Part-২
লাগেজ টা খুলতেই অবাক হয়ে যাই লাগেজটা টাকা দিয়ে ভর্তি। কিন্তু এগুলা কার টাকা??
দেখি তো লাগেজে কোন কার্ড বা ঠিকানা আছে কি না?
একটা কাগজ দেখতে পেলাম,,,,
- হ্যাঁ তোমাকেই বলছি, সন্ত্রাসীরা আমার পিছু নিচে জানি হয়তো আমাকে মেরে ফেলবে প্লিজ টাকাগুলোও আমার বাসায় পৌঁছে দিও। নয়তো আমার পরিবার রাস্তায় বসবে।
ঠিকানা-1206/2 তেজগাঁও,ঢাকা ।
এখন কি করবো বুঝতেছি না এতো গুলা টাকা🤔🤔
টাকা গুলা নিয়ে ঢাকায় চলে আসি। আম্মুর জন্য মনটা কাঁদছে জানিনা আমাকে না পেয়ে আম্মু এখন কি করছে। কাগজে লেখা ঐ ঠিকানায় সিএনজি করে যাচ্ছি আর মনে পরছে আম্মুকে । সামনে একটা একটা কার ও পিকআপ মারাত্মক এক্সিডেন্ট হয়। রক্তাক্ত হয়ে গাড়িতে একজন লোক পরে আছে কিন্তু কেউ এগিয়ে আসছে না। সিএনজিটিকে থামিয়ে দৌড়ে গাড়িটির কাছে গিয়ে লোকটিকে বের করলাম। অনেক যায়গায় আঘাত পাইছে মাথা ফেটে গেছে পায়ে ও ক্ষতের সৃষ্টি হইছে রক্ত বের হচ্ছে।
-ভাইয়া একটু এদিকে লোকটিকে হাসপাতালে নিতে হবে বেশিক্ষণ এভাবে থাকলে লোকটি মারা যাবে (সিএনজি চালক লোকটিকে বললাম)
-ভাই ছারুন তো এসব আমার আমার আবার আপনাকে নামিয়ে অন্য পেছেন্জার নিতে হবে। এসব পুলিশ দেখবে আপনি গাড়িতে উঠুন। (সিএনজি চালক)
-আপনাকে ডাবল ভাড়া দিবো লোকটিকে নিয়ে আগে হাসপাতালে চলুন।(আমি)
এদিকে লোকটির অবস্থা আরো খারাপ হতে লাগলো। তারাতারি সামনের একটা হাসপাতালে নিয়ে আসলাম। ডাঃ লোকটিকে কেবিনে নিয়ে,,,,,,,,,,,
-প্যার্সেন্ট এর অবস্থা খুবই খারাপ এমারজেন্সি অপারেশন করতে হবে। আপনি ওনার কি হোন?(ডাঃ)
-🤔😟........ছেলে (আমি)
-এখুনি ক্যাশ কাউন্টারে 5 লাখ টাকা জমা দিন আমরা অপারেশন শুরু করে দিচ্ছি নয়তো ওনাকে বাঁচানো সম্ভব হবে না। (ডাঃ)
-,,,,ওকে ডাঃ আমি টাকা জমা দিচ্ছি আপনি অপারেশন শুরু করে দেন।
কি করবো ভাবছি আমার কাছে তো আর ৫০০ টাকাও নাই। এই টাকা গুলা ও তো আমার না।😇😇 সবার আগে জীবন বাঁচানো ফরজ। তাই আর কিছু না ভেবে টাকা জমা দিলাম। লোকটিকে অপারেশন থিয়েটারে নিল,,,,
একটু পর নার্স এসে 1 টা ফোন হাতে ধরিয়ে দিলো,,,
-এই ফোনটা প্যাসেন্টের কাছে ছিল। আর জরুরী 2 ব্যাগ ও(O-)নেগেটিভ রক্তের ব্যাবস্থা করুন।
-আমি দিব রক্ত, আমার রক্তের গ্রুপ ও নেগেটিভ। আপনি তো এক ব্যাগ দিতে পারবেন। আর এক ব্যাগ??? ডাঃ আমার শরীর থেকে ই ২ ব্যাগ নিন প্লিজ। তাছাড়া আমি এখন রক্ত কই পাবো। আমার শরীর থেকে নীন প্লিজ।
-না নাহ তা কি করে হয়।(পাশে থাকা ডাঃ বললো)
-অনেক রিকোয়েস্ট করার পর নিলো।
কিছুক্ষন পর....
রিংটন বেজে উঠলো। লোকটির ফোনে ফোন দিছে । রিসিভ করে সালাম দিলাম ....
-কে আপনি? আমার আব্বুর ফোন আপনার কাছে কেন?(ও পাশ থেকে একটা মেয়ে বলতে লাগলো)
-আপনার বাবা এক্সিডেন্ট করেছেন। হাসপাতালে চলে আসেন।
কিছুক্ষণ পর মেয়েটি ও তার মা চলে আসলো। মেয়েটি দেখতে অপ্সরীর মতো।
-আপনি ফোন রিসিভ করেছিলেন তাই না,,,??
-হ্যাঁ (আমি)
-ওনাকে এই হসপিটালে কে এনেছে???(মেয়েটি মা)
-আমি
- এই ফালতু মার্কা হসপিটালে ভর্তি করতে কে বলছে আপনাকে??? বলেই গালের মধ্যে কসে একটা থাপ্পড় লাগিয়ে দিল।(মেয়েটি)
এমন সময় নার্স বেরিয়ে আসে,,,
-তারাতারি এই মেডিসিন গুলা নিয়ে আসুন।(নার্স)
-আন্টি এই নেন ফোন ও মেডিসিন গুলা তারাতারি নিয়ে আসেন। আমি চলে যাই।
- ছোটলোকের বাচ্চা যা ভাগ। আম্মু কাগজটা আমাকে দাও আমি নিয়ে আসছি।
হায় রে মানুষ ওনার বাবাকে বাঁচাতে কত কি করলাম আর ওনি আমার গায়ে হাত তুললো অপমান করলো। আমার কপাল টাই হয়তো খারাপ তাই এমন কষ্ট পাই।
বাহিরে এসে কাগজের ঠিকানায় যাওয়ার জন্য সিএনজিতে উঠলাম।
তেজগাঁও এসে সিএনজি থেকে নামলাম। একটা লোক কে জিজ্ঞেস করলাম'
-ভাইয়া এই ঠিকানা একটু দেখিয়ে দিবেন?
- সামনে গিয়ে ডানে যাবেন আশেপাশে খুঁজে দেখবেন পেয়ে যাবেন।
অবশেষে বাসা খুঁজে পাইলাম। কিন্তু এটা কি বাসা নাকি রাজ প্রসাদ। অনেক সুন্দর ফুলের গাছ ও লাগানো।
-ভাই এটা কি 1206/2 বাসা? দারোয়ান কে জিজ্ঞেস করলাম।
-হ্যাঁ আপনি কে ? (দারোয়ান)
-আমাকে চিনবেন না এই বাসার লোকের সাথে কিছু কথা আছে। দেখা করতে চাই।
- ওকে দাঁড়ান । মেডাম একটা লোক আসছে আপনার সাথে দেখা করতে চায়।
-ওকে ভিতরে পাঠিয়ে দিন
-আসসালামু অলাইকুম। এই টাকা গুলা মনে হয় আপনার স্বামীর। এই চিরকুট টা পড়ুন। (পকেটে হাত দিয়ে খুঁজে পেলাম না মনে হয় হারিয়ে ফেলছি।)
কই গেল পকেটেই তো ছিল
- কি হলো কি বীর বীর করছেন? কিসের টাকা? কই দেখি।(আন্টি টা বলল)
-লাগেজের চেন টা খুলে, দেখুন?(আমি)
-ইমির বাবা তো এই টাকা নিয়ে আসার কথা উনি কই?
-আমি জানি না,, আমি তো,,,,
আমাকে কথা বলতে না দিয়ে তুমি আমার বাবাকে খুন করোনি তো। কই সব দারোয়ান ?(আন্টি টা)
- সবাই এসে আমাকে বেধে ফেলে ও মারধর করে মুখে পেছিয়ে রাখে কথা বলতে পারছি না।
-টাকা গোনার পর,,, এখানে তো 95 লাখ আর বাকি 5 লাখ টাকা কোথায়? একটা মেয়ে সিরি দিয়ে নামছে। একি মেয়েটিকে তো আমি ট্রেন থেকে নেমে স্টেশনে দেখি।
-এই কুত্তার বাচ্চা বল আমার বাবা কই? আটকে রাখছিছ কোথায়? (মেয়েটি)
আম্মু পুলিশ কে ফোন দাও।
একটু পর পুলিশ এসে নিয়ে গেল আমাকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে,,,,তাই ইচ্ছা মতো 3rd ডিগ্রি দিচ্ছে
-এই কূতা বল আমান সাহেব কে কই রাখছিস? আর 5 লাখ টাকা বের কর।
এদিকে ডাঃ বললো,,,,
-প্যাসেন্ট আউট অফ ডেন্জার। আপনার ছেলে ঠিক সময় মতো না নিয়ে আসলে হয়তো প্যাসেন্ট সারা জীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে যেতেন (ডাঃ)
(যদি পরের পার্ট পড়তে চান আমাকে রিকুয়েষ্ট বা ফলো দিয়ে সাথে থাকুন।কারন পরের পর্ব আমার আইডিতে পাবেন।)
.
-প্যাসেন্ট আউট অফ ডেন্জার। আপনার ছেলে ঠিক সময় মতো না নিয়ে আসলে হয়তো প্যাসেন্ট সারা জীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে যেতেন (ডাঃ)
-কিহহহহহ? আমার ছেলে মানে আমার তো কোন ছেলেই নাই।(মহিলাটি)
-তাহলে ওনি কে?? যে আপনার ছেলেকে হসপিটালে নিয়ে এসেছিল? (ডাঃ)
-চিনিনা তো....??(মহিলাটি)
-ওহ এই জন্য বুঝি আপনার মেয়ে ছেলেটিকে থাপ্পড় মাড়লো? গুড, হয়তো আপনারা বড়লোক পোষাক আসাকে বলে দিচ্ছে। কিন্তু আপনারা ছোটলোক বলতে ও ঘৃণা হচ্ছে। (নার্স)
-........(মা ও মেয়ে কথা গুলা শুনে অবাক হয়ে গেছে)
-আপনি কি জানেন? ছেলেটি চিকিৎসার জন্য ৫ লাখ টাকা জমা দিছে। টাকাটা জমা না দিলে হয়তো এখন পযন্ত আপনার বেঁচে থাকতো না।
-মা ও মেয়ে নিশ্চুপ.....
-নিজের শরীর থেকে ২ ব্যাগ রক্ত দিয়েছে যা হয়তো আপনার নিজের ছেলে হলে করতো কি না সন্দেহ। এখন রোগীর কাছে যাওয়া যাবে না(ডাঃ)
ডাক্তার ও নার্স চলে যায়,,,,,,
এদিকে লাকি(মেয়েটির নাম)মনে অনেক কষ্ট পায় ও আম্মু কান্না শুরু করে দেয়।
- আম্মু আমি এটা কি করালাম আম্মু? কাঁদতে কাঁদতে বলতেছে লাকি। এই কাজের জন্য আমায় আল্লাহ্ হয়তো ক্ষমা করবে না।
- কাঁদিস না মা কখনো যদি দেখা হয়ে যায় ক্ষমা চেয়ে নিস(লাকির মা মহিলাটি)
তবুও লাকি তার অন্যায় বুঝতে পেরে চোখের পানি ঝরাচ্ছে।
অন্যদিকে আবির কে পুলিশ অনেক মারে। এদিকে সে কাগজটাও হারিয়ে ফেলছে। আবির কে এত মারার পর ও আবির ব্যথায় চিৎকার করতেছে না। এই ব্যথা তো ক্ষণিকের তার থেকে ও আবিরের মনে অনেক বেশি ব্যাথা।
অন্যদিকে আমান সাহেব বাসায় ফিরে আসে আর জানতে পারে কেউ একজন টাকা নিয়ে আসে আর 5 লাখ টাকা কম থাকায় তাকে তারা পুলিশে দিয়ে দেয়।
আমান সাহেব খুব ভালো মানুষ,,,,,
-এমনও তো হতে পারে ছেলেটি বিপদে পরে 5 লাখ কোথাও নষ্ট করছে তার যদি টাকার ই লোভ থাকতো তাহলে এতগূলা টাকা তো আর ফিরাই দিতে আসতো না। যাই গিয়ে ছেলেটিকে পুলিশের হাত থেকে ছাড়িয়ে আনি।
- আমান সাহেব থানায় গিয়ে আবির কে ছাড়িয়ে নেয়।
-বাবা তোমার নাম কি?(আমান সাহেব)
-আবির।
-আমার জন্য তোমার কি অবস্থা করছে পুলিশ। বাবা আমাকে মাফ করে দিও। (আমান সাহেব)
-নাহহহ আন্কেল আপনি কেন মাফ চাচ্ছেন। আমি আপনার 5 লাখ টাকা দিয়ে একটা এক্সিডেন্ট হওয়া ব্যাক্তিকে চিকিৎসা করিয়েছি। চিন্তা করবেন না আন্কেল আমি আপনার টাকা শোধ করে দিবো।(আমি)
-নাহ বাবা লাগবে লাগবে না, আর তুমি তো টাকাটা নাও নি একজন কে সাহায্য করছো ।
- নাহহহ আন্কেল আমি আমি কারো কাছে রিনি থাকতে চাইনা। আমার চাকরি হয়ে গেলে আপনার টাকা পরিশোধ করে দিবো।
-তো কি চাকরি করবা?
-দেখি কি চাকরি করা যায়। আর আমি সবে মাত্র ইন্টার পরীক্ষা দিছি এখানো রেজাল্ট হয়নি। তবে আন্কেল আমি কার চালাতে পারি।
-ওহ, তাহলে আমার বাসার ড্রাইভার হয়ে যাও। মাসিক ২৫ হাজার করে বেতন পাবা।
-ধন্যবাদ আন্কেল আপনি আমার অনেক উপকার করলেন।
আন্কেল ওনার বাসায় নিয়ে গেলেন,,,,
-বাপি তুমি ঐ চোর টাকে বাসায় নিয়ে আসলে কেন? (আমান সাহেবের মেয়ে)
- না মামুনি আবির চোর নয় ও একটা লোককে বাঁচাতে টাকাটা ডাঃ কে দিয়েছে।
- ছোটলোক টা বানিয়ে বললো আর বিশ্বাস করলে বাপি(অনন্যা মেয়েটির নাম)
- নাহহহ রে মা । বাবা তুমি ঐ রুমে যাও এখন থেকে ওখানে থাকবে।
-বাপি,,,,?
অনন্যা রাগ করে চলে যায়। আর মনে মনে ভাবে আমাদের বাসায় থাকবে মনু বুঝাবো মজা কাকে বলে।
এদিকে আবির গিয়ে নিজের রুমটা গুছিয়ে নিয়ে নেয়। আর বিছানায় শুয়ে শুয়ে বাসার সবার কথা ভাবতে থাকে। কোন এক সময় ঘুমিয়ে পরে মাঝরাতে তার শরীরে প্রচন্ড জ্বর আসে। আবির কাঁপতে কাঁপতে ফ্লরে পরে যায়।
পরেরদিন সকালে কাজের লোক নাস্তা দিতে এসে দেখে আবির ফ্লরে পরে গোঙাতে লাগছে।
- সাহেব ছেলেটা ফ্লোরে পরে গোঙাছে মনে হয় অসুস্থ হয়ে গেছে ।
আন্কেল এসে তারাতারি করে আবিরকে হাসপাতালে ভর্তি করে।
কিছুক্ষণ পর,,,,,
ওনার শরীরে তো অনেক ক্ষত হয়েছে। গল্প পরতে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠান ।তাই ব্যাথায় শরীরে জ্বর আসে। কিছু দিন রেস্ট ও ঔষধ ঠিক ভাবে খেলে সুস্থ হবে যাবে । আপনারা চাইলে কালকেই বাসায় নিয়ে যেতে পারেন।
পরের দিন আমায় বাসায় নিয়ে আসলেন
বাসার ভিতরে যেতেই লক্ষ করলাম সেদিনের ঐ মেয়েটি। যার বাবাকে মেডিকেল এ ভর্তি করছি।
আমাকে দেখে দৌড়ে আসে লাকির,,,
পরবর্তী পর্ব আগে পেতে আমার সাথে অবশ্যই থাকবেন।তা না হলে মিস করবেন।
to be continue...........
ঘরে থাকুন,সুস্থ থাকুন।হোম কোয়ারান্টাইন মেনে চলুন।নিজে বাঁচুন,অন্যকে বাঁচান।ভালো লাগলে আমার সাথে থাকুন।