শুক্রবার দিন টা এলেই ভিক্ষুক দের উৎপাত বেড়ে যায় তাই না? আপনার দরজার সামনে এসে ভিক্ষা দেয়ার জন্য তারস্বরে ডাকতে থাকে, যতক্ষন ভিক্ষা না দেন ততক্ষন ডাকতেই থাকে,ডাকতেই থাকে,, কি বিরক্তিকর তাই না!! তাই আপনিও পণ করেছেন দরজা খুলবেন না, ভিক্ষা দিবেন না ওই নোংরা গরীবগুলোকে।
আপনার ভাবনায় একটাবার আপনার দরজার সামনে দাঁড়ানো সে ভিক্ষুকটার যায়গায় নিজেকে দাঁড় করান তো,, কি পারছেন না? গা ঘিন ঘিন করছে? আচ্ছা ভাবনা বন্ধ করে এবার আল্লাহপাকের শুকরিয়া আদায় করুন যে তিনি আপনাকে ভিক্ষুক বানিয়ে আরেকজনের দরজার সামনে দাঁড় করান নি। তিনি আপনাকে নিয়ামাহ দান করেছেন,আপনার রুজি রুটির জন্য কারো কাছে হাত পাততে হয়না।
আল্লাহপাক আপনাকে সামর্থ দান করেছেন তার মানে এই নয় আপনি গরীবের মুখের সামনে দরজা বন্ধ করে দিবেন। কেও ইচ্ছা করে ভিক্ষা করেনা। আপনার সম্পদে ওই গরীব লোকগুলোর ও হক আছে। আপনার দেয়া একমুঠো চাল ওই লোক গুলোর পেট হয়ত ভরাতে পারবেনা কিন্তু ওই একমুঠো চাল আপনার আমলনামা ভারী হওয়ার কারন হতে পারে।আপনার দান করা দশ টাকা একটা গরীবের পেট ভরাতে হয়ত পারবেনা,কিন্তু রোজ হাশরে আপনার নেকীর পাল্লা উহুদ পাহাড়ের সমান করতে পারে!
আজ যদি ভিক্ষুকের অনুনয় আপনার মন না গলাতে পারে তবে জেনে রাখুন,
"#জাহান্নাম ওই ব্যক্তিকে ডাকবে যে সত্যেকে পিঠ প্রদর্শন করেছিলো ও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলো,
যে সম্পদ পূঞ্জীভুত এবং সংরক্ষিত করে রাখছিলো"[সূরা আল-মাআরিজ-১৭,১৮]
আপনি হয়ত বলবেন,ভিক্ষুকগুলো এখন সংঘবদ্ধ হয়ে "ভিক্ষা-ব্যবসা" করে। এদের ভিক্ষা দিয়ে কোনো সওয়াব হবেনা।এরা আপনার দেয়া চাল পুরনো কাপড় রেল স্টেশানে বা বটগাছের নিচে বসে বিক্রি করে দেয়।
দেখুন, আপনি যখন কাওকে কিছু শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য দান করছেন তার সওয়াব কিন্তু আপনার আমলনামায় লিখা হয়ে যাচ্ছে। যাদের দান করছেন তা তারা নিজেরা ভোগ করছে নাকি বিক্রি করে দিচ্ছে তার সাথে আপনার যোগসূত্র নেই। এত ভাবছেন কেন?ওরা ওই চাল পুরোনো কাপড় বিক্রি করে কি দশতলা বিল্ডিং এর মালিক হয়ে যেতে পারবে!
আপনি দান করছেন আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য আর এমন বান্দাদের বৈশিষ্ট্য পবিত্র আল কোরানে বর্ণিত হয়েছে এভাবেঃ
"তাদের চাহিদা থাকা স্বত্বেও আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য মিসকীন, ইয়াতীম ও বন্দীদের আহার্য দান করে।
এবং বলেঃকেবল আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য আমরা তোমাদের আহার্য দান করি,আমরা তোমাদের থেকে প্রতিদান চাইনা,কৃতজ্ঞতা ও নয়" [ সূরা আল- ইনসানঃ৮,৯]
দান সদকা সম্পদ কমায় না বরং সম্পদে বরকত হয়,বালা মুসিবাত দূর হয়,আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জিত হয়। হযরত আদি ইবনে হাতিম (রাঃ) বলেন যে, আমি রাসূল (সা.) কে বলতে শুনেছি- তোমাদের মধ্যে যার পক্ষে সম্ভব একটা খেজুরের টুকরা দান করে হলেও জাহান্নাম থেকে আত্মরক্ষা করুক। (বুখারী, মুসলিম)
এবার থেকে আপনার দরজায় ভিক্ষুক এলে তাকে খালি হাতে ফেরাবেন না অন্তত এক মুঠো চাল হলেও তার হাতে দিয়ে দোয়া চাইবেন।