পর্র : ০২
#লেখকআরিয়ান
সবাই মিলে ওদিকে যেতেই আত্মা কেঁপে উঠল তাদের৷কারণ ওখানে একটা কুকুরের শরীর পড়ে আছে৷আর অবাক করা বিষয় হল সেই কুকুরটির শরীর দ্বিখন্ডিত৷দুইভাগ করা আছে শরীরটা৷আর মাথাটা চার ভাগ৷কতোটা ভয়ংকর দৃশ্য৷সবাই একদম চমকে উঠেছে এমন দৃশ্য দেখে৷কিন্তু কুকুরটির শরীরে বুলেটের কোনো দাগ নেই৷অথচ গুলি চালানোর শব্দেই সবাই এখানে আসল৷
তানজিদার বাবার মনে ভয় ধরে গেল৷কারণ বিয়ে বাড়িতে এমন ভয়ানক কিছুর আশা কেউ করেনি৷যদি পাত্র পক্ষ কোনো ঝামেলা করে কিংবা ভয়ে পেয়ে যায় তাহলে তো সবার সামনে তার নাক কাটা যাবে৷তাছাড়াও তানজিদার বাবা শফিকুল সাহেব কখনো কল্পনাও করেনি যে তার মেয়ের বিয়ের সময়ে এমন কিছু হবে তাহলে হয়তো সিকিউরিটির ব্যবস্থাটা আরো মজবুত করত৷কিন্তু কিছুই করার নেই তার৷কপালে যা লিখা ছিল তাই হয়ে গেল৷
আরিয়ানের বাবা : বেয়াই সাহেব এটা কি করে হলো?
তানজিদার বাবা : আমিও তো বুঝতে পারছিনা ভাই৷হয়তো কোনো শয়তান ছেলে সবাইকে ভয় দেখানোর জন্য কুকুরটাকে এভাবে মেরে ফেলে রেখেছে৷
আরিয়ানের বাবা : হুম তাও হতে পারে৷ভালো মানুষের শত্রুর অভাব থাকেনা৷এই চলো সবাই৷এখানে আর এক মুহূর্তও কেউ থাকবেন না৷সবাই ওদিকে যেয়ে আনন্দ করো যাও৷
তানজিদার বাবা : হ্যাঁ হ্যাঁ সবাই যাও আর খাবারের ব্যবস্থাও করা হয়ে গেছে৷বেয়াই সাহেব আপনি যান আমি এটিকে সরানোর ব্যবস্থা করছি৷
আরিয়ানের বাবা : আচ্ছা বেয়াই সাহেব৷তাড়াতাড়ি আসেন একসাথে খেতে বসব৷
তানজিদার বাবা : জ্বী৷
সবাই ওখান থেকে চলে আসল কিন্তু মনের মধ্যে ভয় এখনো প্রায় সবারই আছে৷কারণ কতোটা ভয়ানক মৃত্যুই না দিয়েছে কুকুর টাকে৷মেয়েগুলো একটু বেশিই ভীতু হয়ে আছে৷কিন্তু বিয়ের বাড়ির আনন্দে কিছুক্ষণ বাদেই সবার মাথা থেকে ওই ভূত নেমে গেল৷কারণ সামান্য প্রাণি ওটা৷কোনো মানুষের লাশ না৷
রাত ১২টা বেজে ৪৫ মিনিট৷আরিয়ান তার রুমের সামনে দাঁড়িয়ে আছে৷ভেতরে তার জন্য অপেক্ষা করছে তার চাঁদের মতো সুন্দরী বউটা৷কিন্তু কেন জানি ভেতরে প্রবেশ করার সাহস পাচ্ছে না সে৷এইটা অনেক মানুষের ক্ষেত্রেই হয়৷সব জায়গায় সাহস দেখালেও এখানে এসে ভেজা বিড়াল হয়ে যায়৷হঠাৎ আরিয়ানের মনে হলো কে যেন কান্নার মতো আওয়াজ করছে৷কিছুক্ষণ পরে আবার শব্দটা বেশি হচ্ছে৷সঙ্গে সঙ্গে দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করল আরিয়ান৷ভেতরে আসতেই দেখতে পেল একটা লাল বেনারসি শাড়ী পড়ে তার বউ বসে আছে৷একদমই হালকা মেকআপ৷যেটাকে মেকআপ না বললেও চলে৷ঠোঁটে হালকা লাল রঙের লিপস্টিক৷তবে কপালে কোনো টিপ নেই(very gd)৷তারপরও তার সৌন্দর্য যেন আকাশ ছোঁয়া৷কাজল কালো মায়াবী চোখে তার দিকে তাঁকিয়ে আছে৷
এভাবে আচমকা ভেতরে যাওয়ার কারণে তানজিদাও কিছুটা অবাক৷তবুও সে উঠে এসে আরিয়ানের পায়ে সালাম করতে গেল কিন্তু আরিয়ান তা হতে দিল না৷
আরিয়ান: এই না না৷কারো পায়ে সালাম করা ভালো না৷
তানজিদা : তুমি তো আমার স্বামী৷তোমার পায়ে সালাম করতেই পারি৷
আরিয়ান : এই না৷এসব ঠিক না৷তাছাড়াও আমার এইটা ভালো লাগেনা৷আপনার জন্য আমার পা না৷আপনার জন্য আমার বুকটা আছে৷এখানে মাথা রাখবেন তাহলেই হবে৷
তানজিদা : বাব্বাহ্৷
আরিয়ান : না মানে না না৷একটু বেশিই বলে ফেলেছি তাইনা ? সরি সরি৷
তানজিদা : ধ্যাত পাগল৷আর আপনি আপনি করছো কেন? আমি তোমার বিয়ে করা বউ তাই তুমি করে বলবে আর নাম ধরে ডাকবে৷
আরিয়ান : আচ্ছা ঠিক আছে৷(অনেকটা নার্ভাস)
তানজিদা : হুম কিন্তু এভাবে তাড়াহুড়ো করে রুমে আসলে যে মনে হল ভূতে তাড়া করেছে হিহিহিহিহি৷
আরিয়ান : না মানে এমনি কিছুনা৷
তানজিদা : আচ্ছা ফ্রেশ হয়ে আসুন হুম৷দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করে আল্লাহ্'র কাছে আমাদের নতুন জীবন শুরু করব৷
আরিয়ান : হুম ঠিক আছে৷
তানজিদা : তাড়াতাড়ি করুন আমিও ফ্রেশ হবো৷
আরিয়ান : আচ্ছা আচ্ছা যাচ্ছি৷
আরিয়ান ওয়াশরুমে যেয়ে ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে আসল৷তারপরে তানজিদা ফ্রেশ হয়ে দুইজন একসাথে নামাজ আদায় করে আল্লাহ্'র কাছে দোয়া চাইলো তাদের সুন্দর জীবন-যাপনের জন্য৷হুম সবার উচিত এমনটাই করা৷নামাজ আদায় করে দুইজন খাটে এসে বসল মেঝেতে পা ঝুলিয়ে দিয়ে৷
আরিয়ান : আজকে তো অনেক ধকল গেল সবার তাইনা ?
তানজিদা : হুম তাই তো৷বিয়ের সময় সবারই এমন হয়৷
আরিয়ান : তাহলে আপনারও অনেক ধকল গেছে৷
তানজিদা : হুম তা একটু গেছেই৷কিন্তু এসব কেন বলছো?আর তুমি করে বলতে বলছিনা?(রাগি ভাবে)
আরিয়ান : না মানে এমনি৷তাহলে আজকে কিছু না করলেই ভালো৷আগে ঠিক মতো পরিচয় হয়ে নিই কিছুদিন তারপরে না হয় বাসর রাতটা পালন করব৷
তানজিদা : .......(কিছু বলল না৷চুপচাপ)
আরিয়ান : তবে একটা কথা বলি? রাখবে?
তানজিদা : হুম বলো..
আরিয়ান : না না কিছুনা পরে পরে৷
তানজিদা : ওকে মানলাম তোমার কথা৷তবে আমাকে একটা চুমু দিতে হবে এখনই৷নয়তো জোরে জোরে চিল্লাবো৷
আরিয়ান : এই না না৷আচ্ছা দিচ্ছি কিন্তু কপালে৷
তানজিদা : হুম..
আরিয়ান খাট থেকে উঠে তানজিদার সামনে যেয়ে দাঁড়ালো৷আস্তে করে মাথায় হাত দিয়ে তানজিদার কপালে আলতো করে একটা চুমু দিল৷এইটাই ১ম দুইজনেরই৷অনিচ্ছা সত্ত্বেও দুইজনের চোখই বন্ধ হয়ে গেল৷তানজিদাকে ছেড়ে দিয়ে আর কোনো কথা না বলে খাটের একপাশে শুয়ে পড়ল৷
একটু পরে মনে হচ্ছে কে যেন আরিয়ানের নিচের ঠোঁট দুটো দুই আঙুল দিয়ে ধরল৷হঠাৎ সেখানে আলতো করে কামড় পড়ল৷কিন্তু আরিয়ানের ভালো লাগছিল৷হয়তো স্বপ্ন ভেবেছে৷কিন্তু পরের বারই জোরে কামড় দিল তার ঠোঁটে৷৷আরিয়ান চিৎকার করতে চাইতেই তানজিদার নরম হাত দিয়ে আরিয়ানের মুখ চেপে ধরল৷চোখ খুলে দেখল তার বউ এমন করেছে৷তখন একটু শান্ত হলো৷(বেচারা ভয় পেয়ে গেছে)
তানজিদা : গাধা একটা৷আজকের রাতটা কতোটা পবিত্র৷আর গাধা বলে আজকে নাকি কিছু হবেনা৷আমার জায়গায় অন্য কোনো মেয়ে থাকলে এতোক্ষণে তো মনে হয় জোর করেই সব করত৷কারণ তোমার মতো এত্তো কিউট ছেলেকে কেউ ই দূরে রাখতে চাইবে না৷কিন্তু এই মানুষটা এখন থেকে আমার শুধুই আমার৷কেউ নজর দিলে তার চোখ উপড়ে ফেলব আমি৷কিছু করবিনা তুই তাইনা? দাঁড়া দেখাচ্ছি মজা৷
(মেয়েরা ওমনিই)
আরিয়ানের মুখ থেকে হাতটা সরিয়েই নিজের ঠোঁট আরিয়ানের ঠোঁটের সাথে এক করে দিলো৷শক্ত করে আরিয়ানকে জড়িয়ে ধরল৷কিছুক্ষণ পড়ে আরিয়ানও রেসপন্স করতে লাগল৷কারণ একটা মেয়ে যদি এমন করে কোনো ছেলের ই ক্ষমতা নেই দূরে থাকার৷(আমি বাদে হিহি)৷দুইজনই তাদের ভালোবাসার সাগরে ডুবে গেল৷আর কখনো এদের আলাদা করা সম্ভব না৷কারণ ওই সাগরের ঝর্ণার পানি কখনো শেষ হবেনা৷আর তাদের ভালোবাসাও মজবুত হয়ে গেল৷(বিবাহিত এরা তাই খারাপ চিন্তা বাদ দেন)
ভোর বেলা ফজরের নামাজের সময় ঘুম থেকে উঠে গোসল করে নামাজ পড়ে ঘুমাতে যাবে এমন সময় ফোনটা বেজে উঠল৷ কি আর করার ফোনটা তুলতেই ওপাশ থেকে কেউ বলল...
- বাবা আমি তোমার শ্বশুড়৷তাড়াতাড়ি বাইরে এসো৷(কান্না জড়িত কণ্ঠে)
আরিয়ান : কেন বাবা কি হলো এত্তো সকালে ফোনে বলছেন?
তানজিদার বাবা : আমার ছোট ভাইকে কে যেন খুন করেছে..(কথা বলার মধ্যে অনেকটা ভয়)(w8)
.
.
[.......... চলবে ..........]
আরে আভি তো পার্টি শুরু হুয়ি হ্যা 😁