হে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি মু’মিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে অবনত রাখে।

0 20
Avatar for FAHIM13
4 years ago
Sponsors of FAHIM13
empty
empty
empty

পূর্ববর্তী যামানার একটা ঘটনা রয়েছে, সে ঘটনায় উল্লেখ করা হয়েছে- একজন আবেদ ছিল। আবেদ, যে খুব ইবাদত-বন্দিগী করত। সে খুব পরহিযগার ছিল। সমস্ত দিন এবং রাত্র সে ইবাদত-বন্দিগীতে কাটাত। এতে সে কোন ত্রুটি-গাফলতি করতনা। ইবলিস অনেক দিন যাবৎ কোশেশ করতেছিল তাকে ওয়াস্ওয়াসা দেয়ার জন্য। যত পথ ইবলিস অবলম্বন করেছে কোন পথেই তাকে কাবু করতে পারেনি। এরপরও ইবলিস একটার পর একটা পদ্ধতি অবলম্বন করতে লাগল অর্থাৎ যাতে আবেদকে কব্জা করা যায়, আবেদকে কাবু করে শরীয়তের খিলাফ কাজ করানো যায় কিনা, যখন সে পর্যায়ক্রমে কোশেশ করতে লাগল। কোন কোশেশ তার কাজ হচ্ছে না।

হঠাৎ দেখা দিল, সেই দেশের সাথে তার প্রতিবেশী দেশের যুদ্ধ শুরু হয়ে গেল। যখন যুদ্ধ শুরু হয়ে গেল তখন ইবলিস সুযোগ খুঁজতে লাগল। এর মাধ্যম দিয়ে তাকে কব্জা করা যায় কিনা, কাবু করা যায় কিনা। ইবলিস সেই সুযোগ তালাশ করতে করতে ধোঁকা দেয়ার একটা পথ সে পেয়ে গেল। তাহলো, সেই আবেদের প্রতিবেশীদের মধ্যে নিকটবর্তী এলাকায় দুই ভাই ছিল। যাদের এক বোন ছিল। তাদের অবস্থা স্বচ্ছল ছিল। তারাও মোটামুটি পরহিযগার ছিল। ইবলিস গিয়ে তাদেরকে ওয়াস্ওয়াসা দিল, “তোমরা এক কাজ কর, জিহাদ শুরু হয়ে গেছে, তোমরা জিহাদে অংশ গ্রহণ কর। অনেক ফযীলত রয়েছে এর মধ্যে। এতে মারা গেলে শহীদ হয়ে যাবে। অনেক মর্যাদা-মর্তবা তোমাদের হাছিল হবে। তোমরা জিহাদে চলে যাও। কারণ টাকা-পয়সা, থাকা-খাওয়ার তো কোন অসুবিধা নেই। জিহাদ করে ফিরে এসেও তোমরা তোমাদের বিষয় সম্পত্তি আবার পাবে। আর যদি তোমরা শহীদ হয়েই যাও তাহলে তো অনেক ফযীলত রয়েছে আল্লাহ্ পাক-এর কাছে।” এটা ওয়াস্ওয়াসা দিয়ে মানুষের ছূরতে গিয়ে ইবলিস তাদের বুঝালো।

অনেক দিন বুঝানোর পর তারা শেষ পযর্ন্ত বলল, ‘আমরা যদি জিহাদে চলে যাই, আমাদের তো আর কেউ নেই, দুই ভাই এক বোন, তাহলে আমাদের এই বোনটাকে আমরা কোথায় রেখে যাব?’ ইবলিস প্রথম দিন কিছুই বললনা। সে বলল, ‘আচ্ছা ঠিক আছে।’ সে তাদের উপদেশদাতা হিসাবে, খয়ের খাঁ হিসাবে বলল, ‘অসুবিধা নেই, আমি একটু চিন্তা-ভাবনা করে দেখি। এতবড় ফযীলতের কাজ থেকে তোমরা মাহরূম থাকবে? এটার একটা ব্যবস্থা করতেই হবে।’ এটা বলে আবার দু’একদিন পর এসে বলল, ‘আমি একটা চিন্তা-ভাবনা করেছি, কি চিন্তা ভাবনা করেছ? তোমাদের নিকটবর্তী একজন আবেদ রয়েছে খুব পরহিযগার, সে সব সময় নিরিবিলি থাকে। কোন বেগানা নারীর প্রতি সে দৃষ্টি দেয়না। মহিলাদের সামনে সে যায়না। এমন একজন আবেদ রয়েছে। তোমরা এক কাজ করতে পার, সে আবেদের কাছে তোমাদের বোনটাকে রেখে যেতে পার।” তারা বলল, ‘এটা কি করে সম্ভব হবে? আমরা তাকে রেখে যাব, সেখানে সে কোথায় থাকবে, খাবে?’

ইবলিস আবার ওয়াসওয়াসা দিল, “চিন্তার কোন কারণ নেই। কারণ, তার অনেক জায়গা-সম্পত্তি রয়েছে। আর তোমাদের তো টাকা-পয়সা রয়েছেই। কিছু টাকা পয়সা দিয়ে যাবে, খোরাক দিয়ে যাবে এক বৎসরের, তারা খাবে, থাকবে অসুবিধা হবেনা।” তাহলে কিভাবে চলবে? ইবলিস বলল, “ঠিক আছে আমি আবার আসব, এসে বলব।” ইবলিস সেই আবেদের কাছে গেল। গিয়ে তাকে বলল, ওয়াস্ওয়াসা দিল মানুষের ছূরতে যে, “তুমি এখানে থাক, খাও, তোমার তো অনেক অসুবিধা হয়। যদি কেউ তোমাকে পাক-শাক করে দিতো তাহলে তোমার ইবাদত-বন্দিগী আরো বেশী করা সম্ভব হত। এখন পাক করতে তোমার অনেক সময় নষ্ট হয়ে যায়। তোমার পাক-শাক করতে অনেক সময় নষ্ট হয়ে যায়।”

খুব সূক্ষ্ম শয়তানের তা’ছীর অর্থাৎ শয়তানের ওয়াস্ওয়াসা খুব সূক্ষ্ম। সে তাকে বলতে লাগল, “তুমি যে নিজে পাক-শাক করে খাও, তোমার তো অনেক সময় ব্যয় হয়ে যায়। তুমি এক কাজ কর, একজন লোক রেখে নাও, যে তোমাকে পাক-শাক করে দিবে, তোমার সময় বেঁচে যাবে, তুমি বেশী বেশী ইবাদত-বন্দিগী করতে পারবে।” আবেদের ইল্মের কিছু অভাব ছিল। সে মনে মনে চিন্তা করল, ব্যাপারটা তো খারাপ নয়, ভাল। তুমি তো আমাকে ভাল বুদ্ধি দিয়েছ, তাহলে লোক পাব কোথায়? ইবলিস বলল, ‘ঠিক আছে আমি দেখি লোক পাওয়া যায় কিনা।’ এটা বলে সে আবার সেই দুই ভাইয়ের কাছে গেল, গিয়ে বলল যে, “দেখ, আমি তো তার সাথে আলাপ করেছিলাম, তাকে যদি কেউ পাক-শাক করে খাওয়ায় তাহলে হয়ত সেখানে থাকার ব্যবস্থা হবে।” সেই দু’ভাই বলল, ‘সে কি করে থাকবে ওখানে, সে বেগানা পুরুষ।’ ইবলিস বলল, “না, অসুবিধা নেই, আলাদা একটা ঘর করে সে ঘরে থাকবে; আর আবেদ তো তার ঘরেই থাকে, সে তো সেখান থেকে বের হয়না, তাহলে অসুবিধার কোন কারণ নেই।” তখন সে দু’ভাই বলল, ‘তাহলে আপনি ব্যাপারটা বিস্তারিত আলোচনা করে আমাদেরকে জানান।’ ইবলিস তো দরবেশের মনে ছূফীর ছূরতে ধোকা দিচ্ছে। তারা ব্যাপারটা বুঝতে পারেনি। শেষ পযর্ন্ত ইবলিস সে আবেদের কাছে এসে বলল যে, “আমি একজন লোকের ব্যবস্থা করেছি, তোমাকে পাক-শাক করে খাওয়াবে।”

তখন আবেদ জিজ্ঞাসা করল যে, ‘পুরুষ না মহিলা?’ তাকে বলা হল, “মহিলা হলেই দোষটা কি? কারণ পুরুষরা তো ভাল পাক-শাক জানেনা, তুমি এত ইবাদত-বন্দিগী কর, তোমার তো খাবারের দরকার রয়েছে, স্বাস্থ্য সুস্থ থাকার দরকার রয়েছে, ভাল ভাল খেলে স্বাস্থ্য ভাল থাকবে, আরো বেশী বেশী ইবাদত-বন্দিগী করতে পারবে, মহিলা হলেই তো ভাল হবে।” আবেদ বলেছিল, ‘তাহলে কি করে সম্ভব?’ ইবলিস বলল, “অসুবিধার কোন কারণ নেই। কারণ, তুমি যে ঘরে থাক সে ঘরে সে প্রবেশ করবেনা। আর সে যে ঘরে থাকবে তুমিও সে ঘরে প্রবেশ করবেনা। আলাদা তাকে ঘর করে দেয়া হবে, সমস্ত ব্যবস্থা তাকে করে দেয়া হবে। সে পাক-শাক করে তোমাকে খাওয়ার ব্যবস্থা করবে।” তা কি করে সম্ভব? “সে পাক-শাক করে, তোমার ঘরে যে পর্দা রয়েছে সেই পর্দার নীচ দিয়ে সে সেই খাদ্য তোমার ঘরে পৌঁছে দিবে, তুমি সেখান থেকে সেটা নিয়ে খাবে। এরপর আবার পর্দার বাইরে বের করে দিবে, সে সমস্ত হাঁড়ি-পাতিল, থালা-বাসন যা কিছু রয়েছে সেটা সে নিয়ে পরিস্কার করে রাখবে।” আবেদ মোটামুটি এক অবস্থায় কিছুটা সম্মতি প্রকাশ করল।

এরপর ইবলিস গেল সেই দুই ভাইয়ের কাছে। গিয়ে তাদের বলল, “তোমাদের জিহাদের সময় চলে যাচ্ছে। আর কত অপেক্ষা করা যাবে? এতবড় ফযীলত তো তোমাদের হাছিল করার দরকার রয়েছে, তাড়াতাড়ি করা উচিৎ। এক কাজ কর, আমি আলোচনা করেছি, তোমরা আমার সাথে আস, তোমাদেরকে নিয়ে তার সাথে আলোচনা করব, অসুবিধার কোন কারণ নেই, কোন অসুবিধা হবেনা। তোমরা জিহাদে চলে যাবে, নেক কাজে চলে যাবে।” আর আবেদকে বলল, “যেহেতু তারা জিহাদে যাবে, তুমি তো আর জিহাদে যেতে পারতেছনা। তাহলে তাদেরকে যদি তুমি সহযোগিতা কর, তুমিও জিহাদের ছওয়াব পাবে। অর্থাৎ একদিকে তুমি জিহাদেরও ছওয়াব পাবে, অন্য দিকে ইবাদত-বান্দিগীও করতে পারবে, বেশী বেশী করতে পারবে। তাদের সহযোগিতা করা হলে অনেক ফযীলত তুমি পাবে।” ইত্যাদি ইত্যাদি উভয়কে অনেক ওয়াস্ওয়াসা দিয়ে, অনেক প্রতারণা করে ভুলিয়ে ফেলল সে। শেষ পযর্ন্ত তারা ফায়সালা করল, ঠিক আছে, তাদের সে বোনকে এখানে রেখে যাবে। একটা আলাদা ঘর রয়েছে, সেখানে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হবে, ওযূ-ইস্তিঞ্জার ব্যবস্থা রয়েছে, ইবাদত বন্দিগীরও ব্যবস্থা রয়েছে। আবেদের সেই শর্ত-শারায়েত মুতাবিক তার ভাইয়েরা তার খাদ্যের ব্যবস্থা করে দিয়ে গেল এবং আবেদকেও যাতে সে খাদ্য পৌঁছায়, কি করে খাদ্য পৌঁছাবে, যেহেতু আবেদ তো ঘর থেকে বের হয়না। সে পর্দার তল দিয়ে খাদ্য পৌঁছিয়ে দিবে, আবার খাওয়া-দাওয়া হয়ে গেলে তার প্লেটগুলো, থালা, বাটি, পেয়ালা ইত্যাদি যা কিছু রয়েছে সেটা সে আবার পর্দার তল দিয়ে ঘর থেকে বের করে দিবে, সে মেয়ে সেটা নিয়ে যাবে, সে ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার করে রাখবে।

পরবর্তী ওয়াক্তে সে আবার খাদ্য পৌঁছিয়ে দিবে। সব ঠিক হলো; ইবলিস তার ওয়াস্ওয়াসা ও প্রতারণার মাধ্যমে মোটামুটি এক অবস্থায় গিয়ে পৌঁছল। দু’ভাই জিহাদে চলে গেল। এদিকে ইবলিস মাঝে মাঝে এসে সে পুরুষের কাছে ওয়াস্ওয়াসা সৃষ্টি করে। সে ওয়াস্ওয়াসা সৃষ্টি করতে লাগল; কি করে তাকে সে মেয়ের ফাঁদে ফেলানো যায়।

হাদীছ শরীফে রয়েছে,

ﻋﻦ ﺍﺑﻰ ﺍﻣﺎﻣﺔ ﺭﺿﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ ﻋﻨﻪ ﻋﻦ ﺍﻟﻨﺒﻰ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﺍﻳﺎﻙ ﻭﺍﻟﺨﻼﻭﺓ ﺑﺎﻟﻨﺴﺎﺀ ﻓﻮﺍﻟﺬﻯ ﻧﻔﺴﻰ ﺑﻴﺪﻩ ﻣﺎ ﺧﻼ ﺭﺟﻞ ﺑﺎﻣﺮﺍﺓ ﺍﻻ ﺩﺧﻞ ﺍﻟﺸﻴﻄﺎﻥ ﺑﻴﻨﻬﻤﺎ.

আখিরী রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমরা সতর্ক থাক নির্জনতা থেকে, নির্জন অবস্থায় মহিলা থেকে সতর্ক থেকো

আল্লাহ্ পাক-এর কসম! ﻓﻮﺍﻟﺬﻯ ﻧﻔﺴﻰ ﺑﻴﺪﻩ . ঐ আল্লাহ্ পাক-এর কসম! যার হাতে আমার প্রাণ রয়েছে, ﻣﺎ ﺧﻼ ﺭﺟﻞ ﺑﺎﻣﺮﺍﺓ ﺍﻻ ﺩﺧﻞ ﺍﻟﺸﻴﻄﺎﻥ ﺑﻴﻨﻬﻤﺎ . যখন কোন পুরুষ নিরিবিলিতে কোন মহিলার সাথে সাক্ষাৎ করে, একাকী হয়, শয়তান তাদের মধ্যে প্রবেশ করে থাকে, প্রবেশ করে সে ওয়াস্ওয়াসার সৃষ্টি করে, ফিৎনার সৃষ্টি করে দেয়। ঠিক তাই হলো। সেই মেয়ে খাদ্য প্রবেশ করিয়ে দিত, পর্দার তল দিয়ে। সে আবেদ তো নিরিবিলি থাকে, হঠাৎ তার হাতটা তার চোখের দৃষ্টিতে চলে আসল অর্থাৎ সে তার হাতটা দেখতে পেল।

যেটা আল্লাহ্ পাক বলেছেন,

ﻗﻞ ﻟﻠﻤﺆﻣﻨﻴﻦ ﻳﻐﻀﻮﺍ ﻣﻦ ﺍﺑﺼﺎﺭﻫﻢ .

‘হে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি মু’মিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে অবনত রাখে।’

সে রাখতে পারেনি। তার দৃষ্টি চলে গেল সে মেয়ের হাতের প্রতি। ওয়াস্ওয়াসার সৃষ্টি হলো, ওয়াস্ওয়াসার সৃষ্টি হলো। ইবলিস তার আসা-যাওয়া জারি রেখেছে। সে বলল, অসুবিধার কি রয়েছে, এখানে তো আর কেউ নেই, আর তুমি আবেদ তোমার সামনে এসেই খাদ্য দিবে, অসুবিধার কি কারণ? অসুবিধা নেই, সে তোমার মেয়ের মত থাকবে, অসুবিধা কি? বলে, হালকা পর্দার খেলাফ সে করলো। আস্তে আস্তে সে ভিতরে এসে খাদ্য পৌঁছাতো। পৌঁছাতে পৌঁছাতে এমন এক অবস্থায় পৌঁছল, অবৈধ সম্পর্ক হয়ে গেল।

এদিকে তো দু’ভাই তারা জিহাদে চলে গেছে। অবৈধ সম্পর্ক হয়ে শেষ পর্যন্ত অবৈধভাবে সেই মেয়ের একটা সন্তান হয়ে গেল। যখন সন্তান হয়ে গেল, ইবলিস এসে বলল, ‘তুমি কি করেছ? সর্বনাশ করেছ? জিহাদ তো প্রায় শেষ, তারা চলে আসবে। এক কাজ কর, এ সন্তানটাকে হত্যা করে ফেল, যাতে তারা বুঝতে না পারে।’ সে আবেদ কোন পথ না পেয়ে শেষ পর্যন্ত সে তার মান-ইজ্জত রক্ষা করার খেয়ালে সন্তানটাকে হত্যা করে ফেলল। কোথায় দাফন করবে? তারা এসে তো বুঝে ফেলবে। কোন স্থানে নতুন কবর দেখলে মানুষ জিজ্ঞাসা করবে, কবরটা কোথা থেকে আসলো। তুমি এক কাজ কর, এক নিরিবিলি স্থানে, জঙ্গলে, সেখানে এটাকে মাটি চাপা দিয়ে দাও। আবেদ মনে করেছিল, সে তার উপদেষ্টা। শয়তানের মিথ্যা ওয়াস্ওয়াসার কারণে সে সেই সন্তানকে হত্যা করে গর্তে পুঁতে রাখল।

এদিকে জিহাদ প্রায় শেষ হয়ে আসলো। সে দু’ভাই ফিরে আসলো তাদের বাড়ীতে। ইবলিস এসে বললো, দেখ, তুমি তো সর্বনাশ করেছ। তোমার তো এখন আর উপায় নেই। তুমি এত বড় আবেদ, তোমাকে মানুষ জানে, তুমি এত পরহেযগার, তুমি এ কাজ করেছ, এখন তোমার বাঁচার কোন উপায় নেই, আমি তাদেরকে বলে দিব। তুমি যে এ কাজ করেছ, হত্যা করেছ, এটা আমি বলে দিব।” তখন সে আবেদ অপারগ হয়ে বলল, ‘তাহলে কি করা যেতে পারে?’ ইবলিস বলল, ‘তোমার একটা পথ রয়েছে, তুমি বাঁচতে পার, আমি বলবনা।’ ইবলিস যেহেতু মিথ্যাবাদী, লা’নতগ্রস্থ, মালউন, তার তো স্বভাব সেটা। আবেদ জিজ্ঞাসা করল, ‘কি করতে হবে?’ তুমি এক কাজ কর, যদি শরাব পান কর তাহলে আমি আর বলবনা। আবেদ শেষ পর্যন্ত তার মান-ইজ্জত, সম্মান বাঁচানোর জন্য শরাবও পান করল।(নাউযুবিল্লাহ্)

ইবলিস এসে বলল যে, ‘দেখ এতেও চলবে না। আরো একটা শর্ত পালন করতে হবে, তাহলে আমি তোমার একথা তাদেরকে বলবনা। আমি সব ঠিক করে দিয়েছি, তুমি আমার ওয়াদা খেলাফ করেছ, তার মান ইজ্জত নষ্ট করেছ। কঠিন অপরাধ করেছ। কি শর্ত রয়েছে, ‘তুমি যদি সেই কবরে গিয়ে অর্থাৎ সেই সন্তানের কবরে সিজদা করতে পার তাহলে আমি আর বলবনা।’ সে আবেদ অপরাগ হয়ে শেষ পর্যন্ত সেখানে সিজদাও করল। (নাউযুবিল্লাহ্) কিন্তু ইবলিস যেহেতু প্রতারক, মিথ্যুক, মালউন, মরদূদ, রজীম। সে তার দু’ভাইকে সে কথাটা বলে দিল। শুধু তাই নয়, তাদেরকে বলে তাদেরকে এনে মাটি খুড়ে সেই বাচ্চা দেখিয়ে দিল যে, আবেদ এ ঘটনা করেছে। শেষ পযর্ন্ত আবেদ ধরা পড়ল, সমাজে শাস্তিপ্রাপ্ত হলো। তার আমল-আখলাক্ব, মান-ইজ্জত, সম্মান সব নষ্ট হয়ে গেল এই এক ওয়াস্ওয়াসার কারণে।

সেটাই হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে,

ﻋﻦ ﺟﺎﺑﺮ ﺭﺿﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ ﻋﻨﻪ ﻋﻦ ﺍﻟﻨﺒﻰ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ ﻻﺗﺠﺪﻭﺍ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻤﻐﻴﺒﺎﺕ ﻓﺎﻥ ﺍﻟﺸﻴﻄﺎﻥ ﻳﺠﺮﻯ ﻣﻦ ﺍﺣﺪﻛﻢ ﻣﺠﺮﻯ ﺍﻟﺪﻡ ﻗﻠﻨﺎ ﻭﻣﻨﻚ ﻳﺎ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ ﻣﻨﻰ ﻭﻟﻜﻦ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻋﺎﻧﻨﻰ ﻋﻠﻴﻪ ﻓﺎﺳﻠﻢ .

হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন যে, আখিরী রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন যে, দেখ ঐ সমস্ত বাড়ী-ঘরে তোমরা যেওনা, যে সমস্ত বাড়ী ঘরে মহিলারা রয়েছে অথচ তাদের স্বামী নেই।

ﻓﺎﻥ ﺍﻟﺸﻴﻄﺎﻥ ﻳﺠﺮﻯ ﻣﻦ ﺍﺣﺪﻛﻢ ﻣﺠﺮﻯ ﺍﻟﺪﻡ

নিশ্চয়ই শয়তান তোমাদের মধ্যে চলাচল করে থাকে যেমন রক্ত চলাচল করে থাকে, ঠিক সেভাবে।

ﻗﻠﻨﺎ ﻣﻨﻚ ﻳﺎ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ .

হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, আমরা জিজ্ঞাসা করলাম, হে আল্লাহ্ পাক-এর রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনার মধ্যেও কি চলে থাকে? ﻗﺎﻝ ﻣﻨﻰ ﻭﻟﻜﻦ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻋﺎﻧﻨﻰ ﻋﻠﻴﻪ ﻓﺎﺳﻠﻢ . আখিরী রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন যে, হ্যাঁ, আমার মধ্যেও হতো, তবে আল্লাহ্ পাক আমাকে সাহায্য করেছেন। আমার যে শয়তান রয়েছে, জ্বীন, সেটা আত্মসর্মপন করেছে, ঈমান এনেছে, মুসলমান হয়ে গিয়েছে, যার জন্য আমার কোন অসুবিধা নেই।

কিন্তু প্রত্যেক মানুষের সাথে একটা জ্বীন, একজন ফেরেশ্তা থেকে থাকে। ফেরেশ্তা তাকে নেক কাজে উদ্বুদ্ধ করে, আর সেই জ্বীনটা তাকে পাপ কাজে ওয়াস্ওয়াসা দিয়ে থাকে। এখন সে পাপ কাজের ওয়াস্ওয়াসার কারণে যদি পাপ কাজ করতে থাকে, আস্তে আস্তে তার পাপ বেশী হওয়ার কারণে সে ঈমানী মজবুতি হারিয়ে ফেলে, দূর্বল হয়ে যায়। সে পাপ কাজ বেশী বেশী করতে থাকে। আর যখন সে ফেরেশ্তা তাকে নেক কাজে উদ্বুদ্ধ করে, আর এই উদ্বুদ্ধ করার কারণে সে নেক কাজ বেশী বেশী করতে থাকে, যার ফলশ্রুতিতে তার ঈমানী কুওওয়ত বৃদ্ধি পেয়ে যায়। তখন শয়তানী ওয়াস্ওয়াসা তার আর কোন ক্রিয়া করেনা, সে নেক কাজে ধাবিত হয়। সেটাই আল্লাহ্ পাক-এর রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন যে, আল্লাহ্ পাক আমাকে সাহায্য করেছেন। আমার যে জ্বীন ছিল সেটা ঈমান এনেছে, যার জন্য আমার কোন অসুবিধা নেই। কিন্তু প্রত্যেক মানুষের সতর্ক থাকতে হবে, নিরিবিলি থেকে, নির্জনতা থেকে।

হযরত উমর বিন খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেছেন, উনি ইন্তিকালের তিন দিন পূর্বে বলে গিয়েছেন যে, ‘আমার কাছে যে জ্বীনটা ছিল, আল্লাহ্ পাক-এর রহমতে সেটা ঈমান এনে মুসলমান হয়ে গেছে।’ (সুবহানাল্লাহ্) ঠিক আল্লাহ্ পাক যাদেরকে নেক কাজ করার বেশী তাওফীক দান করেন, কবুল করে নেন, তাদের সেই ফেরেশ্তা প্রবল হয়ে যায়, জ্বীনটা দুর্বল হয়ে যায়, যার জন্য সে কোন ক্রিয়া করতে পারেনা। অর্থাৎ ওয়াস্ওয়াসা সৃষ্টি করতে পারেনা, নেক কাজে বাধা সৃষ্টি করতে পারেনা। কাজেই খুব সতর্ক, খুব সাবধান থাকতে হবে।

3
$ 0.05
$ 0.05 from @ahed
Sponsors of FAHIM13
empty
empty
empty
Avatar for FAHIM13
4 years ago

Comments