিকে নিয়া যা।

-নিয়া যাইতেও তো আসছি।এক কাজ করি দাদি তুলির ছবি দেখাই।যদি আমারো বিয়ে দিয়া দেয় দাদি!

-যা মন চায় করিস।

-এই আরশ।আমায় নিয়ে যাবি না নাকি?

দাদির ডাকে দুইজনের আলাপচ্ছেদ ঘটে।ইয়ান লম্বা শ্বাস নিয়ে বলে,,,

-যা ভাই তাড়াতাড়ি দাদিরে নিয়ে যা।এম্নেতেই স্পর্শা আমার ওপর সেই ক্ষেপে আছে।দাদি গেলে দাদির পেছন পেছন ও বেড়িয়ে যাবে।আর আমিও রক্ষা পাই।

দাদির ডাকে সারা দিয়ে আরশ বলে,,

-আসতেছি ডার্লিং।

আরশ মিসেস ইরার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ইয়ানের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে স্পর্শার কাছে যায়।ইয়ার্কির ছলে খোঁচা মেরে বলে,,

-আসি ভাবি আল্লাহ হাফেজ

আরশের মুখে ভাবি ডাক শুনে স্পর্শা পুরো আকাশ থেকে পড়ে।থ মেরে দাঁড়িয়ে থাকে স্পর্শা।এই বাচ্চা মেয়েটা ভাবি হয়ে গেলো?লাইক সিরিয়াসলি?রিকশাওয়ালা ঝালমুড়ি ফুচকাওয়ালা এখনো স্পর্শাকে মা,মামুনি,আম্মু বলে ডাকে।আর সেই মেয়েকে ভাবি বলে এত বুড়ি বানিয়ে দিলো ছেলেটা?নিশ্চয়ই ইয়ান উস্কে দিয়েছে।এই বিষয় নিয়ে পরে ইয়ানকে ধরতে হবে।যেদিন স্পর্শা ইয়ানকে ধরবে সেদিনের ইয়ানের একদিন কি স্পর্শার একদিন!

চলবে,,,,

16
$ 0.00
Avatar for Fatemabegum71
4 years ago

Comments

Khub valo lagche apnar Golpo ta.. Kub sondor kahini ache ekta bastobotar sathe Mil ache mone hoy

$ 0.00
3 years ago

খুব ভালো লাগার মতন একটি পোস্ট লিখলেন আমার অনেক ভালো লাগছে

$ 0.00
3 years ago

Nice wrote yaar

$ 0.00
3 years ago

Great platform for published Own Created Article.. I love THIS

$ 0.00
3 years ago

Nice and good

$ 0.00
3 years ago

Nice written dear sister keep Written good

$ 0.00
3 years ago

Nice post

$ 0.00
3 years ago

I like your article

$ 0.00
3 years ago

Nice post

$ 0.00
3 years ago

Kuv valo lekche, he colbe

$ 0.00
4 years ago

Very nice article my dear heart life

$ 0.00
3 years ago

Very nice article

$ 0.00
3 years ago

Nice

$ 0.00
3 years ago

Nice article

$ 0.00
3 years ago

Nice article

$ 0.00
3 years ago

I like your story

$ 0.00
3 years ago

Nice story

$ 0.00
3 years ago

Wonderfully written article dear

$ 0.00
3 years ago

Nice

$ 0.00
3 years ago

Wow Nice article

$ 0.00
3 years ago

Super article by you my friend

$ 0.00
3 years ago

Nice article

$ 0.00
3 years ago

Lovely post buddy

$ 0.00
3 years ago

Wonderful writing dear waiting for next

$ 0.00
3 years ago

masaallah

$ 0.00
3 years ago