পর্ব: ০৪
।।
নিধি আমাদের হাত ধরে হাটতে দেখে,
দৌড়ে আমাদের সামনে এসে দাড়ালো।
নিধি;এই মেয়ে ওর হাতটা ছাড়ো।
রিমি:সিয়াম জানু এই মেয়েটা কে? তোমার হাত ছাড়তে বলছে কেনো?
আমি;আরে জানু ওসবের কথায় কান দিওনা।চলো আমরা ওই গাছতলাতে গিয়ে বসি।
(নিধি এসে আমার হাতটা ধরে বললো,সিয়াম তুমি এমন করছো কেন?)
আমি ওর হাতটা ছাড়িয়ে একটা চড় মেরে চলে এলাম।
আসার সময় রিমিকে বললাম আজ আজ অভিনয় করতে হবেনা।ছুটির পর বাড়ি চলে যেও।
আমি চলে এলাম আমার বন্ধুদের কাছে।আমি:কিরে তোরা কেমন আছিস।
রিফাত:তা বল তোর খবর কী?
তারপর ওদেরকে সকালের ঘটনা বললাম।
সিহাব;তাহলে আমার বুদ্ধি কাজে লাগছে।
এদিকে নিধি,সুমাইয়া;এটা কি হলো?
নিধি;আমাকে এতো অপমান এর বদলা আমি নিবই।
সুমাইয়া:কিন্তু কিভাবে?
নিধি:সিয়ামকে আজই আমি বিয়ে করব।
সুমাইয়া: কিভাবে?
নিধি:তাহলে শুন আমার প্লান।(
প্লানতো ভালোই এখন তোর ভাইয়াকে ফোন কর।
নিধি তার ভাইয়াকে ফোন দিল।
নিধি:ভাইয়া একটু আমাদের কলেজে আসোতো।
শাকিল;ওকে।(শাকিল নিধির বড় ভাই। তার বোনের জন্য সব করতে পারে)
আমিতো নিধির প্লান জানিনা।আমি খুশিমনে ক্লাস করতেছি।
নিধির ভাইয়া কলেজে চলে এলো
শাকিল;বল নিধি কোন সমস্যা?
নিধি:ভাইয়া আমি আজ বিয়ে করব।
শাকিল;মানে?
নিধি;ছেলেটা রাজি না ওকে কিড ন্যাপ করে আমাদের গোডাউনে আটকে বিয়ের ব্যাবস্হা কর।আর বাবাকে রাজি করার দায়িত্ব তোমার।
শাকিল;আমি এটা করতে পারবো না
নিধি;তাহলে তোমার বোনের মরা মুখ....
শাকিল:থাম।তুই গিয়ে রেডি হয়ে পুরনো গোডাউনেযা।আমি ব্যাবস্থা করছি।
নিধি:ওকে আমার সুইট ভাইয়া।
আমি কলেজ ছুটি শেষে বাইক নিয়ে বের হলাম।
একটু নির্জন রাস্তায় আসতেই তিনটা ছেলে আমার পথ আটকালো।
কিছু বুঝে উঠার আগেই আমাকে অগ্গান কে ফেলল।
আমার আর কিছু মনে নেই।
যখন আমার গ্যান ফিরল আমি নিজেকে একটা ভাঙা ঘরে আবষ্কার করলাম।সামনে দুজন লোককে দেখতে পেলাম।
একজন আমাকে চোখ খুলতে দেখে বলল আপামনি ভাইয়ার গ্যান ফিরেছে।
আমি কারো আসার শব্দ শুনছি।আমি দরজার দিকে তাকালাম।এআমি কাকে দেখছি।
নিধি আপু দৌড়ে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে চুমু খেতে লাগল।
আমার হাত পা বেধে রাখায় বাধা দিতে পারলাম না।
আমি:আমাকে এভাবে বেধে নিয়ে আসার কারন কী?
নিধি;কেন অন্য মেয়ের সাথে আরো ঘুরো।
আমি:তাতে তোমার কী? তুমিতো আমায় ভালোবাসো না।
নিধি:আগের ব্যবহারের জন্য সরি সিয়াম।এখন আমাকে বিয়ে করে নাও।
নিধি যে বিয়ে করতে বলবে তা আমি আশা করিনি.
...
আমি:এসব কি বলছ আপু আমি তোমাকে বিয়ে করতে পারব না।
নিধি:আমি তোর কোন কালের আপু লাগিরে।আর কি বললি বিয়ে করতে পারবিনা।তোর বাপ করবে।
আমি রেগে গিয়ে বললাম তা আমার বাপকেই ডেকে আনুন না।
নিধি:ফাজলামি বাদ দিয়ে বল বিয়ে করবি কী করবি না?
আমি:না করব না।
নিধি:এই স্বপন পিস্তলটা দেতো?
একজন এসে নিধির হাতে একটা পিস্তল দিয়ে গেল।
পিস্তলটা আমার মাথায় ঠেকিয়ে নিধি আপু বলল এবার বল বিয়ে করবি কী করবি না।
(আমি ভাবলাম যে ডেন্জারাস মেয়ে বেশি বারাবারি করলে গুলি চালিয়ে দিবে)
আমি:আমি রাজি।
নিধি:ভাইয়া তুমি কাজি ডাক ও বিয়ে করতে রাজি হয়েছে।
একটু পর শাকিল ভাইয়া কাজি নিয়ে এলো।
আমার হাত পায়ের বাধন খুলে দিল।আমি হাফ ছেড়ে বাচলাম।
নিধি কোথায় যেন গেল।
আবার আধ ঘন্টা পর ফিরে এলো।
আমি নিধি আপুর দিকে তাকিয়ে থ হয়ে গেলাম।লাল বেনারশিতে একদম পরীর মতো লাগছে।
একটা ব্যাগ নিয়ে আমার কাছে আসলো
নিধি:এই নাও এটা ওই রুম থেকে পড়ে এসো।
আমি দেখলাম ওর ভিতরে শেরওয়ানি।আমি শেরওয়ানি পড়ে বাহিরে এলাম।
অবশেষে রাত দশটার মধ্যে বিয়েটা হয়ে গেল?
আমি:এখন আমরা থাকব কোথায়?
নিধি:কেন তোমাদের বাড়িতে।
আমি:না আমি পাড়ব না।
নিধি:বিয়ে যখন করেছ এখন বাড়িতে নিয়া যাবা নাহলে একদম মাইরা ফালাব।
এতো ভালো জ্বালায় পড়লাম।
আমি;আচ্ছা দেখতেছি কী করা যায়।
আমি মিলিকে ফোন দিলাম
আমি:মিলি একটা সমস্যা হইয়া গেছে।
মিলি;কী হয়েছে ভাইয়া?
আমি:আমি বিয়া কইরা ফালাইছি।
মিলি:what,,,, কাকে?
আমি:নিধি আপুকে।
মিলি:আমাদের জানানোর দরকার মনে করলি না?
আমি:আরে আমি জানি নাকি।প্লেন অনুযায়ী অভিনয় করার পর আমাকে কিডন্যাপ করে নিয়ে হুমকি দিয়ে বিয়ে করে।
মিলি:আচ্ছা আমি মা/বাবাকে সামলাচ্ছি তুই ভাবিকে নিয়ে বাড়িতে আয়।
আমি:আচ্ছা।
আমি নিধির কাছে এসে বললাম,চলো বাড়িতে যাই।নিধি ওর ভাইকে জড়িয়ে ধরে খুব কাদছিল।
শাকিল ভাইয়া একটা গাড়ি ঠিক করে দিল।
(আমি গাড়িতে বসে ভাবলাম কি করতে চেয়েছিলাম আর কি হয়ে গেল।যাক ভালোই হয়েছে আমিতো ওকে বিয়ে করতেই চাইছিলাম।কিনতু ওকে একটু শাস্তি দিতে হবে।ওকে প্রথম স্বামীট অধিকার দিবনা।)
এসব ভাবতে ভাবতে বাড়িতে চলে এলাম।
(এদিকে মিলি বাবা মাকে সব বলে দিয়েছে।বাবা আমার উপর রেগে আছে। কারন আমি কাউকে পছন্দ করি বললেই পারতাম, বাকিটা বাবার দায়িত্ব ছিল।)
আমিকলিংবেল বাজালাম মিলি দরজা খুলে দিল।
সামনে তাকিয়ে দেখি বাবা মা দাড়িয়ে।
.....
>>>নিধি গিয়ে বাবা মাকে সালাম করল।
(পরিবেশ ঠান্ডা তার মানে মিলি বুঝিয়ে বলেছে)তাই আমি ঘরে ঢুকতে গেলাম ওমনি বাবা বলল
বাবা:তুমি ঘরে ঢুকছ কেনো?তোমার জন্য এই বাড়ির দরজা বন্ধ।
আম্মু:তুমি এসব কি বলছ।তাহলে ওরা এখন যাবে কোথায়।
বাবা;বৌমা তুমি ঘরে এসো।
নিধিকে আম্মু আর মিলি নিয়ে গেল। ওমনি আব্বা ঠাস করে দরজাটা বন্ধ করে দিল।
(আমি ভাবলাম এটা কিহলো)
আমি কিছুক্ষন দরজায় দাড়িয়ে থাকার পর আম্মু এসে দরজা খুলে বলল
আম্মু:আয় বাবা ঘরে আয়।তুই যে এমন একটা কাজ করবি তা তোর আব্বা ভাবতে পারেনি।তাই একটু রেগে আছে।
(আমি ঘরে ঢুকতে ঢুকতে ভাবলাম মিলি তাহলে কিডন্যাপের ব্যাপারে কিছু বলেনি)
আমি সোজা আমার রুমে চলে গেলাম।গিয়ে দেখি রুমটা মিলি কিছুটা সাজিয়েছে।আর নিধি খাটের উপর বসে রয়েছে।
আমি ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে বের হলাম।মিলি রুমে আসলো।
মিলি:ভাইয়া ভাবিকে নিয়ে খেতে আয়।
আমি:আমি খাবনা।ওকে নিয়েযা।(কিছুটা রাগ করে বললাম)
নিধি:আমিও খাবনা।
মিলি:ভাবি ভাইয়াকে দেখে রেখো।
(এই বলে মিলি দৌড় দিলো)আর নিধি মুচকি হাসছে।
আমি সেদিকে খেয়াল না করে একটা বালিশ এনে সোফায় ঘুমিয়ে পড়লাম।
নিধি বিছানা ছেড়ে উঠে এসে বলল
নিধি:এই তুমি এখানে ঘুমিয়েছে কেনো?
আমি:আমি আমার ইচ্ছামতো ঘুমাব।তাতে আপনার কী?
নিধি:আমরা এখন স্বামী স্ত্রী তাই একসাথে ঘুমাব।
আমি ধমক দিয়ে বললাম,আমি তোমাকে স্ত্রী হিসেবে মানিনা।আপনি আমায় জোড় করে বিয়ে করছেন।তাই স্বামির অধিকার ফলাতে আসবেন না।
নিধি ধমক খেয়ে গিয়ে ঘুম পড়ল।
সকালে মিলি দরজা ধাক্কচ্ছিলো,আমি তাড়াতাড়ি উঠে বিছানায় বালিশ রেখে নিধিকে ডাকতে লাগলাম।
নিধি:কি হয়েছে এত সকালে ডাকছো কেনো?
আমি;বাইরে মিলি ডাকছে গিয়ে দরজা খুলুন?
নিধি গিয়ে দরজা খুলে দিলো।
মিলি:কিরে ভাবি এখোনো ঘুমোচ্ছ ভাইয়া বুঝি সারারাত ঘুমোতে দেয়নি।
নিধি শুনে মুচকি হাসছে।
আমি গিয়ে মিলির কান ধরে বললাম।বেশি পাকামো না করে বল কী বলবি।
মিলি:তোমাদের দুজনকে বাবা ডাকতেছে।ফ্রেশ হয়ে নিচে আসো।আমি:আচ্ছা যা।
নিধি:ওয়াসরুমটা কোন দিকে?আমি ওয়াসরুমটা দেখিয়ে দিয়ে রিফাতকে একটা ফোন দিলাম।
আমি:রিফাত আজ কলেজে যাবি না?
রিফাত:হ্যা,যাব।
আমি:না যাওয়া লাগবে না।সবাইকে নিয়ে লিটন কাকার চায়ের দোকানে আয়।
রিফাত:কিন্তু কেন?
আমি:আগে আয় তারপর বলছি।
রিফাত:আচ্ছা।
একটুপর নিধি ওয়াশরুম হতে বের হলো।আমিতো ওর থেকে চোখই ফেরাতে পারছি না।
wait for next part........