কিছু কথা না বললেই নয়

0 6
Avatar for Buri222
4 years ago

কিছু কথা না বললেই নয়।

রীতিমতো আমারই ওপর অহেতুক রাগ, ক্ষোভ প্রকাশ করছে। অভিযোগ ও অযৌক্তিক প্রশ্নের সম্মুখে আমাকে দাঁড় করাচ্ছে সেখানে নীরাবতা মানে ধরে নিচ্ছে আমার সম্মতি। যেহেতু তাদের প্রশ্ন ও অভিযোগের বিষয়বস্তু বিতর্কিত, দুই এক লাইনে বলে সমাপ্তি টানা যাবে না। গেলেও সেখানে অসংখ্য পয়েন্ট বাদ পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। আলোচবা করতে গেলে বিস্তৃত পরিসরেই করতে হবে। প্রতিটা যুক্তি, কথা স্বতসিদ্ধ হবে ১০০% তার নিশ্চয়তা দিতে পারছি না তবে বড় গলায় বলতে পারি খণ্ডাতেও পারবেন না।

আমার ওপর অভিযোগ আমি শুধু অন্যের দোষ অনুসন্ধান করে বেড়াচ্ছি ইদানিং, আমি নিজে ভালো না( কখনই বলিনি আমি একজন ভালো মানুষ, আমার ভেতর খারাপ ও ভালো দুটোই বিদ্যমান ), বিদেশে নিজে নিরাপদ আশ্রয়ে অবস্থান করে ফেসবুক বড় বড় কথা বলছি, বর্তমান ইস্যু নিয়ে কথা বলছি, মাঠে না নেমে সবাই বলতে পারে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে আওয়াজ দিচ্ছি, রাষ্ট্র ব্যবস্থা, সরকারের পদক্ষেপের ভুলগুলো ধরিয়ে দিচ্ছি ধর্ষণ বিরোধী আন্দোলন নয় বরং ঘুণেধরা সামাজের নড়বড়ে অবকাঠামোকে ঠিক করার অজুহাতে সত্য, স্বতসিদ্ধ আন্দোলনকে পুঁজি করে আমরা ক্রমাগত উল্টাপাল্টা কথা-কৌশলে বিএনপি, জামাত ইসমালের এক কুখ্যাত এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে আমরা আদাজল খেয়ে লেগেছি ও তাদের হয়ে কাজ করছি।

মাঝে মধ্যে আমি কিছু মানুষের বিচার-বিবেচনা, চিন্তা-চেতনা, প্রখর বোধশক্তি দেখে রীতিমতো হতভম্ব, অভিভূত হয়ে যাই । আমি ভাবি এরা কী খেয়ে এই চিন্তা করে?

তারপর বলার মতো কোনো যুতসই শব্দ খুঁজে পাই না, উপমা পাই না, ভাষাও পাই না।

সমাজ সংস্করণে প্রতিটা ছাত্র আন্দোলনে একদল অসাধু মুখোশধারীরা আড়ালে সাধারণ মানুষের অগোচরেই সরকার বিরোধী আন্দোলনে রুপান্তরিত করার সুক্ষ্ম কৌশল অবলম্বন করে আসছে দীর্ঘসময় ধরে।

রাজপথে আজ পর্যন্ত যতবার নির্যাতিত, নিপিড়িত, অসহায় , অসহ্যের মাত্রা চরমে পৌঁছে গিয়ে সাধারণ জনগণ অন্যায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে পথে নেমেছে ( যেগুলো কখনই সরকার বিরোধী আন্দোলন ছিল না ) সেখানে সেই সব কাপুরুষ সরকার বিরোধীদলের জারজারা সন্তানরা সুষ্ঠু, স্বাভাবিক, ন্যায় প্রতিষ্ঠার লক্ষে , সরকার নিরপেক্ষ আন্দোলনের মিশে গিয়ে সমাজ সংস্করণ আন্দোলনকে টেনে নিয়ে গিয়েছে সরকার বিরোধী আন্দোলনের পর্যায়ে ।

রাজনৈতিক নোংরা মানসিকতার পরিচয় দিয়ে আসছে এইসব সরকার পক্ষ-বিপক্ষের দলীয় নেতা-কর্মীরা। ক্ষমতার দাপটে সত্য ঢাকা দেওয়ার পায়তারা করছে।

এই অতি সাধারণ স্পষ্ট, সচ্ছ ব্যাপারটা আমাদের বাতাসে বাড়ন্ত বয়স্ক, ময়-মুরুব্বিদে চোখে, কানে, মস্তিষ্কে ঢোকে না।

যে মানুষগুলো সরকারের নিকট সত্য ও ন্যায় বিচারের দাবী জানাচ্ছে, কঠোর আইন ব্যবস্থায় দ্রুত অগ্রসর হতে উদ্ধৃত করতে চাচ্ছে, চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে কোনটা অন্যায় কোনটা ন্যায়, সেই মানুষগুলো কীভাবে সরকারের বিপক্ষে কথা বলতে পারে বলে আপনার মনে হয়?

কীভাবে সরকার পতনের স্লোগান দিতে পারে?

সরকার পতন ঘটিয়ে তাদের লাভ কী?

আপনাদের কি মনে হয় ছাত্র সমাজ গণ্ডমূর্খ? তারা ছাত্র, তারা বোঝে না কোনটা সরকার বিরোধী আন্দোলন ও কোনটা সমাজ সংস্করণ আন্দোলন? তারা গর্দভ? পাগল বলে মনে হয়?

পারতপক্ষে এখানে সমস্যার সৃষ্টি উৎপত্তি স্থল কোথা থেকে?

ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনে মুজিব কোর্ট আগুনে পুড়িয়ে ‘বিচার চাই, বিচার চাই ’ বলে স্লোগান দিচ্ছে একদল, শেখ হাসিনার চিত্রছবি আগুনে পুড়িয়ে প্রতিবাদ করছে এগুলোই হলো সমস্যার মূল কারণ।

সমালোচনার ঝড় ওঠার প্রধাণ হাতিয়ার।

এগুলো কি মনে হয় না এটা কোনো সরকার বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের কু-চক্রান্তের শিকার হচ্ছে এই সাধারণ জনগণ, ছাত্র সমাজ, যারা আসলেই বেখবর! তাদের দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে নিজ স্বার্থ হাসিলে চেষ্টা করছে?

ধর্ষণের প্রতিবাদে আন্দোলনে তারা ঢুকে গিয়ে আন্দোলন কলুষিত করতে চাচ্ছে?

এমনটা কি পূর্বে হয়নি? কোটা সংস্কার আন্দোলন কী সরকার বিরোধী আন্দোলন ছিল?

ছিল না! সেটাকেও একটা সময় ওই জারজগুলোই সরকার বিরোধী আন্দোলনে রুপান্তরিত করেছে। সরকারের পদত্যাগে স্লোগান দিয়েছে!

এভাবেই প্রতিটা সুস্থ স্বাভাবিক বিষয়গুলো তারা অসুস্থ করে তুলছে। অহর্নিশ একই ঘটনা ঘটে আসছে বার বার তবুও আমরা নির্বোধের মতো, অবুঝের মতো চামড়ার চোখে যা দেখছি তাই নিয়ে লাফালাফি করছি। আদের কারণে সমাজ সংস্করণ রোধ হচ্ছে শুধু এদের জন্য। তারা সাথেও নেই পিছেও নেই। এরা সুবিধাবাদী।

আন্দোলনে কিছু সরকারে বিরুদ্ধে স্লোগান গিয়েছে সেটা নিয়েই একদল গণ্ডমূর্খ, ছাগলের বাচারা লাফালাফি করছে।

আন্দোলনে থাকা নারীদের পোশাক-পরিচ্ছদ নিয়ে তাদের অসুস্থ মস্তিষ্কের প্রমাণ দিয়ে চলছে। সেগুলো কেন্দ্র করে তুমুল আলোচনা-সমালোচনার ঝড় তুলছে,

এক একটা ভাড়া করা বেশ্যা, মাগি, জারজ আরও কত কত উপাধি দিয়ে চলছে।

একটা দেশে নারী ধর্ষণ হলে সেই ধর্ষকের শাস্তির দাবী না করে যেই মানুষগুলো নারীর পোশাক-আশাক নিয়ে প্রশ্ন তোলে, হিজাব পরে না জিন্স-টপ পরে তা নিয়ে তর্কবিতর্ক করে, রাস্তায় একা গিয়েছে কেন বেরিয়েছে, কেন ঘর ছেড়ে বাইরে বের হবে, সেই জাতী কখনওই সত্যান্বেষী হতে পারে না।

তারা যেমন মূর্খ অন্যকেউ মূর্খ প্রমাণ করতে উঠে পড়ে লাগে। আর এই ফাঁকে ধর্ষকরা, অপরাধীরা নির্বিচারে শরীরে হাওয়া লাগিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে আর যখন ইচ্ছে হচ্ছে শিশু, নারী, বৃদ্ধাকে ধর্ষণ করে ফেলে দিচ্ছে। অপরাধীরা স্বাধীন চিত্তে অপরাধ করছে।

খুব সাধারণ লজিক্যালি কিছু প্রশ্ন, একটা মেয়ে হিজাব না পড়লে, বোরকায় আবৃত না হলে তাকে ধর্ষণ করে প্রতিবাদ করতে হবে এমন মানসিকতাকে সুস্থ বলেন?

এই অধিকার কে দিয়েছে?

একটা মেয়ে টিশার্ট, জিন্স পরবে তার স্বাধীনতা, তার পোশাক আশাককে কেন্দ্র করে তাকে ধর্ষণ করে শিক্ষা দেওয়া অধিকার তোকে কে দিয়েছে?

পরিবার ও সংসারের টানাপোড়ের জীবনে কর্মকরে খাওয়া একা নারী রাত করে বাসায় ফিরলে সমাজ নষ্ট হয়ে যাওয়ার দোহাই দিয়ে তাকে ধর্ষণ করার অধিকার কে দিয়েছে?

ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে যৌক্তিকতা দাঁড় করালেও সেই একই যুক্তি আসে, যার হিসাব সে দেবে আল্লাহতায়ালার নিকট, তাই বলে তোকে ধর্ষণ করার অধিকার কে দিয়েছে?

আমি নিজেও বলব প্রতিটা মুসলিম নারীকে হিজাবে আবৃত করা অনিবার্য। ইসলাম পর্দা করতে বলেছে। অবশ্যই পর্দা করতে হবে, করতে হবে এবং করতে হবে!

কতা হলো কে করবে না করবে সেটা তার ব্যাপার, তার জবাবদিহি করতে হবে, মৃত্যুর পর পিতামাতার দেবে, কেননা শৈশব থেকে পারিবারিকভাবে তাকে সেই শিক্ষা দেওয়া হয়নি এটা পিতামাতার ব্যর্থতা।

এখন সে পর্দা না করলে তাকে ধর্ষণ করবেন? এই বস্তাপঁচা গোবর-গণেশ মার্কা যুক্তি দিয়ে ধর্ষিতাকে হয়রানি করবেন?

তাকে তার ন্যায় বিচার পেতে বাঁধা সৃষ্টি করবেন?

পারতপক্ষে, ধর্ষণের জন্য পোশাক দায়ী থাকলেও সেটা একতৃতীয়াংশ কিংবা তারও কম, বাদবাকী আমাদের নোংরা মানসিকতা, নড়বড়ে আইন ব্যবস্থা, বিচারহীনতা যা একজন অন্যায়কারী, অপরাধীকে পূনরায় অপরাধ করতে উদ্ধৃত করে। আর সত্য এটাই অন্যায়কারীদের এখন আইন আশ্রয়ই বেশি মিলছে।

আমি রাজনীতি বুঝি না। রাজনৈতিক বিষয়বস্তুর ওপর আমার চরম অনিহা কাজ করে। আমি কখনও মিছিল মিটিং করিনি রাজনৈতিকভাবে। বরং ১হাজার মাইল দূরে থেকেছি এসব বিষয়ে।

সাম্প্রতিক বাংলাদেশের মহামারী রূপ নিয়েছে ধর্ষণ ও ধর্ষকের মতো জঘন্য বিষয়। বাংলাদেশের মতো এত ছোট একটা স্বাধীন রাষ্ট্রেও মাসে গড় হিসাব করলে এখন ১১১ জন নারী ও শিশু ধর্ষিত ও যৌন হয়রানি হচ্ছে। এমনকি পাঁচ মাসের শিশু থেকে পঞ্চাশ থেকে সত্তর বছরের বৃদ্ধাও ধর্ষকদের নিকট রেহাই পাছে না।

এখন সরকার পক্ষে কিংবা বিপক্ষে বা সরকারের অপারগতা, দূর্বলতা নিয়ে দুইটা কথা বলি।

আগেই বলে রাখছি, বর্তমান সরকার এখন আওয়ামীলীগ বা বিএনপি বা জামাত ইসলাম যেই ক্ষমতায় থাকত ও এহেন পরিস্থিতির সম্মুখীন হলে একই কথা বলতাম।

আজ সমাজ ধ্বংসের পথে। সরকার ও আইন প্রশাসন সাধারণ জনগণের নিকট প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। দেশের মানুষের মন থেকে ধীরে ধীরে আইনের নিরাপত্তা, সুরক্ষা, আস্তার জায়গা ধ্বসে যাচ্ছে। আইন থাকা সত্বেও বিচারহীনতায় ভুগছে! অপরাধীরা খোলামেলা ঘুরে বেড়াচ্ছে ভুক্তভোগীরা পূনরায় নির্যাতিত হচ্ছে তাদের নিকট, হয়রানির শিকার হচ্ছে। আইন এখানে অপারগ। সরকার কঠোরতার পক্ষে নিশ্চুপ, নির্বিকার যা আরও ক্ষতিগ্রস্ত করে তুলছে। এভাবেই যদি একটা রাষ্ট্র চলতে থাকে তাহলে সেই রাষ্ট্রে সরকারের বিপক্ষে কথা বলার কি যুক্তিযুক্ত না?

দিনের পর দিন একই অন্যায় কীভাবে সহ্য করা সম্ভব, উপেক্ষা করা সম্ভব হয়? সরকার কী বাধ্য করছে করছে না? সরকারে এখানে কোনো দায় নেই?

আদতে, সককারে ভালো কিছু কর্মকে যেমন অস্বীকার করার উপায় নেই তেমন অপারগতার বিষয়টাও। বলতে গেলে অপারগতায় বেশি নজরে পড়ছে।

২০১৯ এর একটা ছোট গড় হিসাব জানি আসুন।

২০ সালের ৭/৮ জানুয়ারিতে দেশের সর্ববৃহৎ সংবাদমাধ্যমে দৈনিক ‘প্রথম আলো’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয় গত বছরের ধর্ষণ, নারীনির্যাতন, যৌনহয়রানী নানা অপরাধে একটি গড় হিসাব।

১৯ সালের সর্বমোট গণধর্ষণের শিকার হয় ২৩৭ জন এবং ধর্ষণের পরে হত্যা করা হয় ৭৭জনকে। এই গণধর্ষণের ঘনটায় সেই ধর্ষিতারা জীবনের কঠিন তিক্তা, নিষ্ঠুরতাকে উপেক্ষা করতে না পেতে আত্মহত্যা করেছে ১৯জন।

গণধর্ষণ বোঝেন? নাকি বোঝেন না? এখানে এক দুইজন নরপশু, জানোয়ার থাকে না অধিক জানোয়ারদের দ্বারা ধর্ষণকে গণধর্ষণ বলে। ২৩৭জন গণধর্ষণে কতজন অপরাধী হতে পারে বলে আপনার মনে হয়? প্রতি জন ধর্ষিতার গড় হিসাবে ৩/৪ জন করে ধরলে ৯৮৪জন ধর্ষক। এই ৯৪৮ জন ধর্ষকের শাস্তির ব্যবস্থা করতে পারেনি আমাদের দেশের সরকার, আইন, আদালত।

আরও বাকি আছে,

ওই বছরটিতে ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধরনের নির্যাতনের শিকার হয় ৪ হাজার ৬২২জন নারী ও শিশুরা।

বাংলাদেশের মহিলা পরিষদ গত বছর ওই তথ্য দিয়েছে পরিষদে লিগ্যাল এইড উপপরিষদে সংরক্ষিত ১৪টি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে ১৯ সালে শ্লীলতাহানীর শিকার হয় ৯১জন। যৌন নির্যাতনে শিকার হয় ১৮৫ জন, নারী শিশু পাচার হয় ১৭জন, যৌনপল্লীতে বিক্রি হয় ৭জন।

আমাকে বলুন এগুলোর একটাও বিচার কি হয়েছে? একটা বিচাদের সুস্পষ্ট প্রমাণ দেখাতে পারবেন?

এবার দেখি আমাদের চলতি বছরের ধর্ষণের পরিমাণ, জানুয়ারি মাস থেকে চলতি মাসের এই পর্যন্ত ৯০০+ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।

ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ৪১ জনকে নারী ও শিশুকে৷

আপনার আমার হিসাবে একই সংখ্যা দাঁড়ায় প্রতি মাস গড়ে ১১১+ ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে আমাদের এই দেশে। প্রতিদিন কতজন মা-বোনে তাদের বেঁচে থাকার গৌরব, সম্বল হারাচ্ছেন?

এগুলো কি সরকার, আইন, প্রশাসনকে প্রশ্ন বিদ্ধ করে না? আপনি যুক্তি দেখাবেন কোথায়?

মানে কতটা হিপোক্রেটিস না হলে ওই সব বিকৃত, গণ্ডমূর্খরা এটা নিতে তর্কবিতর্ক করে? কতটা হলে আমার জানা নেই!

সাধারণ জনগণের মন চেতনে-অবচেতন বলতে বাধ্য করবে, সরকার তাদের নিরাপত্তা দিতে অপারগ, দূর্বল। দেশের মানুষকে নিরাপদ না রাখতে পারলে সরকার হওয়ার কোনো অধিকার, যৌক্তিকতা রাখে না!

এটা লজিক্যালি কথা। আমি কোনো দলের পক্ষপাত্তিত করছি না। দেশের একজন ভুক্তভোগী সাধারণ নাগরিকের অধিকার থেকে বলছি।

আজ আমি এই সত্যকে তুলে ধরছি বলে আমাকে নানানভাবে নানা কথা যারা বলছে তারা কি ভেবে বলে নাকি নেশার ঘোরে?

এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি কারণ কী?

একই ঘটনা ঘটে আচ্ছে কয়েক বছর ধরে সরকার কেন এদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করেনি? কেন দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছে না? সময় ছিল না? নাকি সময় হয়নি? আর কবে হবে?

দেশের প্রতিটা মা বোন সন্তান ধর্ষিত হলে?

দুই অথবা চারদিনের ঘটনা না যে সরকারে কর্ণে পৌঁছায়নি সেই সব অসহায়, নির্যাতিত বিচারহীনতায় ভুক্তভোগী পরিবারের প্রতিটি মানুষের হাহাকার, চিৎকার, কান্নার প্রতিধ্বনি ?

আমি যখন খুব ছোট ছিলাম তখন সমাজ কী বুঝতাম না। সরকার কী বুঝতাম না? রাষ্ট্র ব্যবস্থা কী বুঝতাম না? আইন আদালত বলতে বুঝতাম অন্যায় করলে তারা ধরে শাস্তি দেয়।

কিন্তু তখন সমাজের দুইটা গুরুত্বপূর্ণ জঘন্য বিষয় আমি অনুধাবন করতে পারতাম ‘ যৌতুকের দাবীতে গৃহবধূকে নির্যাতন করা ও পথে-ঘাটে জনসম্মুখে নির্ভয়ে এসিডে ঝলসে দেয়ার ব্যাপার ’।

তখন এই দুইটা মহামারি আকার ধারণ করেছিল। রাস্তাঘাটে যাকে তাকে এসিতে দগ্ধ করা হতো। একটা সময় সরকার তাদের বিরুদ্ধে কঠোন আইন প্রনয়ণ করলেন, উপযুক্ত শাস্তি ব্যবস্থা করলেন, তারপর ধীরে ধীরে বিষয় দুটোতে অস্বাভাবিক ভাটা নামা শুরু হলো।

এমন নয় যে এখন আর হচ্ছে না, হচ্ছে তবে তা কম হচ্ছে। অপরাধ ও অপরাধীকে নিয়ন্ত্রণ করতে কঠোর শাস্তির প্রদানে আর কোনো বিকল্প পদ্ধতি নেই তা আসলেই অনস্বীকার্য। কিন্তু সেটা আজ হচ্ছে না।

জনগণ চাতক পাখির মতো চেয়ে আছে সরকার নির্লিপ্ততা, নির্বিকার হতাশ করছে, অপরাধীদের উদ্ধৃত করছে, সাহস পাচ্ছে তারা অপরাধ করছে, আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে অপরাধীরা বেরিয়ে যাচ্ছে।

কঠোর আইন প্রনয়ণে যদি অপরাধ নিয়ন্ত্রণ হয়, তাহলে ধর্ষণ তো এর থেকেও জঘন্যতম অপরাধ, ক্রাইম তাহলে ধর্ষণ ও ধর্ষকের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রনয়ণ কেম হচ্ছে না?

ধর্ষকের শাস্তি জনসম্মুখে মৃত্যুদণ্ডের বিধান কেন জারী হচ্ছে না? এই পর্যন্ত কত হাজার হাজার নারী ও শিশু ধর্ষিত হয়েছে, তাদের বিচার কোথায়?

ধর্ষকরা জামিন পায় কীভাবে?

একজন ধর্ষকের সাহস হয় কীভাবে ধর্ষিত নারীরে দ্বিতীয় বার ধর্ষণ করে হত্যা করার?

সরকার, আইন, প্রশাসন কী হাতে চুড়ি পরে বসে থাকে?

ধর্ষিত কোনো নারি পুলিশের নিকট কমপ্লেইন করলে পুলিশের সাহস হয় কীভাবে টাকার বিনিময়ে ধর্ষিত পরিবারকে কেস তুলে উইথড্র অফার করার? অপরাধীকে ধরার পরিবর্তে হয়রানির শিকার কেন ধর্ষিতা ও তার পরিবারকে হতে হবে?

দেশের আইন এতটাই ঠুনকো হয়ে আছে যে অপরাধীদের সম্মুখে আইন মস্তকনিচু করে চলছে।

প্রমাণ চায়? কত কত প্রমাণ নিবেন?

আপনি যেহেতু অন্ধ ও বধির নন, মানসিক ভারসাম্যহীন পাগল নন যে আপনাকে এখন বিস্তারিত জানতে হবে। যদি ক্ষমতার দাপটে অন্ধ ও বধির হন তাহলে ভিন্ন কথা। প্রমাণ আপনাদের বেটে খাওয়ালেও বলবেন, প্রমাণ দেখান!

আমাকে অনেকে লেখক বলে সম্বোধন করে। একজন লেখক শুধু গল্প, কবিতা, গান, ছন্দ, প্রেমভালোবাসা কাল্পনিকতা নিয়েই পড়ে থাকে না। একজন লেখকের মূলনীতি কী? লেখকের আদর্শ কী জানতে হবে?

সমাজের অবকাঠামো কলম লেখকদেরই আগে ওঠে!

তাদেরই এই দেশে পরাধীন! যে দেশের লেখকরা পরাধীন সে দেশে ও সমাজে আত্মোন্নতির আশা করা আর বোকার স্বর্গে বাস করা সমান কথা।

আমি সমসাময়িক বিষয় নিয়ে কথা বলি ভালো লাগলে লিস্টে থাকবেন না লাগলে ইনগোর করবেন।

1
$ 0.00
Avatar for Buri222
4 years ago

Comments