Coronavirus
২০০২ সাল, একটি হোটেলের সকল অতিথি জানতেও পারলেন না যে তারা সকলে এক অপরিচিত ভাইরাসের হোস্ট বা বাহক হয়ে গেছেন। সেই ভাইরাসের করাল গ্রাসে ছয় মাসে ৭৭৪ জনের মৃত্যু হয়। বিপর্যস্ত হয়েছিল অর্থনীতি। এশিয়ান ডেভলপমেন্ট ব্যাঙ্ক-এ ঐ ক্ষতির পরিমাণ ৫৯ বিলিয়ন মার্কিন-ডলার। ভাইরাসটির নাম দেওয়া হয়েছিল “সিভিয়র্ অ্যাকিউট্ রেসপিরেটরি সিন্ড্রোম কোরোনাভাইরাস”(সার্স-কভ্) কারণ রোগটি পরিচিত হয়েছিল “সিভিয়র্ অ্যাকিউট্ রেসপিরেটরি সিন্ড্রোম” নামে। ওখানেই শেষ নয়। কয়েক বছর পর সৌদি আরবে “মিড্ল ইস্ট রেসপিরেটরি সিন্ড্রোম কোরোনাভাইরাস”(মার্স-কভ্)-র তাণ্ডব আছড়ে পড়ে। জানা যায় যে মার্স-কভ্ ভাইরাসটি সার্স-কভ্-র সাথে সম্পর্কযুক্ত ও তার ফলে নিমেষে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে কারণ পৃথিবী ইতিমধ্যে সার্স-কভ্-র ভয়াবহতা দেখেছিল। যদিও পরে “এপিডেমিওলজিকাল রিপোর্ট” বা “মহামারী পরিসংখ্যান সংক্রান্ত প্রতিবেদন” অনুযায়ী বোঝা গিয়েছিল যে মার্স-কভ্ সৃষ্ট ছোঁয়াচে শ্বাসরোগের ছড়িয়ে পড়ার প্রবণতা সার্স-কভ্ অপেক্ষা কম। কিন্তু তাহলেও সার্স-কভ্ এর মত মার্স-কভ্ এর কুপ্রভাব পড়েছিল সমস্ত পৃথিবীর উপর। পৃথিবীর সংক্রমিত অঞ্চলগুলির সাথে বাকি অঞ্চলগুলির যাতায়াতে বহু বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল।মানুষ অসুস্থ শরীরে ডাক্তারখানার কড়া নাড়তে শুরু করলেন; উপসর্গ – জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট ও পেশীতে ব্যাথা। ডাক্তারেরা জানিয়েছিলেন – “ভাইরাল বাইল্যাটারাল নিউমোনিয়া” (অর্থাৎ দুটি ফুসফুসই ভাইরাস ঘটিত নিউমোনিয়া-য় আক্রান্ত)। কিন্তু কিছু সময়ের মধ্যেই সেই নিউমোনিয়া ডাক্তারদের কপালে ভাঁজ ফেলল কারণ অসুস্থ মানুষের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে চলেছিল। রোগের কার্য-কারণের গভীর তলদেশে পাড়ি দিয়ে ডাক্তারেরা বুঝতে পারলেন যে নিউমোনিয়ার ছদ্মবেশে এক নতুন রোগ রোগীর ফুসফুস বেয়ে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল অঙ্গসমূহের দিকে গুটি গুটি নেমে আসছে। ২০০২ সালে মানবজাতির উপর “সার্স-কভ্” ভাইরাসের ভয়াবহ আক্রমণের প্রায় সতেরো বছর পর পুনরায় মানুষের শ্বাসতন্ত্রে দেখা মিলল এমন এক ক্ষতিকারক ভাইরাস যার সাথে মানুষের এর আগে পরিচয় হয়নি। [To be Continued]
খুব ভাল লিখেছেন। চালিয়ে যান।