এক মহিলা ফজর নামাজ পড়তে মসজিদে যাচ্ছেন।

0 17
Avatar for Daimond23
4 years ago

এক মহিলা ফজর নামাজ পড়তে মসজিদে যাচ্ছেন। পথিমধ্যে মহিলাকে অন্ধকার রাস্তায় একা পেয়ে এক লোক সুযোগ নিলেন। মহিলাটিকে ধর্ষণ করলেন। মহিলা রাসূল (সা) এর কাছে বিচার দিলেন । ধর্ষণের বিচার চাইলেন।

রাসুল (সা) হুকুম দিলেন অপরাধীকে খুঁজে বের করতে। সাহাবীগণ একজনকে সন্দেহ করে ধরে আনলেন। রাসুল (সা) মহিলাকে জিজ্ঞেস করলেন এই কি সেই লোক?

মহিলা উত্তর দিলেন হ্যাঁ।

ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট দেওয়ার আগে অপরাধীর স্বীকারোক্তি নিয়ে নিশ্চিত হতে বিভিন্ন প্রশ্ন করতে লাগলেন। পরে নিশ্চিত হলেন অপরাধী এই ব্যক্তি নয়! অপরাধী আরেকজন। তখন মূল অপরাধীকে ধরে এনে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করে শাস্তি সম্পূর্ন করলেন।

এখানে একটি বিষয় লক্ষণীয় যে সাহাবীগণ এবং রাসুল (সা) কেউই মহিলাকে বললেন না রাতে একা কেন বের হয়েছো? কেন কোনো পুরুষের সাথে বের হওনি? কেন তোমার একার অভিযোগ বিশ্বাস করতে হবে?

এমনকি ভুল লোককে দোষারোপ করলেও রাসুল (সা) মহিলাকে কিছুই বলে নি। কারণ রাসূল (সা) জানতেন মহিলাটি সম্ভ্রম হারিয়ে এখন ট্রমাটাইজড। এখন উল্টো ভিক্তিমকেই যদি প্রশ্নের উপর প্রশ্ন করা হয়,দোষারোপ করা হয় তাহলে উল্টো মজলুমের উপরেই জুলুমের নামান্তর বিনিময়ে অপরাধীকে ফেভার দেয়া হয়ে যাই।

প্রচলিত আইনে ধর্ষণে নারীর মৃত্যুবরণ হলেই কেবল ধর্ষণকারীর ফাঁসি হবে অন্যথায় ধর্ষণকারীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা অন্য কোনো লঘু শাস্তি হবে।

ধর্ষণের বিনিময়ে কারো যদি ফাঁসি চান তাহলে আপনাকে(ভিকটিমকে) অবশ্যই মৃত্যুবরণ করতে হবে। আপনি বেঁচে থাকলে ধর্ষক ও বেঁচে থাকবে।

তারমানে আপনার দুচোক্ষে আপনার ধর্ষকের মৃত্যুদন্ড দেখার ব্যবস্থা রাখেনি প্রচলিত আইন।

জেলে বসে খাবে দাবে ফুর্তি করবে আর আপনার ধর্ষণের সব কাহিনী পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে তার জেলমেটদের রগরগিয়ে গল্প শুনাবে।

তার জেলমেটরা এসব গল্প শুনে আপনাকে কল্পনায় বারবার ধর্ষণ করতে থাকবে আর আফসোস করবে ইশ! আমি যদি সেখানে থাকতাম।

অতঃপর তাদের মনে সুপ্ত ইচ্ছা জাগবে বের হলে আমিও বসের মত এইরকম ফুর্তি করে বেড়াবো। দুনিয়া দুইদিনের। খাবো,দাবো, ফুর্তি করবো। (বিলিভ মি! জেলে এগুলাই হয়। যে যত বড় ক্রিমিনাল সে তত বড় উস্তাদ)

এরপর এই সাইকেল এভাবে চলতেই থাকবে। কপাল খারাপ থাকলে জেলে যাবে। সেখানে গিয়ে পটেনশিয়াল রেপিস্ট তৈরি করবে। তারা বাইরে এসে আবার ধর্ষণ করবে। এ যেন ইনফিনিটি লুপ।

ইসলামিক আইনে ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদন্ড। শুধু মৃত্যুদন্ড দিয়েই ক্ষ্যান্ত নয়।

ইমাম আবু হানিফার মতে -

ধর্ষণকারীকে জনসম্মুখে জীবিত এনে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করতে হবে এবং লাশ কিছুক্ষন রেখে দিতে হবে যাতে মানুষজন এগুলো দেখে ধর্ষণের শাস্তি অনুধাবন করতে পারে। আখিরাতের ভয় না থাকলেও অন্তত দুনিয়ার শাস্তির ভয় করে হলেও যাতে মানুষ ধর্ষণ থেকে বিরত থাকে।

ইসলাম যতটা না অপরাধের শাস্তি দিতে আগ্রহী তারচেয়েও বেশি আগ্রহী এসব অপরাধ নির্মূল করতে।

মানুষের সাইকোলজি ভিন্ন ভিন্ন। আপনি যে কাজ করেন, একই কাজ ভিন্ন ভিন্ন জন করেন ভিন্ন মোটিভে।

আপনি কোনো অপরাধ করেন না কারণ আপনার আখিরাতের ভয় আছে। যার আখিরাতের ভয় নেই তাহলে সে কিভাবে অপরাধ থেকে বিরত থাকবে? সে তো সমাজের বাইরের কেউ না। তাহলে?

সেজন্যই ইসলাম আপনাকে ট্র্যাকে রাখতে যেমন আখিরাতের ভয় নিয়ে আলোচনা করেছেন।পুরস্কারের কথা বলেছেন। আবার একইসাথে সামাজিক,পারিবারিক,রাষ্ট্রীয় ভ্যালুজ নিয়ে আলোচনা করেছেন।

অপরাধ প্রিভেনশনের ব্যাপারে আলাপ-আলোচনা করেছেন।

কোনো কিছুতেই কাজ না হলে। তারপরেও অপরাধ ঠেকানো না গেলে তখন কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করেছেন। আপনার আখিরাত,ভ্যালুজ সবকিছুর দাবি ছেড়ে তখন একটাই দাবি আপনি অন্তত বিশৃংখলা তৈরি করবেন না সমাজে। অন্যের উপর জুলুম-অন্যায় করবেন না অন্তত।

করলে আপনার জন্য এই শাস্তি আছে।

এ যেন টোটাল একটা প্যাকেজ। ভালো সমাজের, ভালো রাষ্ট্রের,ভালো জীবনের।

আপনি বিশৃংখলাকারী হলে আপনার এই নিয়ম ভালো লাগবেই না। না লাগলেও এটাই ইসলাম। এটাই সার্বজনীন।

আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘(হে নবী!) আপনি ইমানদার পুরুষদের বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি সংযত রাখে এবং যৌনাঙ্গের হেফাজত করে। এতে তাদের জন্য উত্তম পবিত্রতা রয়েছে। নিশ্চয়ই তারা যা করে আল্লাহ এ ব্যাপারে অবগত। আর ইমানদার নারীদের বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি সংযত রাখে এবং যৌনাঙ্গের হেফাজত করে।’ (সূরা নূর : ৩০)।

1
$ 0.00
Avatar for Daimond23
4 years ago

Comments