অনন্য_শফিক
নেহাল বাসর ঘরে প্রবেশ করতেই আমি বিছানা থেকে উঠে ওর পা ছুঁয়ে সালাম করতে গেলাম। কিন্তু সালাম করার আগেই সে আমার হাতটা খপ করে ধরে ফেললো। তারপর কোনরকম কথা না বলেই আমায় টেনে নিয়ে গেল বিছানায়। আমি তখন ভয়ে এবং লজ্জায় আড়ষ্ট হয়ে যেতে যেতে বললাম,'শুনুন।আমরা দু রাকাত শুকরানা নামাজ পড়ে নেই।'
কিন্তু নেহাল আমার কথা শুনলো না। বরং সে আমায় তার বলিষ্ঠ দেহের নীচে ফেলে দিয়ে বললো,'আমি তোমার হুকুমদাতা। তুমি আমার দাসী। দাসীর কথা তার প্রভু কখনো শুনে না!আর কোনদিন যদি আমায় হুকুম করো তাহলে তোমার জবান আমি চিরদিনের জন্য বন্ধ করে দিবো।'
নেহালের কথা শুনে আমার শরীর কেমন কাঠ হয়ে গেল।কী অদ্ভুত কান্ড! বড়লোক বরেরা বুঝি এমনই হয়!
আমার চোখ ফেটে জল গড়িয়ে পড়লো গালে।
তখন আমি মিনতির স্বরে বললাম,'শুনুন, আমার না খুব কষ্ট হচ্ছে!'
কিন্তু নেহাল আমার কথাই শুনলো না।
সে উল্টো এমন রেগে গেলো!
তারপর বললো,'এই, তোকে কত কাবিন দিয়েছি জানিস?তোর চৌদ্দ গোষ্ঠীও অতগুলো টাকা এক করে দেখেনি কোনদিন!'
আমি কান্নাভেজা গলায় বললাম,'ছিঃ!আপনি বিয়ের মতন এমন একটা পবিত্র সম্পর্ককে টাকার সাথে হিসেব করছেন?'
'এই,অতো নীতিকথা আমায় শিখাবি না বুঝলে!তোর চৌদ্দ গোষ্ঠীতে একটা ডিগ্রিধারী লোক নাই। কিন্তু আমার ঘরের কাজের লোকেরাও ম্যাট্টিক পাশ দেয়া।'
তারপর নেহাল আমার গা থেকে সবগুলো কাপড় ওর নিজের ইচ্ছেতেই টেনে খুলে নিলো। আমি ভীষণ লজ্জা পাচ্ছিলাম।আর ভয়ও। কেমন জানি ঘেন্নাও হচ্ছিল ওর প্রতি। একটা ছেলেকে আমি আগে থেকে চিনি না। কলেজ থেকে ফেরার সময় হঠাৎ কীভাবে যেন সে আমায় দেখলো। তারপর দুদিনের কথায় বিয়ে হয়েছে। আজকের আগে তার সাথে আমার কোন কথাও হয়নি।আর সে বাসর ঘরে এসে আমার সাথে কোন কথা না বলেই সরাসরি আমার শরীর চাইছে !
আমি একটু বাঁধা দিতে চাইলাম ওকে। কিন্তু ওর যা শক্তি তার সাথে কোন ভাবেই পেরে উঠা গেলো না। নেহাল এমন ভাবে চেপে ধরলো আমায়!
আর আমার তখন কেবল মনে হতে লাগলো আমি কোন বাসর ঘরের ফুলের বিছানায় নয়। ঝোপঝাড়ে কাঁটার উপর শুয়ে আছি।আর আমায় ধর্ষণ করে যাচ্ছে দুশ্চরিত্র কোন এক কাপুরুষ।
এই বিয়েটা না করলে আমার এমন হতো না হয়তোবা। আমি যদি কোন গরীব ঘরের ছেলেকে বিয়ে করতাম তবে নিশ্চিত সুখি হতাম। কিন্তু সব ব্যাস্তে গেলো মেজো মামার জন্য।
অবশ্য আব্বা কিছুতেই এই বিয়েতে রাজি ছিলেন না। তিনি বলেছিলেন,'ধনীদের সাথে কাজ কারবার আমি করতাম না। গরীবের সাথে গরীবের আত্মীয় হওন ভালা।'
কিন্তু মেজো মামা আব্বাকে এমন ভাবে ধরে বসলেন। তিনি বললেন,'দুলাভাই,বেনুর ভাগ্য খুলছে।ওর চেহারা সুন্দর দেইখা ছেলে পছন্দ কইরা ফেলছে। এমন ধনী ঘরে বিয়ে হইলে রাজ কপাল লাগে।বেনু রানী হইয়া থাকবো ওইখানে দুলাভাই।'
তারপর আর আব্বা না বলেননি। তিনি বললেন,'আমি রাজি।'
হয়তোবা তিনি আমার মঙ্গলের জন্যই রাজি হয়েছিলেন। ভেবেছিলেন তার মা মরা মেয়েটা ওখানে বিয়ে হলে সুখি হবে। কিন্তু নিয়তি যে বড্ড খারাপ!
নেহাল তখনও আমার সাথে লেপ্টে আছে।আর এইসব কিছু ভেবে হঠাৎ আমার কান্না পেয়ে গেল। ভীষণ ভীষণ কান্না। আমি শব্দ করে কেঁদে উঠলাম।আর তখন আমার মুখ শক্ত করে চেপে ধরে নেহাল ধমকের সুরে বললো,'তুমি কী এহনও বাচ্চা নাকি! কাঁদো ক্যান?বাপ মা কিছু শিখাইয়া দেয় নাই?'
আমার কান্না কিছুতেই থামছিলো না।সে এবার এক চড় বসালো আমার গালে। তারপর বললো,'ফস্টি নষ্টি কইরা রাইতটারে শেষ কইরা দিতে চাইতেছস?নিজেরে তুই চতুর ভাবস নাকি?'
আমি বললাম,'আপনি আমার সাথে এমন বাজে ব্যবহার করছেন কেন? আমি তো আপনার স্ত্রী। স্ত্রীদের সাথে কী কেউ এমন ব্যাবহার করে?'
নেহাল এবার----
'
#চলবে
'
'
নিশুতি_রাতের_কান্না
২য়_পর্ব
অনন্য_শফিক
'
'
'
নেহাল এবার আমার গলায় ওর হাত দিয়ে চেপে ধরে বললো,'একেবারে চুপ করিয়ে দেই এখন!'
ও এমন শক্ত করে ধরেছে যে আমার গলায় একেবারে কাঁশি উঠে গেল। আমি ওর হাত থেকে ছুটে যেতে ছটফট করতে লাগলাম। আমার চোখ কেমন লাল হয়ে উঠছিলো।আর মুখে ঘাম জমছিলো।নেহাল তখন আমায় ছেড়ে দিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে কোথায় যেন গেল।আর আমি বিছানায় পড়ে থেকে কাঁদতে লাগলাম।
সে ফিরে এলো খানিক পর। ততক্ষণে আমি গায়ে কাপড় চোপড় জড়িয়ে নিয়েছি। কিন্তু সে এসে আবার টেনে টেনে আমায় বিবস্ত্র করে নিলো এবং তার ইচ্ছে পূরণ করলো। তারপর যখন সে ক্লান্ত, বিধ্বস্ত তখন আমায় ছেড়ে দিয়ে বললো,'যাও,এখান থেকে দূরে যাও। আমি কারোর সাথে ঘুমাতে পারি না। আমাকে ঘুমাতে হয় একা। ছোট বেলা থেকেই এই অভ্যাস আমার।'
আমি কাঁপা কাঁপা গলায় বললাম,'কোথায় যাবো আমি?'
'ফ্লোরে। এখান থেকে বালিশ আর কাঁথা নিয়ে শুয়ে পড়ো।'
কী ভয়ংকর এবং নোংরা মনের মানুষ!ভাবতেই আমার গা গুলিয়ে আসছে। আমি কিছুতেই ভেবে পাচ্ছিলাম না এই বদ লোকটির সাথে কী করে একটা জীবন কাটাবো আমি!
বিছানা থেকে কাঁথা আর বালিশ নিয়ে গিয়ে আমি ফ্লোরে শুয়ে গেলাম। শরীর খুব দূর্বল লাগছিলো তাই শু'য়ার পরপরই ঘুমে চোখ লেগে এলো। যখন একেবারেই ঘুমিয়ে গেছি আমি তখন নেহাল চিৎকার করে ডাকতে লাগলো আমায়। আমি চমকে উঠে সজাগ হতেই ও বললো,'এই বান্দী,এতো ডাক লাগে কেন ঘুম থেকে উঠতে?'
ওর মুখ থেকে বান্দী ডাকটা শুনে আমার যা খারাপ লাগলো! মনে মনে আফসোস করে বলছিলাম,হায় কপাল!
নেহাল তখন ধমক দিয়ে বললো,'এখনও ওইখানে বসে আছস কেন?উপরে আয়।'
আমি ভয়ে ভয়ে বিছানার উপর গেলাম। তখন নেহাল বললো,'আমার মাথা ব্যথা করছে মাথা টিপে দে।'
আমি সম্পূর্ণ অস্বস্তি নিয়ে তার মাথা টিপে দিতে লাগলাম। হঠাৎ নেহাল আমার গালে একটা চড় বসিয়ে দিয়ে বললো,'মাথা টেপাটাও শিখে আসিসনি। ছোট লোকের মেয়ে!লোভ করে ঠিকই তো আবার বড় লোকের ছেলের কাছে বিয়ে বসলি।তো বিয়ের আগে বড় লোকদের সাথে ছোট লোকদের কী আচরণ,আদব কায়দা শিখে আসলিনা কেন?'
আমার কান্না পেয়ে যাচ্ছিলো খুব। বাবাকে তুলে কথা বলায় চাপা রাগও পাচ্ছিলো। আমি আস্তে করে রাগ মিশেলী গলায় বললাম,'শুনুন, আমার আব্বা আম্মাকে তুলে কোন কথা বলবেন না!'
আমার কথা শুনে হা হা হা করে হেসে উঠলো নেহাল।হাসি শেষ করে সে বললো,'তোর বাপ তো একটা লোভী!'
আমি চুপ করে রইলাম। নেহাল নিজেই আবার বললো,'তোর মাও লোভী। আসলে ছোট লোকগুলো লোভীই থাকে।লোভী না থাকলে কী আর বড় লোকদের সাথে মেয়ের বিয়ে দিতে চায় কেউ?ওরা ভেবেছে তোকে এখানে বিয়ে দিয়ে অঢেল সম্পদের মালিক হয়ে যাবে তোর বাপ মা! কিন্তু কান খুলে তুই শুনে রাখ। আমার বাড়ি থেকে একটা পয়সাও ওখানে নিয়ে যেতে পারবি না তুই।হা হা হা।'
আবার হেসে উঠলো নেহাল।ওর এই অসভ্য হাসি আর বিশ্রী কথাগুলো শুনতে ইচ্ছে করছিলো না। সত্যি সত্যি আমার মনে হচ্ছিল পৃথিবীর সবচেয়ে নিকৃষ্ট পুরুষটির সাথেই বোধহয় আমার বিয়ে হয়েছে। আমার ভাগ্যটা এতো খারাপ কেন? ভেবে আবার কান্না পেয়ে গিয়েছিলো। কিন্তু অনেক কষ্টে কান্নাটা আমি চেপে রাখলাম।কান্নাটা চেপে রাখলাম এই ভয়ে যে যদি আবার কাঁদি তবে আমার শরীরে আবার আঘাত করবে নেহাল।
নেহাল বললো,'প্রতিদিন এভাবে আমায় মাথা টিপে দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিতে হবে। আমার মাথা টিপে না দিলে আমি ঘুমাতে পারি না।তোর আগে আমাদের কাজের মেয়ে রুবি আমার মাথা শরীর টিপে দিতো। ওই মেয়েটা যা কাজের না?ডাকবো ওকে?'
রাগে আমার শরীর কাঁপতে লাগলো। আমি কাঁপা কাঁপা গলায় বললাম,'নাহ। ওকে ডাকবেন কেন!'
'এইতো বুঝেছিস। তাহলে যা বলবো তাই শুনবি।না শুনলে তো যে শুনে আমার কথা তাকেই ডাকতে হবে!'
সত্যি বলতে মেয়েরা তাদের স্বামী একেবারে নিকৃষ্ট থাকা সত্ত্বেও তার স্বামীর সাথে অন্য একটি মেয়ে এসে ভাব জমাক তা কোনদিন তারা মেনে নিতে পারে না। আমিও পারলাম না। আমি বললাম,'আমি আপনার সব কথা শুনবো।'
নেহাল এবার আমার কপালে চুমু খেয়ে বললো,'এই তো লক্ষ্মী মেয়ের মতো কথা বলেছো এখন। তোমার মতো এমন ভালো মেয়ে হয় না গো!টিপো টিপো। ভালো করে আমার মাথাটা টিপে দাও।'
আমার শরীর খুব দূর্বল লাগছিলো। ঘুমে চোখের পাতা টানছিলো। তবুও তার মাথা টিপে দিতে হচ্ছে আমার। যতক্ষণ সে না ঘুমাবে ততক্ষণ আমিও ঘুমাতে পারবো না।কী ভয়ংকর জীবন আমার!
'
নেহাল ঘুমিয়ে গেছে।নাক ডেকে ঘুমাচ্ছে সে। এবার আমি যখন নীচে শুতে যাবো তখনই মসজিদ থেকে ফজরের আজান ভেসে এলো।রাত শেষ।নেহালকে ডাকতে হবে। পবিত্র হয়ে আমাদেরকে নামাজ পড়তে হবে। কিন্তু ভয় করছে ওকে ডাকলে না জানি কী করে বসে ও।
আমি আস্তে আস্তে ওর কাছে গেলাম। তারপর ওর মাথায় আলতো স্পর্শ করে ডাকলাম,'এই যে, উঠুন।উঠুন না!'
নেহাল------
'
#চলবে
নিশুতি_রাতের_কান্না
৩য়_পর্ব
অনন্য_শফিক
'
'
'
নেহাল প্রথম দুবার ডাকার সময় সাড়া দিলো না। কিন্তু তৃতীয় বার ডাকার সময় শু'য়া থেকেই এক হাত দিয়ে আমার চুল এতো শক্ত করে টেনে ধরলো যে গোঁড়া থেকে একেবারে চুলগুলো ছিঁড়ে যাচ্ছিল মনে হলো। আমি ওর দিকে ভেজা চোখে তাকিয়ে কান্নামাখা গলায় বললাম,'শুনুন না! আপনাকে তো আমি নামাজের জন্য ডাকছিলাম।'
নেহাল এবার তার দাঁত মুখ খিঁচে বললো,'তোর নমাজের গোষ্ঠী কিলায়! এই তোকে অত বড় সাহস কে দিয়েছে আমার ঘুম ভাঙাবার?'
আমি বললাম,'স্ত্রীর দায়িত্ব তার স্বামীকে ডেকে নামাজের কথা বলা।'
কথাটা শুনে নেহাল আরো শক্ত করে টেনে ধরলো আমার চুল। তারপর বললো,'এভাবে তোকে ধরে রাখবো সারাদিন।দেখবো তোর নমাজ কে করে!'
আমি রাগে ঘৃণায় বললাম,'আপনি এতো নোংরা আমি কল্পনাও করতে পারছি না।আপনি শুধু আপনার স্ত্রীর কাছে খারাপ নন, আপনার আল্লার কাছেও খারাপ!'
নেহাল আমার কথায় পাত্তা দিলো না।সে যেভাবে ধরে রেখেছিল সেভাবেই ধরে রাখলো। কিন্তু আমার ভাগ্য ভালো যে খানিক পরেই সে ঘুমে ঢলে পড়লো আর ফজরের ওয়াক্ত তখনও শেষ হয়ে যায়নি।ওর কাছ থেকে ছাড়া পেয়ে আমি তড়িঘড়ি করে ফ্রেশ হয়ে নামাজে দাঁড়ালাম। নামাজ শেষ করে দু হাত তুলে আল্লাহর দরবারে আমার সব অভিযোগ পেশ করে বললাম,'মাবুদ গো,ও মাবুদ, তুমি যদি ওমরের মতো কাফেরকে তোমার রহমতের নূর দ্বারা তোমার প্রিয় করে নিতে পারো তবে তুমি তো নেহালকেও পারো উত্তম চরিত্রবান আর মোমেন করে গড়ে তুলতে। আমি ওর থেকে পাওয়া আঘাত গুলোর জন্য দুঃখ করি না। আমার দুঃখ এখানে সে কেন তোমার হুকুম নিয়ে গাফেলতি করবে।'
'
দোয়া শেষ করে আমার মাথায় শীতল একটা হাতের স্পর্শে আমি চমকে উঠলাম। ভয়ে ভয়ে পেছনে তাকিয়ে দেখি আমার শাশুড়ি মা। তিনি আমার দিকে তাকিয়ে তার দু হাত দিয়ে আমার চোখ মুছে দিয়ে বড় মায়া মাখা গলায় বললেন,'মাগো,নিয়তি।নিয়তি হলো সবচেয়ে বড় বিষয়। এই যে আমার বাপ মায়ের সবচেয়ে আদরের বস্তু ছিলাম আমি। কিন্তু এই বাড়িতে বউ হয়ে আসার পর থেকে ধুঁকে ধুঁকে মরছি। বাইরে থেকে এই বাড়ির পুরুষ মানুষ গুলোকে মানুষেরা মনে করে এরা বুঝি অনেক ভালো,সৎ। কিন্তু বাস্তবতা তো তুমি দেখলেই। আমিও সেই শুরু থেকেই দেখে আসছি। তোমার শশুরের অত্যাচার সয়ে সয়ে অতিষ্ঠ হয়েছি।তার হঠাৎ মৃত্যুর পর ভেবেছিলাম এই বুঝি আমার মুক্তি মিলেছে। কিন্তু ভাগ্য এমন,ছেলেরা হয়েছে তার বাবার মতো। এদের অন্যায় আচরণ,চরিত্রহীনতা আমায় কষ্ট দেয়। আমি বাঁধা দিতে গেলে ওরা আমায় মানে না।বলে, আমাদের বংশে নারীদের কথা পুরুষেরা শোনে না। আমি যে মা, আমার কথাও শোনা যাবে না! তুমি বুঝতে পারছো তো আমার কষ্ট টা। তবুও আশায় বুক বেঁধে বেঁচে আছি। মনে মনে ভাবি, একদিন সুদিন আসবে। আমার ছেলেরা মানুষের মতো মানুষ হবে। কোন এক দৈব চয়নে তারা ধর্ম এবং সভ্যতার পথে ফিরে আসবে।'
আমার শাশুড়ির কথাগুলো শুনে আমার চোখ আবার জলে ভিজে উঠলো। আমি তাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে বললাম,'আম্মা, আমার ধৈর্য্য আপনি বাড়িয়ে দিয়েছেন। আমিও অপেক্ষা করবো এমন সুদিনের জন্য। আমার সবটুকু শক্তি দিয়ে চেষ্টা করে যাবো আপনার ছেলেকে মনুষ্যত্বের পথে ফিরিয়ে আনতে!'
'
খানিক আগেও মনে হয়েছিল নেহালের সাথে ঘর সংসার করা আমার সম্ভব না। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে আজ যদি আমি ওকে ছেড়ে চলে যাই তবে কেউ না কেউ তো তার ঘরে বউ হয়ে আসবে। সংসার করবে।কষ্ট পাবে।অন্য একটি মেয়েকে কষ্ট পেতে দিবো না। সংসার জীবনের তিক্ত স্বাদ ওকে পেতে দিবো না। আমি কষ্ট পেয়ে হলেও ওকে আলোর পথ দেখাবো।দেখিয়েই ছাড়বো।
'
আমি শাশুড়ি মার কাছে জেনে নিলাম নেহালের প্রিয় আর ভালো লাগার জিনিস গুলোর বিষয়ে।
শাশুড়ি মা বললেন,'ও বিকেল বেলা গান শুনতে পছন্দ করে।খালি গলায় রবীন্দ্রনাথের গান।আর পছন্দ করে বৃষ্টি।আর ঘুম ভাঙার পর এক গ্লাস ঠান্ডা পানি।'
'আরো কিছু?'
'না।আগে এইগুলো করে দেখো কী হয়!'
'আচ্ছা।'
আমি মনে মনে ঠিক করে নিলাম আজ থেকে আমার যত কষ্টই হোক না কেনো নেহালকে আলোর পথে ফিরিয়ে আনার ভ্রত নিবো আমি।
'
নেহাল সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠতে পারে না। কারণ সে ঘুমোতেই যায় শেষ রাতে।সে ঘুম থেকে উঠে দুপুর বেলা।আজ যখন সে দুপুর বেলা ঘুম থেকে উঠলো তখন আমি ----
'
#চলবে